সোমবার, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৩ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব- ১৫

যারা যুদ্ধ করেছিল

শান্তি কমিটির মেম্বর ফজলুর রহমান ভয়ঙ্কর বিরক্ত মুখে বাড়িতে আসে। তারপর রাজাকার আলিম, জহর ও গেদুকে জরুরি ভিত্তিতে ডেকে পাঠায়। রাজাকার তিনজন আসতে দেরি করছিল। ফজলুর রহমানের অস্থিরতা বেড়ে যায়। ওরা আসামাত্র ফজলুর রহমান ধমকে ওঠে, ‘কীসের ডিউটি করস? মুক্তিফৌজ কীভাবে মিলিটারি ক্যাম্প আক্রমণ করে?’

রাজাকার আলিম ঢোক গিলে বলে, ‘শালারা মনে হয় যাদু জানে। কেমনে আসে কেমনে যায় আমরা বুঝতেও পারি না মেম্বর সাব।’
ফজলুর রহমান দাঁত খিঁচিয়ে বলে, ‘মিলিটারি তোগো ডাইকা পাঠাইছে। এই কথা তাগো সামনে কইতে পারবি?’
বেটে মতো রাজাকার জহর তুতলিয়ে বলে, ‘আম-গো ডাকছে ক্যা?’
ফজলুর রহমান বলে, ‘পর পর দুই রাত মুক্তিফৌজ মিলিটারি ক্যাম্প আক্রমণ করছে। তোরা কি বইসা বইসা বাল ছেঁড়স। তাড়াতাড়ি খবর নে। দুস্কৃতিকারীরা কোন বাড়িতে আশ্রয় নেয়।’ ফজলুর রহমান গালাগালি করে ধমকে ওঠে। বোকা স্বভাবের গেদু রাজাকার বলে, ‘আমার মনে হয়, ওরা জ্বিনের মন্ত্র পইড়া আসে। তাই আমরা দেখতে পাই না।’
‘হারামজাদা কয় কী? মিলিটারি তোগো হোগার মধ্যে বন্ধুকের নল ঢুকায়া নাড়িভুড়ি বাইর কইরা দিব। খামাখা তোগো রাজাকার বানাইছে?’ ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলে ফজলুর রহমান। দম নিয়ে বিড় বিড় করে বলে, ‘আজ অল্পের জন্য জানে বাঁইচা আছি। নলসোন্দা গ্রামের বাচ্চু হাজিকে ক্যাপটেন আব্বাস খান লাত্থি দিয়া চেয়ার থাইকা ফালায়া দিছে। আমার তখন হাত পা কাঁপতে ছিল।’
‘তারে লাত্থি দিছে ক্যা?’
ফজলুর রহমান উদাস কণ্ঠে বলে, ‘ক্যাপটেনের মেজাজ ছিল চড়া। এইসময় হাজি সাহেব রসিকতা করে বলেছে, ‘স্যার, বাচ্চা পোলাপান ক্যাম্প অ্যাটাক করছে তাতে আপনারা এতো কেয়া ডরকে যাতা হায়।’
হাজি সাহেব এই কথা কওয়ার লগে লগে ক্যাপটেন সাহেবের চোখ ফাইটা যেন আগুন বাইর হচ্ছিল। উইঠা গিয়া এমন লাত্থি ঝাড়ে হাজি সাহেব কয়েক গড়ান খায়া ছিটকে বাইরে গিয়া পড়ে। ক্যাপটেন সাহেব পিস্তল বাইর করে হাজি সাহেবের বুকে ধরে। তাই দেইখা সবারই হাত-পার কাঁপুনি শুরু হয়। তার এই ব্যাঘ্র গর্জন আমরা আগে কোনোদিন দেখি নাই।’

আলিম বলে, ‘বাঁচার বুদ্ধি কন মেম্বর সাব। কী করলে তার মেজাজ ঠান্ডা হবে?’
ভাবনা মুখে ফজলুর রহমান বলে, ‘তারা যে ক্ষ্যাপা ক্ষেপছে, আমি তো বাঁচার কোনো কূল কিনারা দেখতাছি না। পারলে আমাগোরেই গুলি করে। আমিতো ভীষণ ভয় পাইছিলাম এই বুঝি বাপের দেওয়া জানটা আজ যায়।’ ফজলুর রহমান দম নিয়ে বলে, ‘একটা পথ আছে।’
‘কী পথ?’ রাজাকাররা দম ফেলে উন্মুখ হয়ে তাকায়।
‘খোঁজ নিয়া দেখ, আশে পাশের কোনো গ্রামে আওয়ামী লীগ কিংবা কোনো হিন্দুর সুন্দরী মেয়ে আছে কিনা? থাকলে তাকে ক্যাম্পে দিয়া আয়। শুনছি ক্যাপটেন সাহেবের মাইয়া নেশা আছে। সুন্দরী মেয়ে দেখলে ক্যাপ্টেনের মেজাজ ঠান্ডা হতে পারে।’
গেদু রাজাকার বলে, ‘নদীর ওপার রাধানগর গ্রামে এক হিন্দুর সুন্দরী মেয়ে আছে।’
‘ওই হিন্দুর নাম কী?
‘কালিপদ রায়।’
‘কালিপদ মাস্টার?’ ফজলুর রহমান জিজ্ঞেস করে।
গেদু বলে, ‘হ কালিপদ মাস্টার।’
‘তাইলে আর দেরি করিস না। আজই ওই মালাউনের মেয়েকে ধইরা ক্যাম্পে দিয়া আয়।’

ফজলুর রহমানের এই আদেশ পেয়ে রাজাকাররা আর দেরি করে না। তারা তৎক্ষণাৎ বেরিয়ে যায়। ফজলুর রহমান আয়েশ করে চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে থাকে। এইসময় সাকিব ঢুকে রুমে। সে এতক্ষণ আড়াল থেকে সবই শুনেছে। সাকিব ফজলুর রহমানের কাছে গিয়ে বলে, ‘আব্বা, আপনি কালিপদ স্যারের মেয়েকে ক্যাম্পে দিতে বললেন?’
‘হ্যা। অসুবিধে কী?’
‘উনি আমার শিক্ষক। খুবই ভালো মানুষ।’
‘সে মালাউন। মালাউনরা কোনোদিন ভালো হয় না। ওরা মুশরিক কাফের। ওরা ইসলামের শত্রু। যতক্ষণ ওরা ইসলাম গ্রহণ না করবে ততক্ষণ ওরা মুসলমানদের শত্রু। ওদের হত্যা করার বিধান দিয়েছেন আল্লাহপাক।’ ফজলুর রহমান এই কথা বলে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। সাকিবের মনটা ভীষণ খারাপ হয়। স্যারের মতো সজ্জন অমায়িক মানুষের মেয়েকে মিলিটারি ক্যাম্পে দেওয়াটা সাকিব মেনে নিতে পারছে না। বাধা দিতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। রাজাকাররা সাথীর কথা মিলিটারিকে জানিয়ে দিতে পারে। তার এই স্বপ্নময় দিনের অবসান হয়ে যাবে। দুস্কৃতিকারির বোনকে আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে জীবনটাও চলে যেতে পারে। সাকিব ভেবে পাচ্ছে না এখন সে কী করবে।
ঘণ্টা খানেকের মধ্যে এলাকায় প্রচার হয়ে যায় রাধানগর গ্রামের কালিপদ মাস্টার এবং তার স্ত্রীকে গুলি করে মেরে তার কলেজ পড়ুয়া ছোটমেয়ে হৈমন্তিকে তুলে নিয়ে গেছে রাজাকাররা। বড় মেয়ে শুক্লা ও একমাত্র ছেলে জীবন কুমার অনেক আগেই কোলকাতা চলে গেছে। বাবা কালিপদ ও মাকেও নিতে চেয়েছিল তারা। কালিপদ রায় রাজী হননি। বলেছেন, ‘জন্মভূমি ছেড়ে তিনি কোথাও যাবেন না।’
যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে চিঠি লিখে বড় মেয়ে শুক্লা বার বার অনুরোধ করেছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভীষণ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। তুমি সবাইকে নিয়ে আমাদের এখানে চলে এসো। কালিপদ রায় জবাবে বলেছেন, ‘মরলে তিনি জন্মভূমিতেই মরবেন। তবু জন্মভূমি ছেড়ে কোথাও যাবেন না।’

ঘটনাটা যেই শুনছে সেই আফসোস করছে। অত্যন্ত সজ্জন অমায়িক ব্যক্তি বাবু কালিপদ। দীর্ঘদিন রতনকান্দি হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক ছিলেন। অবসরে সকাল বিকেল ছাত্র পড়িয়ে এখন সময় কাটান।
কেউ কেউ রাজাকারদের অভিসম্পাত করছেন। জোহা তালুকদার বার বার আফসোস করছেন। তিনি আদমজি জুট মিলের ম্যানেজার। ২৫ মার্চ পাকিস্তানিরা গণহত্যা শুরু করলে জোহা তালুকদার পরিবার নিয়ে পালিয়ে বাড়ি চলে আসেন। তিনি কান্না গলায় বার বার বলছিলেন, ‘উনি আমার শিক্ষক ছিলেন। এমন মহাজ্ঞানী শিক্ষক, এমন ভালো মানুষ আমার জীবনে আর পাইনি। অংকের জাহাজ বলা হতো তাকে।’
স্ত্রী সাহারাকে বললেন, ‘তাঁর সম্পর্কে একটা মিথ চালু আছে, জানো? আমরা শুনেছি, একবার স্কুলে ইন্সপেক্টর এসেছে। তখন তিনি ক্লাস নাইনে অ্যালজেব্রা করাচ্ছেন। ব্ল্যাকবোর্ডে তিনি অংকটি লিখছিলেন, সেইসময় ইন্সপেক্টর তাঁর ক্লাসে ঢুকে পড়েন।
ইন্সপেক্টর জিজ্ঞেস করেন, ‘কী করাচ্ছেন আপনি?’
কালিপদ স্যার বলেন, ‘স্যার অ্যালজেব্রা করাচ্ছি।’
ইন্সপেক্টর ব্ল্যাকবোর্ডের দিকে তাকিয়ে কালিপদ স্যারের করা অংকটি দেখে বিরক্ত মুখে বললেন, ‘আপনিতো ভুল অংক করাচ্ছেন।’
ইন্সপেক্টরের এই কথায় কালিপদ স্যারের ইগোতে লাগে। তিনি মনে মনে ভীষণ রেগে যান। তারপর তিনি ইন্সপেক্টরকে বিনীত ভাবে তার আসনে বসতে বলেন। অংকটি এক নম্বর দুই নম্বর দিয়ে মোট নয় নম্বর পর্যন্ত লিখলেন ব্ল্যাকবোর্ডে।
ইন্সপেক্টর অবাক হয়ে বললেন, ‘এ কী করছেন আপনি? কালিপদ বাবু বললেন, ‘স্যার, এই অংকটি আমি নয় ধরনের ফর্মুলায় করেছি।’
‘কেন?’
‘এক নম্বর ফর্মুলা হলো ক্লাস সেভেনের ছাত্রদের জন্য। দুই নম্বর হলো ক্লাস এইটের ছাত্রদের জন্য। তিন নম্বর হলো ক্লাস নাইনের ছাত্রদের জন্য। চার নম্বর হলো ক্লাস টেনের ছাত্রদের জন্য। পাঁচ নম্বর হলো কলেজের ফার্স্ট ইয়ারের জন্য। ছয় নম্বর হলো সেকেন্ড ইয়ারের জন্য। সাত নম্বর হলো বিএসসি ছাত্রদের জন্য। আট নম্বর হলো এমএসসি ছাত্রদের জন্য আর নয় নম্বর হলো আপনার মতো ইনসপেক্টরের জন্য।’

কালিপদ স্যারের এই কথায় ইন্সপেক্টর সাহেব রেগে-মেগে চলে যান। গিয়ে তিনি স্কুলের ডেভলপমেন্ট ফান্ড বন্ধ করে দেন।
তাতে কালিপদ বাবু দমে যাননি। তার অংক ভুল এই কথা তিনি মেনে নিতে পারেননি। কোলকাতা শিক্ষা বোর্ডে তিনি অংকে একশোতে একশো পেয়েছিলেন। কোলকাতা শিক্ষা বোর্ড তাঁকে স্বর্ণপদক দিয়ে সম্মানিত করেছিল। অবসর নেওয়ার পর ছাত্রদের অনুরোধে সকাল বিকেল কয়েক ব্যাজ ছাত্রকে অংক শিখাতেন। সেই দেবতুল্য মানুষটিকে রাজাকাররা গুলি করে মেরেছে। এই কষ্টে জোহা তালুকদার অস্থির হয়ে পড়েছেন।
রাজাকাররা তার মেয়ে হৈমন্তিকে ধরে নিয়ে যাবার সময় তার স্ত্রীসহ ওদের সামনে এসে দাঁড়ালে আলিম রাজাকার দুইজনকে গুলি করে মেরে ফেলে। গুলি শব্দে কেউ তাদের সামনে এগিয়ে আসতে সাহস পায়নি। কালিপদ বাবুর মাথায় গুলি করে আলিম। সঙ্গে সঙ্গে মগজ ছিটকে বেরিয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। কালিপদ বাবুর স্ত্রীর বুকে গুলি করে। সে অনেকক্ষণ জল জল বলে গোঙরাতে থাকে। গুলির শব্দে ভয়ে প্রতিবেশিরা পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর সেও মারা যায় জল না পেয়ে।
প্রতিবেশিরা লাশ ঘিরে নিঃশব্দে চোখের জল ফেলতে থাকে। কেউ বলে, ‘রিস্ক নিয়ে তার এইসময় বাংলাদেশে থাকা ঠিক হয়নি।’
কেউ বলে, ‘তার ছাত্ররা যারা মুক্তিযুদ্ধে গেছে তারা এই ব্যাপারটা মেনে নেবে না। তারা চরম প্রতিশোধ নেবে।’
হৈমন্তিকে চোখ বেঁধে মুখে কাপড় গুজে টেনে-হিচড়ে নিয়ে আসে রাজাকার আলিমের বাড়িতে। আলিমের বউ বাপের বাড়ি গেছে। স্বামী রাজাকারের দলে ভর্তি হয়েছে এটা সে মেনে নিতে পারেনি।
ফাঁকা বাড়িতে দুইজন হৈমন্তিকে চেপে ধরে রাখে। হৈমন্তি প্রাণপণ চেষ্টা করে ওদের হাত থেকে ছুটতে। না পেরে সে ওদের পা জড়িয়ে ধরে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। প্রথমে আলিম তাকে ধর্ষণ করে। তারপর বাকি দুজন পালাক্রমে ধর্ষণ করে। তারপর রাতে তাকে নিয়ে যায় ক্যাম্পে। তখনো বার বার হৈমন্তি তাদের পা জড়িয়ে ধরছিল।

ক্যাপ্টেন আব্বাস খান হৈমন্তিকে দেখে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকে। বোঝা যায় হৈমন্তিকে তার ভীষণ পছন্দ হয়েছে। হৈমন্তি পছন্দ হওয়ার মতো মেয়ে। তার দুধে আলতা গায়ের রং। টানা চোখ জোড়ায় মায়াবি আকর্ষণ। দৃষ্টি কাড়া শরীর। ক্যাপ্টেন আব্বাস খান আর দেরি করে না। হাসি মুখে হৈমন্তির হাত ধরে নিজের রুমে নিয়ে যায়। আলিমরা সালাম দিয়ে খুশি মনে চলে আসে।
রাতে গ্রামে ফিরে সোজা চলে যায় শান্তি কমিটির মেম্বর ফজলুর রহমানের বাড়িতে। সব শুনে ফজলুর রহমান তৃপ্তির নিঃশ্বাস ফেলে। ধন্যবাদ দেয় রাজাকারদের। বলে, ‘তোদের চাকরি আজ থেকে স্থায়ী হলো। এখন বাড়ি গিয়া আরাম কইরা ঘুমা।’
তারপর তিন রাজাকার ফিরে আসে আলিমের বাড়িতে। রাতে তারা একসঙ্গে আনন্দ ফূর্তি করে কাটাবে। এই ভাবনায় তারা আলিমের বাড়িতে ভালো খানাপিনার আয়োজন করে। পাশের বাড়ির এক বুড়ি চাচিকে ডেকে নিয়ে আসে। তাকে রান্নার দায়িত্ব দেয়। তাদের মন ভীষণ ফুরফুরে। ক্যাপ্টেন সাহেবকে তারা খুশি করতে পেরেছে। তার উপর হিন্দু নারী ভোগ করে অসীম ছোয়াবের ভাগীও হয়েছে। সেই আনন্দে তারা আত্মহারা।
মুরগির মাংস আর ভূনা খিচুড়ি খেয়ে অনেক মজা করে গভীর রাতে তারা শুয়ে পড়ে।

চলবে...
আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>
যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১৪

 

 

Header Ad
Header Ad

রাফিনিয়া-ইয়ামালের নৈপুণ্যে দুর্দান্ত জয় পেল বার্সেলোনা

ছবি: সংগৃহীত

বার্সেলোনা চলতি লা লিগা মৌসুমে দুর্দান্ত শুরু করলেও কিছু সময় ছন্দ হারিয়ে শীর্ষস্থান থেকে সরে যায়। তবে, সম্প্রতি টানা চার ম্যাচ জয়হীন থাকার পর রাফিনিয়া ও ইয়ামালের নৈপুণ্যে বড় জয় পেয়ে ছন্দে ফিরেছে কাতালান ক্লাবটি।

২৬ জানুয়ারি, রোববার, বার্সেলোনা তাদের ঘরের মাঠে ভালেন্সিয়াকে ৭-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। ম্যাচের শুরুতেই তৃতীয় মিনিটে লামিনে ইয়ামালের অসাধারণ পাস থেকে গোল করে বার্সেলোনাকে এগিয়ে দেন ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং। কিছুক্ষণ পর, ৮ম মিনিটে আলেহান্দ্রো বাল্দের ক্রসে সুনিপুণ গোল করেন তরেস, যিনি তার সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে গোল উদযাপন করেননি।

অল্প সময়ের মধ্যে ২-০ গোলের লিড নিয়ে বার্সেলোনা ভ্যালেন্সিয়ার রক্ষণে আরও চাপ সৃষ্টি করে। ১৪তম মিনিটে ইয়ামালের ব্যাকহিল থেকে রাফিনিয়াকে বল পান, এবং ডি-বক্সের বাইরে থেকে নিখুঁত শটে গোল করে দলের তৃতীয় গোলটি করেন তিনি। এটি ছিল তার চলতি মৌসুমের ১২তম গোল।

২৪তম মিনিটে পাউ কুবার্সির পাসে দলের চতুর্থ গোলটি করেন লোপেস, যার পরে ভিএআরের মাধ্যমে গোলটি নিশ্চিত করা হয়। বিরতির ঠিক আগে, রাফিনিয়ার একটি শক্তিশালী শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসলে, লোপেস দ্বিতীয়বার সুযোগ পেয়ে গোল করে বার্সেলোনাকে ৫-০ ব্যবধানে এগিয়ে নিয়ে যান।

দ্বিতীয়ার্ধে, ৫৯তম মিনিটে হুগো দুরো ভ্যালেন্সিয়ার জন্য একটি সম্মানজনক গোল করেন, কিন্তু পরবর্তীতে ৬৬তম মিনিটে লেভানডোভস্কি বার্সেলোনার ব্যবধান আবার ৫ গোল করে বাড়িয়ে দেন। ম্যাচের ৭৫তম মিনিটে, তোরেসের শট ভ্যালেন্সিয়ার গোলরক্ষক ঠেকালেও ফিরতি বল সিজার টারেগা নিজ জালে পাঠিয়ে দেন, ফলে ৭-১ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত হয় বার্সেলোনার।

এই জয়ে ২১ ম্যাচে ১৩ জয় ও ৩ ড্রয়ে বার্সেলোনা ৪২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে ফিরেছে। ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রিয়াল মাদ্রিদ এবং ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ। অন্যদিকে, ১৬ পয়েন্ট নিয়ে ১৯ নম্বরে রয়েছে ভালেন্সিয়া।

Header Ad
Header Ad

পুলিশের শতকরা ৮০ জনের হৃদয়ে ছাত্রলীগ: আসিফ নজরুল

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, বর্তমান পুলিশের শতকরা ৮০ জনই আওয়ামী আমলের, যাদের হৃদয়ে ছাত্রলীগ। তারাই এ সরকারের জন্য কাজ করছে না।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে চারটি বইয়ে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেন তিনি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, বিপ্লব পরবর্তী কিছু সমস্যা থাকে। তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে সরকার। গণঅভ্যুত্থান নিয়ে সকলের মধ্যে যে ঐক্য ছিল, সেই ঐক্য আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলেও আশাপ্রকাশ করেন আসিফ নজরুল।

এর আগে, সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে বিএনপির সঙ্গে গণঅভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের কোনো দূরত্ব বা ভুল বোঝাবুঝি কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেন আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের কোনো দূরত্ব বা ভুল বোঝাবুঝি কাম্য নয়। এটি গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও তাদের দোসরদের কতটা উৎসাহিত এবং বেপরোয়া করে তুলতে পারে তার কিছুটা প্রমাণ আমরা গত কয়েক দিনে পেয়েছি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, তিনি যতটা জানেন এবং বিশ্বাস করেন— বিএনপি কোনো ষড়যন্ত্রে জড়িত নয় এবং তারা ১/১১ ধরনের কিছু করতে চাচ্ছে না, ছাত্রনেতারা সরকারের অংশ হিসেবে কোনো নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছে না বা এতে যোগ দিচ্ছে না, জুলাই ঘোষণাপত্র একটি রাজনৈতিক দলিল হবে এবং ছাত্রনেতারা গণঅভ্যুত্থানের শক্তির মতামত সঠিকভাবে প্রতিফলিত করার জন্য চেষ্টা করছেন এবং বিএনপি এবং ছাত্রনেতারা এমনকি নির্বাচন কেন্দ্রিক বৃহত্তর সমঝোতার ব্যাপারে আগ্রহী, তবে সেটি আলোচনা সাপেক্ষে। এর অর্থ হলো, বিরোধের কোনো কারণ নেই, বরং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

আসিফ নজরুল আরও বলেন, গণহত্যায় জড়িতদের হাতে রয়েছে লুটপাট করা বিপুল পরিমাণ টাকা, অনেক সুবিধাবাদী গোষ্ঠী, শক্তিশালী প্রচারণা নেটওয়ার্ক এবং শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সমর্থন। তাদের বিরুদ্ধে যদি কিছু করতে হয়, তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্রদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের মধ্যে ভিন্নমত থাকবে, তবে তা যেন দেশের শত্রুদের জন্য উৎসাহের কারণ না হয়।

Header Ad
Header Ad

৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদের পদত্যাগ এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচারের দাবিতে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) শেষ রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর আন্দোলনের সংগঠক আব্দুর রহমান।

তিনি বলেন, বিচারের আগে কোনো ধরনের পরীক্ষা হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বৈরাচারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে ৭ কলেজকে ঢাবির অধিভুক্তি থেকে বাতিল করে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলাম।

তিনি বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবি ছিল আমাদের। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তা করেনি। উল্টো ধারণক্ষমতার চেয়েও বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা এসব নিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। সবশেষ বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-ভিসি (শিক্ষা) আমাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। এর প্রতিবাদে গণতন্ত্র ও মুক্তি তোরণের নিচে অবস্থানকালে ঢাবি শিক্ষার্থী ও পুলিশ সম্মিলিতভাবে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।

৭ কলেজকে নিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করতে হবে, এমন দাবি জানিয়ে আব্দুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-ভিসি মামুন আহমেদের বিচার করতে হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার সকাল ৯টা থেকে ঢাকা শহর অবরোধ করা হবে। সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাস এলাকায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

রাফিনিয়া-ইয়ামালের নৈপুণ্যে দুর্দান্ত জয় পেল বার্সেলোনা
পুলিশের শতকরা ৮০ জনের হৃদয়ে ছাত্রলীগ: আসিফ নজরুল
৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি
ছাদের কার্নিসে ঝুলে থাকা শিক্ষার্থীকে গুলি, সেই এসআই চঞ্চল গ্রেপ্তার
সাত কলেজের সব পরীক্ষা স্থগিত
আজ পবিত্র শবে মেরাজ
মধ্যরাতে ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত ৮
সাবেক দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান গ্রেপ্তার
রয়্যাল এনফিল্ড কিনে না দেয়ায় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ কিশোরের!
রংপুরের টানা দ্বিতীয় হার, রাজশাহীর নাটকীয় জয়
সায়েন্সল্যাব ও টেকনিক্যাল মোড় অবরোধ করেছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা
আসাদুজ্জামান খান কামাল বাংলাদেশের কসাই: প্রেস সচিব
পুলিশের সংখ্যা পর্যাপ্ত, কিন্তু মনোবলের ঘাটতি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাংলাদেশে আসছে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট
মালয়েশিয়া-থাইল্যান্ড যাচ্ছেন বাংলাদেশি রোগীরা, কলকাতার হাসপাতাল ব্যবসায় ধস
২৫ দিনে এলো ২০৪৪৭ কোটি টাকার প্রবাসী আয়
বেতন-ভাতায় না পোষালে অন্য পেশায় চলে যান: প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা
অ্যাডভোকেট তপন বিহারী নাগ ট্রাস্ট বৃত্তি পেলেন কুবির ৩০ শিক্ষার্থী
নির্বাচনের কথা বললে উপদেষ্টাদের মুখ কালো হয়ে যায়: মেজর হাফিজ
পদ্মশ্রী পাচ্ছেন সংগীতশিল্পী অরিজিৎ সিং