কুসিক নির্বাচন
ইসি আংশিক সফল, আংশিক বিফল: বদিউল আলম মজুমদার
সদ্য সমাপ্ত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তবে এই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আংশিক সফল এবং আংশিক বিফল হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হওয়ার পর তাৎক্ষণিক পর্যবেক্ষণ জানতে চাইলে ঢাকাপ্রকাশের সঙ্গে এসব কথা বলেন তিনি।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আপাতদৃষ্টিতে নির্বাচন ভালো হয়েছে বলে মনে হয়। যদিও আপাতদৃষ্টিতে যা দেখা যায়, তাই সব নয়। অনেক সময় নির্বাচনে অদৃশ্যভাবেও অনেক কিছু হয়।
তিনি বলেন, নির্বাচনে শুধু প্রার্থীদের জয় – পরাজয় হয় তা নয়। অংশীজনদেরও জয়-পরাজয় থাকে। এই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন আংশিক জয়ী হয়েছে, আবার আংশিকভাবে পরাজিতও হয়েছে।
ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন হওয়াতে নির্বাচন কমিশনকে আংশিকভাবে জয়ী বলছি। আর নির্বাচনী এলাকায় একজন সংসদ সদস্যকে নির্বাচনী আচরণ বিধি মানতে কমিশন বাধ্য করতে পারেনি, সে কারণে কমিশনকে ব্যার্থ বলছি। সবচেয়ে পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশনও এরকম অবস্থায় নির্বাচনী আচরণ বিধি মানতে বাধ্য করাতে পেরেছিল।
‘সবচেয়ে পক্ষপাতদুষ্ট’ বলতে কোন নির্বাচন কমিশনকে বোঝাচ্ছেন? এই প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এরকম পরিস্থিতিতে সব নির্বাচন কমিশনই নির্বাচনী আচরণ বিধি মানতে বাধ্য করাতে পেরেছিল।
সংসদ সদস্য সেখানকার ভোটার–এটি মনে করিয়ে দিলে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সেক্ষেত্রে তিনি এলাকা ছেড়ে যাবেন, ভোটের দিন আসবেন। তিনি এলাকায় থাকলেই ভোটে প্রভাব পড়ে।
যিনি যেখানকার ভোটার, তাকে সেখান থেকে চলে যেতে বলা যায় কিনা বা এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের করণীয় বিষয়ে আপনার পরামর্শ কী–এই প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অন্যান্যদের ক্ষেত্রে যে ব্যবস্থা নেয়া হয়, সে ব্যবস্থা নেবেন। চুনোপুঁটিদের ক্ষেত্রে কমিশন যে ব্যবস্থা নেয়, সংসদ সদস্যের ক্ষেত্রেও তেমন ব্যবস্থা নেবে।
তিনি বলেন, তাছাড়া ইভিএমও (ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন) এই নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে। কারণ এই নির্বাচনে অনেক ভোটার ইভিএমের ধীর গতির কারণে ভোট দিতে পারেননি। ইভিএম পদ্ধতির কারণে ভোটাররা যে ভোট দিতে পারেননি–তা উদ্বিগ্ন না করে পারে না।
প্রসঙ্গত, বুধবার (১৫ জুন) কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট চলাকালে কেন্দ্র দখল বা প্রভাব বিস্তারের মতো বড় কোনো ঘটনা ঘটেনি। মেয়র বা কাউন্সিলর প্রার্থীদের অনুসারীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াও হয়নি। নির্বাচনকেন্দ্রিক খুব চেনা এসব পরিবেশের উল্টো চিত্র নির্বাচনে দেখা গেছে। পুরো সময়টায় দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ভোট হয়েছে শান্তিপূর্ণভাবে।
বুধবার সকাল আটটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হলো বেলা চারটায়। এ সময় অবশ্য বড় দুই বিঘ্ন ঘটেছে। একটি প্রাকৃতিক, অন্যটি যান্ত্রিক। দুই কারণেই ভোট দেওয়ার গতি হয়েছে ধীর। সকাল নয়টার দিকে শুরু হয় ঝুম বৃষ্টি। তাতে এক দফা বিঘ্ন ঘটে ভোটের। আর দিনভর বিভিন্ন কেন্দ্রে ইভিএমের কারণে ভোটদানে ধীর গতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী প্রার্থীরাও এ নিয়ে কথা বলেছেন।
এমএ/