আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে থাকলে জয়ী হতে পারব: প্রধানমন্ত্রী
বিজয়ী জাতি হিসেবে আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে থাকলে জয়ী হতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা কখনো পরাজিত হব না। পরাজয় মেনে নেব না। আমাদের জয়ী হতেই হবে, এ আত্মবিশ্বাসটা নিয়ে যদি মাঠে থাকা যায় তাহলে যেকোনো খেলায় আমরা জয়ী হতে পারব। আমাদের মাঝে সেই আত্মবিশ্বাসটা সব সময় রাখতে হবে সেটাই আমার আহ্বান।’
বুধবার (১১ মে) জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার ২০১৩-২০২০ প্রদান অনুষ্ঠানে সরকারপ্রধান একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে পুরস্কার প্রদান করেন।
ক্রীড়াঙ্গনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে মাত্র সাড়ে তিন বছরের যেভাবে গড়ে তুলেছিলেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি উন্নয়নের ছাপ রেখে গেছেন। জাতির পিতা খেলাধুলা পছন্দ করতেন ও উৎসাহ দিতেন।
এসময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া এক বক্তব্য কোড করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন জাতির পিতা তার ভাষণে বলেছিলেন "ক্রীড়াঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করতে হবে। ক্রীড়াঙ্গনে প্রতিষ্ঠা করতে হবে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি"
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি। ক্রীড়াঙ্গনের খেলোয়াড়, সংগঠক এবং যারা আনুষঙ্গিক থাকেন প্রত্যেকে যদি সবসময় মনে এ চিন্তা করেন,বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা কখনো পরাজিত হব না। পরাজয় মেনে নেব না। আমাদের জয়ী হতেই হবে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন ডিসিপ্লিনে আমাদের জাতীয় দলগুলো দক্ষতা দেখাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বা আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় তারা বার বার অংশ নিচ্ছেন, স্বর্ণপদক, রোপ্যপদক, তাম্র পদক পাচ্ছেন ও চ্যাম্পিয়ন হচ্ছেন, রানার্স আপ হয়েছেন।
তিনি বলেন, ক্রিকেট-ফুটবল সব ক্ষেত্রে আমাদের নারীরা পারদর্শিতা দেখাতে পারছে। তাদের একটু বেশি করে সুযোগ দিতে হবে। আরও উৎসাহিত করতে হবে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন অর্থাৎ প্রতিবন্ধী বা অটিস্টিক তারাও কিন্তু খেলাধুলায় যথেষ্ট পারদর্শিতা দেখায়। বরং তারা আরও বেশি পারে। সেটা আমার ধারণা আমি তা দেখতে পাচ্ছি। বিভিন্ন সময় স্পেশাল অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করে ২১৬ টি স্বর্ণ পদক অর্জন করেছে বিশেষ চাহিদা সম্পন্নরা।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ কর্মসূচির ধীরগতিতে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা প্রতিটি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের পরিকল্পনা করি। ইতোমধ্যে ১৮৬টি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। ১৭১ উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। তবে আমি মনে করি এ ব্যাপারে যথেষ্ট সময় নেওয়া হচ্ছে। যাতে আর সময় না নেওয়া হয় সেটা দেখতে হবে।
শিশুদের বিকাশের জন্য প্রত্যেক এলাকায় খেলার মাঠ থাকা একান্ত ভাবে প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে আমরা কিছু উদ্যোগ নিয়েছি যেখানে খালি জায়গা পাচ্ছি খেলার মাঠ করে দিচ্ছি। ঢাকার শহরে মাঠ কম। আমরা চেষ্টা করছি যেখানে খালি জায়গা পাচ্ছি মাঠ নির্মাণ করে দিচ্ছি।
অভিভাবকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা নিজের ছেলেমেয়েকে নিয়ে একটু খেলাধুলার সুযোগ করে দেবেন। খেলাধুলার মাধ্যমে মানসিক ও শারীরিক বিকাশটা হয় এবং ছেলেমেয়েরা বিপথে যায় না। এ জন্য পিতামাতাকে একটু হলেও সময় বের করে ছেলেমেয়েদের খেলাধুলার পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। আর বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে ৮৫ জন গুণী খেলোয়াড় ও ক্রীড়া সংগঠককে ২০১৩ হতে ২০২০ সালের জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল ৭৭ জন পুরস্কার বিজয়ীর হাতে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার তুলে দিয়েছেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে (ভার্চ্যুয়ালি) আরও ৮জন বিজয়ীকে উপস্থিতিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
এসএম/এসএন