যাদের এনআইডি আছে তাদের ট্যাক্স রিটার্ণ পেশ করতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রাজস্ব বাড়াতে নতুন ফর্মুলা দিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, আমার প্রস্তাব যাদেরই এনআইডি আছে প্রত্যেকেই ট্যাক্স রিটার্ণ পেশ করবে। আর যাদের টিআইএন নম্বর আছে তারা কর্পোরেট ‘করপোরেশন’ হিসেবে ট্যাক্স প্রদান করবে। এই ব্যবস্থা যদি চালু করতে পারি আমদের ট্যাক্সের পরিধিও বাড়বে, সেই সাথে আয়ও বাড়বে।
বুধবার (১৫ জুন) বিকালে সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার শান্তিকামী দর্শন সবার সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয় বুকে ধারণ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার সকল কূটনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিবর্তনশীল আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর দুরদর্শী ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশের জন্য একটি সমন্বিত ও কার্যকর পররাষ্ট্র নীতি পরিচালনার মাধ্যমে বিশ্ব পরিমন্ডলে বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ ও ভাবমুর্তি সমুন্নতকরণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বদ্ধপরিকর। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জলবায়ু পরিবর্তন অভিবাসন টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ঠ লক্ষ্য রোহিঙ্গা ইত্যাদি ইস্যুতি বাংলাদেশ বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক কার্যক্রম অধিকতর দৃশ্যমান।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তি উদযাপনের অংশ হিসেবে ঢাকায় দুই দিনব্যাপী বিশ্ব শান্তি সম্মেলন ২০২১ আয়োজন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর শান্তিকামী দর্শনের আলোকে সামাজিক অন্তবর্তির মাধ্যমে শান্তিকে এগিয়ে নিযে যাওয়া এই মূল প্রতিপাদ্য সামনে রেখে সম্মেলনে গৃহিত ১৬তম ঢাকা ঘোষণায় সব রকম সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা করা হয় এবং সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ও মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার আহ্বান জানানো হয়।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবে রূপদানের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অর্থনৈতিক কূটনৈতিক কার্যক্রমকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রাপ্ত ব্যয় খাত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। করোনাকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পিপিই রপ্তানি সবজি রপ্তানিসহ বিভিন্ন ধরণের অপ্রচলিত পণ্যে রপ্তানির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। তাছাড়া কোভিডের সময় আমাদের আরএমজি রপ্তানি সচল রাখা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কারণে সম্ভব হয়েছে। শ্রম বাজার সম্প্রসারণ ও নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
মন্ত্রী বলেন, কোভিড ১৯ স্বত্ত্বেও দক্ষিণ এশিয়ায় অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে কর্মী প্রত্যাহার কম হয়েছে। করোনা অতিমারির কারণে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে দক্ষিণ কোরিয়া, জর্ডান, মালদ্বীপ, লেবাবন, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, গ্রীস, সৌদি আরব, বাহরাইন ও কাতারে কর্মী গ্রহণ ও গমন প্রক্রিয়া সচল রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে নতুন শ্রমবাজার হিসেবে রোমানিয়ায় কর্মী পাঠানো শুরু হয়েছে। সার্বিয়ায় শ্রম বাজার সম্প্রসারণ প্রক্রিয়াধিন আছে। তাছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সঙ্গে ব্যবসা বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় এবং এই উদ্যোগুলো আশাব্যঞ্জক।
নিজ নির্বাচনী এলাকা সিলেটে সাম্প্রতি সময়ে ঘটে যাওয়া বন্যা নিয়ে বলেন, সিলেটে বন্যা হয়েছে।পানি আমাদের দেশের সম্পদ। তবেএবারের বন্যায় আমাদের শিক্ষা দিয়ে গেলো এখন থেকে প্রতিরোধের ব্যবস্থা করতে না পারলে এটি ভবিষতে ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। সিলেটের সুরম কুশিয়ারাসহ সকল নদ নদীর নাব্যতা সৃষ্টির জন্য ড্রেজিংসহ নদীর তীরবর্তী অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করণের প্রয়োজনীয় প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে বাস্তবায়ন করতে হবে।
সিলেটের উন্নয়নে বড় ভাই সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের অবদান তুলে ধরে বলেন, আমার বড় ভাই মৃত্যুর এক মাস আগে প্রধানমন্ত্রীর সমীপে একটা পত্র প্রেরণ করেছিলেন। সেই পত্রে সিলেটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কমপ্লেক্স নির্মাণের কথা লিখেছিলেন। কিন্তু সেই প্রকল্প সিটি করপোরেশন এখনও অনুমোদন দেয়নি। এটি দ্রুত বাস্তবায়ন করলে আমার ভাইয়ের আত্মা শান্তি পাবে।
এসএম/