বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না: প্রধানমন্ত্রী
দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার সৈনিক হিসেবে কাজ করতে হবে। সব সময় মাথা উঁচু করে চলতে হবে। দেশকে ভালবাসতে হবে, দেশের মানুষকে ভালবাসতে হবে। দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ হতে হবে। বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ এই দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা আর কখনও কেউ থামিয়ে দিতে পারবে না। সেভাবেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে সামনের দিকে।’
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে ডিএসসিএসসি কোর্স-২০২১-২২ এর গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনিতে অংশগ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এবার ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ (ডিএসসিএসসি) কোর্সে বাংলাদেশ ছাড়াও বন্ধুপ্রতীম ১৮টি দেশের সদস্যরা সনদ গ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ (ডিএসসিএসসি) কোর্সে প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান আপনাদের (সৈনিকদের) উপর অর্পিত দায়িত্ব দক্ষতার সাথে পালন ও যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক হবে।’
কোর্সে অংশগ্রহণকারী সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সব সময় বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলতে হবে, সম্মানের সাথে, মর্যাদার সাথে। সেই মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। কারও কাছে হাত পেতে নয়। আমাদের যা সম্পদ আছে তাই দিয়ে আমরা নিজেদেরকে বিশ্বে মর্যাদাশীল করে গড়ে তুলেছি এবং আমরা আরও গড়ে তুলব। সামনে এগিয়ে যাব।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে। অপরদিকে জাতির পিতাকে হত্যার পর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের যে বিজয়ের ইতিহাস, আমরা যে বিজয়ী জাতি সেটাই এ জাতি ভুলতে বসেছিল। আসলে ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল। আমরা জাতির পিতার সেই আদর্শ সামনে তুলে নিয়ে আসি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নতুম প্রজন্মের কাছে তুলে ধরি। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে যে চলতে হবে, আমরা প্রশিক্ষণে সব সময় সেটাই গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আমরা চাই আমাদের সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী আধুনিক এবং যুগপোযোগী হবে। সেই সাথে সাথে প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৬ সালে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস দমনে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করি। সকলের সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়। এই পররাষ্ট্র নীতি জাতির পিতা আমাদের দিয়ে গেছেন। আমরা সেই নীতিই মেনে চলি। আমরা কারো সাথে যুদ্ধ করব না, কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত এলে আমরা চুপ করে থাকব না। সেটা নিশ্চই আমরা প্রতিরোধ করব বা প্রতিবাদ করব। সেভাবেই আমরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে গড়ে তুলি।’
নতুন গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান আপনাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব দক্ষতার সাথে পালন ও যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক হবে। আমরা চাই আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি সদস্য আন্তর্জামিক মান সম্পন্ন হবে। আমি পদবি পরিবর্তন করা থেকে শুরু করে অনেক কাজ করে দিয়েছি। যাতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমান তালে আমাদের প্রতিটি সদস্য চলতে পারে, সেই ব্যবস্থাটাই করে দিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি সত্যি জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তিনি বলেছিলেন একদিন বিদেশি বন্ধুরা আমাদের একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিতে আসবে। আজ অনেক বিদেশি বন্ধু এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এক সময় বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশে অনেক নেতিবাচক কথা ছিল। তবে এখনও কিছু কিছু লোক আছে, বাংলাদেশ সম্পর্কে বদনাম করতেই বেশি পছন্দ করে। কিন্তু আমাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের ফলে, আন্তর্জাতিক শান্তি রক্ষা এবং দেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ দমনে যে দক্ষতা দেখিয়েছি তার ফলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্বে উজ্জ্বল হয়েছে। ঠিক ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করার পর যে সম্মান আমরা আন্তর্জাতিকভাবে পেয়েছিলাম ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট পর যে সম্মান হারিয়েছিলাম আজ আবার সেই সম্মান পুনুরদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। এখন আর বাংলাদেশকে কেউ অবহেলা করতে পারে না। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্ব দরবারে মর্যাদা পেয়েছে। এই মর্যাদা ধরে রাখতে হবে।’
এসএম/এসএ/