উত্তেজিত হয়ে গলা চেপে হত্যা
শিমু হত্যার দায় স্বীকার করে নোবেলের স্বীকারোক্তি
সকালে নাস্তা করেছেন একসঙ্গে। চাও খেয়েছেন দু’জন মিলে। চলছিলো সংসারের নানা আলোচনা। এর মধ্যে হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে ওঠেন খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল। উত্তেজনার বশে থাপ্পড় মেড়ে বসেন রাইমা ইসলাম শিমুকে।
শিমুও পাল্ট প্রতিক্রিয়া দেখান! ধাক্কা দেন নোবেলকে। এরপর কঠিনভাবে শিমুর গলা চেপে ধরেন স্বামী নোবেল। এভাবে মুহূর্তমাত্র! ক্রমে নিস্তেজ হয়ে যান শিমু। থেমে যায় তার হৃদযন্ত্র। অবস্থা বেগতিক দেখে বন্ধু এসএম ওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদকে সঙ্গে নিয়ে মরদেহ গুমের পরিকল্পনায় নামেন নোবেল।
বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এমনটাই জানিয়েছেন নোবেল। তিন দিনের রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনে শিমু হত্যায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিলেন তিনি।
নোবেলের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শিমুকে হত্যার পর রবিবার সকাল ৮টার দিকে ফরহাদকে ফোন করে বাড়িতে ডেকে এনে বাইরে থেকে দুটো বস্তা এনে শিমুর মরদেহ তাতে ঢুকিয়ে সেলাই করেন নোবেল। এর পর বাড়ির দারোয়ানকে নাশতা আনতে বাইরে পাঠিয়ে নিজের ব্যক্তিগত গাড়ির পেছনের আসনে শিমুর মরদেহ নিয়ে বেরিয়ে যান। প্রথমে তারা যান মিরপুরের দিকে। কিন্তু সেখানে মরদেহ গুমের উপযুক্ত পরিবেশ না পেয়ে তারা বাসায় ফিরে আসেন। সন্ধ্যায় আবার মরদেহ গুম করতে মোহাম্মদপুর, বসিলা ব্রিজ হয়ে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ইউনিয়নের কদমতলী এলাকায় যান। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারা আলীপুর ব্রিজের ৩০০ গজ দূরে সড়কের পাশে ঝোপের ভেতর শিমুর মরদেহটি ফেলে চলে যান।
শিমুর ভাই শহীদুল ইসলাম খোকনের অভিযোগ, রবিবার সকালে তাদের ১৭ বছরের মেয়ে ও ৫ বছরের ছেলে বাসাতেই ছিল। তবে তারা কেউ ঘটনা সম্পর্কে কিছু টের পায়নি। ওটা নোবেলদের নিজেদের বাড়ি। নিজেদের থাকার ফ্ল্যাটটা তারা বড় করেই বানিয়েছিল। ঘরগুলো দূরে থাকায় অন্যরা কিছু শুনতে পায়নি। নোবেল ছেলে-মেয়েদের বলেছিল তার মা সকালে শুটিংয়ে বেরিয়েছে। ছেলে-মেয়েরা সে কথাই সবাইকে জানায়।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন নোবেল। সেখানে তিনি হত্যা ও মরদেহ গুমের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। এর বাইরেও কিছু তথ্য দিয়েছেন। সে বিষয়ে যাচাই-বাছাই চলছে। তদন্তে আর কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এনএইচ/এমএসপি