‘যত আসন তত যাত্রী’ নিয়মও মানা হচ্ছে না বাস-লঞ্চে
রোববার রাত পৌনে ১১টা। রামপুরা অভিমুখী ‘স্বাধীন’ বাসের মধ্যে গাদাগাদি করে মানুষ যাচ্ছেন। দেখে বোঝার উপায় নেই দেশে করোনার বিধিনিষেধ চলছে। একই অবস্থা দেখা গেল ‘বিকল্প পরিবহনের’ একটি বাসে। বিকেল ৫টার দিকে ফার্মগেট থেকে কারওয়ানবাজার অভিমুখী বাসটিতে দেখা গেল যাত্রীতে ঠাসাঠাসি।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরণ অমিক্রনের বিস্তার ঠেকাতে ১১ দফা সরকারি বিধিনিষেধের ৬ষ্ঠ দফায় উল্লেখ আছে গণপাবিহনে অর্ধেক যাত্রী নেওয়ার বিষয়টি। সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলা ট্রেন বিধিনিষেধ অনুযায়ী অর্ধেক যাত্রী নিয়েই চলছে।
কিন্তু বাস ও লঞ্চ মালিকরা নির্দেশনা মানেননি। তাদের একটাই কথা অর্ধেক যাত্রী নিলে ভাড়া বাড়াতে হবে। কিন্তু সরকার ভাড়া বাড়াতে রাজি নয়। এখন পর্যন্ত সরকার এ ব্যপারে কোনো লিখিত কোনো নির্দেশনা দেয়নি। তাই বিধিনিষেধ মেনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করার কথা। কিন্তু বাস ও লঞ্চ মালিকরা আগের মতোই শতভাগ আসনে যাত্রী পরিবহন করছেন।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ ঢাকাপ্রকাশ’কে বলেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) মৌখিকভাবে আমাদের বলেছেন শতভাগ যাত্রী নেওয়ার জন্য। আমরা সেভাবেই চলছি। বিআরটিএ শুধু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে বলেছে।
কিন্তু অনেক বাস শতভাগ নয়, আসনের বাইরে দাঁড়িয়েও যাত্রী নিচ্ছে কেন এমন প্রশ্নের জবাবে খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ বলেন, আমরা অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেই। যদিও এবিষয়ে জানতে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদারের ফোনে যোগাযোগ করা হলেও বক্তব্য জাানা যায়নি।
মাইকিং করে কাজ শেষ করছে বিআইডব্লিউটিএ
সদরঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চগুলো কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। সদরঘাটে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিটিএ) উদ্যোগে মাইকিং করতে গেল শনিবার (১৬ জানুয়ারি)। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মানতে তেমন কোনো উদ্যোগ বিআইডব্লিউটিএ বা লঞ্চ মালিক সমিতির পক্ষ থেকে দেখা যায়নি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যাত্রীদের কোনোভাবেই মাস্ক পরার বিষয়টি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। লঞ্চে জীবানুনাশক স্প্রে থাকলেও তার ব্যবহার তেমনভাবে চোখে পড়ল না। এছাড়া মাস্ক নাই যেসব যাত্রীর সেসব যাত্রীকে লঞ্চ থেকে মাস্ক সরবরাহেরও কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী ঢাকাপ্রকাশ’কে বলেন, ‘আমাদের দাবি ছিল 'যত আসন তত যাত্রী' পদ্ধতিতে গণপরিবহনে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরনের। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে আসন সংখ্যার বেশি আসনে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধিও মানা হচ্ছে না।’
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের আরও যে দাবি ছিল তাহলো-সংক্রমন প্রতিরোধে গণপরিবহনের যাত্রী, চালক-সহকারীর সকলকে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরনে বাধ্য করা, যাত্রী উঠা-নামাকালে হ্যান্ড সেনিটাইজার ব্যবহার করা, একজন যাত্রী নামার পর তার আসনে জীবানুনাশক ব্যবহার, যানবাহন চালুর আগে জীবানুনাশক ব্যবহার করা ইত্যাদি। সেসবও মানা হচ্ছে না।’
আরইউ/