গ্যাসের দাম আবারও বাড়ানোর ঘোষণা আসছে রবিবার
রবিবার (৫ জুন) গ্যাসের দাম আবারও বাড়ানোর ঘোষণা দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বেলা ৩টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা করবে বিইআরসি।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১ জুলাই গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়। তখন আবাসিক খাতে দুই চুলার খরচ ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৭৫ টাকা আর এক চুলার খরচ ৭৫০ টাকা থেকে ৯২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
বিইআরসির সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা এবারের দাম বাড়ানো প্রসঙ্গে জানান, গড়ে প্রায় ১৭ থেকে ২০ ভাগের মতো দাম বৃদ্ধির চিন্তা করা হচ্ছে। আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে মাসিক বিল ৯৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০৮০ অথবা ১১০০ টাকার মতো হতে পারে। অন্যখাতগুলোতেও এই হারেই দাম সমন্বয় করা হবে।
দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিইআরসির যুক্তি হলো, ২০২১-২২ অর্থবছরের ৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি, গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর মুনাফার একটি অংশসহ বেশ কিছু জায়গা থেকে ফান্ড নিয়ে এলএনজিতে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করেই এই দাম বাড়ানো হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার (২ জুন) প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহি চৌধুরী গ্যাসের দামের বিষয়ে দিনভর বৈঠক করেছেন বিইআরসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে। এতে আবাসিকে গ্যাসের দাম কম বাড়িয়ে সমন্বয় করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর আগ গত ২১ মার্চে গ্যাসের দাম বাড়ানো নিয়ে গণশুনানি করেছে বিইআরসি। আইন অনুযায়ী গণশুনানীর ৯০ দিনের মধ্যে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিতে হয়। এ জন্যও গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দ্রুত দিতে হচ্ছে।
গণশুনানীর পরপরই বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছিলেন, অর্থ বিভাগের ভর্তুকির ওপর গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম নির্ভর করবে।
সারা বিশ্বে তেল এবং এলএনজির দাম বাড়ছে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, আশা করছি আমরা সামলাতে পারব। এখনো আমরা বড় ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত নেইনি।
গ্যাসের দাম বাড়বে কিনা তা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটারি কমিশন (বিইআরসি) জানে এমনটা উল্লেখ করে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা শুনানি করছে। তবে আমরা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে চাই। আমরা প্রয়োজনীয় ভর্তুকির জন্য প্রস্তাব করেছি। এখন সরকারের বিবেচনার বিষয় এ খাতে কতটুকু বিনিয়োগ করবে।
বিতরণ কোম্পানিগুলো গ্যাসের দাম ১১৭ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছিল। কমিশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, এক্ষেত্রে আমরা ১০০ ভাগ বাকি রেখেই চিন্তা করছি। ১৭ থেকে ২০ ভাগ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিরোধীতা করে ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজ্যুমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, স্পট মার্কেট থেকে অতিরিক্ত দামে এলএনজি আমদানির অজুহাতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর কোনও যুক্তি নেই। এই অল্প পরিমাণ গ্যাসের চাহিদা স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশেই উৎপাদন বাড়িয়ে পূরণ করা সম্ভব।
এ জন্য প্রথমেই গ্যাস চুরি বন্ধ করতে হবে এমন মত দিয়ে বক্তারা বলেন, দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং অবশ্যই নতুন গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধানে জোর দিতে হবে।
আরইউ/এমএমএ/