মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dhaka Prokash

মানবিক এক রাত

অজয় ধর অটো থেকে নেমে ড্রাইভারকে কুড়ি টাকা দিয়ে সামনের দিকে হাঁটতে লাগলেন। তার এক পা’ও হাঁটার কথা নয় । অটোটা তার বাড়ি ফেলে এসেছে। গেটের সামনেই তিনি নামতে পারতেন। অজয়বাবু কিছু দূর হেঁটে এদিক ওদিক তাকিয়ে একটা দোকানে ঢুকে গেলেন। দুয়েকটা জিনিস দরদাম করে আবার বেরিয়ে এলেন। এমনই করেন আজকাল। সেদিন পত্রিকায় পড়েছিলেন এক অটো ড্রাইভার মালিকের বাড়ি চিনে গিয়েছিল। রাতে দল নিয়ে এসে ডাকাতি করেছে। তাই অটোর ড্রাইভারকে বাড়িতে চেনাতে চান না। পনেরো-কুড়ি মিনিট এদিক সেদিক ঘুরে উল্টো পথে হাঁটতে হাঁটতে এবার বাড়ির সামনে এসে পৌঁছালেন।

চারপাশটা একবার ভালোভাবে দেখে নিলেন। না, কেউ তাকে ফলো করছে না। পায়ে হাঁটা লোক প্রায় নেই এখন এখানে । শুধু বড় বড় গাড়ি যাচ্ছে। রাস্তাটা পেরিয়ে গেটের সামনে গিয়ে দেখলেন একটা অটো দাঁড়িয়ে আছে। এটা কি সেই অটোটা? কাছে গিয়ে ভালো করে পেছনটা দেখে একটা স্বস্তির শ্বাস নিলেন। নাহ, এটা সেই অটো নয় যেটাতে তিনি এসেছিলেন। সেই অটোর পেছনে একটা সাবান কোম্পানির বিজ্ঞাপন ছিল। ভালো করে এসব দেখে রাখেন আজকাল। নম্বরটাও টুকে রাখেন । দাঁড়িয়ে থাকা অটোর সামনে এগিয়ে গিয়ে দেখলেন, ড্রাইভার ছেলেটা মোবাইল টিপছে। গলায় মাফলার। লক্ষণ ভালো নয়। চোরেরা সাধারণত মাফলার গলায় দেয়। কাণ্ড ঘটিয়ে মাফলার দিয়ে নাক অবধি ঢেকে চম্পট দেওয়ার জন্য।

অজয়বাবু অটোওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলেন, আচ্ছা ভাই এ গলিটার কী নাম?
অটোওয়ালা মোবাইল টেপা বন্ধ করে বলল, স্কয়ার রোড।
অজয়বাবু আবার অটোওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলেন, এখানে অজয় ধর নামের কোনও বয়স্ক ব্যক্তিকে চেনো? অটোওয়ালা মোবাইল টিপতে টিপতে বলল, বলতে পারব না। আমি এখানে থাকি না।

যাক, ছেলেটা অজয় ধরের বাড়ি চেনে না । এ বাড়িতে ঢুকলে সে বুঝতে পারবে না।

বাড়ির দোতলা থেকে হঠাৎ একটা আওয়াজ এলো, বাবা কী করছ রাস্তায় দাঁড়িয়ে? ঘরে এস। অটোওয়ালা মুখ তুলে একবার অজয়বাবুর দিকে আরেকবার দুতলার দিকে দেখল। সর্বনাশ করে দিল মেয়েটা। আহ্লাদে আহ্লাদে রুমকিটা আজকাল মাথায় চড়েছে। দিল তো বারোটা বাজিয়ে ! এ বছর কলেজে ভর্তি হয়েছে। পড়ায় গড়পড়তা। কিন্তু কলেজ কামাইতে এক নম্বর। ঘরে ঢুকে মেয়েকে খুব জোরে একটা ধমক দেওয়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু পারলেন না। মেয়েটা তার পরাণের ধন। ছোটবেলায় সে একবার বাবার মার্কশিটের উপর কীসব মুণ্ডু মাথা এঁকে ফেলেছিল। সে তখন নার্সারিতে পড়ত। রাগ করে মেয়েকে খুব জোরে একটা ধমক দিয়েছিলেন। মেয়ে সেদিন কেঁদে কেঁদে বাবার সামনে কান ধরে স্যরি বলেছিল। এই কথা মনে হলে এখনো অজয় বাবুর চোখে জল আসে।

ঘরে ঢুকতেই মেয়েটা অজয় বাবুর মাথার সাদা টুপিটা একটানে খুলে, বাবা টাকলু, বাবা টাকলু বলে হাসতে হাসতে শোবার ঘরে চলে গেল। এ কাণ্ডটা মেয়ে ছাড়া অন্য কেউ করলে হয়তো তিনি মার্ডার করতেন। গত দশ বছর ধরে এই টুপিটা দিয়েই তিনি মাথার টাক'টা ঢেকে রেখেছেন। শীত-গ্রীষ্ম সবসময় এটা তার সঙ্গী। কলিংবেল বাজলে কাপড় না পরে বেরুনো যায় কিন্তু টুপি ছাড়া যায় না। অফিসের সবাই এ জন্য তাকে অজয় ধরের জায়গায় টুপি ধর বলে ডাকে। তবু ভালো ভদ্রস্থ নাম।
বড় বাবুর চোখের নিচের মেজটা ইদানিং বড় হয়ে যাওয়ায় অফিসের দুটো অসভ্য নাম দিয়েছে মেজদা। ভাগ্যিস বছরের শুরুতে দুটো অসভ্যের মধ্যে একটা রিটায়ার করেছে। রাস্কেলটা রিটায়ার করে এখন হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার হয়েছে। সে নাকি স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। কোন দিন কোন মহিলার চড় থাপ্পড় খাবে তারপর ঠিক হবে।

অজয় বাবু ড্রয়িংরুম থেকেই গিন্নিকে ডাকলেন সবিতা, ও সবিতা।
ভেতর থেকে শুধু কোঁকানোর একটা শব্দ এল।
-তোর মা’র আজ আবার কী হয়েছে?
রুমকি বলল, বিকেল থেকে খুব মাথা ধরেছে।
-ওষুধপত্র কিছু দিয়েছিস?
-কী একটা ট্যাবলেট মা নিজে নিজেই খেয়েছে।

সবিতা চিররোগী। আজ মাথা ব্যথা হলে কাল পেটে ব্যথা। যেদিন কিছু থাকে না সেদিন পাতলা পায়খানা। কখনো অজয় বাবুর বিশ্বাস হয়, কখনো হয় না।

ঘড়িতে এগারোটা বাজে। বাড়ির তিনজনের মধ্যে দুজনের রাতের খাবার শেষ। সবিতা আজ কিছু খাইনি। রুমকি আজকাল মা’র পাশে ঘুমায়। সবিতার পাশে এখন অজয় বাবু ঘুমোতে পারেন না। বারবার উঠে জল খাবে। বাথরুম যাবে। কুঁকাবে।
অজয় বাবু উঠে সবিতার ঘরের দিকে গেলেন। ঘরটা ভীষণ অন্ধকার।
-আলো জ্বালাসনি কেন?
রুমকি বলল, ডিম লাইটটা ফিউজ।
-সে কথা দিনে বলবি তো।

অজয় বাবু অ্যাটাচ বাথরুমের লাইটটা জ্বালিয়ে দরজাটা একটু ফাঁক করে দিলেন। সামান্য এক চিলতে আলো এসে ঘরের ঘুটঘুটে অন্ধকার ভাবটা দূর করল। কিন্তু বিশ্রী একটা গন্ধ আসছে। কে যেন বাথরুম থেকে এসে জল ঢালেনি। অজয় বাবু দরজাটা আবার বন্ধ করে দিলেন। রুমকির দিকে তাকিয়ে বললেন, শুয়ে যা মা, কিছু হবে না।
ড্রইংরুমে এসে অজয় বাবু টিভির চ্যানেলটা বদলালেন। কিছুক্ষন নিউজ দেখলেন। সব একঘেয়ে খবর। ভাষণবাজি উদ্বোধন সরকারের জয়গান। দু’চারটা আক্সিডেন্ট ডাকাতি আর সুইসাইড। চ্যানেল বদলাতে বদলাতে একটা রোমহর্ষক ভূতের ছবি হাতে লেগেছে। অজয় বাবু চাদর টেনে মাথা মুড়ি দিয়ে বসলেন। এক বাড়ির বউকে রোজ রাত দু’টোয় ভূতে ভর করে। আজও করেছে। দরজা-জানালাগুলো ঠকঠক করে কাঁপছে। হঠাৎ ফট করে সদর দরজাটা খুলে গেল। বউটা বেরিয়ে অমাবস্যার রাতে অন্ধকার রাস্তা দিয়ে কবরের দিকে যাচ্ছে। কবরের পাশে শো শো বাতাস উঠেছে। একটা কবর ফুঁড়ে বিশাল লম্বা পচা গলা একটা হাত বেড়িয়ে আসছে। অজয় বাবু পুরো মুখটা ঢেকে শুধু চোখদুটো বের করে রেখেছেন।

কে যেন আস্তে করে তার পিঠে হাত দিল। ভয়ে অজয় বাবুর মুখ দিয়ে গোঙানির শব্দ বেরুচ্ছে।
রুমকি বলল কি হল বাবা এত কাঁপছো কেন?
-ও তুই? এখনো ঘুমোসনি!
-না।
-কেন?
-মা কেমন যেন করছে। ঘামে ভিজে গেছে শরীরটা।
অজয় বাবু এবার দ্রুত পায়ে সবিতার ঘরের দিকে গেলেন। সত্যিই সবিতা খুব ঘেমেছে। হার্ট অ্যাটাক নয়তো?

অজয় বাবু ঘড়ির দিকে দেখলেন। রাত প্রায় বারোটা। এ রোগীকে নিয়ে সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করা যাবে না। কাউকে যে ডাকবেন তাও নেই। চারপাশে নতুন নতুন ফ্ল্যাট হয়েছে। বেশিরভাগ মানুষকেই তিনি চেনেন না। তিন দিকে ফ্ল্যাট দিয়ে ঘেরা তার বাড়িটা যেন উঁচু উঁচু নারকেল গাছের নিচে একটা গাঁদাফুলের গাছ। অজয় বাবু অ্যাম্বুলেন্স ফোন করলেন। ওদের আসতে সময় লাগবে। অজয় বাবু ঘরের নিচে এসে দাঁড়ালেন। ঝড়ের বেগে দুয়েকটা গাড়ি যাচ্ছে। এদের হাত দেখিয়ে লাভ নেই। কেনই বা দাঁড়াবে তারা। রুমকি উপর থেকে একবার ডাকল, বাবা তাড়াতাড়ি করো মা সাড়া দিচ্ছে না ।

অজয় বাবু সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে উপরে উঠলেন। একবার হোঁচট খেয়ে গড়িয়ে পড়তে যাচ্ছিলেন। কোনোক্রমে রেলিং ধরে টাল সামলেছেন। সবিতাকে দেখে আবার ছুটে নিচে নেমে এলেন। সবিতার শ্বাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। মুখটা আস্তে আস্তে বেঁকে যাচ্ছে। এক মুহূর্ত আর দেরি করা ঠিক নয়। এখন যে গাড়ি পাবেন সেটাকেই হাত দেখাতে হবে। অজয় বাবুর ট্রাক থেকে শুরু করে দামি গাড়ি, সবকটাকে হাত দেখাচ্ছেন । অজয় বাবুর মাথা ঘুরছে। মনে হয় সুগার বেড়েছে। আজকাল বেশি টেনশন নিতে পারেন না। আস্তে আস্তে রাস্তার পাশে বসে পড়লেন। কিছু একটা যেন তার সামনে এসে দাঁড়াল। একটা অটো। মাফলার পরা সেই অটো ড্রাইভারটা। ছেলেটা অটো থেকে নেমে আসছে। অজয় বাবু সাত পাঁচ ভাবছেন। ছেলেটা এগিয়ে এসে বলল, কী হয়েছে আপনার, কোথাও যাবেন?

অজয় বাবু প্রামাদ গুনলেন। বিপদ তাকে সবদিক দিয়ে ঘিরে ফেলেছে। ছেলেটার মতলব বোঝা যাচ্ছে না। এত রাতে সে রাস্তায় কী করছে? কিন্তু এভাবে ভেবে ভেবে সময় নষ্ট করলে সবিতাকে বাঁচানো যাবে না। তারচে' বরং ছেলেটাকে সব বললে যদি কিছু সাহায্য পাওয়া যায়। নিদেন পক্ষে হাসপাতাল অবধি যদি পৌঁছে দেয়। তারপর গলায় চাকু ধরলে না হয় সোনার চেনটা খুলে দিয়ে দেবেন। ছেলেটা একবার ব্যালকনির দিকে দেখল। সেখানে রুমকি নার্ভাস হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ছেলেটার চোখের দৃষ্টি অনুসরণ করে অজয়বাবুও ব্যালকনির দিকে দেখলেন। মেয়েটা একেবারে ভেঙে পড়েছে। অজয় বাবু আর সহ্য করতে পারলেন না। এক শ্বাসে সব কথা বলে ফেললেন। ঘরের ভেতর একটা শব্দ হলো। রুমকি এক দৌড়ে ঘরে ঢুকেছে।

-কি হল রে মা, বলে অজয় বাবু দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে উঠলেন।
ছেলেটা পেছনে পেছনে উঠতে লাগল।
রুমকি মার বুকের উপর মাথা দিয়ে পড়েছে।
অজয় বাবু অসহায়ের মতো ফ্যাল ফ্যাল করে দেখছেন।

ছেলেটা রোগীর ডানদিক ঘেঁষে সবিতার সামনে এগিয়ে গিয়ে বলল, চলুন তিনজনে মিলে ধরাধরি করে উনাকে নিচে নিয়ে যাই। চিন্তা করবেন না।
ছেলেটার কথায় কোনো ভরসা পেলেন না অজয় বাবু। চিন্তা করবেন না বললেই কী আর হয়? কোথাকার এক অটো ড্রাইভার তার কথার কী ভরসা? তবুও অজয় বাবুর এখন ভরসা করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। ওই ডুবন্ত মানুষ যেমন খর কুটোর অবলম্বন করে অজয় বাবুর মনে হলো যেন তেমনটাই।

সবিতাকে অটোতে তোলা হয়েছে।
রুমকি ছুটে গিয়ে দরজায় তালা দিয়ে এলো।
অজয় বাবু ভয়ে, আতঙ্কে পাথরের মতো বসে আছেন। কোথায় যাচ্ছেন তিনি নিজেও জানেন না।

রুমকি একবার জিজ্ঞেস করল, বাবা কোন হাসপাতাল?
অজয় বাবু বললেন, জানি না মা।
ঝড়ের বেগে অটো চালিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই অটোটা একটা হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে নিয়ে ঢুকাল ছেলেটা। এত রাতে হাসপাতালও মনে হয় ঘুমিয়ে গেছে। ডাকাডাকি করেও ছেলেটা কাউকে পাচ্ছে না। অজয় বাবু বেশ কিছুক্ষণ থেকে সবিতার মুখের দিকে তাকানো বাদ দিয়েছেন। আর তাকাতে পারছেন না। শুধু রুমকির হাতটা জোরে ধরে রেখেছেন। ছেলেটা কাকে যেন ফোন করছে। দেখতে দেখতেই হাসপাতালের দুজন স্টাফ বেড়িয়ে এলো। দুটো ছেলেও এসেছে। ওরা অটোওয়ালার সঙ্গে কথা বলছে। সবাই ধরাধরি করে সবিতাকে ভেতরে নিয়ে যাচ্ছে। একটা ছেলে অজয় বাবুকে অটো থেকে নামিয়ে ভেতরে নিয়ে এক জায়গায় বসালো । সবিতাকে স্ট্রেচারে করে আইসিইউর দিকে নিয়ে যাচ্ছে ওরা ।

অজয় বাবু উঠে সেদিকে এগিয়ে যেতে চাইলেন। একটা ছেলে এগিয়ে এসে বলল, আপনি বসুন কাকু, আমরা তো আছি।
অজয় বাবু এবার তার অসহায় মেয়েটার মুখের দিকে তাকালেন। মেয়েটা তার হাতে হাত রাখল। কখন সকাল হয়েছে অজয় বাবু বলতে পারেন না। ঘুমিয়ে গেছিলেন না অজ্ঞান তাও বুঝতে পারছেন না।
একটা ছেলে তার হাতে এক কাপ চা ধরিয়ে বলছে, নিন কাকু চা খান।
রুমকি নাকি কিছুক্ষণ আগেই চা খেয়েছে। ওরাই এনে দিয়েছে।

অজয় বাবু বললেন, সবিতা মানে আমার মিসেস এখন কেমন আছে বাবা?
উনাকে ভোরে আইসিইউ থেকে কেবিনে শিফট করা হয়েছে। ডেঞ্জার কেটে গেছে। চা খেয়ে চলুন ২০২ নম্বর কেবিন। এই ফ্লোরেই।

অজয় বাবুর চোখ দিয়ে টপটপ করে জল পরছে। রুমকির চোখের কোণও ভিজে গেছে।
-তোমরা কারা বাবা?
- আমরা রঞ্জনের বন্ধু।
- রঞ্জন ! কে রঞ্জন?
- যে অটো করে আপনাকে এখানে নিয়ে এসেছে।
- ওর নাম রঞ্জন ?
- হ্যাঁ, এ পাড়াতেই তো তার ঘর। সেই তো আমাদের ফোন করে এখানে নিয়ে এলো। এই হাসপাতালের অনেক ডাক্তারবাবুকে ও চেনে। উনাদের ছেলেমেয়েকে ও টিউশনে নিয়ে যায়।
-সে এখন কোথায়?
-চলুন কেবিনে যাই আগে।
অজয় বাবু কেবিনে ঢুকে দেখেন সবিতা বিছানায় শুয়ে। চোখ খোলা। হাতে স্যালাইন। পায়ের পাশে রঞ্জন বসে আছে।
অজয় বাবুকে দেখে রঞ্জন উঠে দাঁড়াল। অজয় বাবুর চোখের জল কিছুতেই থামতে চাইছে না। সবিতার চোখ থেকেও আস্তে আস্তে গড়িয়ে এসে এক ফোটা জল বালিশে লাগল। রুমকি ডাকল, মা।
সবিতা সাড়া দিচ্ছে। তার হাতের আঙুলগুলো তির তির করে কাঁপছে।

লেখক পরিচিত: গল্পকার ও কলাম লেখক, শিলচর আসাম ভারত

 

Header Ad

সরকারি লোগো লাগানো গাড়িতে মিলল ৭ লাখ ইয়াবা, গ্রেপ্তার ৪

সরকারি লোগো লাগিয়ে বিলাসবহুল গাড়িতে ইয়াবা পাচারের সময় গ্রেফতার চারজন। ছবি: সংগৃহীত

টেকনাফ হয়ে মেরিন ড্রাইভ পার হচ্ছিল সড়ক ও জনপদ বিভাগের লোগো লাগানো বিলাস বহুল (এসইউভি) পাজেরো গাড়ি। ওই গাড়িতে পাওয়া যায় ৭ লাখ ইয়াবা। পরে ইয়াবাগুলো জব্দ করা হয়।

জব্দকৃত ইয়াবার বাজার মূল্য ৩ কোটি টাকারও বেশি বলে জানা গেছে। গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত আত্মসমর্পণকৃত ইয়াবাকারবারি আবদুল আমিনকে (৪০) তার ৩ সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১৫।

রবিবার (১৯ মে) দিবাগত রাতে বিলাস বহুল (এসইউভি) পাজারো গাড়িতে করে ইয়াবাগুলো কক্সবাজার পাচারকালে উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়ন সংলগ্ন মেরিন ড্রাইভের পাটুয়ারটেক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- টেকনাফের পৌরসভার ডেইল পাড়া গ্রামের হাজী মোহাম্মদ আলীর পুত্র আব্দুল আমিন (৪০), টেকনাফ সদর ইউনিয়নের গোদারবিল গ্রামেন আবু সৈয়দ এর ছেলে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ (৩৫), একই গ্রামের মৃত মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে

নুরুল আবসার (২৮) ও টেকনাফের ডেইল পাড়া গ্রামের মৃত দীল মোহাম্মদ এর ছেলে জাফর আলম (২৬)।

আব্দুল আমিন কুখ্যাত মাদক কারবারি ইয়াবা সম্রাট ও পার্শ্ববর্তী দেশ হতে মাদক চোরাকারবারীর অন্যতম হোতা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত আত্মসমর্পণ কৃত ইয়াবা কারবারি। এছাড়া টেকনাফ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবু সৈয়দ এর ছেলে, তার ভগ্নিপতি রয়েছে। শনিবার র‍্যাব-১৫ কার্যলয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এইসব তথ্য জানায় র‍্যাব-১৫ এর উপ অধিনায়ক মেজর শরিফুল আহসান।

তিনি জানান, আটক আবদুল্লাহর বাবা আবু সৈয়দের মালিকানাধীন বিলাসবহুল গাড়িতেটিতে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর এর লোগো লাগানো ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিতেই ইয়াবা কারবারিরা এই পন্থা অবলম্বন করেছিল বলে জানায় র‍্যাব।

এছাড়া আত্মসমর্পণ কৃত ইয়াবা কারবারি আবদুল আমিনের বিরুদ্ধে কক্সবাজারসহ সারাদেশের বিভিন্ন থানায় ১১টি অধিক মামলা রয়েছে। তার ভাগ্নে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বিরুদ্ধে দুইটি মামলা রয়েছে। নুরুল আবসারে একটি মাদক মামলা আছে। এছাড়া জাফর আলমের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় নারী ও নির্যাতন দমন আইনে দুইটি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।

র‍্যাব আরো জানায়, মিয়ানমার থেকে ইয়াবাগুলো বাংলাদেশে সরবরাহ করছিল মিয়ানমারের বাসিন্দা বার্মাইয়া সিরাজ। তার মাধ্যমেই বেশির ভাগ ইয়াবা টেকনাফ সিমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসে।

গাইবান্ধায় মাদক মামলায় নারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধায় মাদক মামলায় সীমা বেগম (৩৫) নামে এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এসময় অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় মামলার অপর আসামি ময়নুল ইসলামকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২০ মে) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. ফিরোজ কবীর এ আদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত সীমা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চরমগাছা পার্বতীপুর গ্রামের খোকন মোল্লার স্ত্রী।

মামলার বিবরণীতে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মায়ামনি হোটেলের সামনে থেকে ১০০ গ্রাম হেরোইন ও ছয় বোতল ফেন্সিডিলসহ মাদক ব্যবসায়ী সীমা খাতুনকে আটক করে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট বদরুন্নাহার বেবি বলেন, মামলার দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আসামিদের উপস্থিতিতে সোমবার আদালত এ রায় দেন।

তবে এসময় আসামি পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।

মেসি-ডি মারিয়াকে নিয়ে আর্জেন্টিনার শক্তিশালী দল ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

কোপা আমেরিকার আগে নিজেদের ঝালিয়ে নিতে ইকুয়েডর ও গুয়াতেমালার বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে আর্জেন্টিনা। তার আগে ২৯ সদস্যের দল ঘোষণা করেছেন আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি। কোপা আমেরিকার প্রাথমিক দলও এটি।

আগামী ১০ জুন ইকুয়েডর ও ১৪ জুন গুয়াতেমালার বিপক্ষে খেলবে আর্জেন্টিনা। ধারণা করা হচ্ছে, দুই প্রীতি ম্যাচের স্কোয়াড থেকে তিনজনকে ছাঁটাই করে চূড়ান্ত করা হবে আলবিসেলেস্তেদের কোপা আমেরিকার দল। কারণ, এবারের আসরে ২৬ সদস্যের দল ঘোষণার অনুমোদন দিয়েছে কনমেবল।

এদিকে দলে বড় চমক বলতে ইতালির ক্লাব মোনজায় খেলা ১৯ বছরের তরুণ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ভ্যালেন্টিন কারবোনি।

আগামী ২০ জুন কোপায় আর্জেন্টিনা প্রথম ম্যাচ খেলবে কানাডার বিপক্ষে, আটালান্টার মার্সিডিজ বেঞ্জ স্টেডিয়াম। ২৫ জুন নিউজার্সিতে দ্বিতীয় ম্যাচের প্রতিপক্ষ চিলি। আর ২৯ জুন মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের শেষ প্রতিপক্ষ পেরু।

এক নজরে আর্জেন্টিনার স্কোয়াড:

ফ্রাঙ্কো আরমানি, জেরোনিমো রুলি, এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, গঞ্জালো মন্টিয়েল, নাহুয়েল মোলিনা, লিওনার্দো বালের্দি, ক্রিস্টিয়ান রোমেরো, জের্মান পেজ্জেলা, লুকাস কুয়ার্তা, নিকোলাস ওতামেন্দি, লিসান্দ্রো মার্টিনেজ, মার্কোস অ্যাকুনা, নিকোলাস তাগলিয়াফিকো, ভ্যালেন্তিন বার্কো, গিদো রদ্রিগেজ, লিয়ান্দ্রো পারেদেস, অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, রদ্রিগো ডি পল, এক্সিকুয়েল প্যারাসিওস, এনজো ফার্নান্দেজ, জিওভানি লো সেলসো, আনহেল ডি মারিয়া, ভ্যালেন্তিন কার্বোনি, লিওনেল মেসি, আনহেল কোরেয়া, আলেহান্দ্রো গার্নাচো, নিকোলাস গঞ্জালেজ, লাউতারো মার্টিনেজ ও হুলিয়ান আলভারেজ।

সর্বশেষ সংবাদ

সরকারি লোগো লাগানো গাড়িতে মিলল ৭ লাখ ইয়াবা, গ্রেপ্তার ৪
গাইবান্ধায় মাদক মামলায় নারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
মেসি-ডি মারিয়াকে নিয়ে আর্জেন্টিনার শক্তিশালী দল ঘোষণা
মেয়রের সামনে কাউন্সিলরকে জুতাপেটা করলেন নারী কাউন্সিলর
ওলামা লীগে ধর্মের নামে 'ধর্ম ব্যবসা' চলবে না: ওবায়দুল কাদের
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের নির্বাচনী ব্রিফিং
ম্যানচেস্টার সিটিকে বিদায়ের ইঙ্গিত পেপ গার্দিওলার
বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক হোসেনউদ্দীন আর নেই
সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু ৫ জুন
টাঙ্গাইলে আনসার সদস্যদের নির্বাচনী ডিউটি দিতে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ
‘বঙ্গবন্ধু শান্তি পদক’ চালু, পুরস্কার কোটি টাকা ও স্বর্ণ পদক
রাইসির মৃত্যু আর সৌদি বাদশাহর অসুস্থতার জেরে বেড়েছে তেলের দাম!
অস্ট্রেলিয়ায় কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জাহিন
ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক
ভারতের নাগরিকত্ব পেয়ে প্রথমবারের মতো ভোট দিলেন অক্ষয়
রাইসির মৃত্যুতে ইরানে পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
৩০ ফ্রিল্যান্সিং দেশের র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে!
বজ্রপাতে সৈয়দপুর বিমানবন্দরের রানওয়েতে ফাটল, ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ
আইপিএলের প্লে-অফের ম্যাচগুলো কবে-কখন-কার বিপক্ষে?
ভোটারের উপস্থিতি নিয়ে ইসি উদ্বিগ্ন নয়, বললেন ইসি আলমগীর