নতুন বছরে মাদকের বিরুদ্ধে গণজাগরণ তৈরি হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন দেশে মাদকের ব্যবহার ও ব্যবসা মাদক বন্ধে নানামুখি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। মাদকের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করে তুলতে সারাদেশে একটা গণজাগরণ গড়ে তোলারও উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। ২০২২ সালে ইউনিয়ন থেকে বিভাগীয় পর্যায়ে এই জনজাগরণ শুরু করা হবে। একই সঙ্গে মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ উপদেষ্টা কমিটির দ্বিতীয় সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন একাধিক মন্ত্রী ও উপদেষ্টা কমিটির সদস্যরা।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে আমরা তিন সিস্টেম বা পদ্ধতিতে মাদক নিয়ন্ত্রণ করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। চাহিদা, সরবরাহ এবং ব্যবহার কমিয়ে আনার মাধ্যমে। এটা শুধু আমাদের দেশে নয়, সারা পৃথিবীতে এই পদ্ধতিতেই মাদক হ্রাস করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা মিডিয়াকে অনুরোধ জানাবো তারা যেন মাদকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারণা চালান। স্কুল, কলেজে বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রচারণা, মসজিদ, বিভিন্ন ধর্মীয় মাহফিল কিংবা যেকোন অনুষ্ঠানে মাদকের ক্ষতির উপর আলোচনা করার জন্য উপদেষ্টা কমিটির সভায় জোর দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সচেতনতার পাশাপাশি মাদকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান পারিচালনার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযানের সিদ্ধান্ত এসেছে। মাদকদ্রব্য নিরাময় কেন্দ্রের নাম পরিবর্তন করে চিকিৎসা ও নিরাময় কেন্দ্র করারও একটা প্রস্তাব এসেছে।
তিনি বলেন, চাকরিতে নিয়োগ দেয়ার সময় ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করারও প্রস্তাব এসেছে। যদিও এই ডোপ টেস্ট আমরা ইতিমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে শুরু করতে যাচ্ছি। এটা বাধ্যতামূলক করার জন্য প্রস্তাব এসেছে।
এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকারি সকল চাকরিতে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট সকলকে জানিয়ে দিয়েছি। কাজেই এখন থেকে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক।
তিনি বলেন, আমরা ইতিমধ্যে অনেক চাকরিজীবী বিশেষ করে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোতে যারা চাকরিরত আছেন, যারা মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করছেন তাদের মধ্যে আমরা যাকেই মাদকাসক্ত মনে করছি বা যারাই মাদকের সঙ্গে জড়িত মনে করছি বা ডোপ টেস্টের মাধ্যমে সনাক্ত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন যত ধরণের নিয়োগ হচ্ছে তাদের সবার ডোপ টেস্ট আমরা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছি।
তিনি জানান, মাদকসেবীদের চিকিৎসাসেবার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য মাদকসেবীদের চিকিৎসা সুবিধা সম্প্রসারণ করার ব্যবস্থা আরও জোরদার করার জন্য সভায় সুপারিশ করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন অনলাইনে এখন সব কিছু বিক্রি হয়। আমরা দেখতে পাচ্ছি অনলাইনে এখন মাদকও বেচাকেনা শুরু হয়েছে। সেটা কঠোরভাবে মনিটরিং করে যারা এর পিছনে আছে, যারা ব্যবসায়ী ও ক্রেতা-বিক্রেতা তাদের নজরদারি করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি জানান, সকল উৎপাদিত পণ্যের গায়ে এবং চিঠিপত্রে মাদকের বিরুদ্ধে লেখা থাকবে। ‘মাদককে না বলুন’ এই কথা লেখার জন্য উপদেষ্টা পরিষদ থেকে সুপারিশ এসেছে।
এনএইচবি/এএস
