কুসিক নির্বাচন নিয়ে ইসির ব্যাখ্যা
ইভিএম-এ ফল পাল্টানো সম্ভব নয়
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ফল পাল্টে দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রবিবার (১৯ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় ইসি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, নিবন্ধ এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে পরিবেশিত তথ্য ও সংবাদে কতিপয় বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তির উদ্রেক হতে পারে বিধায় কমিশনের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা ও বিবৃতি প্রদান আবশ্যক মনে হয়েছে।
১৫ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় উত্তীর্ণ হওয়ার পর রিটার্নিং অফিসারের পক্ষ থেকে বেসরকারি ফলাফল প্রকাশের শেষ পর্যায়ে দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে হঠাৎ করে উত্তেজনা, স্লোগান-পাল্টা স্লোগান ও হাতাহাতি হলে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়। এতে রিটার্নিং অফিসার নির্বিঘ্নে চূড়ান্ত ফল প্রকাশে বাধাঁপ্রাপ্ত হচ্ছিলেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্রুত হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। কোনো কোনো (সকল নয়) পত্র-পত্রিকার নিবন্ধ এবং সোস্যাল মিডিয়াতে বক্তারা এই সময়কে এক বা দেড় ঘণ্টার বিলম্ব বলে রহস্য, অঘটন ইত্যাদির ইংগিত করার চেষ্টা করেছেন। বিষয়টি মোটেই তা ছিল না। বিরাজিত অবস্থায় চূড়ান্ত ফল প্রকাশে উল্লখিত কারণে কম-বেশি ১৫/২০ মিনিট বিলম্ব হয়েছিল।
মাত্র ৩৪৩ ভোটে পরাজিত প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর পক্ষে জনৈক ব্যক্তি ফলাফল ঘোষণার চূড়ান্ত পর্যায়ে একটি টেলিফোন কলে ফলাফল পাল্টে দেয়া হয়েছে মর্মে বক্তব্য দিয়েছেন। এতে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে অনাকাঙ্খিত বিতর্ক সৃষ্টির অপপ্রয়াস হয়েছে। ফলাফল প্রকাশের শেষ পর্যায়ে ইভিএমে ধারণকৃত ফলাফল পাল্টে দেয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১০৫টি কেন্দ্রের ফলাফল কেন্দ্রেই ঘোষণা করা হয়েছে এবং কেন্দ্রভিত্তিক ইভিএম থেকে মুদ্রিত ফলাফল এবং প্রার্থীদের এজেন্টরা এবং প্রিজাইডিং অফিসার কর্তৃক স্বাক্ষরিত ফলাফলের সকল কপি প্রার্থীদের এজেন্টগণকে সরবরাহ করা হয়েছে। পরবর্তীতে প্রিজাইডিং অফিসার নিজে রিটার্নিং অফিসারের কাছে এসে একটি কপি সরবরাহ করেন। রিটার্নিং অফিসার একত্রিকরণ করে ফলাফল ঘোষণা করেন। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র প্রার্থীদের ইভিএম থেকে মুদ্রিত সকল কেন্দ্রের ফলাফল এবং প্রার্থীর এজেন্ট এবং প্রিসাইডিং অফিসার এর স্বাক্ষরিত ফলাফলের কপি (ফরম-ঞ) কমিশনের ওয়েবসাইটে (www.ecs.gov.bd) আপলোড করা হয়েছে।
নির্বাচনকে নির্বিঘ্ন ও স্বচ্ছ করতে প্রথমবারের মত প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি ব্যবহার করা হয়েছে। নির্বাচনকে অধিকতর নিরপেক্ষ করার উদ্দেশ্যে সিটি করপোরেশন এলাকায় কর্মরত নির্বাচন
কর্মকর্তাদের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব না দিয়ে বাহির থেকে কর্ম কর্তকর্তাদেরকে সাময়িকভাবে এনে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল। নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীদের তথ্য ধারণ ও পরিবেশনের জন্য অবাধ সুযোগ দেয়া হয়েছে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সহিংসতার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ভোটারদের উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মত ছিল। ৫৯% ভোটের হারকে কেউ কেউ কম বলে গণমাধ্যমে সমালোচনা করেছেন। ইভিএমে কারো পক্ষে দুবার বা অপরের ভোট প্রদান করা কোনোভাবেই সম্ভব নয় বিধায় ব্যালটে ভোটের চেয়ে কম হতে পারে।