বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৪

যারা যুদ্ধ করেছিল

আমিনের হাতে গুলি লেগেছে গত যুদ্ধে। সেই থেকে মমিনের ভীষণ মন খারাপ। আমিন অত্যন্ত সাহসী যোদ্ধা। তার আহত হওয়াকে দলের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বলে মমিন মনে করছে। কষ্টের খবর হলো এখনো আমিনের হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা সম্ভব হয়নি। আশেপাশে ভালো ডাক্তার পাওয়া যাচ্ছে না। গুলি লাগা স্থানে গামছা দিয়ে চেপে বেঁধে রেখেছে। তাতে রক্তপড়া বন্ধ হচ্ছে না। কিছুক্ষণ পর পর গামছা ভিজে উঠছে।

মমিনের দুশ্চিন্তা বাড়ছে। শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটা খারাপের দিকে না যায়। মমিন আমিনের মাথায় হাত বুলিয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘এখন কেমন লাগছে?’
‘মমিন ভাই। আমাকে নিয়ে আপনাকে বেশি ভাবতে হবে না। আমি ভালো আছি।’
‘না। তুমি ভালো নেই।’ মমিন জোর দিয়ে বলে।
‘রক্ত পড়া বন্ধ করতে না পারলে যে কোনো মুহূর্তে বিপদ হতে পারে।’
‘আপনি চিন্তা করবেন না মমিন ভাই। কিছুক্ষণ পর দেখবেন আপনা আপনি রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে গেছে।’

আমিনের কথা গুরুত্ব না দিয়ে বাড়ির কর্তাকে ডেকে পাঠালো মমিন। মাঝারি বয়সের বাড়ির কর্তা আবুল সরকার এসে সালাম দিয়ে দাঁড়ায়। তার চোখে মুখে ভয়ের ছাপ। মমিন তাকে জিজ্ঞেস করে, ‘আশেপাশের গ্রামে কোনো ডাক্তার আছে চাচা মিয়া?’
আবুল হোসেন প্রশ্ন শুনে ভাবতে থাকে। এইসময় সেখানে উপস্থিত মন্টু নামের এক কিশোর নিজের থেকেই বলে ওঠে, ‘দুই গ্রাম পরে একজন ভালো ডাক্তার আছে।’
‘তুমি চেন সেই গ্রাম?’ মমিন জিজ্ঞেস করে।
মন্টু বলে, ‘হ্যা চিনি। গ্রাম চিনি, সেই ডাক্তারকেও চিনি। সে আমাদের আত্মীয়। সে ঢাকায় ডাক্তারি পড়ে।’

এই খবরে মমিনের মুখ দীপ্তময় হয়ে ওঠে। বলে, ‘তুমি যেতে পারবে তাকে খবর দিতে?’
‘হ্যা পারবো।’
‘কিভাবে যাবে?’
‘সাইকেল নিয়ে যাব।’
মমিন এবার ছেলেটির বৃত্তান্ত জানতে বাড়ির মালিক আবুল হোসেনকে ডেকে আড়ালে নিয়ে যায়। জিজ্ঞেস করে, ওই ছেলেকে সে চেনে কি না?

বাড়ির মালিক আবুল হোসেন বলে, ‘হ্যা। ওকে চিনি। আমার ভাস্তির ছেলে। শহরে থাকে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে শহর থেকে পালিয়ে এসে এখন এখানেই থাকে। ওর মা থাকে শশুর বাড়ি। আর মন্টু থাকে নানার বাড়ি।’

পরে মন্টুকে সাইকেলসহ পাঠিয়ে দেওয়া হলো। তাকে আরও বলা হলো ডাক্তারকে সে গোপনে বলবে, একজন মুক্তিযোদ্ধার হাতে গুলি লেগেছে। রক্ত বন্ধ হচ্ছে না। তার জন্য যা যা করতে হবে তিনি যেন সব প্রস্তুতি নিয়ে আসেন। মন্টু অতি উৎসাহে রওনা দেয়। এই ধরনের কাজে যেতে পেরে সেও ভীষণ উৎফুল্ল। যেন সে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পেরেছে। এটা তার জীবনের একটা রেকর্ড। বিশেষ স্মৃতি।

ঘণ্টা খানেকের মধ্যে একজন তরুণকে নিয়ে মন্টু হাজির। মমিন তরুণকে গভীরভাবে খেয়াল করে। ইশারায় কাছে ডাকে। জিজ্ঞেস করে, ‘আপনি কি ডাক্তার?’
‘আমি এখনো ডাক্তার হইনি। এমবিবিএস ফাইনাল ইয়ারে আছি।’ তরুণ ডাক্তার সমীহ ভঙ্গিতে বললো।
মমিন বললো, ‘চলবে। আপনি দেখেনতো আমাদের একজন যোদ্ধার হাতে গুলি লেগেছে। রক্ত পড়া বন্ধ হচ্ছে না। দেখুনতো কি করা যায়।’
তরুণ ডাক্তারকে আমিনের কাছে আনা হলো। সে গামছা পেঁচানো জায়গা আলগা করে সেখানে ভালো করে পরীক্ষা করে বললো, ‘দুটো ইনজেকশন দিতে হবে।’
‘ইনজেকশন আপনার কাছে নেই?’ মমিন জিজ্ঞেস করলো।
‘জ্বি না।’
‘কোথায় পাওয়া যাবে?’
ছোটখাটো ফার্মেসিতে পাবেন না। আমি লিখে দিচ্ছি। কাউকে রায়গঞ্জ বাজারে পাঠিয়ে ওটা নিয়ে আসতে হবে। ইনজেকশন দিতে না পরলে ঘা শুকাতে সময় লাগবে। এমন কি অসুখ অন্যদিকে মোড় নিতে পারে।’ কথা বলতে বলতে গুলি লাগা জায়গায় এন্টি সেফটিক দিয়ে ওয়াশ করেন তরুণ ডাক্তার। তারপর আমিনকে জিজ্ঞেস করে, ‘ব্যথা করে?’
‘ভীষণ।’ আমিন বলেই হেসে ফেলে। ডাক্তার অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। ব্যথা করে এটাতে হাসির কি হলো? ব্যথাকেও এই মানুষগুলো অতি তুচ্ছ মনে করে। এরাই প্রকৃত যোদ্ধা। এমন নির্বিকার না হলে তারা যুদ্ধ করার সাহস পেত না।
মমিন বললো, ‘ইয়ং ডাক্তার, আপনি আমাদের একটু হেল্প করুন।’
‘বলুন। কি করতে হবে?’
‘এই ইনজেকশন কীভাবে, কোথা থেকে পাব আমরা?’
‘ওইতো বললাম, রায়গঞ্জ বাজার থেকে সংগ্রহ করতে হবে।
তরুণ ডাক্তার আরও বলে, ‘কাছেই রায়গঞ্জ বাজার। সেখানে হেলাল ফার্মেসি আছে। ফার্মেসিতে গিয়ে আমার নাম বললেই তারা আর কিছু বলবে না।’
‘আপনার নাম বলতে হবে কেন? তারা কি এই ওষুধটা সবার কাছে বিক্রি করে না?’
‘না।’
‘কেন?’
‘এই ওষুধটা দুস্প্রাপ্য। ইমার্জেন্সি না হলে ওরা ওষুধটা বিক্রি করে না। বিশেষ করে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য তারা এটা সরবরাহ করে থাকে। কোনো রাজাকার গিয়ে মাথা কুটলেও ওরা রাজী হবে না। বলবে ওষুধ নাই।’

মমিন তাকে থামিয়ে দিয়ে বলে, ‘অতো কথার দরকার নেই। আপনি দুলাইন চিঠি লিখে দেন।’ তরুণ ডাক্তার চিঠি লিখে মমিনের হাতে দেয়। মমিন নিয়ে পড়ে। তারপর সে চিন্তিত মুখে নিজে নিজে বলে, কাকে পাঠানো যায়?
মন্টু আগের মতো উৎসাহ নিয়ে বলে, ‘আমাকে দেন। আমি নিয়ে আসবো।’
‘তুই পাারবি?’ তরুণ ডাক্তার সংশয় নিয়ে প্রশ্ন করে।
মন্টু জোর দিয়ে বলে, ‘অবশ্যই পারবো। কতদিন আমি একাই বাজারে গেছি।’

বাজারে রাজাকারদের ক্যাম্প আছে। প্রাপ্ত বয়স্ক কাউকে পাঠালে রাজাকাররা নানা জেরা করতে পারে। সন্দেহ হলে ধরে বেঁধে রাখতে পারে। মন্টু বয়সে ছোট। ওকে সন্দেহ করবে না।
তরুণ ডাক্তার পকেট থেকে টাকা বের করে মন্টুর হাতে দেয়। মমিন বাধা দিলে তরুণ ডাক্তার বলে, ‘আমাকে এইটুকু সহযোগিতা করার সুযোগ দিন প্লিজ। আপনারা জীবন দিতে প্রস্তুত আমরাতো কিছুই করতে পারছি না। একজন আহত যোদ্ধাকে সামান্য সেবা করার সুযোগ থেকে আমাকে বঞ্চিত করবেন না।’

আবেগে ডাক্তারের চোখ জোড়া টলমল করছে দেখে মমিন আর কথা বাড়ায় না। টাকা নিয়ে মন্টু চিলের মতো উড়ে চলে যায়।
তরুণ ডাক্তার এবং মমিন নিঃশব্দে বসে আছে। ঘরের এক কোণে আমিন একটি চৌকিতে একা শুয়ে আছে। পাশে মজনু বসে আস্তে আস্তে কথা বলছে।
হঠাৎ তরুণ ডাক্তার মমিনকে বলে, ‘একটা কথা জিজ্ঞেস করবো? রাগ করবেন নাতো?’
‘কি কথা?’
‘যুদ্ধের গতি প্রকৃতি কেমন বুঝছেন? কতদিন এই যুদ্ধ চলবে?’

মমিন হাসি মুখে বলে, ‘সেটাতো আপনারাই ভালো বলতে পারবেন। আমরাতো অন্ধকারে আছি। যুদ্ধের কোনো খবরই আমরা জানি না। আপনারা নিশ্চয়ই বিবিসি আকাশবাণী স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্র শোনেন। আমাদের কিছুই শোনার সুযোগ নেই। যুদ্ধের গতি প্রকৃতি আপনাদেরই ভালো জানার কথা।’
‘সে কথা আপনি ভুল বলেননি। আমি নিয়মিত বিবিসি এবং স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র শুনি।’
‘তাহলে এবার আপনি বলুন যুদ্ধের মোড় কোনদিকে যাচ্ছে? আমরা কি শুধু শুধু বন বাদাড়ে ছুটছি নাকি এর কোনো ফ্রুটফুল রেজাল্ট আছে?’
তরুণ ডাক্তার জবাব দিতে থমকে যায়। যুদ্ধ নিয়ে তার কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তবে বিভিন্ন রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ তীব্র হচ্ছে। অনেক স্থানে পাকবাহিনী পর্যুদুস্ত হচ্ছে। পাকিস্তানি মিলিটারি বেঘোরে মারা যাচ্ছে মুক্তিবাহিনীর হাতে। খবরে শোনা কথাগুলো গুছিয়ে বলে তরুণ ডাক্তার। তার বলার ধরন দেখে মমিন মুগ্ধ হয়ে শোনে। বলে, ‘ডাক্তার সাহেব, তাহলে আমরা কি আশাবাদী হতে পারি দেশ স্বাধীন হবে?’ শেখ হাবিব নামের এই সুদর্শন তরুণ ডাক্তার উচ্ছ্বসিত ভঙ্গিতে বলে, ‘অবশ্যই আমি আশাবাদী।’
মমিন বলে, তাহলে আপনি যুদ্ধের গতি প্রকৃতি নিয়ে আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন কেন?’
ডাক্তার হাবিব বলে, ‘আপনাদের মুখে শুনলে মনে বড় জোর পাই।’
‘কেন?’
‘আপনারা জাতির সাহসী সন্তান।’
‘আপনার সাহস নেই?’
‘আপনাদের মতো আমার অতো সাহস নেই। থাকলে অবশ্যই যুদ্ধে যেতাম।’

মমিন হেসে ডাক্তার হাবিবের দিকে তাকালে হাবিব লাজুক ভঙ্গিতে মাথা নামিয়ে নেয়। তাদের কথার মাঝেই মন্টু এসে হাজির। খুব দ্রুত গতিতে এসে পড়েছে মন্টু। হাঁপাচ্ছে। ডাক্তার হাবিব জিজ্ঞেস করে, ‘সব ওষুধ আনতে পেরেছ?’
‘জ্বি। সব ওষুধ আনতে পেরেছি।
ডাক্তার হাবিব আর দেরি করে না। এমনিতে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ওষুধ আরও আগে দিতে পারলে ভালো হতো। মন্টুর কাছ থেকে ওষুধ নিয়ে হাবিব আমিনের কাছে যায়। হাবিব যখন ইনজেকশনে ওষুধ ভরছিল আমিন বলে ওঠে, ‘ব্যথা পাবো নাতো? ইনজেকশন দেখে আমার কিন্তু ভীষণ ভয় করে।’

এই কথায় হাবিব হাসতে থাকে। বলে, ‘আপনি মিলিটারির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে ভয় পান না। সামান্য ইনজেকশন নিতে ভয় পাচ্ছে? অবাক কাণ্ড!’

মমিন পাশে দাঁড়িয়ে বললো, ‘পাগলামি করো না আমিন। লক্ষ্মী ছেলের মতো চুপচাপ শুয়ে থাকো। ইনজেকশনটা তোমার জন্য বিশেষ প্রয়োজন। দুজনের কথার মধ্যে হাবিবের ইনজেকশন দেওয়া শেষ।

মমিন অবাক হয়ে বলে, ‘হয়ে গেছে!’
হাবিব বলে, জ্বি
‘কিরে আমিন, তুই কি কিছু বুঝতে পেরেছিস?’ মমিন জিজ্ঞেস করে।
আমিন বলে, ‘না।’
‘তবে যে বললি ইনজেকশন দেখে ভয় করে?’
‘মজা করেছি।’ সবাই এবার হেসে ওঠে।
হাবিব যাওয়ার অনুমতি চায়। মমিন বলে, ‘আপনি কি আজ রাতে আর একবার আসতে পারবেন? লাস্ট অবস্থাটা দেখে গেলেন।’
‘অবশ্যই আসতে পারবো। সামান্য এইটুকু সেবা করতে পারাও আমার জন্য অনেক কিছু।’
‘রাত দশটার মধ্যে আসবেন।’
‘আপনারা কি রাতে এখান থেকে চলে যাবেন?’
‘প্রশ্ন না করে যা বলছি তাই করবেন।’
হাবিব আর কথা না বাড়িয়ে ঘরের বাইরে চলে যায়। সঙ্গে মন্টুও যেতে থাকে।

দুপুরে খাওয়ার পর মমিন বিছানায় গড়িয়ে নিচ্ছিল। এইসময় তার চোখের পাতা এক হয়ে এসেছে মাত্র সেইসময় রকিব এসে ঘরে ঢোকে। মমিনকে ডাকে। মমিন লাফিয়ে ওঠে। রকিবকে দেখে ইশারায় কাছে আসতে বলে। পাশে বসিয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘বাড়ির খবর কী? মা কেমন আছে? বাবা?’
রকিব বিমর্ষ মুখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে। মমিন আবার জিজ্ঞেস করে। রকিব তবু কিছু বলে না। মমিন এবার ধমকে ওঠে, ‘কি হয়েছে? কথা বলছিস না কেন?’
রকিব সাথীর চিঠিটা মমিনের হাতে দিয়ে ঘরের বাইরে চলে যায়। মমিন চিঠি পড়ে থ হয়ে বসে থাকে। তার কপাল বেয়ে ঘাম ঝরতে থাকে। রাগে ঘরময় পায়চারী করে। রুমের বাকি যোদ্ধারা আতঙ্কিত মুখে তাকিয়ে থাকে।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১৩

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১২

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১১

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১০ 

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৯

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৮

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৭

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৬

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৫

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৪

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৩

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-২

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১

আরএ/

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

বক্তব্য রাখছেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নির্বাচন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের নৌ পরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডক্টর এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্প্রতি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব লর্ডসে মানবাধিকার সংগঠন ‘ভয়েস ফর বাংলাদেশ’ আয়োজিত সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

‘ডিসকাশন অন ডেমোক্রেটিক কলাপ্স অ্যান্ড রিবিল্ডিং অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সম্মেলনে হাউস অব লর্ডসের সিনিয়র সদস্য আলেক্সান্ডার চার্লস কার্লাইল কিউসি সভাপতিত্ব করেন। ভয়েস ফর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্রডকাস্টার আতাউল্লাহ ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্মেলেনে সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী পল স্কালি বলেন, বাংলাদেশে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তার সঠিক তদন্ত শেষে যথাযথ বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে করে এ ধরনের ঘটনার পুররাবৃত্তি না হয়।

লর্ড হোসাইন বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সব সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে সব ধরনের সহায়তা পাবে।

সম্মেলনে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান লেবার দলীয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুপা হক।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
ধামরাইয়ে শ্রমিকবাহী বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪