ফুল ও স্বাধীনতা
ফুলে ও স্বাধীনতায়
কোনো বিরোধ নেই,
বিরোধ নেই
কীটে ও কুসুমে;
ফুল ফোটে প্রাকৃতিক
জননময়তায়,
কীট তাকে জন্মাবধি
চুষে চুষে খায়।
স্বাধীনতার
স্বাভাবিকতায়
জন্ম যদি দুজনেরই,
কীটেরও আঁতুড়ঘর
সব ফুলের উদরেই।
স্বয়ম্ভূ জন্মের কীট
যবে সন্তানের স্নেহে
মাতৃরূপী কুসুমের
স্তন্য পান করে,
মা-কুসুম তাকে
পরম আদরে
বুকে ধরে।
মানুষ যদি ফুলের বহিরাগত,
কীট কিন্তু ফুলের ভেতরাগত;
তবে দুজনেই জাতককে
জানায় আজন্ম স্বাগত।
ফুল নিজে কোনো পাপ করে না,
কিন্তু তাকে নিজের প্রয়োজনেই
উপড়ে আনে মানুষপাপী;
কীট নিজের অস্তিত্বের
প্রয়োজনে তাকে পান করে,
তাই সে নয় অনুতাপী।
কেবল আমরা, চতুর মানুষেরাই
ফুলকে বৃন্তচ্যুত করি, ভোগ করি;
স্বেচ্ছাচারী মানুষ স্বাধীনতার
বড়াই করতে করতে
দুজনের গলাতেই ছুরি ধরি।
মানুষ, যে স্বাধীনতা তোমার,
তারও একটা সীমা দরকার;
নিজের ভোগের জন্য ফুল ও কীট
দুটোকেই খুন করতে হবে
এমন যুক্তি মানবে না কোনো
গণতান্ত্রিক প্রাণিসরকার।
প্রাণতন্ত্র থেকে প্রাণিতন্ত্রের যে অর্থ,
তাতে ভোগী মানুষের ভোগতন্ত্র অনর্থ।
প্রাণি মাত্রেই যদি
প্রাণকে করে ধারণ,
বিতরণ হয় সর্বপ্রাণের,
হয় না কোনো প্রাণহরণ;
সেই সর্বপ্রাণ অবশ্যই
স্বাধীন; তার স্বাধীনতা
অবশ্যই সকারণ।
ফুল, কীট বা প্রাণি জন্মস্বাধীন;
মানুষ, তুমিও নও কারো পরাধীন।