'টাকা ব্যাংকে রাখবেন কি না সেটা আপনাদের উপর'

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা ও তার পরিবারের সদস্যদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা শুধু একটি হত্যাকাণ্ড নয়, এটি ছিল স্বাধীনতার ওপর আঘাত। অথচ সেই হত্যার বিচার করা যাবে না বলে 'ইমডেমনিটি অধ্যাদেশ' করা হয়েছিলো। ৮১ সালে আমি যখন দেশে ফিরে আসি তখন মামলা করার কোন অধিকার ছিল না, আমার মামলা নেয়া হয়নি।
আজ শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের জাতীয় সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, পঁচাত্তরের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর অবৈধভাবে ক্ষমতার পালাবদলের মাধ্যমে বিচারের পথ বন্ধ করা হয়। রাজনীতির সুযোগ দেওয়া হয় স্বাধীনতাবিরোধীদের। আমরা ক্ষমতায় আসার পর সব রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের বিচার করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, এখনো কিছু খুনির শাস্তি নিশ্চিত হয়নি। একজন খুনি আমেরিকায়, আরেকজন কানাডায়, দুই জন পাকিস্তানে। আরেকজনের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। আমেরিকা একজন খুনিকে লালন-পালন করছে। অবশ্য আমেরিকার আচরণই এ রকম। তার পরও আমাদের প্রচেষ্টা আছে, তাদের ধরে এনে যেভাবেই হোক শাস্তি নিশ্চিত করব। এটাই আমি চাই।
তিনি বলেন, পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের পরই ইতিহাস বিকৃতি শুরু হয়। বঙ্গবন্ধুর নাম-নিশানা মুছে ফেলার চেষ্টা হয়। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও জয় বাংলা স্লোগানও নিষিদ্ধ হয়ে যায়। অবৈধভাবে হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখলের অপচেষ্টা হয়। জাতির পিতার করে দেওয়া সংবিধানও ক্ষত-বিক্ষত করা হয়।
রিজার্ভ নিয়ে তিনি আরও বলেন, রিজার্ভ নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। গ্রামে-গঞ্জেও এটা নিয়ে কথা হচ্ছে। অনেকে ভয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বাড়িতে রাখছেন। এতে বরং চোরকে সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। এখন আপনারা চোরের হাতে টাকা তুলে দেবেন, না ব্যাংকে রাখবেন সেটা নির্ভর করছে আপনাদের ওপর। রিজার্ভ হলো, আমাদের চাহিদা মিটিয়ে কমপক্ষে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সক্ষমতা।
জাতির পিতা তো যাত্রা শুরু করেছিলেন শূন্য রিজার্ভ নিয়ে। তারপরও তিনি এ দেশটাকে গড়ে তুলেছিলেন। আমাদের আমলে রিজার্ভ প্রায় ৪৮ ভাগে উঠে গিয়েছিল। আমরা যেসব ঋণ নিয়েছিলাম তা শোধ করেছি। কিন্তু বাংলাদেশের রিজার্ভ বর্তমানে যা আছে তাতে তিন মাস নয়, অন্তত পাঁচ মাসের আমদানি খরচ মেটানো সম্ভব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যার যেখানে যতটুকু জমি আছে তার এক ইঞ্চি জমিও ফেলে রাখবেন না। যে যা পারেন উৎপাদন করুন। নিজেরটা নিজে উৎপাদন করুন। চিকিৎসকদের প্রতিও আহ্বান জানাই, আপনাদেরও জমি জায়গা হয়তো কিছু আছে। সেগুলোতে যাতে ফসল হয় তরি-তরকারি হয় তার ব্যবস্থা নেন। আমরা নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অনেক দেশকে সাহায্য করতে পারি। আমরা একসাথে একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করেছি। সেখানে খাদ্যপ্রক্রিয়াজাত শিল্প করার ব্যাপারে গুরুত্ব দিচ্ছি। জাতির পিতা বলে গেছেন, বাংলাদেশের মানুষকে কেউ দাবায়া রাখতে পারবে না।
এর আগে বিকেল তিনটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সম্মেলনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বেলুন ও পতাকা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও উপস্থিত ছিলেন।
এএজেড
