সুসাংবাদিকতার প্রত্যয়ে ঢাকাপ্রকাশ-এর আত্মপ্রকাশ
পাঠকের আস্থা অর্জনের মধ্য দিয়ে ঢাকাপ্রকাশ শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করবে: স্পিকার
পাঠকের আস্থা অর্জনের মধ্য দিয়েই ঢাকাপ্রকাশ তাদের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে আপনার ব্যক্তিগত কোনো পছন্দ-অপছন্দ যেন কোনো ঘটনাকে প্রভাবিত না করে সেভাবে সংবাদ উপস্থাপন করবেন তাহলেই সেটি বস্তুনিষ্ট হবে।
স্পিকার বলেন, ‘আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ দিয়ে তথ্য প্রভাবিত হলে সেটি হয়তো সাবজেকটিভ হয়ে যাবে অথবা একপেশে হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে সেটির অবজেকটিভিটিটা হারিয়ে যাবে। আমি সব সময় মনে করি, যারা সংবাদ পড়বেন, যারা এই অনলাইনে যুক্ত হয়ে ঢাকাপ্রকাশ-এর খবরগুলো দেখবেন তাদের দৃষ্টিভঙ্গি, তাদের চাওয়া-পাওয়া, তাদের প্রত্যাশা পূরণ হওয়া খুব জরুরি। ঢাকাপ্রকাশ সেই বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
বুধবার মাল্টিমিডিয়া নিউজ পোর্টাল ঢাকাপ্রকাশ-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার এ কথা বলেন। বক্তৃতা শেষে স্পিকার ঢাকাপ্রকাশ-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও সাংবাদিক, লেখক, কবি-সাহিত্যিক, অভিনয়শিল্পী, সংগীত শিল্পী ও সুধী সমাজের প্রতিনিধিগণ।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘আজ একটি বিশেষ সময়ে আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে প্রথম দিনে। ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে আজকের দিনটি।’
তিনি বলেন, ‘সততাই শক্তি সুসাংবাদিকতায় মুক্তি এই প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে ঢাকাপ্রকাশ যাত্রা শুরু করেছে এবং কেনো তারা এই বিশেষ প্রতিপাদ্যকে বেছে নিয়েছেন? সেই বিষয়টি এই পত্রিকার সম্পাদক বলেছেন। সততাই শক্তি এই কথাটি কিন্তু শাশ্বত সত্য সকল ক্ষেত্রে, পাশাপাশি এটিও সত্য যে, কঠিনেরে ভালবাসি। যখনই সততার পক্ষে আপনার অবস্থান তখেই তার সঙ্গে এটিও মনে রাখতে হবে যে, সেই সততা এবং সত্য কঠিনের পথটিই আপনি বেছে নিয়েছেন। সেটি প্রকাশের স্বার্থে যদি কোনো চ্যালেঞ্জ আপনাকে মোকাবেলা করতে হয় বা চ্যালেঞ্জের সন্মুখীন হতে হয় তাহলে তা হতেও আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে।’
স্পিকার আরও বলেন, ‘বর্তমান যে তথ্য প্রবাহের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি এবং বিশ্বায়নের যুগে সেখানে সবার হাতে স্মার্টফোন, সেল ফোন, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে প্রযুক্তি। তার মানে আমরা সমগ্র বিশ্বে একটা বড় নেটওয়ার্কের বেড়াজালে আবদ্ধ। আমরা চাইলেও সেখান থেকে বের হতে পারি না। সে কারণে প্রতি মুহূর্তের সংবাদ কোথায় কি হচ্ছে, কখন কোথায় কি ঘটছে, মুহূর্তের মধ্যে আমাদের সামনে চলে আসে। সেটি কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান হোক বা কারো মৃত্যু দিবসে দোয়া মাহফিল হোক। আমাদের অফিসের কাজেই থাকি অর্থাৎ সংবাদকে অবজ্ঞা করার আজ আর কোনো সুযোগ নেই। এখন আর কোনো খবর পাড়ার জন্য পরদিন সকাল পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হয় না।’
তিনি বলেন, ‘আগের দিনই আপনি আগামীকালের অনেক খবর জেনে ফেলতে পারছেন। তথ্য-প্রযুক্তির কল্যাণে সংবাদের এই ধারাটি সম্ভব হয়েছে। সে কারণে সংবাদগুলোর যথার্থতা, বস্তুনিষ্টতা এবং সততা গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এখানে বলা হয়েছে, সংবাদ মানে কোনো একটি বিষয়ে তথ্য দেওয়া। এই তথ্যের মাধ্যমে আমরা একটি সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমি সকাল বেলা বের হব কি-না? আবহাওয়া বার্তাটা যদি দেখে বের হই তাহলে সকালে ছাতা নিয়ে বের হব কি-না? বৃষ্টি নামবে কি-না? এই বিষয়টা কিন্তু তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে পারব। এখন আবহাওয়া বার্তাটি ঠিক না হলে আমি যে প্রস্তুতিটি গ্রহণ করছি সেটিও ঠিক হবে না। মানুষকে যে সংবাদপত্রের মাধ্যমে বা অনলাইন পত্রিকার মাধ্যমে আপনি তথ্য পরিবেশন করছেন সেটির যথার্থতা খুবই জরুরি। সেটির সঠিক এবং বস্তুনিষ্টতা খুবই জরুরি।
তিনি আরও বলেন, যাদের জন্য আপনি সংবাদ প্রকাশ করছেন তারা কি বলতে চায়? তারা কি জানতে চায়, তাদের আগ্রহের বিষগুলোর ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। তাহলেই আজকের এই প্রতিযোগিতার যুগে আপনার পত্রিকাতে কেনো একজন পাঠক যুক্ত হবে। অর্থাৎ পাঠকের কাছে চয়েজ আছে। কাজেই কোন অনলাইন পত্রিকায় যুক্ত হবে যেটি পড়ে তার প্রত্যাশার জায়গা পূরণ হবে, তিনি কিন্তু সেটিই পড়ছেন। কাজেই ঢাকাপ্রকাশ মূল জায়গায় স্থান করে নিতে চাইলে বস্তুনিষ্ঠতাটি ঠিক রাখতে হবে। তরুণ প্রজন্ম কি চায়, তারা কি পড়তে চায়, কি দেখতে চায় সেগুলো গুরুত্ব দিতে হবে।
স্পিকার বলেন, ‘সঠিক খবর প্রকাশ, বস্তুনিষ্ঠ খবর পরিবেশন করা, দাঁয়িত্বশীলতার সঙ্গে খবর পরিবেশন করার বিষয়টি মনে রাখবে ঢাকাপ্রকাশ এবং জনকল্যাণের খবর পরিবেশন করবে। যা মানুষের কল্যাণ, সমাজের কল্যাণ এবং জাতীয় জীবনের কল্যাণ বয়ে আনবে।
তিনি বলেন, ‘অনেক জায়গায় নিরপেক্ষতার বিষয়টি আসে। কিন্তু সব বিষয়ে তো আমি নিরপেক্ষ হতে চাই না। আমার জীবনে আপনার জীবনে অনেক মূল্যবোধ আছে, যার পাশে আমরা শক্ত অবস্থানে দাঁড়াতে চাই। আমাদের স্বাধীনতার চেতনা আমাদের অসাম্প্রদায়িকতার চেতনা-এইখানে তো নিরপেক্ষ থাকার সুযোগ নেই। সব সময় এর পক্ষে আমার অবস্থান। কাজেই প্রতিটি মানুষের জীবনে, প্রতিটি জাতির জীবনে এমন কিছু মূল্যবোধ আছে এমন কিছু বিশ্বাসের জায়গা আছে সেখানে নিরপেক্ষ থাকার সুযোগ নেই। সেখানে আমাকে সেই পক্ষে অবস্থান নিয়ে থাকতে হবে এবং এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকা প্রকাশের কাছে অনুরোধ আপনারা মানুষের কল্যাণে যে খবর তা পরিবশেন করবেন। আপনাদের অনলাইন পত্রিকা মানুষের কথা বলবে। মানুষের আস্থা এবং ভালবাসা অর্জন করবে এবং মানুষের আস্থা, পাঠাকের আস্থা অর্জনের মধ্য দিয়েই আপনাদের শ্রেষ্টত্ব অর্জিত হবে। আপনাদের পথ চলা শুভ হোক, সফল হোক।’
সততা ও সুসাংবাদিকতা চর্চার ব্রত নিয়ে এগুতে চায় ঢাকা প্রকাশ। এজন্য বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক ও সাংবাদিক মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে কর্মরত আছেন একঝাঁক তরুণ ও মেধাবী সাংবাদিক।
গত ১ নভেম্বর রাজধানীর একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকাপ্রকাশের লোগো উন্মোচন করা হয়। সাতজন বিশিষ্ট সম্পাদক ঢাকা প্রকাশের লোগো উন্মোচন করেন। এরপর থেকে সমাজের বিভিন্ন স্তরের শতাধিক বিশিষ্টজন ঢাকাপ্রকাশকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
সম্পূর্ণ নতুন একটি ধারা নিয়ে এসেছে ঢাকাপ্রকাশ। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ মাল্টিমিডিয়া নিউজ পোর্টাল। টেক্সট নিউজের পাশাপাশি পোর্টালটিতে থাকছে অডিও এবং ভিডিও নিউজ। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে থাকছে টকশো।
এ ছাড়া থাকবে ই-পেপার। প্রতিদিনের সংবাদ দিয়ে দিন শেষে হবে ই-পেপার। পাঠক ছাপা পত্রিকার স্বাদ পাবে ঢাকাপ্রকাশের ই-পেপারে।
এসএম/আরইউ/এএন