পদ্মা সেতু
সাতক্ষীরার দূরত্ব কমবে শত কিলোমিটার: মুস্তফা লুৎফুল্লাহ
জাতীয় সংসদের ওয়েবসাইটে সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ’র দুটি ঠিকানা দেয়া আছে। একটি রাজধানীতে অবস্থিত সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া এভিনিউ সংলগ্ন সংসদ সদস্য ভবনে। অন্যটি তার সংসদীয় এলাকায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পলাশপোল পালিত বাগানে।
বাংলাদেশের সক্ষমতার জানান দেয়া পদ্মাসেতুর উদ্বোধন হলে তার এই দুটি ঠিকানার দূরত্ব কমবে প্রায় একশত কিলোমিটার। জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা এবং তার সংসদীয় এলাকাকে ভিত্তি ধরে ঢাকাপ্রকাশ-এর কাছে এভাবেই দূরত্ব কমে আসার উদাহরণ দিয়ে পদ্মা সেতুর বহুমাত্রিক প্রয়োজনীয়তার কথা বললেন দেশের একেবারে প্রান্তিক জেলা সাতক্ষীরার এই জনপ্রতিনিধি।
ঢাকাপ্রকাশ-এর আমন্ত্রণে সোমবার (১৩জুন) ঢাকাপ্রকাশ'র স্টুডিওতে এসে জানালেন, পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর কীভাবে তার নির্বাচনী এলাকা তালা–কলারোয়া তথা সাতক্ষীরা অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি হবে। শিল্প কারখানা ও কর্মসংস্থান হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে।
এর বাইরে তিনি কথা বলেছেন জাতীয় রাজনীতি ও জাতীয় বাজেট নিয়েও।
দুই বারের এই সংসদ সদস্য বলেন, পদ্মাসেতু চালু হওয়ার আগে এখনি আমার এলাকার জমির দাম বেড়ে গেছে বহুগুণ। কারণ বোঝাই যাচ্ছে সেখানে অনেক গার্মেন্টস, কল কারখানা গড়ে উঠবে। তার কারণ হচ্ছে, তখন মোংলা বন্দরসহ এই অঞ্চলের জলবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোর কার্যক্রম অনেক বেড়ে যাবে। আবার এই বন্দরগুলো রাজধানী থেকে কাছে। তাই বন্দরগুলোর কাছাকাছি এলাকায় কল কারখানা গড়ে তুলতে পারলে তা সাশ্রয় হবে বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা। কারণ বন্দরে কম খরচে ও কম সময়ে উৎপাদিত পণ্য পৌঁছাতে পারবেন তার। সবমিলে এই অঞ্চলে এতএত কলকারখানা মানেই অনেক অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
তিনি বলেন, শুধু তাই নয়, এখন যে কারখানা শ্রমিক ঢাকায় থেকে বেতনের সিংহভাগ খরচ করে অল্প কিছু টাকা বাড়িতে পাঠাতে পারেন। তখন একই শ্রমিক পুরো টাকাই এই অঞ্চলে খরচ করবেন এবং আয়ের সিংহভাগই পরিবারের পেছনে খরচ করতে পারবেন।
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য না হওয়ায় তার সংসদীয় এলাকা কোনভাবে বৈষম্যের শিকরা হচ্ছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ওয়ার্কার্স পার্টির এই নেতা বলেন, ঊনিশ-বিশ তো হতেই পারে। তবে তা হলে আমি বিশ- ংই পাচ্ছি। তবুও কিছু বৈষম্যে কথা বলতে হয়, যেমন ধরুন– পাশ্ববর্তী গোপালগঞ্জে কোনও একটা কাজের হয়ত দরকারই নেই। তবুও একজন আমলা কাজটি সেখানে করিয়ে দিচ্ছেন। তারপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুশি করানোর আশায় তাকে দেখাচ্ছেন যে, আপনার এলাকায় এই কাজটি করে দিয়েছি। তবে এই বৈষম্য হওয়া উচিৎ নয়।
জাতীয় সংসদের চলমান অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেট প্রসঙ্গে মন্তব্য জানতে চাইলে ওয়ার্কার্স পার্টির এই সংসদ সদস্য সর্বজনীন পেনশন উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, পাচার করা টাকাকে বৈধতা দেয়া উচিৎ নয়। কারণ ধরুন একজন অর্থপাচারকারী অনেকগুলো ফ্ল্যাট কিনলেন, সেক্ষেত্রে একজন সাধারণ মানুষ সারাজীবনের সঞ্চয় দিয়ে যে একটি ফ্ল্যাট কিনতে চাইবে, তা পারবে না। কারণ অর্থপাচারকারীর সঙ্গে আর্থিক প্রতিযোগিতায় একজন সাধারণ মানুষ পেরে উঠবে না। অর্থপাচারকারী বরং ফ্ল্যাটটি পরে আরও বেশি দামে বিক্রি করবে। তাতে ভোগান্তি বাড়বে সাধারণ মানুষের।
এমএ/এনএইবি