সোমবার, ২০ মে ২০২৪ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৮

যারা যুদ্ধ করেছিল

রকিব মমিনের রুমে এসে দেখে মজনু মমিনের মাথা টিপে দিচ্ছে। মজনু হঠাৎ বলে, ‘ওস্তাদ, আপনার মন খারাপ ক্যা?’
মমিন বলে, ‘বার বার সাকিবের কথা মনে হচ্ছে। ছোটবেলার বন্ধু। তার জীবনটা এইভাবে চিড়ে চ্যাপ্টা হবে আমি তা চাইনিরে।’
মজনু বলে, ‘শাস্তি বেশি অইছে কইতে চান?’
‘না। তা কইতে চাই না। তবে শাস্তি অন্যদের মতো হলে ভালো হতো। শত্রুকে আধা মৃত্যু দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। কথায় বলে, সাপ মেরে লেজ তাজা রাখা ঠিক না।’

মজনু বলে, ‘ওরতো আর কিছু করার ক্ষমতা নাই। ধুকে ধুকে মরতে হবে। ও যেমন বন্ধুর সঙ্গে বেঈমানি করছে এটাই ওর উপযুক্ত শাস্তি। বন্ধুর বোনের সঙ্গে নষ্টামি। জীবনের তরে নষ্টামি করার কম্ম শেষ। বিয়া-শাদীর মুখ জীবনে আর দেখা লাগবো না। সারাজীবন আন্ধা হয়া বাঁচতে হবে। মরলেতো ওস্তাদ শেষ হয়া গেল। শাস্তির কোনো নমুনা থাকলো না। বাঁইচা থাইকা হারে হারে বুঝুক বেঈমানির শাস্তি কি।’
মমিন এবার বিরক্ত মুখে বলে, ‘ওকে বাঁচায়া রাইখা আমার বোনের জীবনটাও অস্বস্তিতে ফেলা হইছে।’
‘কেমনে?’
‘ওই বদমাইশটাকে দেখলে আমার বোনের মনটা অস্থির হয়ে উঠবে। ওর মনেও পুরনো কষ্টের কথা ভেসে উঠবে।’
‘উল্টাটাও হইতে পারে ওস্তাদ। আপনার বোন যখন দেখবে আন্ধা হয়া ব্যাটা অন্যের হাত ধরে চলাফেরা করছে। জনমে আর বিয়া করার সাধ্য নাই তখন আপনার বোনের চরম প্রতিশোধের কথাটা মনে হয়ে শান্তিও লাগতে পারে। পারে না ওস্তাদ?’
মমিন আবার শুয়ে পড়ে। নিস্তেজ কণ্ঠে সায় দেয় মজনুর কথায়। বলে, ‘তাও হতে পারে। কথাটা মিছা কস নাই।’
মজনু ওস্তাদকে খুশি করতে পেরেছে। এই আনন্দে মাথা মালিশ আয়েশ করে করতে থাকে।
ঘরে রকিব আসে মমিনের সঙ্গে দেখা করতে। মজনু তার মাথা মালিশ করছে দেখে ছুটে এসে রকিব বলে, ‘ভাইজান কি শরীর খারাপ লাগছে?’
মমিন বিষন্ন মুখে তাকায়। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, ‘না। রাতে ঘুমোতে পারিনি। মাথাটা টাস টাস করছে। মজনু তাই শুনে মাথা মালিশ করতে শুরু করেছে। পাগল ছেলে।’
মমিন শোয়া থেকে উঠে বসে। মজনুকে বলে, ‘তুই একটু যা তো। রকিবের সঙ্গে আমার কিছু কথা আছে।’

মজনু বাইরের দিকে যায়। রকিবকে পাশে বসতে বলে মমিন। রকিব বসে। মমিন বলে, ‘মা বাবাকে কোথায় রেখে এলি?’
রকিব বলে, ‘আমার বোনের বাড়িতে। মাকে বলেছি সাথীকে দেখে রাখতে।’
মমিন দুঃখ ভরা কণ্ঠে বলে, ‘সাথীকে নিয়ে আমার ভীষণ ভয়।’
রকিব বলে, ‘আমার বোনের বাড়িতে ভয়ের কোনো কারণ নেই ভাইজান।
মমিন বলে, ‘আমি মিলিটারির ভয়ের কথা বলছি না। সাথীকে আমি খুব ভাল চিনি। ভীষণ অভিমানি মেয়ে। আত্মহত্যা করে না বসে।’
রকিব আমতা আমতা করে বলে, ‘আমি সাথীকে আশ্বস্ত করেছি। বারে বারে বলেছি ও যেন অতীতকে ভুলে যায়।’
‘চাইলেই কি সব ভোলা যায়রে রকিব।’
‘তা হয়তো যায় না। কিন্তু যুদ্ধে আরও অনেকে ভয়ংকর ত্যাগ স্বীকার করছে। তারা যদি ভুলে যেতে পারে ও কেন পারবে না?’
‘কথা অন্য জায়গায়। দেখা গেল ও ভুলে গেছে। কিন্তু প্রতিবেশীরা ওর কষ্টের জায়গায় লবণ ছিটিয়ে ওকে আরও কষ্ট দিচ্ছে।’
‘সে কথাও আমি সাথীকে বুঝিয়ে বলেছি ভাইজান। আমি আপনাকে সব কথা বলতে পারছি না। শুধু এইটুকু আপনাকে বলি, আপনি হয়তো জানেন না আমি সাথীকে ভালবাসি। সাথীও আমাকে ভালবাসে। আমরা ঠিক করেছি, যুদ্ধ শেষ হলেই আমরা বিয়ে করে গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে যাব। সাথীও একমত পোষণ করেছে আমার সঙ্গে।’
রকিবের এই কথায় মমিন খুব স্বস্তি অনুভব করে। মমিন আনমনে বলে, ‘সাকিবকে জীবন মৃত করে রাখা ঠিক হয়নি। মেরে ফেললেই বরং ওর কষ্ট কম হতো।’
‘সেটা নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না ভাইজান। আপনার তেমন মনে হলে আবার গিয়ে ফাইনাল অপারেশেন করে আসবো। আপনি এ সব না ভেবে যুদ্ধের প্লান করেন।’

কথাটা পরদিন সারা গাঁও রটে যায়, রাজাকার আলিম জহর এবং গেদুকে পাওয়া যাচ্ছে না। শান্তি কমিটির মেম্বর ফজলুর রহমান এবং তার ছেলে সাকিবকেও পাওয়া যাচ্ছে না। মুক্তিবাহিনী তাদের ধরে নিয়ে গেছে। এই খবর সদরে মিলিটারি ক্যাম্পে পৌঁছালে কমান্ডার ক্যাপটেন আব্বাস খান শতাধিক মিলিটারি এবং অর্ধশত রাজাকার নিয়ে শাজাহান পুর গ্রাম ঘেরাও করে। প্রথমে পায় একজন অতিশয় বৃদ্ধকে। সে লাঠি ভর দিয়ে হেঁটে আসছিল। তাকে সামনে পেয়ে ক্যাপটেন আব্বাস খান কোমর থেকে পিস্তল বের করে গুলি করে। বৃদ্ধ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে হাত-পা খিঁচিয়ে তখনই মারা যায়। সামনে পাওয়া বাড়ি-ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় মিলিটারিরা। খুঁজে খুঁজে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেওয়া ব্যক্তিদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া শুরু করে। মমিনের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয় সবকিছু। মিলিটারিরা উল্লাস নিয়ে মমিনদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ভাবখানা যেন মমিনকেই ওরা হাতে নাতে ধরেছে। মিলিটারি কয়েকজন যুবককে ধরে লাইনে দাঁড় করিয়ে তাদের ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে। অধিকাংশ মানুষ বাড়িঘর ফেলে পালিয়ে গেছে। মিলিটারি ইচ্ছেমতো তাণ্ডব চালিয়ে পাশের গ্রাম জগতগাঁতির দিকে এগিয়ে যায়। সেই গ্রামটা হিন্দু অধ্যুষিত। মিলিটারির সঙ্গে কয়েকজন রাজাকার এবং শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আফাজ উদ্দিনসহ অন্য সদস্যরাও রয়েছে। তারাই হিন্দুর বাড়িঘর চিনিয়ে দিচ্ছে। আর মিলিটারি মনের আনন্দে গান পাউডার ছিটিয়ে টিনের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে।

এলাকা জুড়ে থমথমে পরিবেশ। যুবকরা কেউ ভয়ে বাড়ি থাকে না। অনেকে এই অবস্থায় মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিতে ভারতের দিকে রওনা হয়। ‘তাদের যুক্তি এমনেও মরণ ওমনেও মরণ। তাইলে মাইরাই মরি।’

মাসখানেক পর হাসপাতাল থেকে ফিরলো সাকিব। তার অসুস্থ মা বিছানা থেকে যে উঠতে পারে না সেও ছেলের এই অবস্থা দেখে চিৎকার দিয়ে কাঁদতে শুরু করলো। সাকিবের চোখে ব্যান্ডেজ বাঁধা। ভাল করে হাঁটতেও পারে না। লিঙ্গের গোড়া কেটে দিয়েছে মুক্তিরা। এ জীবনে তার আর নারী সঙ্গ করা হবে না। বন্ধুর বোনকে কৌশলে ভোগ করার খেসারত হিসেবে তাকে চরম মূল্য দিতে হলো।
সাকিবের মা আয়েশা বেগম ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘খোড়াইয়া হাটোস ক্যা বাজান? কুচকিতে কি অইছে?’

সাকিব সে কথা মাকে বলতে পারে না। মুক্তিবাহিনী তাকে হত্যা না করে তাকে জ্যান্ত-মৃত করে রেখেছে। তার যৌবন ধ্বংস করেছে। এখন সে খোজা। সম্রাটদের হেরেমের পুরুষদের মতো তাকেও খোজা করে দিয়েছে। এই কষ্ট সে কীভাবে সইবে? কীভাবে মাকে এই কথা সে জানাবে?

সাকিব মাথা নামিয়ে থাকে। তার চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল গড়াচ্ছে। মায়ের হাতে জলের ফোটা এসে পড়লে আয়েশা বেগম ছেলেকে বুকে টেনে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে। বলে, ‘তখনই না করছিলাম। এটা পাপ। তোরা বাপবেটা কেউ আমার কথায় কান দিলি না। এখন স্বামীকে হারালাম। তুইও না থাকার মতো। বংশ রক্ষা হলো না আমাদের।’

মায়ের কান্নার সঙ্গে সাকিবও কান্নায় ভেঙে পড়ে। আয়েশা বেগম বলে, ‘তোর বাপকে মাইরা কোথায় ফালায়া দিছে?’
সাকিব বলে, ‘আমি জানি না মা। ওরা সারাক্ষণ আমার চোখ বাইন্ধা রাখছে।’
‘তাকে কি গুলি কইরা মারছে?’
‘না। ওরা কাউকে গুলি করে না। ওরা বলাবলি করতে ছিল গুলি ওদের খুব মূল্যবান সম্পদ। সম্ভব নদীর পাড়ে নিয়া সবাইকে জবাই করছে।’
‘তোর আব্বাকে কি ওরা খুব মারধর করছে?’
‘সাকিব দম নিয়ে বলে, ‘না। মারধর করে নাই। তবে মুখে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করছে। আব্বা একবার শুধু বলেছে, আমি কারো ক্ষতি করি নাই। তখনই ফটাস করে চড়ের শব্দ হলো। একজন ক্রুদ্ধ কণ্ঠে বললো, ‘তাহলে তোর বাড়িতে মমিনের বোনকে জোর কইরা ধইরা রাখছোস ক্যা?’ তারপরই আব্বাকে নিয়ে যায় নদীর দিকে। বাকিদেরও একইভাবে নিয়ে যায়। শুধু আমাকে আলাদাভাবে বেঁধে রাখে। তারপর মুখে কাপড় গুজে দেয় যাতে আমি চিৎকার করতে না পারি।’ বলতে বলতে সাকিব কান্নায় ভেঙে পড়ে।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১৭

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব- ১৬

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব- ১৫

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১৪

Header Ad

‘বঙ্গবন্ধু শান্তি পদক’ চালু, পুরস্কার কোটি টাকা ও স্বর্ণ পদক

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পদক দেবে বাংলাদেশ সরকার। প্রতি ২ বছর পর একজন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কিংবা সংস্থাকে এ পুরস্কার দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক শান্তি পদক নীতিমালা-২০২৪’ এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সাধারণত প্রতি দুই বছরে দেশি বা বিদেশি একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে একটি ক্যাটাগরিতে এই পুরস্কার দেওয়া হবে। পুরস্কারের মূল্যমান এক লাখ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা) এবং ৫০ গ্রাম ওজনের (চার ভরির বেশি) ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ পদক পাবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (২০ মে) মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, ১৯৭৩ সালের ২৩ মে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুলিও কুরি শান্তি পদকে ভূষিত করা হয়েছিল। এটির ৫০ বছর পূর্তি আমরা গত বছর উদযাপন করেছি। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে বঙ্গবন্ধুর নামে একটি শান্তি পুরস্কার তিনি প্রবর্তন করতে চান। সেই প্রেক্ষিতে আজকে একটি নীতিমালা আমরা উপস্থাপন করেছি। মন্ত্রিসভা সেটি আজকে অনুমোদন করেছে।

‘এই নীতিমালার আওতায় বাংলাদেশ ও বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত বা বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাকে কয়েকটি ক্ষেত্রে অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পুরস্কার দেওয়া যাবে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা, যুদ্ধ নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ ও অবদান রাখা, দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় পরিস্থিতিতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখা, টেকসই সামাজিক পরিবেশগত অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সমাজের সামগ্রিক কল্যাণ সাধন—পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হবে।

পুরস্কার হিসেবে ৫০ গ্রাম ওজনের ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণের একটি পদক এবং এক লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ মূল্যের পুরস্কার দেওয়া হবে। একই সঙ্গে একটি সনদপত্র দেওয়া হবে। পুরস্কারটি প্রতি দুই বছরে একবার দেওয়া হবে।

পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে পৃথিবীর যেকোনো দেশ থেকে প্রস্তাব নেওয়া যাবে। কারা কারা প্রস্তাব করতে পারবে নীতিমালায় সেটারও একটা বর্ণনা দেওয়া আছে। একটি দেশের সরকার, রাষ্ট্রপ্রধান বা সেই দেশের সংসদ সদস্যরা প্রস্তাব পাঠাতে পারবেন। নোবেল বা অন্য কোনো আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিও কারও নাম প্রস্তাব করতে পারবেন।

বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি যত দূতাবাস রয়েছে সেই দূতাবাসের প্রধানরা বা আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা পুরস্কারের জন্য নাম প্রস্তাব করতে পারবেন। বিদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশন বা দূতাবাসের প্রধানরাও প্রস্তাব পাঠাতে পারবেন। জাতিসংঘের কোনো সংস্থা প্রধানও নাম প্রস্তাব করতে পারবেন। কোনো ব্যক্তি নিজে পুরস্কারের জন্য দাবি জানাতে পারবেন না।

নীতিমালা অনুযায়ী একটি জুরি বোর্ড গঠন করা হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জুরিবোর্ডের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। নিরপেক্ষ ও খ্যাতিসম্পন্ন লোকদের দ্বারাই জুরিবোর্ড গঠিত হবে। ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে পুরস্কার প্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করা হবে। ২৩ মে বা কাছাকাছি সময়ে এই পুরস্কার প্রদান করা হবে।

অর্থ বিভাগে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ দেবে। আগামী বছর (২০২৫) প্রথমবারের মতোই পুরস্কার দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

মন্ত্রিসভা থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, নীতিমালা নিয়ে কাজটি যাতে শুরু করা হয়। এটিকে যাতে পরবর্তীতে আইনে রূপান্তর করা হয়। আইনের মধ্যে একটি তহবিল তৈরি করতে বলা হয়েছে যে তহবিলে, সরকার বা বাইরের লোক যে কেউ সেখানে অনুদান দিতে পারবেন। পরে আমরা তহবিল থেকেই সেই ব্যয়ভারটা নির্বাহ করতে পারব। সেই পর্যন্ত সরকারই এই ব্যয়ভারটা বহন করবে।

রাইসির মৃত্যু আর সৌদি বাদশাহর অসুস্থতার জেরে বেড়েছে তেলের দাম!

রাইসির মৃত্যু আর সৌদি বাদশাহর অসুস্থতার জেরে বেড়েছে তেলের দাম। ছবি: সংগৃহীত

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। এ খবর এখন সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। সেই সাথে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স বাদশাহ’র স্বাস্থ্যের সমস্যা উল্লেখ করে জাপান সফর বাতিল করেছেন।

এদিকে প্রধান তেল উৎপাদনকারী দুটি দেশের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার জেরেই সোমবার (২০ মে) তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এক প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যের বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ৪১ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৮৪ দশমিক ৩৯ ডলারে উঠেছে। মে মাসের ১০ তারিখের পর এটাই ব্রেন্ট ক্রুডের সর্বোচ্চ দাম।

এছাড়া ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের দাম ২৩ সেন্ট বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৮০ দশমিক ২৯ ডলারে উঠেছে। এর আগে, ১ মে এই তেলের দাম ছিল ব্যারেলপ্রতি ৮০ দশমিক ২৩ ডলার।

গতকাল আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। আর সেখানে যাওয়ার পথে বৈরি আবহাওয়ায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হন তিনি।

অন্যদিকে, আজ সোমবার জাপান সফরে যাওয়ার কথা ছিল সৌদি আরবের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের। কিন্তু বাদশাহ সালমানের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ থাকায় যুবরাজ তার সফর বাতিল করেছেন। জাপানের মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিমাসা হায়াসি এক বিবৃতিতে এ কথা জানান।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মূলত এই দুই কারণেই বিশ্ববাজারে হঠাৎ করেই বেড়ে গিয়েছে তেলের দাম।

গবেষণাপ্রতিষ্ঠান আইজি মার্কেটসের বিশ্লেষক টনি সিকামোর রয়টার্সকে বলেন, ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম বেড়ে যাওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। শুধু ইরানি প্রেসিডেন্টের মৃত্যু ও সৌদি বাদশাহর স্বাস্থ্যগত কারণে নয়, চীন আবাসন খাতকে টেনে তুলতে গত সপ্তাহে যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছে, তার প্রভাবে তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে। চীন বিশ্বের বৃহত্তম তেল আমদানিকারক। এই দেশের চাহিদার ওপর বিশ্ববাজারে তেলের দাম অনেকাংশে নির্ভর করে।

অস্ট্রেলিয়ায় কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জাহিন

অস্ট্রেলিয়ায় কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফারহান জাহিন। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে আয়োজিত দ্বিতীয় বার্ষিক জাতীয় কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার কিশোর ফারহান জাহিন।

গত শনিবার (১৮ মে) সিডনির ব্যাংকসটাউনের ব্রায়ান ব্রাউন থিয়েটারে আল তাজকিরাহ ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে দিনব্যাপী এ কোরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে তিন হাজার ডলারসহ ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ড জিতে নিয়েছে ফারহান জাহিন। প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছেন ভিক্টোরিয়া স্টেটের হাফসা বতুল ও তৃতীয় হয়েছেন সালমান মোহাম্মদ।

সেদিন অস্ট্রেলিয়ার ছয়টি রাজ্য থেকে আগত বিপুল সংখ্যক স্কুলশিক্ষার্থী প্রতিযোগীদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতার পর বিকেলে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানও হয়েছে।

প্রবাসী মুসলিমদের সামাজিক সংগঠন ইসলামিক প্র্যাকটিস অ্যান্ড দাওয়াহ সার্কেল (আইপিডিসি) এর অধীনস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আল তাজকিরাহ ইনস্টিটিউট চলতি বছরের পবিত্র রমজান মাসে দ্বিতীয়বারের মতো পুরো অস্ট্রেলিয়া জুড়ে শিশু-কিশোরদের জন্য কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।

২০২৪ সালে দ্বিতীয় কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতায় বয়সভিত্তিক বিভিন্ন গ্রুপে প্রায় দুই হাজার প্রতিযোগী অংশ নেয়। একই প্রতিযোগিতায় দুই পারা কোরআন মুখস্ত করায় অংশ নেয় ৩৫০ জনেরও বেশি প্রতিযোগী।

রমজান মাসে সারা অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় ৫০টি ইসলামিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ৩০টি মসজিদ এ প্রতিযোগিতায় যুক্ত ছিল। পুরো প্রতিযোগিতা কর্মসূচিতে বিচারক ও আয়োজক হিসেবে ছিলেন ৭০ জনেরও বেশি ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব এবং ইমাম।

প্রতিটি রাজ্য থেকে তাজবীদসহ পবিত্র কোরআন শরীফের দুই পারা মুখস্ত তেলাওয়াতের প্রতিযোগিতায় বিজয়ী তিনজনকে জাতীয় কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়।

আল তাজকিরাহ ইনস্টিটিউটের অ্যাসিস্ট্যান্ট কোঅর্ডিনেটর শায়খ আবদুল রহমানের উপস্থাপনায় শনিবার সকাল ৯টায় শুরু হওয়া এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আইপিডিসির সেন্ট্রাল প্রেসিডেন্ট ড. রফিকুল ইসলাম।

সেন্ট মেরিস মসজিদের ইমাম শায়খ আবু হোরায়রা শুরুতে প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী ও বিচারকদেরকে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে প্রতিযোগিতার মূল পর্ব শুরু হয়।

দুপুরে মধ্যাহ্ন বিরতির পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার গ্র্যান্ড মুফতি ড. ইবরাহিম আবু মোহাম্মদ, ন্যাশনাল ইমাম কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট শায়খ শাদী আল সুলাইমান, আইপিডিসির সেন্ট্রাল প্রেসিডেন্ট ড. রফিকুল ইসলাম, প্রধান বিচারক শায়খ তারিক আল বিক্বায়ী, স্পন্সর প্রতিষ্ঠান রহিম-আজিজ ফাউন্ডেশনের কর্ণধার আরিফুর রহমান এবং ক্যাম্পবেলটাউন সিটি কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র ইব্রাহিম খলিল মাসুদ।

এ বছরের জাতীয় কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সব প্রতিযোগীকে শুভেচ্ছা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

‘বঙ্গবন্ধু শান্তি পদক’ চালু, পুরস্কার কোটি টাকা ও স্বর্ণ পদক
রাইসির মৃত্যু আর সৌদি বাদশাহর অসুস্থতার জেরে বেড়েছে তেলের দাম!
অস্ট্রেলিয়ায় কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জাহিন
ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক
ভারতের নাগরিকত্ব পেয়ে প্রথমবারের মতো ভোট দিলেন অক্ষয়
রাইসির মৃত্যুতে ইরানে পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
৩০ ফ্রিল্যান্সিং দেশের র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে!
বজ্রপাতে সৈয়দপুর বিমানবন্দরের রানওয়েতে ফাটল, ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ
আইপিএলের প্লে-অফের ম্যাচগুলো কবে-কখন-কার বিপক্ষে?
ভোটারের উপস্থিতি নিয়ে ইসি উদ্বিগ্ন নয়, বললেন ইসি আলমগীর
ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যুতে বিশ্বনেতাদের শোক
সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই ২ জনসহ নিহত ৩
ইশরাক হোসেনের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি মির্জা ফখরুলের
ইব্রাহিম রাইসি ছিলেন আমার প্রিয় একটি ভাই : এরদোগান
ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ: ওবায়দুল কাদের
ইরানের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং তার সঙ্গীদের মরদেহ উদ্ধার
নিপুণের রিটে ডিপজলকে শিল্পী সমিতির পদে না বসতে নির্দেশ
বিল বকেয়া থাকায় রেল কার্যালয়ের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন
রামপুরায় অটোরিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ