আগামীকাল থেকে সব উপজেলায় খোলাবাজারে চাল বিক্রি
সারাদেশে উপজেলা পর্যায়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) থেকে খোলাবাজারে চাল (ওএমএস) বিক্রি শুরু হবে।
আর আগামী ১ মার্চ থেকে সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে শুরু হবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে দ্বিতীয় অধিবেশনে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে গত মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) শুরু হওয়া ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বুধবার দ্বিতীয় অধিবেশনে ডিসিদের সঙ্গে বৈঠক করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
বৈঠক শেষে খাদ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) থেকে দেশের সব উপজেলায় একযোগে ওএমএসের মাধ্যমে চাল ও আটা বিক্রি শুরু করবে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, ‘সারা বছর ওএমএস চালু আছে। তবে এটা চলে সীমিত পরিসরে। বৃহস্পতিবার থেকে উপজেলা পর্যায়ে ১ হাজার ৭৬০ জন ডিলারের মাধ্যমে ওএমএস চালু হবে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইউনিয়ন পর্যায়ে যেহেতু খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি আছে, ১০ টাকা কেজি চাল আছে, এ জন্য ইউনিয়নে এটা চলবে না। কিন্তু একটা উপজেলায় যদি তিনটা পৌরসভাও থাকে সেখানে ওএমএস কর্মসূচি চলবে।’
তিনি জানান, ওএমএসের মাধ্যমে বিক্রি করা প্রতি কেজি চালের দাম রাখা হয়েছে ৩০ টাকা। আর আটা প্রতি কেজি ১৮ টাকা।
সাধন চন্দ্র বলেন, ওএমএস কার্যক্রম সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর থেকে মনিটরিং টিম করা হয়েছে। উপজেলা ও জেলায় যেন সব সময় মনিটরিং হয়।
খাদ্য মন্ত্রী দাবি করেন, ‘বর্তমানে চালের যে মজুদ আছে সেটা সর্বকালের সর্ব বৃহৎ মজুদ। এটা কোয়ালিটিফুল চালের মজুদ। আমি আশা করি মানুষ এটা নিয়ে খাবে।’
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, দেশে খাদ্যের কোনো অভাব নেই। ‘একটি কথা আপনাদের বলে রাখি, গরু আগে ভারত থেকে আসত, এখানে কোনো খামার ছিল না, সেটা কোরবানির গরু বলেন বা মাংসের জন্য যাই বলেন। ভারত থেকে অবৈধভাবে আসত, আমরা বড় বড় গরু দেখতাম। এখন কিন্তু আমাদের দেশে ভারত থেকে আর গরু আসে না। দেশেই উৎপাদন হয় ও অনেক খামার রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘গরু মোটাতাজা করার জন্যও অনেক চাল কিন্তু চলে যায়। সেখানেও একটি বিষয় রয়েছে। চালের কিন্তু হাহাকার নেই। উৎপাদন যেমন বেড়েছে, তেমনি মানুষ ও অন্য প্রাণীর জন্যও চালের খরচ দুটোই কিন্তু বেড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আবার আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম যেমন বেড়েছে, গমের দামও বেড়েছে। মিনিকেট বলে কোনো চাল নেই কিন্তু ব্র্যান্ড আছে। ভারত থেকে মিনিকেট যেটা আসে আমরা ২৫ ভাগ পর্যন্ত ট্যাক্স এনে দেওয়ার পরও ১৭ লাখের অর্ডার করে মাত্র ১০ হাজার পেয়েছি। তার অর্থ সেখানে এত দাম বেড়েছে সেটা এনে এখানে পোষাচ্ছে না। শিপের ভাড়াও চার-পাঁচ গুণ বেশি বেড়েছে।’
চালের মজুদ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যদি কেউ অবৈধ মজুদ করে রাখে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে আমরা চিঠি দিয়ে নির্দেশ দিয়েছি। আমরা এটা টাস্কফোর্স করে মন্ত্রণালয়ে কন্ট্রোলরুমও করেছি।’
তিনি বলেন, ‘ডিসিদের বলা হয়েছে, দুই টন চাল নিয়ে গেলেও সেটা ওইদিন ডিলারদের বিক্রি করার কথা। দেড় টন বিক্রি করে বাকিটা ব্ল্যাকে বিক্রি করে এটা হলো বড় সমস্যা।
মন্ত্রী বলেন, তবে এটাও ঠিক, আমরা সুষ্ঠু মনিটরিংয়ে আছি। আপনারাও যদি কোনো অবৈধ মজুদ সম্বন্ধে জানেন তাহলে আমাদের জানালে আমরা যদি সেখানে হানা দিতে পারি। তাহলে আমার বিশ্বাস চালের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার কোনো অবস্থা নেই।’
এনএইচবি/টিটি/এসএন