বাংলাদেশ-ইইউ সংলাপ
মানবাধিকার-গণতন্ত্র মূল এজেন্ডা
মানবাধিকার, গণতন্ত্র, রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতি ও কানেকটিভিটি ইস্যুতে আলোচনা হবে বাংলাদেশ ও ইইউ রাজনৈতিক সংলাপে। আগামী ২৮ জুন ব্রাসেলসে এ সংলাপ হওয়ার কথা রয়েছে।
বাংলদেশ ও ২৭ ইউরোপীয় রাষ্ট্রের সংগঠন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মধ্যে প্রথম এ রাজনৈতিক সংলাপে মূল এজেন্ডা থাকবে মানবাধিকার, গণতন্ত্র, রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতি ও কানেকটিভিটি। আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগে ইইউয়ের সঙ্গে এ রাজনৈতিক সংলাপকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত বছরের অক্টোবরে ব্রাসেলসে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সফরকালে এ রাজনৈতিক সংলাপের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। সংলাপে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং ইইউয়ের পক্ষে ডেপুটি সেক্রেটারি-জেনারেল এনরিকে মোরা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন সময় চীন, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপ হলেও ইইউয়ের সঙ্গে এবারই প্রথম। সেকারণে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। গণতন্ত্র, সুশাসন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নির্বাচন প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। আর ইইউয়ের পক্ষ থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতি উত্থাপন করা হতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইইউ বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার। বাংলাদেশের মোট বাণিজ্যের ২৪ শতাংশ হয় ইইউয়ের সঙ্গে। সেই দিক থেকেও বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ থেকে ইইউতে রপ্তানি করা পণ্যের ৯০ শতাংশই তৈরি পোশাক। ইইউ থেকে আমদানি করা পণ্যের ৪৯ শতাংশই যন্ত্রপাতি ও পরিবহন সরঞ্জাম।
সম্প্রতি বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ইইউ। বিষয়গুলো সুরাহার জন্য জবাবদিহি নিশ্চিত করতেও তাগিদ দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এর আগে ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও ইইউ যৌথ কমিশনের দশম বৈঠকে মানবাধিকার নিয়ে এমন উদ্বেগ জানানো হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সংবিধান অনুযায়ী মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে অঙ্গীকার করা হয়।
এ ছাড়া বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার তাগিদ দিয়েছে ইইউ। ব্রাসেলসের ওই বৈঠকেও অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা হয়।
সংলাপে আঞ্চলিক ইস্যুও যথেষ্ট প্রাধান্য পাবে। ইইউ চায় বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজিতে যোগ দিক। সম্প্রতি ঢাকা সফর করে ইইউয়ের বিশেষ দূত গ্যাব্রিয়েল ভিসেনটিন সাংবাদিকদের একথা জানান।
জানা যায়, রাজনৈতিক সংলাপের পর ১৮ থেকে ২০ জুলাই ইইউ পার্লামেন্টের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করবে। এ সফর মূলত শ্রম অধিকার ও বাণিজ্য নিয়ে।
এ প্রসঙ্গে ইইউয়ের পক্ষে ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল এনরিকে মোরা বলেন, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির গতি ও আত্মবিশ্বাসকে স্বীকার করে ইইউ। যৌথ স্বার্থের বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে আরও যুক্ত হওয়ার জন্য উন্মুখ ইইউ।
আরইউ/এনএইচবি/এসএন