সোমবার, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৩ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৪

যারা যুদ্ধ করেছিল

আমিনের হাতে গুলি লেগেছে গত যুদ্ধে। সেই থেকে মমিনের ভীষণ মন খারাপ। আমিন অত্যন্ত সাহসী যোদ্ধা। তার আহত হওয়াকে দলের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বলে মমিন মনে করছে। কষ্টের খবর হলো এখনো আমিনের হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা সম্ভব হয়নি। আশেপাশে ভালো ডাক্তার পাওয়া যাচ্ছে না। গুলি লাগা স্থানে গামছা দিয়ে চেপে বেঁধে রেখেছে। তাতে রক্তপড়া বন্ধ হচ্ছে না। কিছুক্ষণ পর পর গামছা ভিজে উঠছে।

মমিনের দুশ্চিন্তা বাড়ছে। শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটা খারাপের দিকে না যায়। মমিন আমিনের মাথায় হাত বুলিয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘এখন কেমন লাগছে?’
‘মমিন ভাই। আমাকে নিয়ে আপনাকে বেশি ভাবতে হবে না। আমি ভালো আছি।’
‘না। তুমি ভালো নেই।’ মমিন জোর দিয়ে বলে।
‘রক্ত পড়া বন্ধ করতে না পারলে যে কোনো মুহূর্তে বিপদ হতে পারে।’
‘আপনি চিন্তা করবেন না মমিন ভাই। কিছুক্ষণ পর দেখবেন আপনা আপনি রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে গেছে।’

আমিনের কথা গুরুত্ব না দিয়ে বাড়ির কর্তাকে ডেকে পাঠালো মমিন। মাঝারি বয়সের বাড়ির কর্তা আবুল সরকার এসে সালাম দিয়ে দাঁড়ায়। তার চোখে মুখে ভয়ের ছাপ। মমিন তাকে জিজ্ঞেস করে, ‘আশেপাশের গ্রামে কোনো ডাক্তার আছে চাচা মিয়া?’
আবুল হোসেন প্রশ্ন শুনে ভাবতে থাকে। এইসময় সেখানে উপস্থিত মন্টু নামের এক কিশোর নিজের থেকেই বলে ওঠে, ‘দুই গ্রাম পরে একজন ভালো ডাক্তার আছে।’
‘তুমি চেন সেই গ্রাম?’ মমিন জিজ্ঞেস করে।
মন্টু বলে, ‘হ্যা চিনি। গ্রাম চিনি, সেই ডাক্তারকেও চিনি। সে আমাদের আত্মীয়। সে ঢাকায় ডাক্তারি পড়ে।’

এই খবরে মমিনের মুখ দীপ্তময় হয়ে ওঠে। বলে, ‘তুমি যেতে পারবে তাকে খবর দিতে?’
‘হ্যা পারবো।’
‘কিভাবে যাবে?’
‘সাইকেল নিয়ে যাব।’
মমিন এবার ছেলেটির বৃত্তান্ত জানতে বাড়ির মালিক আবুল হোসেনকে ডেকে আড়ালে নিয়ে যায়। জিজ্ঞেস করে, ওই ছেলেকে সে চেনে কি না?

বাড়ির মালিক আবুল হোসেন বলে, ‘হ্যা। ওকে চিনি। আমার ভাস্তির ছেলে। শহরে থাকে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে শহর থেকে পালিয়ে এসে এখন এখানেই থাকে। ওর মা থাকে শশুর বাড়ি। আর মন্টু থাকে নানার বাড়ি।’

পরে মন্টুকে সাইকেলসহ পাঠিয়ে দেওয়া হলো। তাকে আরও বলা হলো ডাক্তারকে সে গোপনে বলবে, একজন মুক্তিযোদ্ধার হাতে গুলি লেগেছে। রক্ত বন্ধ হচ্ছে না। তার জন্য যা যা করতে হবে তিনি যেন সব প্রস্তুতি নিয়ে আসেন। মন্টু অতি উৎসাহে রওনা দেয়। এই ধরনের কাজে যেতে পেরে সেও ভীষণ উৎফুল্ল। যেন সে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পেরেছে। এটা তার জীবনের একটা রেকর্ড। বিশেষ স্মৃতি।

ঘণ্টা খানেকের মধ্যে একজন তরুণকে নিয়ে মন্টু হাজির। মমিন তরুণকে গভীরভাবে খেয়াল করে। ইশারায় কাছে ডাকে। জিজ্ঞেস করে, ‘আপনি কি ডাক্তার?’
‘আমি এখনো ডাক্তার হইনি। এমবিবিএস ফাইনাল ইয়ারে আছি।’ তরুণ ডাক্তার সমীহ ভঙ্গিতে বললো।
মমিন বললো, ‘চলবে। আপনি দেখেনতো আমাদের একজন যোদ্ধার হাতে গুলি লেগেছে। রক্ত পড়া বন্ধ হচ্ছে না। দেখুনতো কি করা যায়।’
তরুণ ডাক্তারকে আমিনের কাছে আনা হলো। সে গামছা পেঁচানো জায়গা আলগা করে সেখানে ভালো করে পরীক্ষা করে বললো, ‘দুটো ইনজেকশন দিতে হবে।’
‘ইনজেকশন আপনার কাছে নেই?’ মমিন জিজ্ঞেস করলো।
‘জ্বি না।’
‘কোথায় পাওয়া যাবে?’
ছোটখাটো ফার্মেসিতে পাবেন না। আমি লিখে দিচ্ছি। কাউকে রায়গঞ্জ বাজারে পাঠিয়ে ওটা নিয়ে আসতে হবে। ইনজেকশন দিতে না পরলে ঘা শুকাতে সময় লাগবে। এমন কি অসুখ অন্যদিকে মোড় নিতে পারে।’ কথা বলতে বলতে গুলি লাগা জায়গায় এন্টি সেফটিক দিয়ে ওয়াশ করেন তরুণ ডাক্তার। তারপর আমিনকে জিজ্ঞেস করে, ‘ব্যথা করে?’
‘ভীষণ।’ আমিন বলেই হেসে ফেলে। ডাক্তার অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। ব্যথা করে এটাতে হাসির কি হলো? ব্যথাকেও এই মানুষগুলো অতি তুচ্ছ মনে করে। এরাই প্রকৃত যোদ্ধা। এমন নির্বিকার না হলে তারা যুদ্ধ করার সাহস পেত না।
মমিন বললো, ‘ইয়ং ডাক্তার, আপনি আমাদের একটু হেল্প করুন।’
‘বলুন। কি করতে হবে?’
‘এই ইনজেকশন কীভাবে, কোথা থেকে পাব আমরা?’
‘ওইতো বললাম, রায়গঞ্জ বাজার থেকে সংগ্রহ করতে হবে।
তরুণ ডাক্তার আরও বলে, ‘কাছেই রায়গঞ্জ বাজার। সেখানে হেলাল ফার্মেসি আছে। ফার্মেসিতে গিয়ে আমার নাম বললেই তারা আর কিছু বলবে না।’
‘আপনার নাম বলতে হবে কেন? তারা কি এই ওষুধটা সবার কাছে বিক্রি করে না?’
‘না।’
‘কেন?’
‘এই ওষুধটা দুস্প্রাপ্য। ইমার্জেন্সি না হলে ওরা ওষুধটা বিক্রি করে না। বিশেষ করে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য তারা এটা সরবরাহ করে থাকে। কোনো রাজাকার গিয়ে মাথা কুটলেও ওরা রাজী হবে না। বলবে ওষুধ নাই।’

মমিন তাকে থামিয়ে দিয়ে বলে, ‘অতো কথার দরকার নেই। আপনি দুলাইন চিঠি লিখে দেন।’ তরুণ ডাক্তার চিঠি লিখে মমিনের হাতে দেয়। মমিন নিয়ে পড়ে। তারপর সে চিন্তিত মুখে নিজে নিজে বলে, কাকে পাঠানো যায়?
মন্টু আগের মতো উৎসাহ নিয়ে বলে, ‘আমাকে দেন। আমি নিয়ে আসবো।’
‘তুই পাারবি?’ তরুণ ডাক্তার সংশয় নিয়ে প্রশ্ন করে।
মন্টু জোর দিয়ে বলে, ‘অবশ্যই পারবো। কতদিন আমি একাই বাজারে গেছি।’

বাজারে রাজাকারদের ক্যাম্প আছে। প্রাপ্ত বয়স্ক কাউকে পাঠালে রাজাকাররা নানা জেরা করতে পারে। সন্দেহ হলে ধরে বেঁধে রাখতে পারে। মন্টু বয়সে ছোট। ওকে সন্দেহ করবে না।
তরুণ ডাক্তার পকেট থেকে টাকা বের করে মন্টুর হাতে দেয়। মমিন বাধা দিলে তরুণ ডাক্তার বলে, ‘আমাকে এইটুকু সহযোগিতা করার সুযোগ দিন প্লিজ। আপনারা জীবন দিতে প্রস্তুত আমরাতো কিছুই করতে পারছি না। একজন আহত যোদ্ধাকে সামান্য সেবা করার সুযোগ থেকে আমাকে বঞ্চিত করবেন না।’

আবেগে ডাক্তারের চোখ জোড়া টলমল করছে দেখে মমিন আর কথা বাড়ায় না। টাকা নিয়ে মন্টু চিলের মতো উড়ে চলে যায়।
তরুণ ডাক্তার এবং মমিন নিঃশব্দে বসে আছে। ঘরের এক কোণে আমিন একটি চৌকিতে একা শুয়ে আছে। পাশে মজনু বসে আস্তে আস্তে কথা বলছে।
হঠাৎ তরুণ ডাক্তার মমিনকে বলে, ‘একটা কথা জিজ্ঞেস করবো? রাগ করবেন নাতো?’
‘কি কথা?’
‘যুদ্ধের গতি প্রকৃতি কেমন বুঝছেন? কতদিন এই যুদ্ধ চলবে?’

মমিন হাসি মুখে বলে, ‘সেটাতো আপনারাই ভালো বলতে পারবেন। আমরাতো অন্ধকারে আছি। যুদ্ধের কোনো খবরই আমরা জানি না। আপনারা নিশ্চয়ই বিবিসি আকাশবাণী স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্র শোনেন। আমাদের কিছুই শোনার সুযোগ নেই। যুদ্ধের গতি প্রকৃতি আপনাদেরই ভালো জানার কথা।’
‘সে কথা আপনি ভুল বলেননি। আমি নিয়মিত বিবিসি এবং স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র শুনি।’
‘তাহলে এবার আপনি বলুন যুদ্ধের মোড় কোনদিকে যাচ্ছে? আমরা কি শুধু শুধু বন বাদাড়ে ছুটছি নাকি এর কোনো ফ্রুটফুল রেজাল্ট আছে?’
তরুণ ডাক্তার জবাব দিতে থমকে যায়। যুদ্ধ নিয়ে তার কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তবে বিভিন্ন রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ তীব্র হচ্ছে। অনেক স্থানে পাকবাহিনী পর্যুদুস্ত হচ্ছে। পাকিস্তানি মিলিটারি বেঘোরে মারা যাচ্ছে মুক্তিবাহিনীর হাতে। খবরে শোনা কথাগুলো গুছিয়ে বলে তরুণ ডাক্তার। তার বলার ধরন দেখে মমিন মুগ্ধ হয়ে শোনে। বলে, ‘ডাক্তার সাহেব, তাহলে আমরা কি আশাবাদী হতে পারি দেশ স্বাধীন হবে?’ শেখ হাবিব নামের এই সুদর্শন তরুণ ডাক্তার উচ্ছ্বসিত ভঙ্গিতে বলে, ‘অবশ্যই আমি আশাবাদী।’
মমিন বলে, তাহলে আপনি যুদ্ধের গতি প্রকৃতি নিয়ে আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন কেন?’
ডাক্তার হাবিব বলে, ‘আপনাদের মুখে শুনলে মনে বড় জোর পাই।’
‘কেন?’
‘আপনারা জাতির সাহসী সন্তান।’
‘আপনার সাহস নেই?’
‘আপনাদের মতো আমার অতো সাহস নেই। থাকলে অবশ্যই যুদ্ধে যেতাম।’

মমিন হেসে ডাক্তার হাবিবের দিকে তাকালে হাবিব লাজুক ভঙ্গিতে মাথা নামিয়ে নেয়। তাদের কথার মাঝেই মন্টু এসে হাজির। খুব দ্রুত গতিতে এসে পড়েছে মন্টু। হাঁপাচ্ছে। ডাক্তার হাবিব জিজ্ঞেস করে, ‘সব ওষুধ আনতে পেরেছ?’
‘জ্বি। সব ওষুধ আনতে পেরেছি।
ডাক্তার হাবিব আর দেরি করে না। এমনিতে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ওষুধ আরও আগে দিতে পারলে ভালো হতো। মন্টুর কাছ থেকে ওষুধ নিয়ে হাবিব আমিনের কাছে যায়। হাবিব যখন ইনজেকশনে ওষুধ ভরছিল আমিন বলে ওঠে, ‘ব্যথা পাবো নাতো? ইনজেকশন দেখে আমার কিন্তু ভীষণ ভয় করে।’

এই কথায় হাবিব হাসতে থাকে। বলে, ‘আপনি মিলিটারির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে ভয় পান না। সামান্য ইনজেকশন নিতে ভয় পাচ্ছে? অবাক কাণ্ড!’

মমিন পাশে দাঁড়িয়ে বললো, ‘পাগলামি করো না আমিন। লক্ষ্মী ছেলের মতো চুপচাপ শুয়ে থাকো। ইনজেকশনটা তোমার জন্য বিশেষ প্রয়োজন। দুজনের কথার মধ্যে হাবিবের ইনজেকশন দেওয়া শেষ।

মমিন অবাক হয়ে বলে, ‘হয়ে গেছে!’
হাবিব বলে, জ্বি
‘কিরে আমিন, তুই কি কিছু বুঝতে পেরেছিস?’ মমিন জিজ্ঞেস করে।
আমিন বলে, ‘না।’
‘তবে যে বললি ইনজেকশন দেখে ভয় করে?’
‘মজা করেছি।’ সবাই এবার হেসে ওঠে।
হাবিব যাওয়ার অনুমতি চায়। মমিন বলে, ‘আপনি কি আজ রাতে আর একবার আসতে পারবেন? লাস্ট অবস্থাটা দেখে গেলেন।’
‘অবশ্যই আসতে পারবো। সামান্য এইটুকু সেবা করতে পারাও আমার জন্য অনেক কিছু।’
‘রাত দশটার মধ্যে আসবেন।’
‘আপনারা কি রাতে এখান থেকে চলে যাবেন?’
‘প্রশ্ন না করে যা বলছি তাই করবেন।’
হাবিব আর কথা না বাড়িয়ে ঘরের বাইরে চলে যায়। সঙ্গে মন্টুও যেতে থাকে।

দুপুরে খাওয়ার পর মমিন বিছানায় গড়িয়ে নিচ্ছিল। এইসময় তার চোখের পাতা এক হয়ে এসেছে মাত্র সেইসময় রকিব এসে ঘরে ঢোকে। মমিনকে ডাকে। মমিন লাফিয়ে ওঠে। রকিবকে দেখে ইশারায় কাছে আসতে বলে। পাশে বসিয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘বাড়ির খবর কী? মা কেমন আছে? বাবা?’
রকিব বিমর্ষ মুখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে। মমিন আবার জিজ্ঞেস করে। রকিব তবু কিছু বলে না। মমিন এবার ধমকে ওঠে, ‘কি হয়েছে? কথা বলছিস না কেন?’
রকিব সাথীর চিঠিটা মমিনের হাতে দিয়ে ঘরের বাইরে চলে যায়। মমিন চিঠি পড়ে থ হয়ে বসে থাকে। তার কপাল বেয়ে ঘাম ঝরতে থাকে। রাগে ঘরময় পায়চারী করে। রুমের বাকি যোদ্ধারা আতঙ্কিত মুখে তাকিয়ে থাকে।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১৩

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১২

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১১

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১০ 

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৯

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৮

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৭

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৬

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৫

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৪

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৩

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-২

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

রাফিনিয়া-ইয়ামালের নৈপুণ্যে দুর্দান্ত জয় পেল বার্সেলোনা

ছবি: সংগৃহীত

বার্সেলোনা চলতি লা লিগা মৌসুমে দুর্দান্ত শুরু করলেও কিছু সময় ছন্দ হারিয়ে শীর্ষস্থান থেকে সরে যায়। তবে, সম্প্রতি টানা চার ম্যাচ জয়হীন থাকার পর রাফিনিয়া ও ইয়ামালের নৈপুণ্যে বড় জয় পেয়ে ছন্দে ফিরেছে কাতালান ক্লাবটি।

২৬ জানুয়ারি, রোববার, বার্সেলোনা তাদের ঘরের মাঠে ভালেন্সিয়াকে ৭-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। ম্যাচের শুরুতেই তৃতীয় মিনিটে লামিনে ইয়ামালের অসাধারণ পাস থেকে গোল করে বার্সেলোনাকে এগিয়ে দেন ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং। কিছুক্ষণ পর, ৮ম মিনিটে আলেহান্দ্রো বাল্দের ক্রসে সুনিপুণ গোল করেন তরেস, যিনি তার সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে গোল উদযাপন করেননি।

অল্প সময়ের মধ্যে ২-০ গোলের লিড নিয়ে বার্সেলোনা ভ্যালেন্সিয়ার রক্ষণে আরও চাপ সৃষ্টি করে। ১৪তম মিনিটে ইয়ামালের ব্যাকহিল থেকে রাফিনিয়াকে বল পান, এবং ডি-বক্সের বাইরে থেকে নিখুঁত শটে গোল করে দলের তৃতীয় গোলটি করেন তিনি। এটি ছিল তার চলতি মৌসুমের ১২তম গোল।

২৪তম মিনিটে পাউ কুবার্সির পাসে দলের চতুর্থ গোলটি করেন লোপেস, যার পরে ভিএআরের মাধ্যমে গোলটি নিশ্চিত করা হয়। বিরতির ঠিক আগে, রাফিনিয়ার একটি শক্তিশালী শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসলে, লোপেস দ্বিতীয়বার সুযোগ পেয়ে গোল করে বার্সেলোনাকে ৫-০ ব্যবধানে এগিয়ে নিয়ে যান।

দ্বিতীয়ার্ধে, ৫৯তম মিনিটে হুগো দুরো ভ্যালেন্সিয়ার জন্য একটি সম্মানজনক গোল করেন, কিন্তু পরবর্তীতে ৬৬তম মিনিটে লেভানডোভস্কি বার্সেলোনার ব্যবধান আবার ৫ গোল করে বাড়িয়ে দেন। ম্যাচের ৭৫তম মিনিটে, তোরেসের শট ভ্যালেন্সিয়ার গোলরক্ষক ঠেকালেও ফিরতি বল সিজার টারেগা নিজ জালে পাঠিয়ে দেন, ফলে ৭-১ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত হয় বার্সেলোনার।

এই জয়ে ২১ ম্যাচে ১৩ জয় ও ৩ ড্রয়ে বার্সেলোনা ৪২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে ফিরেছে। ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রিয়াল মাদ্রিদ এবং ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ। অন্যদিকে, ১৬ পয়েন্ট নিয়ে ১৯ নম্বরে রয়েছে ভালেন্সিয়া।

Header Ad
Header Ad

পুলিশের শতকরা ৮০ জনের হৃদয়ে ছাত্রলীগ: আসিফ নজরুল

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, বর্তমান পুলিশের শতকরা ৮০ জনই আওয়ামী আমলের, যাদের হৃদয়ে ছাত্রলীগ। তারাই এ সরকারের জন্য কাজ করছে না।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে চারটি বইয়ে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেন তিনি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, বিপ্লব পরবর্তী কিছু সমস্যা থাকে। তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে সরকার। গণঅভ্যুত্থান নিয়ে সকলের মধ্যে যে ঐক্য ছিল, সেই ঐক্য আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলেও আশাপ্রকাশ করেন আসিফ নজরুল।

এর আগে, সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে বিএনপির সঙ্গে গণঅভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের কোনো দূরত্ব বা ভুল বোঝাবুঝি কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেন আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের কোনো দূরত্ব বা ভুল বোঝাবুঝি কাম্য নয়। এটি গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও তাদের দোসরদের কতটা উৎসাহিত এবং বেপরোয়া করে তুলতে পারে তার কিছুটা প্রমাণ আমরা গত কয়েক দিনে পেয়েছি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, তিনি যতটা জানেন এবং বিশ্বাস করেন— বিএনপি কোনো ষড়যন্ত্রে জড়িত নয় এবং তারা ১/১১ ধরনের কিছু করতে চাচ্ছে না, ছাত্রনেতারা সরকারের অংশ হিসেবে কোনো নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছে না বা এতে যোগ দিচ্ছে না, জুলাই ঘোষণাপত্র একটি রাজনৈতিক দলিল হবে এবং ছাত্রনেতারা গণঅভ্যুত্থানের শক্তির মতামত সঠিকভাবে প্রতিফলিত করার জন্য চেষ্টা করছেন এবং বিএনপি এবং ছাত্রনেতারা এমনকি নির্বাচন কেন্দ্রিক বৃহত্তর সমঝোতার ব্যাপারে আগ্রহী, তবে সেটি আলোচনা সাপেক্ষে। এর অর্থ হলো, বিরোধের কোনো কারণ নেই, বরং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

আসিফ নজরুল আরও বলেন, গণহত্যায় জড়িতদের হাতে রয়েছে লুটপাট করা বিপুল পরিমাণ টাকা, অনেক সুবিধাবাদী গোষ্ঠী, শক্তিশালী প্রচারণা নেটওয়ার্ক এবং শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সমর্থন। তাদের বিরুদ্ধে যদি কিছু করতে হয়, তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্রদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের মধ্যে ভিন্নমত থাকবে, তবে তা যেন দেশের শত্রুদের জন্য উৎসাহের কারণ না হয়।

Header Ad
Header Ad

৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদের পদত্যাগ এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচারের দাবিতে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) শেষ রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর আন্দোলনের সংগঠক আব্দুর রহমান।

তিনি বলেন, বিচারের আগে কোনো ধরনের পরীক্ষা হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বৈরাচারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে ৭ কলেজকে ঢাবির অধিভুক্তি থেকে বাতিল করে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলাম।

তিনি বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবি ছিল আমাদের। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তা করেনি। উল্টো ধারণক্ষমতার চেয়েও বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা এসব নিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। সবশেষ বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-ভিসি (শিক্ষা) আমাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। এর প্রতিবাদে গণতন্ত্র ও মুক্তি তোরণের নিচে অবস্থানকালে ঢাবি শিক্ষার্থী ও পুলিশ সম্মিলিতভাবে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।

৭ কলেজকে নিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করতে হবে, এমন দাবি জানিয়ে আব্দুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-ভিসি মামুন আহমেদের বিচার করতে হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার সকাল ৯টা থেকে ঢাকা শহর অবরোধ করা হবে। সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাস এলাকায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

রাফিনিয়া-ইয়ামালের নৈপুণ্যে দুর্দান্ত জয় পেল বার্সেলোনা
পুলিশের শতকরা ৮০ জনের হৃদয়ে ছাত্রলীগ: আসিফ নজরুল
৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি
ছাদের কার্নিসে ঝুলে থাকা শিক্ষার্থীকে গুলি, সেই এসআই চঞ্চল গ্রেপ্তার
সাত কলেজের সব পরীক্ষা স্থগিত
আজ পবিত্র শবে মেরাজ
মধ্যরাতে ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত ৮
সাবেক দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান গ্রেপ্তার
রয়্যাল এনফিল্ড কিনে না দেয়ায় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ কিশোরের!
রংপুরের টানা দ্বিতীয় হার, রাজশাহীর নাটকীয় জয়
সায়েন্সল্যাব ও টেকনিক্যাল মোড় অবরোধ করেছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা
আসাদুজ্জামান খান কামাল বাংলাদেশের কসাই: প্রেস সচিব
পুলিশের সংখ্যা পর্যাপ্ত, কিন্তু মনোবলের ঘাটতি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাংলাদেশে আসছে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট
মালয়েশিয়া-থাইল্যান্ড যাচ্ছেন বাংলাদেশি রোগীরা, কলকাতার হাসপাতাল ব্যবসায় ধস
২৫ দিনে এলো ২০৪৪৭ কোটি টাকার প্রবাসী আয়
বেতন-ভাতায় না পোষালে অন্য পেশায় চলে যান: প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা
অ্যাডভোকেট তপন বিহারী নাগ ট্রাস্ট বৃত্তি পেলেন কুবির ৩০ শিক্ষার্থী
নির্বাচনের কথা বললে উপদেষ্টাদের মুখ কালো হয়ে যায়: মেজর হাফিজ
পদ্মশ্রী পাচ্ছেন সংগীতশিল্পী অরিজিৎ সিং