জিয়ার আমলে খাদ্যের অভাবে পতীতলায় নাম লিখিয়েছে মানুষ: মোাস্তাফিজুর রহমান
জিয়াউর রহমানের আমলে খাদ্যের অভাবে মানুষ পতীতলায় নাম লিখিয়েছে বলে জানালেন সাবেক প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘১৯৭৯ সাল। জিয়াউর রহমানের আমলে মানুষ সন্তান বিক্রি করেছে। পতীতলায় নাম লিখিয়েছে খাদ্যের অভাবের কারণে। এমন কোন ঘটনা তো আওয়ামী লীগের আমলে দেখিনি। ব্রিটিশ আমলে যদি খাবারের অভাব থাকে এখন সেটা নাই কেন?’
মঙ্গলবার (১৪ জুন) বিকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিরন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা মহাকাশে স্যাটালাইট পাঠালাম, কর্ণফুলি টার্ণেল করলাম, বঙ্গবন্ধু সেতু করেছি এখন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পদ্মা সেতু হচ্ছে। এরকম একটা দেখান।
তিনি বলেন, আমাদের মফসলের (গ্রামের) মানুষ যারা একবার এসে হাতিরঝিল দেখে গেছে তারা মনে করে বাংলাদেশ বদলে গেলো। ইউরোপ আমেরিকায় গেলাম কি না? তারপরও তারা তারা স্মৃতির অন্বেষণ করে।
এসময় একটি পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট উল্লেখ করে সরকার দলীয় এই সংসদ সদস্য বলেন, একটি পত্রিকায় দেখলাম লেখেছে একজন মানুষের খাবারের জন্য নাকি ৫ হাজার ৩৩৯ টাকা মাসে ব্যয় হচ্ছে। দৈনন্দিন খাবারের তালিকা চাল, কলা আটা মসুর ডাল খোলা সয়াবিন দেশি পেঁয়াজ, দেশি রসুন, ব্রয়লার, মুরগি, খাশির মাংস, গরুর মাংস, রুই মাছ, তরল দুধ, গুড়া দুধ, ডিম, আলু এগুলো নাকি একজন মানুষ খায়। চারজনের পরিবারের জন্য ৪৭ হাজার ১৮২ টাকা। এটা নাকি মানুষের দৈনিন্দনের খাবার। ১৯৭৯ সালের জিয়াউর রহমানের আমলে মানুষ সন্তান বিক্রি করেছে। এমন কোন ঘটনা তো আওয়ামী লীগের আমলে দেখিনি। ব্রিটিশ আমলে যদি খাবারের অভাব থাকে এখন সেটা নাই কেন?
বিরোধী দল বিএনপির উদ্দেশ্যে করে বলেন, আমাদের দেশ শ্রীলংকা কবে হবে সেটা দেখতে ব্যস্ত হয়ে গেছে আমাদের দেশের বিরোধী দল। শকুনিরা আকাশে উড়তে উড়তে কোথায় গরু মরবে সেটার যেমন খোঁজ খবর করতে থাকে। এমন করে আমাদের বিরোধী দলগুলো শুধু অভিসপ্ত করছে আওয়ামী লীগ যেন চলতে না পারে ঠিক মতো। আমাদের মহান নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জাতির জনকের কন্যা তিনি একটা দেশকে এগিয়ে নেবার জন্য তার পরিকল্পনা মতো তিনি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ২০০৮ সালের বাজেট ছিল ৬৮ হাজার বা ৬৫ হাজার কোটি টাকা। সেই বাজেট এখন ৬ লাখ হাজার কোটি টাকা পার হয়ে গেল। দেশে অগ্রগতি দেখতে পান না কেন? ব্রিটিশ আমল পাকিস্তান আমল কোন আমল দেখি নাই যে গ্রামের একটা মসজিদের মধ্যে আয়ুবখান কিংবা জিন্নাহর নামে মসজিদে একটা টাকা দিয়েছে এটা দেখি নাই। এখন বাংলাদেশে এমন কোন মসজিদ মন্দির আছে যেখানে সরকারি অনুদান পায় না।
তিনি বলেন, একটা কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের ধারণা নিয়ে আমাদের নেত্রী যে কাজ করে যাচ্ছেন সে কাজ আপনারা করেননি। তারা (বিএনপি নেতারা) বলছে এই সরকারের আমলে কোন উন্নয়ন হয় নাই শুধু লুটপাট। লুটপাটের খতিয়ান দেখছেন। লুটপাট বা চুরি যারা করে তাদের তালিকা দেন। মাঝখানে শুনেছি ১ লাখ হাজার কোটি টাকা আবার কেউ বলছে ৬৮ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। অর্থমন্ত্রী তাদের কাছে নাম জানতে চান, কারা কারা এই লোক। নাকি হেফাজতের সময় লাখ লাখ লোক মারা গেছিল বলে দাবি করেছিল সেরকম? কোথায় গেলো লাশ? তখন বলা হলো ইন্ডিয়াতে ফেলছে ইন্ডিয়াতে তো দেখি নাই। ১ লাখ হাজার কোটি টাকা পাচার করছে এরা কারা? এদের নামকি? যারা বলছেন তারা কি বলবেন কারা এই লোক। আমরা জানতে চাই, জাতি জানতে চায় কারা এই লোক। ৬৮ হাজার কোটি টাকা যদি যেয়ে থাকে তাহলে এই টাকা যে গেলো তাদের কাছে তথ্য আছে? সেই তথ্য কে কে পাচার করল? রাজনীতিবিদ কতজন, আমলা কতজন? আর কে কয়জন তাদের নামগুলো বলেন? বলতে চাচ্ছেন (সরকার দলীয় এমপিদের কথা উল্লেখ করে) এই দিকে যারা আছে তারা সেটাই বলেন। নামগুলো জানতে চাই। তারা কারা নাম দেন। এখন পর্যন্ত জানি তারেক জিয়া কোকোর টাকা ফেরত আসছে। আর তো কারো নাম পাইনি। বেগম খালেদা জিয়ার এতিমের টাকার কাহিনী শুনেছি আর কারোটা শুনি নাই। আপনারা দেখান দেখাতে তো পারেন নাই।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর সমস্ত লুটপাট করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর ২১ বছর ক্ষমতায় ছিলেন ২১ বছরে দেখাতে পারেন নাই বঙ্গবন্ধুর কোন অ্যাকাউন্টে বা শেখ কামালের অ্যাকেউন্টে, শেখ জামালের অ্যাকাউন্টে, বঙ্গমাতার অ্যাকাউন্টে কোন টাকা আছে? এটা তো পারেন নাই আপনারা। আপনাদের অ্যাকাউন্টে পাওয়া যায়। তাদের সামনে কোন যুক্তি নাই। অযৌক্তিকভাবে সমালোচনা করবে।
এসএম/