সিইসি-ইসি নিয়োগ বিল চূড়ান্ত, পরিবর্তন আসছে যোগ্যতা-অযোগ্যতায়
ইসি-সিইসি নিয়োগ বিল চূড়ান্ত হয়েছে। নৈতিক স্খলনজনিত কারণে সাজা হলে সিইসি-ইসি হওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার। স্বায়ত্বশাসিত ও পেশাজীবীরা ইসি-সিইসি হতে পারবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, “ছোটখাটো কিছু পরিবর্তন এনে বিলটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। একটি জায়গায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার হওয়ার যোগ্যতা-অযোগ্যতার ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রস্তাবিত বিলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারের যোগ্যতা-অযোগ্যতার দফা ৬ এর (গ) উপ-দফায় বলা হয়েছিল, ‘তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে সিইসি ও ইসি হওয়ার অযোগ্য হবেন।’ এ ক্ষেত্রে ছোট একটু পরিবর্তন আনা হয়েছে। আমরা দুই বছর শব্দটি বাদ দিয়েছি। এখন যে কোনো মেয়াদে সাজা হলেই তিনি অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে দণ্ড বলতে কারাদণ্ড হতে হবে।”
আরেকটি পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানিয়ে সভাপতি বলেন, ‘স্বায়ত্বশাসিত ও পেশাজীবী (যারা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত) তাদের মধ্য থেকেও সিইসি ও ইসি হতে পারবেন। এটা আমরা যুক্ত করেছি এবং সকলে একমত হয়েছি। আশা করছি, আগামী বুধবার আমি চূড়ান্ত বিলটি সংসদে উত্থাপন করব। বিল পাস হওয়ার বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয় দেখবে। তবে আমরা আশা করছি হয়তো রিপোর্ট উত্থাপনের পরদিনই পাস হতে পারে।’
সংসদের চলতি ১৬তম অধিবেশনের মুলতবি বৈঠক আগামী বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় শুরু হবে। ওইদিনই চূড়ান্ত বিলটি উত্থাপন করা হতে পারে।
কমিটির বৈঠক শেষে সংসদের গেটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে কি পরিবর্তন হয়েছে, সেটা আমি এখানে বলছি না। এটা সংসদ আগে জানার অধিকার রাখে। আমি যেদিন বিলটি সংসদে পাসের জন্য উত্থাপন করব সেদিনই বিলটির পরিবর্তন সম্পর্কে বলব।’
কমিটির অন্য সদস্য জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘দুটো বিষয় বাতিল হয়েছে। আগে নৈতিকস্খলনজনিত অপরাধের ক্ষেত্রে দুই বছরের যে ব্যারিয়ার ছিল সেটা বাতিল হয়েছে। এখন যে কোনো মেয়াদে সাজা হলেই সে আর সিইসি বা ইসি হতে পারবেন না। আর হলো স্বায়ত্বশাসিত ও পেশাজীবীদের থেকেও নেওয়া যাবে।’
সোমবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে সংসদ ভবনে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সংসদীয় কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটি সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শামীম হায়দার পাটোয়ারি, বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রোববার (২৩ জানুয়ারি) সংসদ অধিবেশনে আইনমন্ত্রী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২ উত্থাপন করেন। তার আগে গত ১৭ জানুয়ারি সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনটির খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত বর্তমান নির্বান কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৪ ফেব্রুয়ারি। তার আগেই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই আইনটি পাস করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের দিকে হাঁটছে সরকার।
এসএম/এসএ/