তামাকজাত দ্রব্যে সুনির্দিষ্ট কর আরোপ প্রয়োজন
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ও সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধিতে সবধরনের তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট হারে করারোপ জরুরি বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন সংসদ সদস্যরা।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের পার্লামেন্ট মেম্বার’স ক্লাবে ‘জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে প্রত্যাশিত তামাক কর ব্যবস্থাপনা ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্যগণ এ অভিমত ব্যক্ত করেন। দ্য ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো (বিইআর) ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি) এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারির সভাপতিত্বে সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এস এম আব্দুল্লাহ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, শামসুল হক টুকু এমপি। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, হারুনর রশিদ এমপি, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য আবিদা আঞ্জুম মিতা । এছাড়া অনলাইন জুমের মাধ্যমে ডা. হাবিবে মিল্লাত এমপি, রানা মোহাম্মদ সোয়াইল এমপি ও সংরক্ষিত নারী আসনের অপরাজিতা হক এমপি অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
শামসুল হক টুকু বলেন, তামাকের উচ্চ মূল্য তামাক ব্যবহারে বিশেষ করে কিশোর তরুণদের তামাকের ব্যবহার শুরু করতে নিরুৎসাহিত করে। সুনির্দিষ্ট করারোপ করে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করা যায় সরকারকে বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে।
ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, তামাকের জন্য ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন মানুষ দক্ষিণ এশিয়ায় মারা যাচ্ছে। এ মৃত্যু প্রতিরোধযোগ্য। নতুন নতুন তামাক ব্যবহারকারীদের রুখতে তামাকের কর আরোপ বৃদ্ধি করতে হবে।। তামাকমুক্ত দেশ গড়তে দ্রুত একটি জাতীয় কর নীতি প্রণয়নের কোনো বিকল্প নেই। পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ও রাজস্ব বৃদ্ধিতে আগামী অর্থবছরেই তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট করারোপের দাবি জানাচ্ছি।
হারুনর রশিদ বলেন, প্রতি বছর ১৮ লাখ মানুষকে তামাক থেকে বিরত করতে হবে। এবং নতুনদের তামাকে ব্যবহার থেকে বিরত রাখতে হবে। তামাকের ব্যবহার যদি রুখা না যায় তবে আমরা এসডিজি লক্ষ্য পৌছাতে পারব না। তামাকের মত ক্ষতি কর পন্য বিক্রিতে অবশ্যই লাইসেন্স এর ব্যবস্থা করতে হবে। তামাক কোম্পানির গুলোর ফাকিরোধে ডিজিটাল করার বিকল্প নেই। তামাক চাষের জমিগুলোকে তালিকাভুক্ত করে নানা প্রণোদনা দিয়ে তাদের এ চাষ থেকে বিরত করতে হবে।
ডা. হাবিবে মিল্লাত বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের জন্য একটি জাতীয় কর নীতি থাকলে ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করতে সুবিধা হবে। এ জন্য সরকারের যথেষ্ঠ সদিচ্ছা আছে। চার স্তরভিত্তিক অ্যাডভেলরেম করারোপ পদ্ধতির পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে অতিদ্রুতই সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি) এর সমন্বয়কারী হোসেন আলী খন্দকার, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহাদৎ হোসেন মাহমুদ, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপচার্য অধ্যাপক ড. গণেশ চন্দ্র শাহা, হার্ট ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক ড. সোহেল রেজা চৌধুরী, ক্যান্সার হোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দীন ফারুক, ভাইটাল স্ট্রাটেজিসের প্রোগ্রাম হেড মো. শফিকুল ইসলাম, দ্য ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রুমানা হক।
এসএম/এএস