সোমবার, ২০ মে ২০২৪ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪৯

নেই দেশের নাগরিক

‘নবী!’ শব্দটা দুম করে আপনাআপনি আতিফের মুখ থেকে বেরিয়ে এলো। যেন কথাটা ঠোঁটের কোণে কোনোরকমে ঝুলছিল।

‘নাহ, সে ব্যাপারে কিছু জানা গেল না। কোনো নামই প্রকাশ করা হয়নি। আর জে এফ’এর তরফ থেকেও কোনো মুজাহিদের নাম বলা হয়নি। নামটাম জানতে গেলে আরও কিছুক্ষণ আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। হাত পা গুটিয়ে বসে থাকা ছাড়া কোনো উপায় নেই।’ মিনমিন করে কথাগুলো বেরিয়ে এল সাদ্দামের মুখ থেকে।

আতিফ টিপটিপ করে তাকিয়ে থাকল নদীর দিকে। মনের উঠোনে দুদ্দাড় করে জড়ো হতে লাগল, চিন্তা দুশ্চিন্তার বেড়াজাল। নবী কি শহিদ? না, যে পালিয়েছে সে নবী? যে ধরা পড়েছে সেও তো নবী হতে পারে! নবী যে ধাতের মুজাহিদ তাতে সে জান থাকতে ধরা দেবে না। তবে কি নবী আজরাইলের হাতে ধরা দিয়ে দিয়েছে? চিন্তার ছাল-পাতা-শেকড় আতিফকে পেঁচিয়ে ধরে। আষ্টেপৃষ্টে আঁকড়ায়। আতিফ মনে মনে দোয়া করে, আল্লাহ আল্লাহ করে যে পালিয়েছে সে যেন নবীই হয়। আতিফ জানে, ট্রেনিংএর সময় তাদের বারবার বলে দেওয়া হয়, তাদের নিজেদের মধ্যে একটাই পরিচয়, তারা পরস্পরের মুজাহিদভাই, প্রত্যেকে সমান সম্মানের অধিকারী। কেউ ছোট বড় নেই। কাজ হাসিল করার সময় প্রত্যেককে সমান মর্যাদা দিতে হবে। সমান গুরুত্ব দিতে হবে। রক্তের এবং বন্ধুত্বের সম্পর্ক এখানে নগণ্য। এ সব কাজে মায়া মমতা থাকতে নেই। ওসব মনকে দুর্বল করে দেয়। মনকে মোমের মতো গলিয়ে দেয়। এ লোহা-লক্কড় আর গুলি-বারুদ দিয়ে ঘষামাজা করা মন তো আর মোমের মতো গলে গেলে হবে না? এই মনকে শান দেওয়া অস্ত্রের মতো নিষ্ঠুর হতে হবে। হাজার হত্যাতেও যেন এতটুকু বিচলিত না হয়। চোখের জল এখানে হারাম। নিজেকে আল্লাহর হাতে বানানো একটা অস্ত্র ছাড়া অন্যকিছু ভাবাই যাবে না। এ দেহের, এ মনের, এ ভাবনার একজনই মালিক, আর তিনি হলেন মহান আল্লাহপাক। মনের মধ্যে ভালো করে পুষে নিতে হবে যে, আমাদের চোখই তার চোখ, আমাদের ভাবনাই তার ভাবনা, আমাদের জীবন তারই দান করা রুহু। আল্লাহর পথে আমরা উৎস্বর্গিত প্রাণ, এটাই আমাদের একমাত্র আত্মিকসম্পর্ক। এই আত্মিক টানের যেন কোনো ভেদাভেদ না থাকে। ভেদাভেদ দেখা দিলে, লক্ষ্যে পৌঁছনো যাবে না। মিশন বিফলে যাবে। কিন্তু আর জে এফ’এর ধার্মিক এবং তাত্ত্বিক নেতারা যতই এসব কথা বলুন, কোথাও একটু হলেও বন্ধুত্বের টান যেন উগলে ওঠে। উথলে পড়ে দরদ। হাজার নিষেধ সত্যেও সে টান কোনোভাবেই দমে না। আতিফ জানে নবীর সাথে যারা এই মিশনে গেছেন, তারাও তার নিকটজন, মুজাহিদভাই। জন্মভূমি উদ্ধারের কাজে তাদেরও সমান অবদান। আল্লাহর কাছে তারাও সমান কৃতিত্বের অধিকারী। সমান নেকির ভাগিদার। তবুও এই কটা বছর নবীর সাথে তার যে মাখামাখি সম্পর্ক, মিলমিশ, তাতে তারা দুজন হরিহর আত্মা হয়ে উঠেছে। এক পেট, দুই মানুষ। এক ভাবনা, দুই শরীর। সুতরাং কিছু একটা ঘটলে নবীর কথাই তো চট করে মাথায় খেলবে? নবী যে তার হৃদয়ে ছায়ার মতো মিশে থাকে।

‘অত মনমরা হলে হবে না, আতিফ। যদি সত্যি সত্যি কুখ্যাত বালুখালি চৌকি নবীরা নিশ্চিহ্ন করে দেয়, তাহলে এর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে? আমাদের আনন্দে নামাজ পড়া উচিত। আল্লাহর দরবারে দু’হাত তুলে বলা উচিত, হে আল্লাহ তোমাকে শতকোটিবার সিজদাহ। একবার ভাবত, ওই বালুখালি চৌকিতে কত রোহিঙ্গার জীবন গেছে! কত নিরীহ মানুষকে নিষ্ঠুর বার্মা সেনারা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। আজ বদলা নেওয়ার দিন। প্রতিশোধের দিন। বার্মা সেনারা জানুক, আর জে এফ’এর ছোবল কত বিষাক্ত। আর জে এফ’এর মুজাহিদদের দাঁতে কত বিষ। নখের আঁচড়ে কত যন্ত্রণা।’ আগুনে ফোটার মতো টগবগ করে ফুটছে সাদ্দাম। প্রতিহিংসার আগুনের আঁচ আতিফের মনেও লাগল। আতিফ আচমকা বলে উঠল, ‘ইস! আজ আমি যদি ওখানে থাকতে পারতাম, আমার জাতিকে বুক ফুলিয়ে বলতে পারতাম, এই দেখো, তোমাদের শরীরের একটা দগদগে ক্ষত’কে সমূলে উপড়ে ফেলে দিলাম। দুনিয়ার একটা দোযখ’কে নিশ্চিহ্ন করে দিলাম। আজ আমার বুক গর্বে ভরে উঠছে, নবী আমার বন্ধু। আত্মার আপনজন। নবী, তুই যেখানেই থাক, তুই স্বয়ং আল্লাহর সঙ্গে আছিস।’ ফোটা ফোটা জল লেগে থাকা কড়াই যেমন আচমকা গনগনে আগুনে পুড়ে তপ্ত হয়ে ওঠে, আর তার ওপর পড়ে থাকা জল ফোটাগুলো চিড়বিড় করে বাষ্পিভূত হয়ে যায়, ঠিক তেমনই প্রতিহিংসার আগুনে ছ্যান ছ্যান করে জ্বলে তার চোখ থেকে কাঁদনের অশ্রু উবে গিয়ে চোখদুটো গোলা পাকিয়ে ওঠে আতিফের। সে কণ্ঠ বেলফাটার শব্দের মতো কড়া করে বলল, ‘আমাকে এখানে আর পড়ে থাকলে হবে না, সাদ্দাম। দ্রুত ফিরে যেতে হবে। মনে হয় না, এভাবে হুটপাট করে আর আব্বাদের খুঁজে পাব। তা ছাড়া সামনেই আমার বড় কাজ পড়ে। সে কাজে আমাকে সফল হতেই হবে। শয়তান মায়ানমার সরকারকে কোনোভাবেই আর খাড়া হয়ে দাঁড়াতে দেওয়া যাবে না। একটা ঘা খেয়ে উল্টে পড়ে যাওয়ার পর, আর সোজা হয়ে দাঁড়ানোর আগেই আরেকটা জুতসই ঘা দিতে হবে। যাকে বলে, চড়ের পর চড়, থাপ্পড়ের পর থাপ্পড়।’ দাঁত চিড়বিড় করল আতিফ। সঙ্গে সাদ্দামের দিকে একবার মায়াবি দৃষ্টিতে তাকাল। বলল, ‘তুই কী করবি?’

‘আমি কী করব মানে? যা করছি তাই করব। ওই মগজধোলাইয়ের কাজ। মুজাহিদ সাপ্লাইয়ের কাজ। আমি সাপ্লাই না দিলে তো আর জে এফ সংকটে পড়ে যাবে!’ বুকের ছাতি ফুলে উঠল সাদ্দামের। আতিফ ভ্রূ কুচকাল, ‘কিন্তু, তুই আজ যা কাণ্ড করলি, তাতে করে তুই কি আর নিরাপদে এই চত্বরে থাকতে পারবি? বি জি বি তো তোকে ফাঁসিতে ঝুলাবে।’
‘সে তো ঠিক কথাই, কিন্তু উপায় কী? আমার কাজটা তো অন্য কেউ করতে পারবে না।’
‘তোর ধারণা ভুল। পৃথিবীতে কোনো কাজ কারো জন্যে পড়ে থাকে না। কোনো জায়গা ফাঁকাও থাকে না। একজন গেলে আরেকজন ঠিক চলে আসে। তবে হ্যাঁ, তুই এতদিন ধরে এই এলাকায় থেকে যে পজিশন তৈরি করেছিস, যে প্রভাব তৈরি করেছিস, সোর্সের যে জাল বিছিয়েছিস তা হয়ত অন্যজন হুট করে এসে সে সব করতে পারবে না, কিন্তু কাজটা বন্ধ থাকবে না। একটু একটু করে বাড়তে বাড়তে আগের জায়গাটা ঠিক ফিরে আসবে। তোর তৈরি করা রাজত্বে অন্যজন এসে রাজত্ব করবে, এটাই তো সময়ের নিয়ম। ‘স্বাধীন রাখাইন’ তো আর একদিনে আসবে না। তিল তিল করে ভিত তৈরি করে তবেই তো একদিন চরম শীর্ষে পৌঁছাব। আর সে ভিত একটু একটু করে আমাদেরকেই তো তৈরি করে যেতে হবে। মনে রাখিস, আমরা হচ্ছি এক একটা গাঁথনি। তোকে সে কাজে আমাদের বড্ড দরকার। এত দ্রুত তোকে হারালে চলবে না। তুই এক কাজ কর।’
‘কী কাজ?’
‘তুই, আমার সঙ্গে বান্দরবান চল। আর জে এফ’এর ওপর তলার কর্তাদের বলে, তোকে অন্য কাজে পোস্টিং করে দেব। এই বি জি বি’র হ্যাপা তো থাকবে না।’
‘কিন্তু আমি এ জায়গা ছেড়ে কোত্থাও যাব না। বিপদ ছাড়া তো আমাদের জীবন হতে পারে না। আমাদের তো সবসময় মৃত্যুকে হাতে নিয়েই কাজ করতে হয়। মুজাহিদদের ওসব ভয় থাকতে নেই। আরে সাড়ে তিন হাত শরীরে ‘এই আছি এই নাই, ফুড়ুৎ করে উড়ে যাই’ গোছের তো জীবন। তাতে আর অত মৃত্যুভয় মেখে কী লাভ। বরং ওসব মাথার মধ্যে থাকলে, মাথাটাই একটা ভোঁতা লাউ হয়ে যাবে। কোনো করিৎকর্মে লাগবে না। এক কোপ খেতে না খেতেই ‘ভুষ’ করে ফেসে যাবে! ওসব ভূতিলাউএর মতো জীবন বানানো কী দরকার? ওসব চায়লে তো মুম্বাই শহরে গিয়ে অন্ধকার দুনিয়ার একজন কুখ্যাত খুনি হয়ে উঠতে পারতাম। অথবা, লক্ষ্যহীন উদ্দেশ্যহীন দুনিয়া কাঁপানো যেকোনো জঙ্গিসংগঠনের হয়ে কাজ করে কাড়ি কাড়ি ইনকাম করতে পারতাম। জীবনকে বাজি রেখে এই ঘিঞ্জি শরণার্থী শিবিরে পড়ে থাকতাম না। মনে রাখিস, এই তামাটে রঙের রক্ত-মাংসের দেহের ভেতরে যে রুহুটা আছে, সেটার মালিক আর এখন আমি নই, সেটার মালিক অসহায় শেকড়হীন রোহিঙ্গা জনজাতি। তাদের জন্যেই এ জীবন উৎসর্গীকৃত। তাদের জন্যেই এ জীবন অন্যসব পার্থিব সুখ আহ্লাদ ত্যাগ করে এই নির্বাসনের জীবন কাটাচ্ছে। আমার এই বাইরের খোলটা ঠোঙা মাত্র। এর কোনো জ্বালাপোড়া নেই। ভেতরের রুহুটাই আমার রাখাইন, আমার রোহিঙ্গা। তা ছাড়া সত্যি করে একটা জিনিস ভেবে দেখ, আমি এখানে যত অল্প সময়ে কাজ হাসিল করতে পারব, অন্যরা সেটা পারবে না। শহিদ তো একদিন হতে হবেই। তা না হয়, এখানেই হব।’ একনাগাড়ে বলল সাদ্দাম। তার চোখ ঘোলাটে হয়ে উঠছে। যেন দেহের ভেতরের সেই ‘রোহিঙ্গা রুহু’টা ছিটকে বেরিয়ে আসছে। অন্তরের সেই ‘রুহু’টাই যে বজ্রনির্ঘোষ হুঙ্কার গর্জে উঠছে, তার আঁচ পড়ছে দুইচোখে। ভেতরের সেই জোয়ারি-স্রোত সমস্ত গা-গতর ফুঁড়ে বাইরে হামলে পড়ছে। নাকে মুখে লাগছে হৃদয়ে বারুদ পোড়ার ঝাঁঝ। শান্ত মাথার সাদ্দাম যে আর জে এফ’এর হেলাফেলা মুজাহিদ নয়, সে যে আর জে এফ’এর একজন সাহসী মুজাহিদ, তা তার শরীরের ভেতরের হাড়ের সঙ্গে হাড়ের কটমট দেখে বোঝাই যাচ্ছে। আতিফ সাদ্দামের সেই গনগনে আগুনের মতো জ্বলে ওঠা হৃদয়ে ঘি’এর ছিটা দিল, ‘সবকটা শয়তান বার্মিজ সেনাদের ভিটে ছাড়া করে ছাড়ব, তখন শালোরা হাড়ে হাড়ে টের পাবে, পায়ের তলার মাটি আর মাথার ওপরের ছাদ না থাকার যন্ত্রণা কাকে বলে।’

সাদ্দাম ‘দপ’ করে জ্বলে উঠল, ‘ভিটে ছাড়া কী বলছিস রে! বল, দুনিয়া ছাড়া। সব শালোদেরকে আগুনের গোলায় ছুঁড়ে ফেলে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারব। বুঝবে, জাহান্নামের আযাব কাকে বলে।’
‘দুম’ করে একটা বিকট আওয়াজ নদীর দিক থেকে ভেসে এল! সাদ্দাম থতমত করে বলল, ‘এখানে আর দেরি করা একদম ঠিক হবে না, আতিফ। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পাহারাদাররা মনে হয় টের পেয়ে গেছে যে আমরা এই চোরা বর্ডার দিয়ে পাড়ে উঠে এসেছি।’
‘ওই জন্যেই কি ফায়ারিং করছে!’ চোখদুটো ড্যাবড্যাব করে নদীর দিকে তাকাল আতিফ।
‘সেটাই মনে হচ্ছে। চল, এখান থেকে দ্রুত কেটে পড়ি।’ পা চালাল সাদ্দাম। পলিমাটির আলপথ। চারপাশে ইতস্তত কাশফুলের বুনো ঝাড়। হাওয়াতে ফিনফিন করে দুলছে। নদীর পাড় ছুঁয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকা সাদাবালির ওপরে সূর্যের আলো পড়ে চিকচিক করেছে। বালির স্তর যেখানে শেষ হয়েছে, সেখান থেকেই নরম পলিমাটির ওপরে ঝোপ ঝোপ দুব্রো ঘাসের ঝোপ। দূর থেকে মনে হচ্ছে, একটা সবুজ সিঁথি চুল খাড়া করে শুয়ে আছে। আর সেই সিঁথিতে হাওয়ার দোলা লেগে, ধিনধিন করে নেচে উঠছে ঘাসগুলো। দুব্রো ঘাসের আড়ালে মুখ লুকিয়ে আছে হলুদ চাপাটি ঘাস। ডানার মতো থোড় পাতা ছড়িয়ে দিয়েছে মোথা ঘাস। মাঝে মাঝে দঙ্গল বেঁধে ফুটে আছে জংলি ঝুমকা লতা ফুল। কাঁধে কাঁধ মিলে আছে বককন গাছ। দুপুরের ছায়া এদের গোড়ায় ঝুপ মেরে গেছে। পাশের বালির আস্তরণ থেকে একটা মিহি গরম ভাপও গায়ে লাগছে। দূরে নদীর জলও সূর্যের আলো পেয়ে ঝিলমিল করছে।

বি.দ্র. সৌরভ হোসেনের ‘নেই দেশের নাগরিক’ উপন্যাসটি এবারের একুশে বইমেলায় মাওলা ব্রাদার্স থেকে প্রকাশিত হয়েছে। উপন্যাসটি ‘মাওলা ব্রাদার্স’ এর স্টল থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন পাঠকরা।

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৫
নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

Header Ad

সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু ৫ জুন

ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশন তথা বাজেট অধিবেশন শুরু হবে আগামী ৫ জুন থেকে। ওই দিন বিকাল ৫টা থেকে জাতীয় সংসদের অধিবেশন আহ্বান করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

সোমবার (২০ মে) জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কেএম আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৬ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বাজেট অধিবেশনে হওয়া এবারের অধিবেশন দীর্ঘ হবে বলে জানা গেছে। ৫ জুন অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে সংসদের কার্য উপদেষ্টা বৈঠকে সংসদ কত দিন চলবে—তা নির্ধারণ করা হবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন চলতি মাসের ২ তারিখ হতে শুরু হয়ে ৯ মে শেষ হয়। ওই অধিবেশনে একটি বিল পাশ হয়।

টাঙ্গাইলে আনসার সদস্যদের নির্বাচনী ডিউটি দিতে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

আনসার সদস্যদের ক্ষোভ। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

নির্বাচন আসলেই অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্যে মেতে উঠেন কিছু আনসার লিডারসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। জনপ্রতি ঘুষের পরিমাণ তিন’শ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। এই টাকা দিলেই মিলে ডিউটি, আর না দিলে পড়ছেন বাদ। আবার টাকা দিয়েও ডিউটি না পেয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

আনসার অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজশে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ওয়ার্ড লিডার, ইউনিয়ন লিডার ও পৌরসভার ওয়ার্ড লিডারদের বিরুদ্ধে। ঘুষ নেওয়ার এমন অভিযোগ করেছেন খোদ আনসার সদস্যরাই।

এদিকে, সকল অভিযোগ অস্বীকার করে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা। জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ২১ মে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে ৯৬৮ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আনসার সদস্যরা জানান, ডিউটির জন্য তাদের চাহিদা মোতাবেক টাকা না দিতে পারলে বাদ দেওয়া হচ্ছে ডিউটির তালিকা থেকে। এছাড়াও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেও অফিস খরচের নামে প্রতি সদস্যদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে আরও ২০০ থেকে ৩০০ টাকা।

এ ব্যাপারে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি অফিসার মো. শরিফ হোসেন বলেন, বিভিন্ন যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে আনসার সদস্য নিয়োগ করা হয়। যদি অফিসের কোনো কর্মচারী, ওয়ার্ড বা ইউনিয়ন লিডারের বিরুদ্ধে অনৈতিক লেনদেন অভিযোগ ওঠে তাহলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

‘বঙ্গবন্ধু শান্তি পদক’ চালু, পুরস্কার কোটি টাকা ও স্বর্ণ পদক

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পদক দেবে বাংলাদেশ সরকার। প্রতি ২ বছর পর একজন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কিংবা সংস্থাকে এ পুরস্কার দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক শান্তি পদক নীতিমালা-২০২৪’ এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সাধারণত প্রতি দুই বছরে দেশি বা বিদেশি একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে একটি ক্যাটাগরিতে এই পুরস্কার দেওয়া হবে। পুরস্কারের মূল্যমান এক লাখ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা) এবং ৫০ গ্রাম ওজনের (চার ভরির বেশি) ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ পদক পাবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (২০ মে) মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, ১৯৭৩ সালের ২৩ মে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুলিও কুরি শান্তি পদকে ভূষিত করা হয়েছিল। এটির ৫০ বছর পূর্তি আমরা গত বছর উদযাপন করেছি। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে বঙ্গবন্ধুর নামে একটি শান্তি পুরস্কার তিনি প্রবর্তন করতে চান। সেই প্রেক্ষিতে আজকে একটি নীতিমালা আমরা উপস্থাপন করেছি। মন্ত্রিসভা সেটি আজকে অনুমোদন করেছে।

‘এই নীতিমালার আওতায় বাংলাদেশ ও বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত বা বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাকে কয়েকটি ক্ষেত্রে অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পুরস্কার দেওয়া যাবে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা, যুদ্ধ নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ ও অবদান রাখা, দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় পরিস্থিতিতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখা, টেকসই সামাজিক পরিবেশগত অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সমাজের সামগ্রিক কল্যাণ সাধন—পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হবে।

পুরস্কার হিসেবে ৫০ গ্রাম ওজনের ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণের একটি পদক এবং এক লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ মূল্যের পুরস্কার দেওয়া হবে। একই সঙ্গে একটি সনদপত্র দেওয়া হবে। পুরস্কারটি প্রতি দুই বছরে একবার দেওয়া হবে।

পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে পৃথিবীর যেকোনো দেশ থেকে প্রস্তাব নেওয়া যাবে। কারা কারা প্রস্তাব করতে পারবে নীতিমালায় সেটারও একটা বর্ণনা দেওয়া আছে। একটি দেশের সরকার, রাষ্ট্রপ্রধান বা সেই দেশের সংসদ সদস্যরা প্রস্তাব পাঠাতে পারবেন। নোবেল বা অন্য কোনো আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিও কারও নাম প্রস্তাব করতে পারবেন।

বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি যত দূতাবাস রয়েছে সেই দূতাবাসের প্রধানরা বা আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা পুরস্কারের জন্য নাম প্রস্তাব করতে পারবেন। বিদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশন বা দূতাবাসের প্রধানরাও প্রস্তাব পাঠাতে পারবেন। জাতিসংঘের কোনো সংস্থা প্রধানও নাম প্রস্তাব করতে পারবেন। কোনো ব্যক্তি নিজে পুরস্কারের জন্য দাবি জানাতে পারবেন না।

নীতিমালা অনুযায়ী একটি জুরি বোর্ড গঠন করা হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জুরিবোর্ডের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। নিরপেক্ষ ও খ্যাতিসম্পন্ন লোকদের দ্বারাই জুরিবোর্ড গঠিত হবে। ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে পুরস্কার প্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করা হবে। ২৩ মে বা কাছাকাছি সময়ে এই পুরস্কার প্রদান করা হবে।

অর্থ বিভাগে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ দেবে। আগামী বছর (২০২৫) প্রথমবারের মতোই পুরস্কার দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

মন্ত্রিসভা থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, নীতিমালা নিয়ে কাজটি যাতে শুরু করা হয়। এটিকে যাতে পরবর্তীতে আইনে রূপান্তর করা হয়। আইনের মধ্যে একটি তহবিল তৈরি করতে বলা হয়েছে যে তহবিলে, সরকার বা বাইরের লোক যে কেউ সেখানে অনুদান দিতে পারবেন। পরে আমরা তহবিল থেকেই সেই ব্যয়ভারটা নির্বাহ করতে পারব। সেই পর্যন্ত সরকারই এই ব্যয়ভারটা বহন করবে।

সর্বশেষ সংবাদ

সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু ৫ জুন
টাঙ্গাইলে আনসার সদস্যদের নির্বাচনী ডিউটি দিতে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ
‘বঙ্গবন্ধু শান্তি পদক’ চালু, পুরস্কার কোটি টাকা ও স্বর্ণ পদক
রাইসির মৃত্যু আর সৌদি বাদশাহর অসুস্থতার জেরে বেড়েছে তেলের দাম!
অস্ট্রেলিয়ায় কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জাহিন
ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক
ভারতের নাগরিকত্ব পেয়ে প্রথমবারের মতো ভোট দিলেন অক্ষয়
রাইসির মৃত্যুতে ইরানে পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
৩০ ফ্রিল্যান্সিং দেশের র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে!
বজ্রপাতে সৈয়দপুর বিমানবন্দরের রানওয়েতে ফাটল, ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ
আইপিএলের প্লে-অফের ম্যাচগুলো কবে-কখন-কার বিপক্ষে?
ভোটারের উপস্থিতি নিয়ে ইসি উদ্বিগ্ন নয়, বললেন ইসি আলমগীর
ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যুতে বিশ্বনেতাদের শোক
সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই ২ জনসহ নিহত ৩
ইশরাক হোসেনের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি মির্জা ফখরুলের
ইব্রাহিম রাইসি ছিলেন আমার প্রিয় একটি ভাই : এরদোগান
ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ: ওবায়দুল কাদের
ইরানের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং তার সঙ্গীদের মরদেহ উদ্ধার
নিপুণের রিটে ডিপজলকে শিল্পী সমিতির পদে না বসতে নির্দেশ