হেফাজতের হুমকি হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই: নির্মূল কমিটি
গণমাধ্যমে প্রকাশিত গণকমিশনের রিপোর্ট সম্পর্কে হেফাজতে ইসলামের বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করেছে ‘মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশন’। আজ বৃহস্পতিবার (১২ মে) গণকমিশনের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতির মাধ্যমে তা প্রত্যাখান করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়- ‘আজ (১২ মে) গণমাধ্যমে প্রকাশিত হেফাজত আমীর মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী স্বাক্ষরিত হেফাজতে ইসলামের বিবৃতি আমাদের নজরে এসেছে। দীর্ঘ এক বছর মাঠপর্যায়ে তদন্ত করে সন্ত্রাস বিশেষজ্ঞ, গবেষক, সাংবাদিক, মানবাধিকার নেতা এবং হেফাজত নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের বক্তব্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে আমাদের শ্বেতপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে। আমাদের অনুসন্ধান ও অভিযোগ সত্য কিনা সেটা প্রমাণের দায়িত্ব সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। অভিযোগ প্রমাণ/অপ্রমাণের আগে হেফাজতে ইসলাম ২০১৩ সালের মে মাসের মতো যে ভয়ঙ্কর ভাষায় হুমকি দিয়েছে, তা তাদের বাংলাদেশের সংবিধান ও রাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্তের অন্তর্গত। আজ হেফাজতে ইসলাম আমাদের হুমকি দিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছে এটাকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই।’
আরও পড়ুন : গণকমিশন ইসলামবিদ্বেষী চেহারা উন্মোচন করেছে: হেফাজত আমির
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বরে সমাবেশের নামে হেফাজতে ইসলাম যে মহাতাণ্ডব ও সন্ত্রাস সংঘটিত করেছে সে বিষয়ে দেশবাসী বিলক্ষণ অবগত আছেন। সেদিন তারা মহাখালীতে নির্মূল কমিটির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সংগঠনের বহু নেতা-কর্মী এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের গুরুতরভাবে আহত করেছে। সেই অপরাধের মামলা এখনও বিচারাধীন আছে। ৫ ও ৬ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে এবং সারাদেশে হেফাজতের সন্ত্রাসী তাণ্ডবের ক্ষয়-ক্ষতির বিবরণ এবং নিহতদের পরিবারবর্গের বক্তব্য ও আহতদের বক্তব্য ২০১৩ সালে আমরা শ্বেতপত্রে প্রকাশ করেছি।’
‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙে বুড়িগঙ্গায় নিক্ষেপ করার ঘোষণা সহ গত বছর স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপন বানচালের জন্য সারাদেশে হেফাজতীদের তাণ্ডবে জড়িত হেফাজতে ইসলামের সন্ত্রাসী শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যা আমাদের এবারের শ্বেতপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। এসব সন্ত্রাসের সঙ্গে ইসলাম ধর্মের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই। ১৯৭১ সাল থেকে হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতারা এবং অন্যান্য নেতারা যাবতীয় হত্যা, সন্ত্রাস ও তাণ্ডব ইসলামের নামে জায়েজ করতে চেয়েছে, যা এদেশের জনগণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।’
বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সুরক্ষিত ও সমুন্নত রাখার প্রয়োজনে অবিলম্বে হেফাজতে ইসলামসহ অন্যান্য সংগঠনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি এবং বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে উত্থাপিত অভিযোগসমূহ দ্রুত তদন্ত করে সে বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সরকারের আইন-শৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষ এবং অন্যান্য সংস্থাসমূহের প্রতি বিবৃতিতে আহবান জানানো হয়।
এপি/