সাক্ষাৎকার
পদ্মা সেতু চালু হলে ২ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে: পংকজ নাথ
পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি ধর্মীয় সংখ্যলঘুদের দেশান্তর ও জঙ্গীবাদ কমবে বলে মনে করেন জাতীয় সংসদের বরিশাল–৪ আসনের সংসদ সদস্য পংকজ নাথ। এক প্রশ্নের জবাবে সোমবার (২০ জুন) ঢাকাপ্রকাশের কাছে এই মত প্রকাশ করেন তিনি।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে সামনে রেখে সংসদ ভবনে তার দপ্তরে বসে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে সংসদ সদস্য বলেন, জঙ্গীবাদ বা ধর্মীয় সংখ্যা লঘুদের দেশান্তরের পেছনে অভাব–অনটনও দায়ী। পদ্মা সেতু্ চালু হলে প্রতিবছর ১ শতাংশ করে দারিদ্র কমবে, দেশের দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলে ব্যাপক কর্মসংস্থান হবে। কর্মসংস্থান হলে মানুষের অভাব– অনটন কমবে। আর অভাব দূর হলে মানুষের মধ্যে সহিংসতা কমবে, জঙ্গীবাদ কমবে, ধর্মীয় কারণে দেশত্যাগ করাও কমবে।
কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে প্রায় দুই কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এর ব্যাখ্যা করে দুই বারের এই সংসদ সদস্য বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় গৌরনদী ও হিজলাতেই হবে দুটি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন। এভাবে পুরো দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলে হবে নানা কলকারখানা। মোংলাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবগুলো বন্দরের কার্যক্রম বাড়বে ব্যাপকভাবে। তাছাড়া এই অঞ্চলে মাছ–সবজিসহ সবকিছুর উৎপাদন বাড়বে। সবমিলে এত মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে মনে করেন তিনি।
পংকজ নাথ বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে তা নয়। সামাজিক উন্নয়নও হবে। এর ব্যাখ্যা করে সংসদ সদস্য বলেন, একজন মানুষ যখন রোজ গ্রামের বাড়ি থেকে রাজধানীতে গিয়ে অফিস করে আবার ফিরে আসবে, তখন রোজই তার স্ত্রী, সন্তান, মা, বাবার সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ হবে। শুধু তাই নয়, লোকটি তখন পরিবারের পাশাপাশি সমাজেও অবদান রাখতে পারবে। সবমিলে পদ্মা সেতু চালু হলে শুধু অর্থনৈতিক উন্নতি হবে তা নয়, সামাজিক উন্নয়নও হবে।
তিনি বলেন, এই অঞ্চলে উৎপাদিত মাছ ও সবজিসহ যাবতীয় কাঁচা পণ্য আগে ফেরিতে আটকে নষ্ট হতো। ফলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হতো। কিন্তু পদ্মা সেতু চালু হলে আর সে সমস্যা থাকবে না, উৎপাদিত পণ্য ২–৩ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে পৌঁছে যাবে। ফলে আর লোকসান হবে না, বরং কৃষক উৎপাদিত পুরো পণ্যের দাম পাবে। তাই কৃষক উৎপাদনে আরও মনোযোগী হবে।
এদিকে ফেরিতে পণ্য পচে যাওয়া ঠেকানোর চেষ্টা হিসেবে কেউ কেউ মাছ–সবজিতে রাসায়নিক প্রয়োগ করতো। যা প্রান্তিক ভোক্তার জন্য ছিল ক্ষতিকর। কিন্তু এখন ফেরিতে পণ্য নষ্ট হওয়ার ভয় না থাকাতে রাসায়নিক প্রয়োগের কারণ নেই। ফলে প্রান্তিক ভোক্তার স্বাস্থ্যহানির ঝুঁকিও নেই।
সাক্ষাৎকারে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন জনসমাবেশে উৎসুক মানুষের সমাবেশ ঘটাতে তার সংসদীয় এলাকায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। সংসদ সদস্য বলেন, এটি জনসমাবেশ নয়, এটি হবে উৎসব–প্রাণের মেলা।
এমএ/