‘শুধু নেই মুহিত’
দীর্ঘ ১০ বছর পর সব প্রতিবন্ধকতা পাশ কাটিয়ে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণকাজ শেষে উদ্বোধন হলো জাতির স্বপ্নের পদ্মা সেতু। ২০১১ সালে যখন পদ্মা সেতু নির্মাণের চূড়ান্ত পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল তখন অর্থমন্ত্রী ছিলেন আবুল মাল আবদুল মুহিত।
শনিবার (২৫ জুন) যখন পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলো তখন প্রধানমন্ত্রীর পাশে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন অর্থ উপদেষ্টা মসিউর রহমান, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও তৎকালীন সেতু সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। কিন্তু বাংলাদেশের সেই ঐতিহাসিক দিনে কেবল পাশে ছিলেন না সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি গত ২৯ এপ্রিল দিবাগত রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের পদত্যাগ ও প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানকে ছুটিতে পাঠানোর পর ওই বছরেই পদ্মা সেতু প্রকল্পে পুনরায় সম্পৃক্ত হওয়ার ঘোষণা দেয় বিশ্বব্যাংক। শর্তানুসারে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দুদক একটি বিশেষ অনুসন্ধান টিম গঠন করে। দুদকের কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করার জন্য বিশ্বব্যাংক তিন সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করে। এরপর ২০১২ সালের ১৪ অক্টোবর প্রথম দফা বাংলাদেশ সফরে এসে দুদকে সঙ্গে দুই দফা বৈঠক করে ও ২ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশ সফর করে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো ছাড়াই বাংলাদেশ ত্যাগ করে বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞ প্যানেল। এরপর বাংলাদেশ ২০১৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে আবেদন প্রত্যাহার করে নেয়।
২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানী থানায় (মামলা নম্বর ১৯) মোট সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলার আসামি ও পরবর্তীতে অব্যাহতি প্রাপ্তরা হলেন— সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌস, সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রিয়াজ আহমেদ জাবের, ইপিসির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মোস্তফা, কানাডীয় প্রকৌশলী প্রতিষ্ঠান এসএনসি লাভালিনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস, আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ ও প্রাক্তন পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল।
২০১৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর আদালতে উপস্থাপনযোগ্য যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত না পাওয়ায় পদ্মা সেতু দুর্নীতির ষড়যন্ত্র মামলা থেকে সাত আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন (এফআরটি) দিয়েছিল দুদক।
এসএন