নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধিতে প্রকল্প ব্যয় পুনর্নির্ধারণ: সংসদে মন্ত্রী
নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি বিবেচনায় নিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পে দর পুনর্নির্ধারণ (প্রাইস রিফিক্সেশন) করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আগামী এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এটি হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ঠিকাদাররা কাজ নিতে আগ্রহী হবেন।’
সোমবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রেজাউল করিমের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠিত হয়।
রেজাউল করিম বলেন, ‘সংসদ সদস্যরা ২০ কোটি টাকা করে বিশেষ বরাদ্দ পেয়েছেন। কিন্তু রডের দাম বেড়ে যাওয়ায় উন্নয়ন কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে। ঠিকাদাররা কাজ করছেন না। স্থবিরতা কাটাতে কী বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, দুই বছর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবং এরপর রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়েছে। সারাবিশ্বে যে মূল্যস্ফীতি, বাংলাদেশ সে তুলনায় ভালো অবস্থায় আছে। তারপরও রডসহ নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়েছে।
মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি একটি সভায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। সে অনুযায়ী অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে স্থানীয় সরকারের প্রকৌশলীরা বসে দর পুনর্নির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছেন।
তিনি আশা করছেন আগামী সপ্তাহ বা ১০ দিনের মধ্যে দর পুনর্নির্ধারণ হবে। তা হলে বর্ধিত প্রাক্কলনে ঠিকাদাররা কাজ করতে আগ্রহী হবেন।
প্রশ্নোত্তর পর্বে সম্পুরক প্রশ্নের সুযোগ নিয়ে সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে খাবার পানি ও অন্য কাজে ব্যবহারযোগ্য পানির আলাদা ব্যবস্থা করেছে। আমাদের দেশে সেটি করলে পানির অপচয় অনেক কমবে। এ ছাড়া নদী বা বৃষ্টির পানি হারভেসটিং করা ও টিউবওয়েল না বসিয়ে গ্রামে গ্রামে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সার্ফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট করে সরবরাহ করা যেতে পারে। সুপেয় পানির সংকট সমাধানে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের কথা জানতে চান তিনি।
জবাবে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, বিএনপি আমলে সারাদেশে সুপেয় পানি সরবরাহে বিশৃঙ্খল অবস্থা ছিল। তখন পানি পাওয়ার জন্য মারামারি, খুনোখুনি হতো। সে সময় পানি সরবরাহ করতে সেনাবাহিনী নামাতে হয়েছিল। এই ইতিহাস তো ওনারা জানেন। আর বর্তমান সরকারের আমলে সারাদেশে ৯৮ শতাংশ অঞ্চল পানি সরবরাহের আওতায় রয়েছে। যা বিশ্বে একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।
একই প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম জানান, আমরা আজকে ঢাকা শহরসহ বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে যেখানে সার্ফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট করা সম্ভব, তা করা হচ্ছে। আজকে গ্রামে গ্রামে সার্ফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট করছি। এতে একটু হলেও বিলম্ব হয়। কিন্তু জনগণের এখনই পানির প্রয়োজন, তাই আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ডিপ টিউবওয়েলের ব্যবস্থা করছি। ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা ৭০ শতাংশ সার্ফেস ওয়াটার শিফট করতে সক্ষম হব। সে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছি।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি মাদ্রিদে অবস্থিত ওয়াল্ড ওয়াটার সামিটে অংশ নিয়েছিলাম। সেখানে প্রমাণিত হয়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে আমাদের দেশে ওয়াটার সাপ্লাই অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে। গ্রামে গ্রামে যত দ্রুত পানির সমস্যা আমরা সমাধান করছি কোনো রোবট তা করতে পারবে বলে মনে হয় না। এ সময় রেইন ওয়াটার হারভেসটিং ছাড়াও সার্ফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা করা হচ্ছে জানিয়ে অনতি বিলম্বে গ্রামের জনগণও সুপেয় পানি পাবে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।
এসএম/এমএমএ/