আজকের মধ্যে শাবিপ্রবি ভিসির প্রত্যাহার চেয়ে সংসদে আলোচনা
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলেরকে (ভিসি) আজকের মধ্যে প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়ে সংসদে কথা বলেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির দুজন সংসদ সদস্য।
তারা বলেছেন, তার (ভিসি) আত্মসম্মান থাকলে আগেই পদত্যাগ করা উচিত ছিল। শিক্ষার্থীরা তাকে চায় না, তাকে পছন্দ করে না। উনি (ভিসি) যদি নিজ থেকে পদত্যাগ না করেন তাহলে সরকারের উচিত আজকের মধ্যেই তাকে প্রত্যাহার করা।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) সকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে বিষয়টি উত্থাপন করেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। তার সঙ্গে একই সূরে কথা বলেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান।
কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা ভাইস চ্যান্সেলরের বিরুদ্ধে এবং হাউজ টিউটরের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যাচ্ছেন, তার পদত্যাগের দাবিতে। শিক্ষার্থীরা ১১ দিন যাবৎ অনশনে আছেন ১৬ জন ইতোমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাতেও কোন টনক নড়ছে না।
তিনি বলেন, শুনলাম শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন তোমরা (শিক্ষার্থীরা) দাবি-দাওয়া রেখে ঢাকায় আসো, আলোচনা করতে। আন্দোলনের মাঠ ছেড়ে কখনও কোন ছাত্ররা কারো সঙ্গে দেখা করতে ঢাকা আসবে না। এটা আমি জানি।
তিনি বলেন, ভিসি কোন স্থায়ী পদ না যে সে চলে গেলে ওই বিশ্ববিদ্যালয় অচল হয়ে যাবে। একজন ভিসিকে সরাতে গিয়ে ছাত্ররা যদি অনশন করে এরচেয়ে দু:খজনক কিছু নেই। বুঝতে হবে ভিসির উপর ছাত্রদের কোন আস্থা নেই, বিশ্বাস নেই, তার প্রতি কোন ভালবাসা নেই। ভিসির প্রতি ছাত্র-ছাত্রীদের শ্রদ্ধাবোধ নেই। ভিসির যদি বিন্দুমাত্র আত্মসম্মানবোধ থাকত তিনি অবশ্যই এখান থেকে সরে আসতেন। তিনি জোর করে বসে আছেন পুলিশি পাহারা নিয়ে। এখানেই শেষ না। ছাত্র-ছাত্রীরা হাউজ টিউটরের কাছে গিয়েছিল সেখানে দেখা করতে পারে নাই বরং তাদের সাথে খারাপ আচারণ করেছে, তখন থেকেই ঘটনার উৎপত্তি। তখন তাদের দাবি নিয়ে ভিসির নিকট আসছিল হাউজ টিউটরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে। তারপর তারা আন্দোলন ডাক দিল। আন্দোলন ডাক দিলেই পুলিশ ডেকে আনল। এটা কি মোনায়েম খানের দেশ নাকি? কথায় কথায় পুলিশ ডেকে আনবে? ভিসি পুলিশ এনে ছাত্রছাত্রীদের পেটালো আমরা দেখলাম। ছাত্র আন্দোলনকে ছোট করে দেগখা উচি না।
তিনি বলেন, এদেশের সকল আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্ররা। তাই অবিলম্বে আর কোনো তদন্ত রিপোর্ট নয়, কারো সঙ্গে আলাপ আলোচনা নয়। শিক্ষামন্ত্রী আছেন প্রধানমন্ত্রী আছেন ভিসিকে আজকের মধ্যে ওখানে থেকে প্রত্যাহার করে নিয়ে আসেন। শিক্ষার্থীদের বাঁচতে সাহায্য করেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে পীর ফজলুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতার আন্দোলন চলছে। একটি হলের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের সূচনা। পরবর্তিতে শিক্ষার্থীরা যখন ভিসির কাছে দাবি নিয়ে গেছেন সেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের উপর সাউন্ড গ্রেনেড এবং লাঠি চার্জ করা হয়েছে। পরবর্তিতে শিক্ষার্থীরা আক্রমণ করা হলো। তখনই ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু হলো। আন্দোলন শুরু করার পরেই ভিসি যিনি অভিভাবক হিসেবে ছাত্রদের সাথে আলাপ আলোচনা না করার কারণে ছাত্র ছাত্রীরা আমরণ অনশন কর্মসূচিতে যায়। সেই আমরণ অনশন কর্মসূচি চলা অবস্থায় শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। কিন্তু ভিসি, তিনি নির্লজ্জের মতো সমস্ত আত্মসম্মানবোধ বিসর্জন দিয়ে যে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাকে চায় না, কিন্তু তিনি লক্ষিনদারের বাসার মতো তারা বাসাকে লক্ষিনদানের বাসা বানিয়ে সেই বাসায় বসা আছেন। তিনি পদত্যাগ করবেন না।
তিনি আরও বলেন, আত্মসম্মান বোধ নিয়ে তিনি কিভাবে লক্ষিনদারের বাসার মধ্যে থাকেন। শিক্ষার্থীরা তাকে চায় না। যাদ তিনি (ভিসি) স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করেন, তাহলে সরকারের উচিত হবে আজকের ভেতরেই তাকে ভিসির পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা।
এসএম/এসএ/