বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪৫

নেই দেশের নাগরিক  

“সে তো যাবই। একা একা এই ধূ ধূ সমুদ্রে পড়ে থেকে মরব নাকি। আব্বার অবস্থা খুবই খারাপ। জানটা জিভের ডগায় ধুকধুক করছে। এবার যেভাবেই হোক, বাংলাদেশের কোনো পাড়ে উঠতেই হবে।“
“হ্যাঁ হ্যাঁ, পাড় তো তোমার কেনা। বাপের জায়গির যে ইচ্ছে হলো আর ফট করে উঠে গেলে! বর্ডার সব সিল করে দিয়েছে, দেখছ না?” কথায় আগুনের ছ্যাকা দেয় নুহু।
“তুই ঘোড়ার ডিম জানিস। বর্ডার সিল থাকলেও, ফাঁকফোকর থেকেই যায়। সব জায়গায় তো আর কাঁটাতার নেই। অনেক জায়গা ফাঁকা আছে। ওগুলোকে চোরাবর্ডার বলে। ওইসব চোরাই বর্ডার দিয়ে কোনোমতে ঢুকে পড়ে আব্বার মরদেহটাকে কবর দিয়ে দিতে পারলেই তো হলো, তারপর আমরা না হয় নদীতেই পড়ে থাকব। আব্বা কবরের মাটি তো পাবে।“ প্রথম কথাটা বলার সময় চোখমুখ উলটালেও, শেষের কথাটা বলার সময় মতির চোখেমুখে যেন একটা ড্যাফোডিল ফুল ফুটে উঠল। মাটি পাওয়ার গন্ধ মনে লাগতেই, মনটা আচানক পাঁপড়ি মেলে উঠল। মতি এবার ঠোঁটে হাসির মোম লাগিয়ে বলল, “আব্বা পরহেজগার মানুষ, আল্লাহর এলেম জানা বান্দা, বুদ্ধি হয়ে থেকে আল্লাহর আমল করে আসছে, আর তার মরদেহ কবরের মাটি পাবে না, তাই হয়?”

“না পেতেও পারে। দেহের আর কী আছে। আল্লাহর তো রুহু নিয়ে কাজ। রুহুর উপরেই যত হিসাব-নিকাশ। আব্বা যেসব নেক কাজ করেছে, তাতে সে জান্নাতবাসী হতে পারে। মরা দেহ মাটি পেল কি না পেল, তাতে কী যায় আসে? হিসাব তো দেবে রুহু, নাকি?” নহুর কণ্ঠ যেন লঙ্কাপেষাইয়ের মেশিন থেকে বেরিয়ে আসে। মতিও ঝাল পেড়ে উঠল। তার কণ্ঠও ধানি লঙ্কা হয়ে উঠল, “তুই হাদিস কোরানের কী জানিস? আল্লাহর কাছে, দেহটা কি ফকেটিয়া ভাবছিস? ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে তিনি দেহের হিসাব নেবেন। আল্লাহ, দেহ ছেড়ে চলে যাওয়া রুহু আবার পুনরায় দেহে ফিরিয়ে আনবেন। মানুষকে আবার জ্যান্ত করবেন। অক্ষরে অক্ষরে বুঝে নেবেন দুনিয়াদারির হিসাব।“ পায়ের তালু গিঁটটায় চেপে ধরে, হাত দিয়ে টেনে, শরীরটাকে ধনুকের মতো বেঁকিয়ে, কুঁত পেড়ে বাঁধনটাকে পোক্ত করল মতি। একেবারে জাব্দা করে ছইটাকে বেঁধে দিল। ঝড়ে নৌকো পাল্টি খেলেও, ছইটা যাতে খুলে না যায়। জাব্দা বাঁধনের সাথে সাথে মুখ দিয়ে বেরিয়ে এল জাব্দা কথা, “আল্লাহ শুধু রুহুর চাষ করেন না, দেহেরও চাষ করেন। মাটির হিসাব কাঠিতে বুঝে নেবেন।“
“মাটি দেহ, দেহ মাটি।“ মুখটা নদীর দিক করে কথায় মিহি সুর লাগিয়ে বলল নুহু।

“মর, তখন বুঝবি।“ ঠ্যালা মেরে বলল মতি। তারপর চোখ কটমট করে বলল, “টাপাটাকে(ছই) একটু উপরের দিকে ঠেলে তুলে ধর। দেখছিস ন্যা, কাত হয়ে যাচ্ছে?”

মতি ছইটার যেদিক খাড়া করে বাঁধল, তার বিপরীত দিকও ঢেরখানি কাত হয়ে আছে। সেদিকটায়ও একটা শক্ত বাঁধন দিতে হবে। নুহুকে বেশি বকবক করতে দেখে, তাকেই হুকুমটা করল। নুহু তার ডান কাঁধটার উপরে কাত হয়ে থাকা ছইটা ভার নিয়ে উপরের দিকে তোলা দিয়ে ধরল। দুমড়ে যাওয়া ছইটা আগের মতো হয়ে গেল। মতি পাশের বাঁশের খুঁটির সাথে ছইটাকে দঢ় করে বাঁধল। নুহু একটু ঝুঁকে আলতো করে ভর খাওয়া কাঁধটাকে ছইয়ের ভেতর থেকে বাইরে বের করে নিয়ে এল। ছইটা কী সুন্দর অর্ধচোঙাকৃতি ঘরের চালা হয়ে গেল। মতি এবার বানরের মতো তিড়িং করে লাফ মেরে নিচে নামল। নৌকোটা আলুথালু করে নড়ে উঠল। একটা লম্বা কালো ছায়া হাত-পা বাড়িয়ে নৌকোর পাটাতনে ভাঁজ হয়ে পড়া শরীরটাকে ছুঁল। ছইয়ের এই সাতসকালের ছায়াটা তার গা-গতরের ছায়াকে খেয়ে ফেলল। দিগন্ত থেকে নিঙরে আসা হলুদ রঙে গলা ডুবিয়ে স্নান করছে নৌকোটা।

রোদ উঠতে দেখে মতি তাড়া দিল, “নুহু, তাড়াতাড়ি হাত চালা, সন্ধ্যের আগে নয়াপাড়া পৌঁছতে হবে।“ হালটা ধরে একটা জোর প্যাঁচ মারে মতি। নুহু আনমনে তিরতির করে ঢেউ ওঠা কালাপানি দেখে। জলের কত ঢং! এখন তিরতির করে প্রজাপতির ডানার মতো উতলাচ্ছে, অথচ ঝড়ের হুল ফুটলেই একেবারে বাঘের মতো হালুম করে ওঠে। গ গ করে আছড়ে পড়ে দুই পাড়ে। ভেঙে মুচড়ে সব লণ্ডভণ্ড করে দেয়। ঠোঙার মতো দুমড়ে মুচড়ে দেয় ভেসে থাকা নৌকোগুলোকে। আর এখন সেই নদীর রূপ দেখে মনে হচ্ছে, আহাঃ, এমনই নিরীহ যেন ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানে না! প্রকৃতি এভাবেই কখনো ফুল হয়ে ওঠে আবার কখনো কাঁটা হয়ে জীবনকে ক্ষতবিক্ষত করে দেয়! বুঝিয়ে দেয়, জীবনের মালা এভাবেই ফুল আর কাঁটা দিয়ে গড়া।
“সাঁই সাঁই করে হাত চালাও। গায়ে বল লাগিয়ে বৈঠা ঠ্যালো। সেরকম খাবার আর মজুত নেই। বিকেলের মধ্যে কিছু একটা জোগাড় না হলে না খেয়ে মরতে হবে!” ছইয়ের বাইরে বেরিয়ে এসে ঘোমটা টানল আরিফা। চোখে-মুখে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ।
“কিছুই নেই!” মতির চোখ থির।
“থাকা বলতে গেলে, ক-গাল মুড়ি আছে। ওতে আর কী হবে! কোনোরকমে এক বেলার পেট চলবে।“ হাঁড়ির খবর দিল হাঁড়িমানুষ। আরিফা একখানা আস্ত হাঁড়িমানুষ। সেই যে বিয়ের পর থেকে হাঁড়ির সাথে লেগে গেছে, ছাড়ার আর কোন ফুরসত পায়নি। হাঁড়ি-হেঁসেল আর উঠোন-ঘর করেই তার তিন সিকি জন্ম কেটে গেল।
“কত করে বললাম, চালের বস্তাটা বুকে জাপটে ধরে থাকি, তা না করে আমাকে বৈঠা টেনে ধরে থাকতে বললে, এখন দ্যাখো, মজা। হাওয়া আর পানি খেয়ে থাকো।“ নদীর দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করল নুহু।
“কী করে জানব, অমন কুলক্ষণে ঝড় টাপার ভেতরেও শিং ঢুকিয়ে দেবে! বস্তাটা তো টাপার ভেতরেই ছিল। আমরা নৌকো সামলাব না চালের বস্তা সামলাব? আরিফা তো খেয়াল করতে পারত?” বৌ’এর ঘাড়ে দোষ চাপায় মতি। স্বামীর কথা শুনে ছ্যান করে ওঠে আরিফা, “ওহ, আমার দোষ? আমি একা হাতে তোমার বুড়ো বাপ-মা আর পেটের ছেলেকে সামলাব না ওই চালের বস্তা কুছায় ভরে নিয়ে বসে থাকব? মেয়ে মানুষের ঘাড়ে দোষ চাপাতে ভালই লাগে!”
“একবার তো মুখের কথা বলতে পারতে যে, দেখো গো চালের বস্তাটা পানিতে পড়ে যাচ্ছে।“
“হ্যাঁ হ্যাঁ, আমার তো চারটে চোখ যে, দুর্যোগের সময় সব দিক তাকিয়ে বসে থাকব? তিন তিনটে অসহায় মানুষ দেখব না চালের বস্তা দেখব? মানুষের থেকে কি চালের বস্তা বড়ো?” ধানি লঙ্কা হয়ে ওঠে আরিফা। আহারের টান পড়তেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঠুকমুক লেগে গেল। দুজনেরই মেজাজ তেতো হয়ে উঠতে লাগল। মানুষের থেকে চাল বড়ো নয়, এটা ঠিকই, তবে এই আপদে চাল না পেলে যে মানুষগুলোও মরে বস্তা হয়ে যাবে! ক্ষুধা মনে হয় এভাবেই ধীরে ধীরে ভালোবাসার মাঝে খুটুরমুটুর লাগিয়ে সম্পর্ককে তেতো করে তোলে।
“তোরা চুপ কর। এই আকালে একে তো আপদের শেষ নেই, তার ওপর নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি লাগিয়ে এই হাঁটুগুঁজে বাঁচাটাকে জাহান্নাম বানিয়ে দিস ন্যা।“ ভেতর থেকে হালেমার কাতর স্বর।
“আমি কি আর একবার নদীতে লাফ মেরে দেখব, বস্তাটা কোথাও আটকে আছে কি না?“ অনুমতি চাইল নুহু।
“হ্যাঁ মার, লাফ মার, চালের বস্তা গেছে, এবার তুই যা।“ চোখ গরম করল মতি।
“না, বাপ, তুই অমন কাজ করতে যাস নে। এই জায়গাটা নদী নয়, সমুদ্র, ঢের পানি, একবার নামলে কোন তলে তলিয়ে যাবি, তার হদিসও পাবি ন্যা।“ হালেমার কন্ঠ হেলে উঠল। আরিফা কিচ্ছু বলল না। চোখ ছল ছল করে ছইয়ের ভেতরে ‘দ’ মেরে বসে থাকল। একটা কষ্টের দলা ভেতর থেকে ঠেলা মেরে উঠছে। মানুষটা বলে কি, আমার দোষেই নাকি চালের বস্তাটা জলে পড়ে গেছে! আমার কি এতটুকুও জ্ঞান-বোধ নেই, যে ছেলের মা হয়ে এই আপদের সময় চালের বস্তাকে চোখের সামনে জলে পড়তে দেখেও চুপ করে থাকব? আমি সারাক্ষণ ভাবছি, কী করে ছেলেটার মুখে দুটো দানাপানি তুলে দিতে পারব, কী করে বুড়ো শশুর-শ্বাশুড়ির পেটে একগাল সেদ্ধভাত তুলে দিতে পারব? আর মানুষটা আমাকে বলছে কি না, আমি চোখের সামনে চালের বস্তাটাকে নদীতে পড়ে যেতে দেখেও কিচ্ছু বলিনি! আমি কি জানি নে, ওই চালকটা শুধু শুধু ধানসেদ্ধ চাল নয়, ওই চালকটা এই নৌকোতে থাকা মানুষকটার পেটের একমাত্র রিজিক। পেটে একগাল সেদ্ধভাত পড়লেও জান’টা ধরে বেঁচে থাকবে। এই উপরে আকাশ আর নিচে জলের জীবনে একটা সেদ্ধভাত মানে আকাশের চাঁদ পাওয়া। মানুষটা আমাকে অমন কী করে ভাবতে পারল! অমন কথা বললই বা কোন মুখে! হালেমা তার থুত্থুরে হাত’টা বৌমার পিঠে দিয়ে বলেন, “চুপো মা, চুপো। ছেলেদের কাজই হল, মেয়েদের ঘাড়ে দোষ চাপানো। শোনো মা, সব কথা মনে পুষে রাখতে হয় না। আল্লাহ দুটো কান কেন দিয়েছে, জানো? একটা কান দিয়ে শোনা আর একটা কান দিয়ে বের করে দেওয়ার জন্যে।“
কাঁথায় জড়ানো মানুষটার মুখ থেকে ‘খক’ ‘খক’ করে নলি ছেঁড়া কাশি বেরিয়ে এল। হালেমা ওদিকে চোখ ঘোরাতেই,ছইয়ের চালার ফাঁক দিয়ে ভেসে এল একটা বিকট ‘ভু’ ‘ভু’ শব্দ! নুহু নৌকোর পাটাতন থেকে তিড়িং করে লাফ মেরে বলল, “হেলিকপ্টার! হেলিকপ্টার!” মতিও জিরাফের মতো গলা তুলে ফড়িঙের মতো দুই হাত বাড়িয়ে চিৎকার করে উঠল, “খাবার খাবার।“ নুহু এবার ওপরের দিকে হাত ছুড়ে ছুড়ে আরও জোরে চিৎকার করে উঠল, “খাবার খাবার, খাবার দিন, খাবার।“
হেলিকপ্টারটা ‘ভু’ ‘ভু’ করে ডেকে বনবন করে পাখা ঘুরিয়ে চক্কর কাটতে কাটতে নৌকোটা টপকাচ্ছে। হেলিকপ্টারটা তুলনামূলকভাবে কিছুটা উঁচুতেই। যে উচ্চতায় কপ্টারটা রয়েছে সেখান থেকে নৌকোটাকে একটা ছোট্ট ডিঙির মতো লাগবে। নুহু মতিরা আগে থেকেই জানে, আকাশে ওড়া হেলিকপ্টার থেকে ত্রাণের খাবার ছুড়ে ফেলে। রাষ্ট্রসংঘের হেলিকপ্টার এই নাফ নদীর ওপরের আকাশে উড়ে উড়ে নৌকোয় আটকে থাকা মানুষের উদ্দেশে শুকনো খাবার ছুড়ে ছুড়ে ফেলে। বাংলাদেশের বিভিন্ন শরণার্থীশিবিরেও হেলিকপ্টার থেকে খাবার ছুড়ে ফেলা হয়। ঘাড় কাত করে উপরের দিকে চেঁচিয়েই যাচ্ছে নুহু আর মতি। নিচ থেকে হেলিকপ্টারটাকে একবার একটা বড়ো ঘুড়ির মতো লাগছে। আরেকবার ছোট ঢেঁকির মতো লাগছে। পাখাগুলো এতটুকুও দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু তার ব্লেড ঘোরার ‘সাঁ’ ‘সাঁ’ শব্দ কান ফুঁড়ে ঢুকছে। হেলিকপ্টারটার বুকের আঁকিবুঁকি দেখে মনে হচ্ছে, রাষ্ট্রসংঘেরই হেলিকপ্টার। অত চোখে না পড়লেও, আঁকিবুঁকির আন্দাজ সে কথায় বলছে।

আরও একটু মাথার উপরে আসতেই, হেলিকপ্টারটার লেজটার কাঠামো অনেকটাই দেখা গেল। নুহু এবার হাঙরের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ল। এমন করে ওপরের দিকে হাত বাড়িয়ে ঝাঁপাতে লাগল, দেখে মনে হচ্ছে, হেলিকপ্টারটাকে হাত দিয়ে ধরে টেনে নামাবে। চিৎকার করে তার গলা ছিড়ে যাওয়ার উপক্রম হল। দুই ভাইয়ের চেঁচামেচি নদীর তলার পোকারা শুনতে পেলেও, হেলিকপ্টারটার কেউ শুনতে পেলেন না! স্বামী দেউরকে লাফানো ঝাপানো, চিল-চিৎকার করতে দেখে ছইয়ের ভেতর থেকে ধড়ফড় করে বেরিয়ে এল আরিফা। সে বুদ্ধি করে একটা লালরঙের কাপড়কে শূন্যে উড়িয়ে উড়িয়ে আগোলদারি হাঁক হাঁকতে লাগল। তার মিহি স্বর বাতাস ভেদ করে হেলিকপ্টারের ধাতব গায়ে ঠক্কর লাগলেও, হেলিকপ্টারের ভেতরের কোনো মানুষের কান ছুঁল না!

এবার হাঁটু ভাঁজ করে থড়বড় করে বেরিয়ে এলেন হালেমা। জড়ানো গলায় কাঁইকুঁই করে আকাশের দিকে গলা ছাড়লেন। চারজনের সমবেত হাঁক বাঘের গর্জনের মতো বাতাস ফুঁড়লেও হেলিকপ্টারের অন্দরের কোনো মানুষকে ছুঁতে পারল না! ‘ভু’ ‘ভু’ ‘গ’ ‘গ’ ‘সাঁ’ ‘সাঁ’ করতে করতে হেলিকপ্টারটা আকাশ ফুঁড়ে নয়াপাড়ার দিকে উড়ে গেল! নুহু মতিরা হাত নাড়িয়ে চেঁচাতে চেঁচাতে একসময় তাদের ডুকরানো কণ্ঠ মিহি করে থেমে এল। যেন পেটের ভেতরের সবটুকু চিৎকার বেরিয়ে খোল হয়ে গেল। গলার চিৎকার ফুরিয়ে এলে চোখ দিয়ে গলগল করে বেরোতে থাকল অশ্রু। ফুঁপিয়ে উঠল দু-ভাই। আরিফা তার গায়ে হাত দিতেই হাউমাউ করে উঠল মতি।

আরিফার চোখও ছলছল। পেটের ক্ষিদের টানে একপেট খাবার জোগাড় করার মরিয়া চেষ্টায় দুই মানুষের মধ্যে একটু আগে হওয়া খুটুরমুটুরটা এখন বাসি। বিপদ এভাবেই মানুষের সম্পর্কের মধ্যে যেমন চিড় ধরায়, ঠিক তেমনি চিড় ধরা সম্পর্ককে জোড়ও লাগায়। আসলে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে, তখন ছোটখাট ভুলত্রুটি, রাগ-অভিমান জল হয়ে একে অপরকে আঁকড়ে ধরে। ভালোবাসা আরও গাঢ় হয়। বন্ধন পোক্ত হয়ে ওঠে। সম্পর্কের সংজ্ঞা এখানেই জীবন্ত হয়ে ওঠে। প্রকৃত রূপ-রস পায়। দেহ নামক খোলের ভেতরে ভালোবাসার একতারা বাজায় বেঁচে থাকার টিকে থাকার নিখাদ প্রেম।

চলবে...
আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>
নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

এসএন

 

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

বক্তব্য রাখছেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নির্বাচন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের নৌ পরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডক্টর এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্প্রতি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব লর্ডসে মানবাধিকার সংগঠন ‘ভয়েস ফর বাংলাদেশ’ আয়োজিত সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

‘ডিসকাশন অন ডেমোক্রেটিক কলাপ্স অ্যান্ড রিবিল্ডিং অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সম্মেলনে হাউস অব লর্ডসের সিনিয়র সদস্য আলেক্সান্ডার চার্লস কার্লাইল কিউসি সভাপতিত্ব করেন। ভয়েস ফর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্রডকাস্টার আতাউল্লাহ ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্মেলেনে সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী পল স্কালি বলেন, বাংলাদেশে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তার সঠিক তদন্ত শেষে যথাযথ বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে করে এ ধরনের ঘটনার পুররাবৃত্তি না হয়।

লর্ড হোসাইন বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সব সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে সব ধরনের সহায়তা পাবে।

সম্মেলনে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান লেবার দলীয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুপা হক।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
ধামরাইয়ে শ্রমিকবাহী বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪