সোমবার, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৩ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪৮

নেই দেশের নাগরিক

 

ইচ্ছে না থাকলেও বোট ছেড়ে পাড়ে উঠে পড়ল আতিফ। এক হাতে পাড়ের মাটি খামচে ধরে অন্য হাতে পাড় থেকে ঝুলে থাকা একটা কাশ গাছের ঝাড় চেপে ধরে হ্যাঁচকা টান দিয়ে ঢালু পাড়ে পা ঘষটাতে ঘষটাতে পাড়ে উঠে পড়ল আতিফ। আতিফ বোট ছাড়তেই সাদ্দাম হুটপাট করে বোটটাকে বেঁকিয়ে পেঁচিয়ে মাটির ঢিবিটায় আড়াল করে রাখল। তারপর থড়বড় করে হাঁচড়েপাঁচড়ে পাড়ে উঠে মারল দৌড়। আতিফও কিছু বুঝে না বুঝে তার পেছন পেছন দিল ছুট। সাঁই সাঁই করে দুজনে দৌড়চ্ছে। নদীর পাড়ের হলহলে বাতাসে তাদের লিকলিকে দেখাচ্ছে। গায়ের পোশাকগুলো ফিনফিন করে উড়ছে। সাদ্দাম পেছনে তাকাচ্ছে আর দৌড়াচ্ছে। এমনভাবে আইপাই করে দৌড়াচ্ছে, যেন মনে হচ্ছে গায়ের পোশাকের পিঠে বিপদ আঠার মতো লেগে আছে। উদোধুম দৌড়ে পাড় থেকে মাইল দেড়েক দূরে একটা গাছ-গাছালির জঙ্গলে ধুকপুক ধুকপুক করতে করতে থামল।
“এ যাত্রায় মনে হয় বাঁচলাম!” ধুঁকতে ধুঁকতে বলল সাদ্দাম।

“এখনো পুরো ফাঁড়া কাটেনি। পানির বিপদ থেকে হয়ত রেহায় পেলাম কিন্তু জমিনের বিপদ তো এখন ঘাড়ের উপরে!“ বুকের কলিজা হাপর টেনে বলল আতিফ। ধপাস করে মাটিতে বসে পড়ল সে। সাদ্দাম তড়াক করে উঠল, “আরে এ কী করছিস? এখানে আবার শুয়ে পড়বি নাকি! উঠ উঠ। জায়গাটা অত নিরাপদ নয়। বিজিএফের সেনারা মাঝমধ্যেই টহল দিতে আসে। হুট করে চলে আসবে না, তার কি কোন গ্যারেন্টি আছে?”
‘ধুর শালা!’ বিরক্তি দেখিয়ে হুড়মুড় করে দাঁড়াল আতিফ। দুরুদুরু কণ্ঠে বলল, “তো চল, এখান থেকে কেটে পড়ি। যেখানে কেউ টহল দেবে না, সেখানে চল।“ তারপর মাথায় কিছু একটা খেলতেই বলল, “ এক মিনিট দাঁড়া, একটা ফোন করি।“
“ফোন! এখন! এই আপদে!” চোখ পাকিয়ে আতিফের দিকে তাকাল সাদ্দাম। দাঁত কটমট করল।
“জাস্ট, ট্রাই করে দেখব, কলটা লাগছে কি না।“ আলগোছে বলল আতিফ। সাদ্দাম আরও খচে উঠল, “সে কে এমন লোক যে এই জান ফ্যাসাদে পড়া আপদের মধ্যেও তাকে ফোন করতে হবে! তুই কি আবার নতুন করে প্রেমটেম.......।“
“আরে না না, তুই যা ভাবছিস ওসব কিছু না। ওসব করার কি আর আমাদের সময় আছে? আর আমাদের মতো দেশহীন ছিন্নমূলের মানুষকে কোন মেয়েই আবার পাত্তা দেবে।“
“প্রেম কী আর দেশ, জাতি, ধর্ম দেখে হয়। প্রেম হয় মনে। প্রেম হয় চোখে। আর তুই তো কম হ্যান্ডসাম নস, তা ছাড়া তোর চোখে মেয়ে পটানোর একটা আলাদা আকর্ষণও আছে।“
“আরে থাম, থাম, প্রেমের আর মহাকাব্য বানাতে হবে না। আমি যে জন্যে বা যাকে ফোন করছি, সেখানে বা তার কাছে এসব ধরাছোঁয়ার বাইরে। যোজন যোজন দূরে। সে মানুষটা হয়ত এতক্ষণে আমাদের এই অসহায় অভাগা জাতির জন্যে জীবনকে উৎস্বর্গ করে ফেলল।“
“তুই কার কথা বলছিস, বলতো। তোকে ভোর থেকেই দেখছি, মোবাইলটা বের করে মাঝেমধ্যেই কাকে ফোন করছিস, আর ফোনটা না লাগাই, আফসোস করছিস। লোকটা কে? কী এমন ভাইটাল ব্যাপার?” সাদ্দামের কণ্ঠ ভারী হয়ে এল। চোখে মমত্বের ছাপ। আবার একটা কৌতূহলও রয়েছে।
“আচ্ছা, সাদ্দাম, এখান থেকে কি ওপারের বালুখালি চৌকি দেখা যায়?” নদীর ওপারে রাখাইনের দিকে চোখ ছেড়ে তাকাল আতিফ।
“নাহ, এখান থেকে দেখা যায় না। তবে লেডা থেকে আবছা দেখা যায়। তা হঠাৎ বালুখালি চৌকির কথা কেন তোর মাথায় এল!” সাদ্দামের চোখে এবার বিস্ময়।
“আজকের দিনটা বালুখালি চৌকির অন্তিম দিন। তার ইন্তেকালের দিন।“
“মানে! ঠিক বুঝলাম না!” বিস্ময় আরও চেপে বসে সাদ্দামের মাথায়।
“আজ বালুখালি চৌকির আকাশে শুধু ধোঁয়া ওড়ার কথা।“ কথাটা বলেই আতিফ রাখাইনের আকাশের দিকে চোখ ফেলল। চোখ থির করে দাঁতে দাঁত কামড়ে বলল, “কুখ্যাত ওই চৌকিটা কত যে নিরীহ রোহিঙ্গাদের জীবন নিয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। আসলে ওটা টহলদারি কোন চৌকি নয়, জাহান্নামের একটা অংশ। আর ওখানে দায়িত্বে থাকা মিয়ানমার সেনারা হচ্ছে এক একজন ইবলিশ। নিশ্চয় এতক্ষণে শালারা সব লাশ হয়ে গেছে। আগুনে ঝলসে গেছে পাপের শরীরগুলো। নবী, তুই এজন্মে সত্যিই একটা মহৎ কাজ করলি। তুইই সত্যিকারের আল্লাহর নেকবান্দা। আল্লাহ নিশ্চয় তোকে জান্নাতের সবচেয়ে ভালো জায়গাটা দেবেন। তোর জন্যে আজ আমার গর্বে বুকটা ফুলে উঠছে। নবী, তুই এখন কোথায়? তোর সঙ্গে একটু কথা বলতে যে আমার খুউব মন চায়ছে রে।“

খেয়ালি হয়ে ওঠে আতিফ। মনের সঙ্গে সঙ্গে তার চোখের দৃষ্টিও উড়ে যাচ্ছে ওপারের জন্মভিটেই। বন্ধু নবীর কাছে। আতিফের মনে দাউ দাউ করে জ্বলছে প্রতিশোধের আগুন। একধারে প্রতিশোধের আগুন আর অন্যধারে প্রিয়জনকে হারানোর শোক মনের ভিতগুলোকে নড়বড়ে করে তুলছে। মনের দেওয়াল থেকে খসে পড়ছে আহ্লাদের ইট। সাদ্দাম লক্ষ্য করল, আতিফ অন্যমনস্ক হয়ে উঠছে। রক্ত লাল চোখটা ছলছল করছে। আতিফের খেয়ালি কথাবার্তায় সাদ্দামও ক্ষণিকের জন্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তেড়ে আসা লঞ্চটার কথা ভুলে গেল। আতিফের কথায় কথা ঢেলে বলল, “নবী বলতে গেলে আমাদের আর জে এফ’এর নবীর কথা বলছিস? যে বান্দরবান ক্যাম্পে তোর সঙ্গে থাকত। যার কথা তুই মাঝেমধ্যেই আমাকে ফোনে বলতিস।“
“হ্যাঁ।“ ঘাড় নড়াল আতিফ।
“কিন্তু নবীর সঙ্গে বালুখালি চৌকির কী সম্পর্ক?”
“’লিটলবার্ড অ্যাকশন’।“
“ওটা আবার কী!”
“কোড নেম।“
“কীসের কোড নেম, একটু খুলে বল, নাহলে কী করে বুঝব?”
“’লিটলবার্ড অ্যাকশন’ হলো বালুখালি চৌকি আক্রমণের কোড নেম। আর এই অ্যাকশনের স্পট কমান্ডার হচ্ছে নবী। যার পেছনের মাথা হলো আরজেএফের কমিশন্ড অফিসার ব্রিগেডিয়ার সালিমুদ্দি মোল্লা। আজকেই ছিল সেই ‘লিটলবার্ড অ্যাকশন’এর নির্ধারিত দিন। জানি না নবী এখন কোথায়! ফোন ধরছে না। কু কু করে কেটে যাচ্ছে। তবে কি......!“
“তুই চিন্তা করিস নে। নবীর কিচ্ছু হবে না। তোর কাছ থেকে ওর সাহসিকতা আর বুদ্ধির যে তারিফ শুনেছি তাতে আমি নিশ্চিত, ও ঠিকঠাক কাজ হাসিল করে কোনো গোপন আস্তানায় লুকিয়ে রয়েছে। মোবাইল যেহেতু বিপদ ডেকে আনতে পারে, তাই হয়ত ও মোবাইলটাকে সুইচঅফ করে রেখেছে।“
“আচ্ছা, অন্য কোনোভাবে খোঁজ নেওয়া যাবে না?” আতিফের পাংশু মুখে কাতর আকুতি।
“নবীর খবর? না, বালুখালির খবর?”
“নবীর নিজের খবর তো আলাদাভাবে নেওয়া সম্ভব হবে না। বালুখালি চৌকির খবর নিলেই হবে।“
“হ্যাঁ, সে নেওয়া যাবে না কেন? আলবাত নেওয়া যাবে। টিভির খবর শুনলেই পাওয়া যাবে। কিছু ঘটলে নিশ্চয় এতক্ষণে সারা বিশ্ব খবর হয়ে গেছে।“ কথাটা বলেই সাদ্দাম তার পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে কাকে একটা ফোন লাগাল।

আতিফ উৎকণ্ঠার মুখ নিয়ে থির চোখে চেয়ে থাকল সাদ্দামের মুখের দিকে। ভেতরটা তার ধুকপুক করছে। দুশ্চিন্তার ঢেউ উথালপাথাল করছে। তার ছলছল চোখে বন্ধুর প্রতি মমত্বের টান। সাদ্দামের কানে মুঠোফোনটা যতটা সময় ধরে রিং হচ্ছে, আতিফের মনের তারেও ততটা সময় ধরে ‘কী হয় কী হয়’ ভাবের একটা দোটানার বেহাগ বাজছে। তার মুখের আদলে ধরা দিচ্ছে সেসব বদলের রঙ।
“হ্যাঁ, হ্যালো, সাদ্দাম বলছি, টিভিতে আজ খবর শুনেছিস? কখন শুনেছিস, কিছুক্ষণ আগে, তাহলে তো তুই বলতে পারবি। মিয়ানমারের কোনো বড় খবর আছে? মিয়ানমারে কি কোনো গুলি বা বোম চালানোর ঘটনা......।“ কালো রঙের মুঠোফোনটা কানে ঠেসে ধরে দুরুদুরু কণ্ঠে কথা বলতে লাগল সাদ্দাম। আতিফ তার ধুকপুক করতে থাকা থির চোখদুটো দিয়ে পরতে পরতে জরিপ করতে থাকল সাদ্দামের নড়াচড়া করতে থাকা ঠোঁটদুটো। খাড়া কানদুটো হাঁ করে মুখ বাড়িয়ে আছে। যেন তার কানের পর্দা আর সাদ্দামের ঠোঁটের মাঝের বাতাসটুকুও আজ হারাম। ভেত্তু। যেন শূন্যকে এড়িয়ে ঠোঁট আর কান এক হয়ে আছে। সাদ্দামের মুখ দিয়ে বের হওয়া প্রতিটি শ্বাসের শব্দ তার কানে ঝন ঝন করে বাজছে। “বালুখালিতে! হ্যাঁ হ্যাঁ, বালুখালি চৌকির কথায় বলছি....।“ সাদ্দামের ভ্রূ টান হয়ে ওঠে। আতিফ আরও কান খাড়া করে। সাদ্দাম ধুকপুক করে বলতে থাকে, “স্যুইসাইড অ্যাটাক! ক-জন?” সাদ্দামের শেষ কথাটা কানে আসতেই আতিফের পিলে ধড়ফড় করে ওঠে! চোখ থির হয়ে কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম হয়। চোখের নিচের তটরেখায় দুশ্চিন্তার কালো কালি থেবড়ে ওঠে। আবার মনের আর এক গভীর স্থানে খিলখিল করে খেলে উঠছে বিজয়ের হাসি। সাফল্যের চোরা আনন্দ। সে মন কাঁচা খিস্তি ঝারছে, শালো খবিষের বাচ্চাগুলো এবার খতম। পরক্ষণেই সেই মন কেঁদে ওঠে, কিন্তু নবী! নবী কি বাঁচতে পেরেছে?
“হ্যাঁ হ্যাঁ, ক-জন শহীদ হয়েছেন?” সাদ্দামের কণ্ঠ ডুকরে উঠল। আতিফ অন্যসব ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে আগ বাড়িয়ে বলে উঠল, “নবীর কী খবর?”
সাদ্দাম আতিফের কথা কান করল না। সে আপন খেয়ালে বলতে লাগল, “চৌকির ক্ষয়ক্ষতি কেমন হয়েছে? বার্মা সেনার হতাহতের খবর কী?” একটা ঢোক গিলল সাদ্দাম, তারপর ফোনের ওপারের কথাটা চোখ বড় করে শুনতে শুনতে বুক ফুলিয়ে বলল, “তাই! আলহামদুল্লিলাহ! ভালো সংখ্যক শয়তানই খতম হয়েছে! পুরো চৌকিই ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে! ইয়া আল্লাহ, তোমাকে শুক্রিয়া।“ দুশ্চিন্তার ছায়া ঘেরা মুখে হঠাৎ এক ঝলক যুদ্ধজয়ের আনন্দ। এরপরের কথাটা শুনতে শুনতে সাদ্দামের ক্ষণিকের আনন্দ কর্পূরের মতো উবে গেল। মুখের আদলে ঝুপ করে নেমে এল দুশ্চিন্তার করাল ছায়া। আঁকুপাঁকু করে জিজ্ঞেস করল, “ক-জন ধরা পড়েছেন? একজন? আচ্ছা। তার নামটাম কি খবরে কিছু জানাচ্ছে? ও আচ্ছা। ঠিক আছে। নাহ, আমি একটু বাইরে আছি। একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজে আছি। তোরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখ। আচ্ছা, এখন রাখছি। পরে কথা হবে। খোদাহাফেজ।“ ফোনটা রাখতেই আতিফ একেবারে হামলে পড়ল।
দুরুদুরু কণ্ঠে বলল, “বালুখালিচৌকি কি শেষ? ক-জন শহীদ হয়েছেন? ধরা পড়েছেন ক-জন? যারা শহীদ হয়েছেন বা যারা ধরা পড়েছেন, তাদের কি নাম পরিচয় কিছু জানা গেছে?”
“আরে থাম থাম, অত উতলা হলে হবে? একটা একটা করে বলছি। একসঙ্গে এত প্রশ্ন করলে, কী করে উত্তর দেব?” খচে ওঠে সাদ্দাম। মাথা ঠান্ডা করে, কণ্ঠে আবেগ মিশিয়ে বলে, “আমি বুঝতে পারছি, তোর মনের ভেতরে এখন কী হচ্ছে। তুই কেন উতলা হচ্ছিস। তোর মনের কষ্টটা কিছুটা হলেও আমি অনুধাবন করতে পারছি।“
আতিফ আর কিচ্ছু বলে না। ফ্যালফ্যাল করে বন্ধুর দিকে তাকিয়ে থাকে। সে তাকানোয় ঝরে পড়ছে মায়া। আচমকা তার কষ্টের বাঁধ ভেঙে যায়। হাউমাউ করে ওঠে।

সাদ্দাম তার পিঠে ভরসার হাত দিয়ে বলে, “এটাই তো ভবিতব্য। কী আর করবি। আমাদের জন্মই তো হয়েছে শহীদ হওয়ার জন্যে। এই ক-দিনের হাসি-কান্নার জীবন দেশ ও জাতির জন্যে বিলিয়ে দিতেই পথে নেমেছি। ওদের জন্যে গর্ব কর। আল্লাহর কাছে দোয়া চা। আমরাও যেন ওদের চলা পথে শহীদ হতে পারি।“ হাত দিয়ে চোখ মোছে সাদ্দাম। ভেজা কণ্ঠে বলে, “নাহ, কারো কোনো পরিচয় জানা যায়নি। খবরে নাম পরিচয় কিছু বলছে না, শুধু বলছে, এই আক্রমণের দায় নাকি আর জে এফ নিয়েছে। মিয়ানমার সেনা সূত্রে জানাচ্ছে, মোট হামলাকারী সংখ্যা ছিল পাঁচজন। তার মধ্যে তিনজন শহীদ হয়েছেন। একজন পালিয়ে গেছেন। আর একজন ধরা পড়েছেন।“

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>
নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৫
নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

Header Ad
Header Ad

পুলিশের শতকরা ৮০ জনের হৃদয়ে ছাত্রলীগ: আসিফ নজরুল

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, বর্তমান পুলিশের শতকরা ৮০ জনই আওয়ামী আমলের, যাদের হৃদয়ে ছাত্রলীগ। তারাই এ সরকারের জন্য কাজ করছে না।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে চারটি বইয়ে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেন তিনি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, বিপ্লব পরবর্তী কিছু সমস্যা থাকে। তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে সরকার। গণঅভ্যুত্থান নিয়ে সকলের মধ্যে যে ঐক্য ছিল, সেই ঐক্য আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলেও আশাপ্রকাশ করেন আসিফ নজরুল।

এর আগে, সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে বিএনপির সঙ্গে গণঅভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের কোনো দূরত্ব বা ভুল বোঝাবুঝি কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেন আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের কোনো দূরত্ব বা ভুল বোঝাবুঝি কাম্য নয়। এটি গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও তাদের দোসরদের কতটা উৎসাহিত এবং বেপরোয়া করে তুলতে পারে তার কিছুটা প্রমাণ আমরা গত কয়েক দিনে পেয়েছি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, তিনি যতটা জানেন এবং বিশ্বাস করেন— বিএনপি কোনো ষড়যন্ত্রে জড়িত নয় এবং তারা ১/১১ ধরনের কিছু করতে চাচ্ছে না, ছাত্রনেতারা সরকারের অংশ হিসেবে কোনো নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছে না বা এতে যোগ দিচ্ছে না, জুলাই ঘোষণাপত্র একটি রাজনৈতিক দলিল হবে এবং ছাত্রনেতারা গণঅভ্যুত্থানের শক্তির মতামত সঠিকভাবে প্রতিফলিত করার জন্য চেষ্টা করছেন এবং বিএনপি এবং ছাত্রনেতারা এমনকি নির্বাচন কেন্দ্রিক বৃহত্তর সমঝোতার ব্যাপারে আগ্রহী, তবে সেটি আলোচনা সাপেক্ষে। এর অর্থ হলো, বিরোধের কোনো কারণ নেই, বরং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

আসিফ নজরুল আরও বলেন, গণহত্যায় জড়িতদের হাতে রয়েছে লুটপাট করা বিপুল পরিমাণ টাকা, অনেক সুবিধাবাদী গোষ্ঠী, শক্তিশালী প্রচারণা নেটওয়ার্ক এবং শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সমর্থন। তাদের বিরুদ্ধে যদি কিছু করতে হয়, তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্রদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের মধ্যে ভিন্নমত থাকবে, তবে তা যেন দেশের শত্রুদের জন্য উৎসাহের কারণ না হয়।

Header Ad
Header Ad

৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদের পদত্যাগ এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচারের দাবিতে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) শেষ রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর আন্দোলনের সংগঠক আব্দুর রহমান।

তিনি বলেন, বিচারের আগে কোনো ধরনের পরীক্ষা হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বৈরাচারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে ৭ কলেজকে ঢাবির অধিভুক্তি থেকে বাতিল করে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলাম।

তিনি বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবি ছিল আমাদের। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তা করেনি। উল্টো ধারণক্ষমতার চেয়েও বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা এসব নিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। সবশেষ বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-ভিসি (শিক্ষা) আমাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। এর প্রতিবাদে গণতন্ত্র ও মুক্তি তোরণের নিচে অবস্থানকালে ঢাবি শিক্ষার্থী ও পুলিশ সম্মিলিতভাবে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।

৭ কলেজকে নিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করতে হবে, এমন দাবি জানিয়ে আব্দুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-ভিসি মামুন আহমেদের বিচার করতে হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার সকাল ৯টা থেকে ঢাকা শহর অবরোধ করা হবে। সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাস এলাকায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন।

Header Ad
Header Ad

ছাদের কার্নিসে ঝুলে থাকা শিক্ষার্থীকে গুলি, সেই এসআই চঞ্চল গ্রেপ্তার

শিক্ষার্থীকে গুলি করা পুলিশের সেই উপপরিদর্শক (এসআই) চঞ্চল সরকার। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় ছাদের কার্নিসে ঝুলে থাকা শিক্ষার্থীকে গুলি করা পুলিশের সেই উপপরিদর্শক (এসআই) চঞ্চল সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের হোতাকে খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা থেকে আসা পুলিশের একটি বিশেষ ইউনিট।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তানভীর হাসান জোহার নেতৃত্বে একটি টিম দীঘিনালায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।

দীঘিনালা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকারিয়া এসআই চঞ্চল সরকারকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি করেছেন। তিনি জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে দীঘিনালা থানা থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ তাকে আটক করে। আটকের পর রাতেই তাকে ঢাকার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

জুলাই আন্দোলনে মৃত্যুর ভয়ে ৪ তলার কার্নিশে ঝুলে থাকা কিশোরকে ঠাণ্ডা মাথায় খুব কাছ থেকে কয়েক রাউন্ড গুলি করে হত্যা করে দুই পুলিশ।

রামপুরা-বনশ্রীর মেরাদিয়া বাজারে অবস্থিত রামপুরা থানার পার্শ্ববর্তী নির্মাণাধীন বিল্ডিং-এ পুলিশের গুলিতে টিকতে না পেরে কিশোর ছেলেটি থানার পাশেই মেইনরোড সংলগ্ন একটি নির্মাণাধীন ৪তলা ভবনে উঠে যায়। সবাই চলে যেতে পারলেও এই কিশোর ওই ভবনে আটকা পড়ে যায়। ৪ তলার ছাদের সাইড দিয়ে নেমে সে নিজেকে লুকানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তাকে দেখেই দুই পুলিশ রিভলভার দিয়ে পর পর ছয় রাউন্ড গুলি করে ওই কিশোরের মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর গত ৭ নভেম্বর এসআই চঞ্চল সরকার দীঘিনালা থানায় যোগদান করেন। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পুলিশের শতকরা ৮০ জনের হৃদয়ে ছাত্রলীগ: আসিফ নজরুল
৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি
ছাদের কার্নিসে ঝুলে থাকা শিক্ষার্থীকে গুলি, সেই এসআই চঞ্চল গ্রেপ্তার
সাত কলেজের সব পরীক্ষা স্থগিত
আজ পবিত্র শবে মেরাজ
মধ্যরাতে ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত ৮
সাবেক দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান গ্রেপ্তার
রয়্যাল এনফিল্ড কিনে না দেয়ায় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ কিশোরের!
রংপুরের টানা দ্বিতীয় হার, রাজশাহীর নাটকীয় জয়
সায়েন্সল্যাব ও টেকনিক্যাল মোড় অবরোধ করেছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা
আসাদুজ্জামান খান কামাল বাংলাদেশের কসাই: প্রেস সচিব
পুলিশের সংখ্যা পর্যাপ্ত, কিন্তু মনোবলের ঘাটতি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাংলাদেশে আসছে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট
মালয়েশিয়া-থাইল্যান্ড যাচ্ছেন বাংলাদেশি রোগীরা, কলকাতার হাসপাতাল ব্যবসায় ধস
২৫ দিনে এলো ২০৪৪৭ কোটি টাকার প্রবাসী আয়
বেতন-ভাতায় না পোষালে অন্য পেশায় চলে যান: প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা
অ্যাডভোকেট তপন বিহারী নাগ ট্রাস্ট বৃত্তি পেলেন কুবির ৩০ শিক্ষার্থী
নির্বাচনের কথা বললে উপদেষ্টাদের মুখ কালো হয়ে যায়: মেজর হাফিজ
পদ্মশ্রী পাচ্ছেন সংগীতশিল্পী অরিজিৎ সিং
‘মাকে খুশি করতে’ শিক্ষার্থী সেজে রাবিতে ক্লাস, চার মাস পর আটক