লঘুচাপ নিম্নচাপে পরিণত, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা
ঢাকাসহ সারাদেশে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পশ্চিম মধ্য-বঙ্গোপসাগর ও এর আশপাশের উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র প্রবল অবস্থায় থাকায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। পরবর্তী তিন দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহে ৩ (তিন) নম্বর (পুন:) তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত আজও বহাল রাখা হয়েছে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।
পূর্ণিমা ও বায়ুচাপের পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদুরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১ থেকে ২ ফুট অধিক
উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
সুস্পষ্ট লঘুচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভুত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আজ সকালে উপকূলীয় উড়িষ্যা ও এর কাছাকাছি উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিম মধ্য-বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে।
এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর আশপাশের এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘশালার সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। সমুদ্র বন্দরসমূহ, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, মৌসুমী বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং নিম্নচাপের কেন্দ্রস্থল বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
রবিবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝাড়ো হাওয়া ও বিজলি চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।
এদিন, সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় নেত্রকোনায় সর্বোচ্চ ৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া, চট্টগ্রামে ৭৮, সিলেট ও কুতুবদিয়ায় ৬৭, মাদারীপুরে ৬৩, হাতিয়ায় ৫৩, ময়মনসিংহে ৪২, খেপুপাড়ায় ৩৯ এবং চাঁদপুরে ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
এ সময় ঢাকায় সামান্য বৃষ্টি হয় বলে আবহাওয়া অফিস জানায়। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
রবিবার রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং কক্সবাজারে সর্বনিম্ন ২৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় আজ দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে, যা অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া আকারে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। সকালে ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৮ শতাংশ।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ৭ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৫টা ৪৪ মিনিটে।
এমএমএ/