ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতিকে যে সকল প্রস্তাব দিলো আওয়ামী লীগ
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে সংবিধান অনুযায়ী আইন করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সোমবার (১৭ জানুয়ারি) বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দশ সদস্যের প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে সংলাপে অংশগ্রহণ করেন। সেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলটির সভাপতি রাষ্ট্রপতিকে সংবিধান অনুযায়ী আইন করার প্রস্তাব তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এর কাছে আওয়ামী লীগ যে সকল প্রস্তাব দিয়েছে তা তুলে ধরা হলো-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের সংবিধান ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। রাষ্ট্রপতির দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের সুগভীর জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও সুবিবেচনার প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত যে কোন ন্যায়সঙ্গত উদ্যোগের প্রতি আমাদের পরিপূর্ণ আস্থা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত মূল বিধানাবলী দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানেই (অনুচ্ছেদ ১১৮-১২৬) উল্লেখ রয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারগণের নিয়োগের বিষয়ে আজকের বৈঠকে আমরা কয়েকটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছি (ক) সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮-এর বিধান অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগদান করবেন।
(খ) প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করবেন, সেই প্রক্রিয়ায় তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দান করবেন।
(গ) প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের লক্ষ্যে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮-এর বিধান সাপেক্ষে একটি উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে। বর্তমানে এই ধরনের কোন আইন না থাকায় সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারগণের নিয়োগের ক্ষেত্রে সংবিধান ব্যতিরেকে অন্য কোন আইন প্রতিপালনের বাধ্যবাধকতা নেই। তবে সাংবিধানিক চেতনা সমুন্নত রাখতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারগণের যোগ্যতা-অযোগ্যতা এবং তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নির্ধারণের লক্ষ্যেই মূলত এই আইনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে যে কোনো আইন হবে সাংবিধানিক বিধান মতে একটি বিশেষ ধরনের আইন। এই বিশেষ ধরনের আইন প্রণয়নের জন্য আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কোনো সুনির্দিষ্ট উদাহরণ ছিল না। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে একটি রাজনৈতিক মতৈক্য প্রতিষ্ঠা করতে একমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি সাংবিধানিক রীতি ও রাজনৈতিক অনুশীলন (Constitutional Convention) প্রতিষ্ঠা করেছে। এই সাংবিধানিক রীতিটি হলো 'সার্চ কমিটি'/'অনুসন্ধান কমিটি গঠনের মাধ্যমে সকলের মতামত ও অংশগ্রহণের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন। এই ব্যবস্থাটি এখন পর্যন্ত দুই বার (২০১২ এবং ২০১৭) অনুশীলন করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। দুই বারই দেশের সকল রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণ এই অনুশীলনে অংশগ্রহণ করেছে। এমতাবস্থায়, এই রীতিটির আলোকে এবং এই প্রক্রিয়ালব্ধ অভিজ্ঞতা থেকে সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের আলোকে একটি আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে।
(ঘ) সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের স্বার্থে সকল নির্বাচনে অধিকতর তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
এসএম/