অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ

সরকারি কর্মচারীদের নতুন পে-স্কেল নিয়ে জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. আকতার হোসেন।
রবিবার (১৫ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে আকতার হোসেন বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের জন্য বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট প্রদান সরকারের একটি চলমান প্রক্রিয়া। এর সঙ্গে নতুন পে-স্কেল প্রদানের কোনো সম্পর্ক নেই।
প্রতি পাঁচ বছর পরপর বিদ্যমান বাজার মূল্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নতুন পে-স্কেল প্রদান করা হয়। কিন্তু দুঃখজনক সর্বশেষ অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেল ঘোষণার প্রাক্কালে আমরা পুনরায় বৈষম্যের শিকার হলাম।
বেতন দ্বিগুণ করার ঘোষণা দিয়ে একদিকে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করা হলো, অন্যদিকে এ ঘোষণার আড়ালে দীর্ঘদিনের প্রচলিত টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড প্রথা বাতিল করে ঠকানো হলো কর্মচারীদের।
শুধু তাই নয় অতীতের নিয়মিত ৩টি টাইম স্কেল পেয়ে ১৬ তম বছরে আমাদের বেতন বৃদ্ধির তুলনায় বর্তমান নিয়মে ১৬তম বছরে আমাদেরকে উল্টো আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন করা হলো।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ১৫ সালের পরবর্তী সাত বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও বর্তমান বাজার মূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে নিম্ন আয়ের কর্মচারীরা অতি কষ্টে জীবনযাপন করছে।
বর্তমান বৈষম্য দূরীকরণ এবং কর্মচারী সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের নিকট বহু আবেদন-নিবেদনের প্রেক্ষিতে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বিষয়টি উপলব্ধি করে বৈষম্য নিরসনের জন্য এবং নতুন পে স্কেলের একটি প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন। দুর্ভাগ্য যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ হতে প্রেরিত প্রস্তাবটি আজও আলোর মুখ দেখেনি।
এ নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা এবং ক্ষোভ বিরাজ করে আসছে। এই অবস্থায় জাতীয় সংসদে দেওয়া অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে সারাদেশের প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ এবং হতাশা আরো বেড়ে গেছে ।
আকতার হোসেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্মচারীদের সুখ-দুঃখের কথা চিন্তা করে ১৯৭২ সনে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি করেন এবং ১৯৭৩ সনে শত শত বেতন স্কেল কে বিলুপ্ত করে বঙ্গবন্ধুর সরকার প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের জন্য ১০টি গ্রেডের একটি সুষম বেতন কাঠামো উপহার দিয়েছিলেন।
কিন্তু দুর্ভাগ্য ১৯৭৫ সালে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের। তারপর থেকেই কর্মচারীদের ভাগ্যে নেমে আসে অন্ধকারের ছায়া। সেই অন্ধকার থেকে আজ পর্যন্ত কর্মচারীরা আলোর মুখ দেখতে পায়নি।
আমরা আশাবাদী ছিলাম হয়তোবা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের অন্ধকার থেকে আলোর মুখ দেখাবেন। কিন্তু আমাদের দেখা স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল।
তিনি বলেন, তবু আমি আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বিষয়টি নিয়ে অতি দ্রুত একটি সিদ্ধান্ত নিবেন । প্রজাতন্ত্রের সাধারণ কর্মচারীদের অবজ্ঞা আর বঞ্চনা অবসানের লক্ষ্যে সকলকে এক হয়ে বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
প্রসঙ্গত, অর্থমন্ত্রী গত ১০ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে দেওয়া বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আহম মোস্তফা কামাল বলেন, নতুন পে স্কেলের কোন পরিকল্পনা সরকারের এই মুহূর্তে নেই।
এনএইচবি/এমএমএ/
