ড্যাপকে বাস্তবতার আলোকে সমন্বয় করতে রাজউকের প্রতি আহ্বান

পরিকল্পিত আবাসন ও উন্নত রাজধানী গড়তে নতুন পরিকল্পনার (ড্যাপ) অনুমোদন দিয়েছে সরকার। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকের নতুন এই পরিকল্পনায় টেকসই নগরায়ন বান্ধব উদ্যোগ থাকলেও আবাসন শিল্পের জন্য বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। টেকসই নগরায়ন নিশ্চিতে ড্যাপকে বাস্তবতার আলোকে সমন্বয় করতে রাজউকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
রবিবার (নভেম্বর ২৭) মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত স্ট্যান্ডিং কমিটি অন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিংয়ের দ্বিতীয় সভায় আবাসন খাতের উদ্যোক্তারা জানান, নতুন ড্যাপে রাস্তার প্রশস্ততার অনুপাতে ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর) নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে আগে যেখানে প্রশস্ত রাস্তা না থাকলেও ৮ থেকে ১০তলা ভবন নির্মাণ করা যেত এখন সেখানে অনুমোদন পাওয়া যাবে ৪ থেকে ৫ তলার। এ কারণে স্বল্প প্রস্থের রাস্তার পাশের জমির মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বৈষম্যের শিকার হবেন আবাসন ব্যবসায়ীরাও। এমন অবস্থায় শিল্পটি ক্ষতির মুখে পড়বে।
বৈঠকে জানানো হয়, আগে রাজধানীতে জমির নিবন্ধন ফি নির্ধারণ হতো মৌজার দর অনুযায়ী। নতুন ড্যাপে সেটিকে পরিবর্তন করে বাজার মূল্য অনুযায়ী নির্ধারণের বিধান করা হয়েছে। যেটিকেও আবাসন শিল্পের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন উদ্যোক্তারা।
বৈঠকে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন জানান, আবাসন খাতের সংকট নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ রয়েছে। এ সময় নিজেদের ধারণা সমৃদ্ধ করতে আবাসন ব্যবসায়ীদের ড্যাপ বিষয়ে গভীর বিশ্লেষণের পরামর্শ দেন তিনি। অন্যদিকে টেকসই নগরায়ন নিশ্চিতে ড্যাপকে বাস্তবতার আলোকে সমন্বয় করতে রাজউকের প্রতি আহ্বান জানান।
কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ এবং রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, ‘ড্যাপে বেশ কিছু ভালো দিক রয়েছে। তবে আবাসন খাতের জন্য কিছু জটিলতা থেকে গেছে। এসব বিষয়ে সমাধানে আসতে রাজউক, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে রিহ্যাব।’
এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি আমিন হেলালী বলেন, ‘এই বৈঠকের আলোচ্য বিষয়গুলো নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে তুলে ধরা আমাদের কাজ। আবাসন শিল্পের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সমিতির সঙ্গে সুনির্দিষ্ট সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি আবাসন খাতের অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে রিহ্যাবের প্রতি আহ্বান তিনি।
কমিটির চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, ‘বর্তমানে নির্মাণ সামগ্রীর উচ্চ মূল্যের কারণে এমনিতেই সংকটে রয়েছে আবাসন খাত। তার সাথে যুক্ত হয়েছে নতুন ড্যাপ নিয়ে শঙ্কা। আবাসন ব্যবসায়ীরা ড্যাপের বিরুদ্ধে নয়। তাদের আপত্তি কেবল টেকসই নগরায়ন এবং আবাসন খাতের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয়গুলো নিয়ে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র পরিচালক এম জি আর নাসির মজুমদার, শফিকুল ইসলাম ভরসা, বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, হাফেজ হারুন, আবু মোতালেব, আক্কাস মাহমুদ, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, কমিটির কো-চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন জিটু, মোহাম্মদ আলী দ্বীন, কামাল মাহমুদ, এ.এফ.এম ওবায়দুল্লাহসহ অন্যরা।
জেডএ/এসআইএইচ
