রাত থেকেই পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের একদিন পর আজ রবিবার (২৬জুন) সকাল থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। ভোর ৬টায় টোল প্লাজা খোলার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের প্রায় ১৫ মিনিট আগেই সেটি খুলে দেওয়া হয়। স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে গাড়ি চালিয়ে পারাপার হতে গভীর রাত থেকেই সেতুর দুই পাড়ে যানবাহনের দীর্ঘ শারি পড়ে যায়।
সকাল ৬টায় পদ্মা সেতুর এবং জাজিরা প্রান্তে দেখা গেছে, শত শত যানবাহন সেতু পারাপারের জন্য টোল প্লাজা খোলার অপেক্ষায় রয়েছে। তবে চার চাকার যানবাহনের চেয়ে মোটরসাইকেলের সারি ছিল দীর্ঘ। উৎসুক সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল ব্যাপক।
সকাল ৬টার কিছুক্ষণ আগে আমির হোসেন নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী প্রথম টোল পরিশোধ করে মাওয়া থেকে জাজিরা প্রান্ত দেখে যান।
সেতুর দুই পাড়ে টোল প্লাজায় দেখা গেছে, শত শত যানবাহন সেতু পারাপারের জন্য দাঁড়িয়ে আছে। দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে সেতু অভিমুখে গাড়ির দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। সেতুটি প্রথম কে আগে পার হবেন এই প্রতিযোগিতা ছিল অপেক্ষমান যানবাহনগুলোর মধ্যে। টোলপ্লাজায় প্রচুর ভিড় থাকলেও কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা পড়েনি।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এতে বলা হয়েছিল, স্পর্শকাতর স্থাপনা পদ্মা সেতুতে গাড়ি থামানো কিংবা মোটরসাইকেল থামিয়ে ছবি তোলা যাবে না। কোনোভাবেই কোনও প্রকার গাড়ি সেতুর উপরে দাঁড়াতে পারবে না। কিন্তু যানবাহন চলাচলের জন্য সেতু খুলে দেওয়া হলে দেখা যায় সেতুর মাঝখানে গিয়ে অনেকেই ব্যক্তিগত গাড়ি থামিয়ে কিংবা মোটরসাইকেল থামিয়ে ছবি তুলছেন। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে নদী দেখছেন কেউ কেউ। সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনও তৎপরতা দেখা যায়নি।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর রবিবার সকালে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলে যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের মধ্যে উচ্ছাস দেখা যায়। তাদের চোখে-মুখে ছিল আনন্দের ঝিলিক। ফেরি যুগের অবসান ঘটিয়ে দীর্ঘ সেতু দিয়ে নদী পার হওয়া যেন তাদের কাছে সত্যিই এক বিস্ময়ের ব্যাপার।
নানা ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্নবিন্ন করে সরকার নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ কাজ শেষ করেছে। প্রায় সাত বছর নির্মাণের পর ২৫ জুন শনিবার স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সেতুটির মাওয়া প্রান্তে টোল পরিশোধ করে জাজিরা প্রান্তে যান। উদ্বোধনের একদিন পর আজ ভোর ৬টা থেকে আঁচলের জন্য খুলে দেওয়া হলো।
এনএইচবি/এসআইএইচ