৮২ সেতু নৌযান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে: সংসদীয় কমিটি
দেশের বিভিন্ন নদীর উপর নির্মিত ৮২টি সেতু নিচু করে তৈরি করার কারণে নৌযান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। বিষয়টির সমাধান হওয়া উচিত বলে মনে করেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সুপারিশ করা হয়েছে। ঢাকার চারপাশের নৌ পথে বন্দর আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
বৈঠকে উত্থাপিত কার্যপত্র থেকে জানা যায়,বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক পেশ করা কার্যপত্রের আলোকে বিআইডব্লিউটিএ এর অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনার সমস্যা ও সমাধানের উপায় সম্পর্কে কমিটিকে অবহিত করেন।
তিনি বলেন, ‘নদী দূষণরোধের লক্ষ্যে ঢাকা নদীবন্দরসগ দেশের বিভিন্ন নদীবন্দর ও হাট বাজারে ময়লা ফেলার জন্য ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা দরকার। ঢাকার চারপাশে নৌপথের উপর নির্মিত সেতুসমূহ নৌযান চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি করছে, যার সমাধান করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের বিভিন্ন নদীর উপর ৮২টি সেতু নিচু করে তৈরি করায় নৌ যান চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এগুলোর সমাধান প্রয়োজন।
বিষয়টির উপর মতামত তুলে ধরে কমিটির সদস্য মো. মজাহারুল হক প্রধান বলেন, বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজিং করে উত্তোলিত বালু নদীর একপাশে রেখে দিচ্ছে। সেই মাটিতে নদী আবার ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এতে সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। উত্তোলিত বালু একটি নির্দিষ্ট জায়গায় রাখতে হবে এবং এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। তাই সারাদেশের বড় বড় নদীর প্রবাহ দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত চলমান রাখার এবং ঢাকার চারিপাশের নৌ-পথগুলোতে নৌ যান চলাচলে যেন কোনো বাধার সৃষ্টি না হয় তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি প্রস্তাব করেন।
বৈঠকে বলা হয়েছে, সদরঘাট থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০০ লঞ্চ/জাহাজ চলাচল করে। সে কারণে ঘাটের সামনে প্রায়ই যাত্রীদের ভিড় এবং যানজট থাকে। ঘাটের অনেক উন্নয়ন করা সম্ভব হলেও গুলিস্তান থেকে সদরঘাট যাওয়ার রাস্তার তেমন উন্নতি না হওয়ায় যাত্রীদের যাতায়াতের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্তকরণসহ একটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হলে এ সমস্যার সমাধান হবে।
রবিবার (২৩ জানুয়ারি) সংসদ ভবনে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মো. মজাহারুল হক প্রধান, মাহফুজুর রহমান, ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, মো. আছলাম হোসেন সওদাগর এবং এস এম শাহজাদা অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে চট্রগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদ্যমান সমস্যা, রাজস্ব আয়-ব্যয়, উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি এবং বন্দরকে আন্তর্জাতিকমানে উন্নয়নের পরিকল্পনার বিষয়ে বিষদ আলোচনা করা হয়। চট্রগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে ৫-৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি স্থায়ী কমিটি গঠন করার সুপারিশ করা হয়, যারা নিয়মিত ফলোআপ করার মাধ্যমে বন্দরের উন্নয়নে সহায়তা করবে।
বৈঠকে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব, চট্রগ্রাম বন্দর কতৃর্পক্ষের চেয়ারম্যান, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এসএম/এমএমএ/