আইরিন খানের বিবৃতি গুরুত্ব বহন করে না: তথ্যমন্ত্রী
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিষয়ে আইরিন খানের বিবৃতি গুরুত্ব বহন করে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে তিনি জোক অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তখন আমাদের দেশের যুদ্ধের পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছিল। তিনি সে সময় বিবৃতি দিয়ে বিচার কার্যক্রম বন্ধ করার দাবি জানিয়েছিলেন। যখন বাংলাদেশের ২০১৩-২০১৪ সালে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল, দিনের-পর-দিন মানুষকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল তখন তারা কোনো বিবৃতি দেয়নি।’
রবিবার (২৬ জুন)সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সভার শুরুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে সমসাময়িক বিষয়ে মতবিনিময় কালে এক প্রশ্নের জবাবে কথা বলেন তো সম্প্রচারমন্ত্রী।
এ সময় হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘আইরিন খান যখন অ্যামনেস্টির সঙ্গে জড়িত ছিলেন ইসরাইলে ফিলিস্তিনি শিশুরা ইজরায়েলের পর ঢিল চলেছে তার প্রতিত্তেরে ইসরাইলি বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে তখন কিন্তু আইরিন খান বিবৃতি দেননি।’
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের ৮০ জন রিপোর্টিয়ারের একজন আইরিন খান। যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার কথা বলেন তখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তার বিবৃতি খুব একটা গুরুত্ব বহন করে না।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হচ্ছে দেশের সব মানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। শুধু বাংলাদেশ নয় ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সব দেশ আইন করেছে।
আইরিন খান যেখানে থাকেন সেই বৃটেনেও ডিজিটাল নিরাপত্তা রিলেটেড অসংখ্য আইন আছে। এ সময় মন্ত্রী বৃটেনের বেশকিছু আইনের কথা তুলে ধরেন। এ ছাড়া ভারত-পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আইন আছে।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যে সমস্ত ধারা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় সেই সমস্ত ধারা কিন্তু পাকিস্তান ভারতে আছে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি এক হচ্ছে সব মানুষের ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য এমনকি অনেক সাংবাদিকও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আশ্রয় নিয়ে মামলা করেছেন এবং ফল পেয়েছেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, দেখতে হবে এই আইনের যেন কোনো অপপ্রয়োগ না হয়, যাতে কেউ অহেতুক নিগৃহীত না হন, কোনো সাংবাদিক যেন হয়রানির শিকার না হন, সেটি নিশ্চিত করা অবশ্যই প্রয়োজন। এর সঙ্গে আমি শতভাগ একমত।
কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সে ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে আমি নিজে থেকে প্রো-অ্যাক্টিভলি সেগুলো আমি সমাধান করার চেষ্টা করি। যখনই আমার নজরে আসে তখনই আমি চেষ্টা করি। এখন আগের মত যে কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা যায় না।
তিনি বলেন, ‘কোথায় একজন আইরিন খান একচোখা নীতি নিয়ে কি বলেছেন সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়।’
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আপনারা গত কিছুদিন ধরে পদ্মা সেতুর অনেক রিপোর্ট করেছেন।
তিনি বলেন, এই পদ্মা সেতু হত না যদি না, আমাদের একজন জননেত্রী শেখ হাসিনা না থাকতেন। তিনি সমস্ত রক্তচক্ষু, ষড়যন্ত্র, প্রতিবন্ধকতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর মাধ্যমে সৎ সাহসের সঙ্গে এই সেতু নির্মাণ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এই সেতু নির্মাণ করায় যারা এক সময় সমালোচনা করেছিল, বলেছিল এই সেতু নির্মাণ করা সম্ভব নয়, তারাও আজকে প্রশংসা করছে। জাতির এই সক্ষমতায় তারাও আনন্দিত হয়েছে। যে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু থেকে অর্থায়ন প্রত্যাহার করেছিল তাদের কান্ট্রি ডিরেক্টরও পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন। এই পদ্মা সেতু উদ্বোধন করায় যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান অভিনন্দন জানিয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য বিএনপি অভিনন্দন জানাতে পারেনি। আর এটার মাধ্যমে প্রমাণিত হল সারাদেশের মানুষ, পৃথিবীর যেসব দেশে বাংলাদেশিরা বসবাস করে তারাও আনন্দিত ছিলেন। শুধু বিএনপি প্রশংসা করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
এনএইচবি/এমএমএ/