পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মনে বড় ব্যথা!
নানা বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সরকারি সংস্থা ও দপ্তর যখন অন্য দেশের সঙ্গে চুক্তি বা দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করে বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে না। এজন্য তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
অসন্তোষ প্রকাশ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য মন্ত্রণালয়, সংস্থা ও দপ্তর বিভিন্ন দূতাবাসের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করে। এমনকি মন্ত্রণালয়গুলো সরাসরি বিদেশ গিয়ে বিভিন্ন চুক্তি করে আসছে এবং অনেক ফরেইন অ্যাফেয়ার্স রিলেটেড ডিসিশন হচ্ছে। পরবর্তীতে কোনো জটিলতা সৃষ্টি হলে বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপর বর্তায়।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছাড়া অন্য কোনো মন্ত্রণালয় বা সংস্থা বাইরের কোনো দেশের সঙ্গে চুক্তি করার এখতিয়ার রুলস অব বিজনেসে নেই। বিষয়টি সব মন্ত্রণালয় বা সংস্থাকে অবহিত করার জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে অবহিত করা হয়েছে। বৈদেশিক অনেক বিষয় আছে যেগুলোর গোপনীয়তা রক্ষা করা প্রয়োজন। কিন্তু মন্ত্রণালয়গুলো তা করছে না। ফলে দেশ তথা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, মন্ত্রীর উত্থাপিত বিষয়গুলো সমাধান করার দায়িত্ব হচ্ছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের। তবে বিভিন্ন দূতাবাস থেকে ব্যক্তি পর্যায়ের আমন্ত্রণ পেয়ে কোনো অনুষ্ঠানে যোগদান করলে সেখানের আলোচনাগুলো অবশ্যই সৌজন্যমূলক হওয়া উচিত। তবে বিদেশি দূতাবাসের আমন্ত্রণে যোগদানের আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রয়োজনে পররাষ্ট্র থেকে পরামর্শ নিতে পারে। অনুষ্ঠান শেষে গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় থাকলে তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে পারবে।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মন্ত্রী নিজের ক্ষোভের কথাগুলো তুলে ধরেন। বৈঠকের কার্যপত্র থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দ. প্রিন্স, মো. আব্দুল মজিদ খান, মো. হাবিবে মিল্লাত, নাহিম রাজ্জাক ও কাজী নাবিল আহমেদ অংশ নেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের উপর রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয়।
কমিটি দেশে এবং বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখার লক্ষ্যে গঠনমূলক ও ইতিবাচক প্রবন্ধ, অনুচ্ছেদ প্রচার করার সুপারিশ করে।
বৈঠকে ভুটানে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়। ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারের পরামর্শ দেওয়া হয়। বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভুটানে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত, মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এসএম/এসজি