বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪৩

নেই দেশের নাগরিক

“অত সহজে কি আর মোয়া পাওয়া যায়? অনেক কাঠখড় পুড়াতে হয়।“ কথায় সুর টানে সাদ্দাম। তারপর আতিফের কাছ থেকে তার স্বয়ংক্রিয় পিস্তলটা হাতে নিয়ে বলে, “কোনো কোনো সময় কথার কূটনীতি এসব অস্ত্রের থেকেও মারাত্মক অস্ত্র হতে পারে, বন্ধু। কথায়ই তো জগৎ চলছে, তাই না? কথায় যুদ্ধ আবার কথায় শান্তি। আবার কথা দিয়েই কথা নেওয়া যায়।“
“কী রে তুই আবার গান্ধীবাদী হয়ে গেলি নাকি? ভেতরে কী এমন মন্ত্র পড়াল যে বেরিয়ে এসে হঠাৎ এমন ভীমরতি হলো!” ঠেস মারল আতিফ।
“কোনো মতবাদই ফ্যালনা নয়, বন্ধু। কখন যে কোন মতবাদ কাজে লেগে যায়, কেউ বলতে পারে না। এই যেমন আজকেই...।“ সাদ্দামকে কথাটা শেষ করতে না দিয়েই আতিফ মুখ হড়কে চোখ বড় করে বলে উঠল, “আজকে, আজকে কী?”
“আজকে কথাতেই কাজ হয়ে গেল।“ একতারায় টুং করে স্পর্শ করার মতো হাল্কাচ্ছলে কথাটা বলল সাদ্দাম।
“কাজ হয়ে গেল! মানে, স্পিডবোট ম্যানেজ কমপ্লিট?”
“আমি তো সে কথা বলিনি?”
“ওহ, তো কী!” খুশিতে ফট করে ফুটে ওঠা মুখটা মুহূর্তে পানসে হয়ে গেল আতিফের। সাদ্দাম আতিফের পানসে হয়ে যাওয়া মুখটার দিকে তাকাল। তারপর ঠোঁটে আলতো হাসি মাখিয়ে নিয়ে বলল, “বোট পাওয়া গেছে।“
“বোট পাওয়া গেছে! ওহো, থ্যাঙ্ক ইউ বন্ধু, থ্যাঙ্ক ইউ।“ সাদ্দামকে জড়িয়ে ধরল আতিফ। আনন্দে টগবগ করে ফুটছে। পারলে, লাফ মেরে সাদ্দামের ঘাড়ে উঠে পড়ে। গালে একটা লম্বা চুম্বন দেয়।

“ছাড়, আতিফ, ছাড়। ভোর হয়ে এল। এবার বোটটা নিয়ে বেরোতে হবে।“ আতিফের পিঠে আশ্বস্তের থাবা মারে সাদ্দাম। আতিফ সহজে ছাড়ে না। হুকের মতো আঁকড়ে ধরে। সাদ্দাম বুঝতে পারে, আতিফ কাঁদছে। সে আতিফকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে, “কাঁদিস ন্যা, যেভাবেই হোক, আমরা চাচাদের উদ্ধার করবই।“ তারপর আতিফকে তার বুক থেকে খাড়া করে বলে, “চল, আর লেট করা ঠিক হবে না। ঝুঝকি থাকতে থাকতেই বোটটা নিয়ে বেরিয়ে পড়তে হবে। তা না হলে আবার সমস্যা হবে। বোট পাওয়া মুশকিল হয়ে যাবে। মেজর আসলাম বলেছেন, অন্ধকারের মধ্যেই বোট নিয়ে বেরিয়ে পড়তে হবে এবং সকাল ১০টার মধ্যে আবার বোট ওঁদের হাতে তুলে দিতে হবে।“
“চল, কিন্তু বোট কোথায় আছে?” জানতে চায়ল আতিফ।
“নদীতে।“ বলল সাদ্দাম।
“কীভাবে পাবি?”
“ও তোকে চিন্তা করতে হবে না। সব ব্যবস্থা পাকা করে এসেছি। মেজর সাহেব ফোন করে দিয়েছেন।“ আতিফের দুশ্চিন্তা দূর করে সাদ্দাম। আতিফের পানসে মুখে আবারও হাসি খেলে ওঠে। চোখে আহ্লাদের দ্যুতি। “অস্ত্রগুলো কোথাও লুকিয়ে রাখতে হবে না?” জিজ্ঞেস করে আতিফ। “নাহ।“ বলল সাদ্দাম। তারপর পাতাবাহার গাছের আড়াল থেকে পাশের ফাঁকা রাস্তায় নেমে বলল, “ওখানে এসবের কোনো সমস্যা নেই। নদীতে আমার খাস লোক থাকবে। ওসব ম্যানেজ করে নেব।“

বিজিবি’র সংরক্ষিত জোন থেকে বেরিয়ে পাশের আঁকাবাঁকা পথ দিয়ে নাফ নদীর দিকে এগোতে থাকল সাদ্দামরা। একদিকে বিজিবি’র সীমান্ত চৌকির সুউচ্চ পাঁচিল আর অন্য দিকে দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ ধানক্ষেত। রাস্তাটা পাঁচিলের আড়াল দিয়ে সাপের মতো এঁকেবেঁকে নদীর দিকে চলে গেছে। মাথা ছাপিয়ে ছাপিয়ে হনহন করে চলেছে সাদ্দাম। পিছু পিছু আতিফ। পাঁচিল থেকে পাঁচশ মিটার দূরের একটা লঞ্চঘাটে পৌঁছল তারা। আর পাঁচটা লঞ্চঘাটের থেকে এটা অনেকটাই আলাদা। সম্পূর্ণটাই সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। লোকমুখে এর নাম ‘নয়াপাড়া সেনা লঞ্চঘাট’। সাধারণ মানুষের এখানে চলাচল নিষিদ্ধ। নদীর পাড়ে দু-জায়গায় খোপ খোপ চৌকি ঘর। তার ভেতরে সীমান্তপ্রহরী বন্দুক তাক করে আছে। একটু দূরে নদীর পাড় ঘেঁষা একটা মাঝারি বটগাছ। বটগাছটার সারি সারি ঝুরি নেমে আছে। দেখে মনে হচ্ছে, অন্ধকারে কালো কালো শাড়ি ঝুলছে। বটগাছটা থেকে কয়েক ছটাক দূরে জলপাই রঙের একটা একতলা চৌকো বাড়ি। বিজিবি’র চৌকিঅফিস। ছাদ ফুঁড়ে উঠে গেছে ওয়াচটাওয়ার। ওয়াচটাওয়ারের মাথায় রাইফেল তাক করে আছেন কয়েকজন সীমান্তপ্রহরী। ভোরের ঝুঝকি টাওয়ারের খোপে খোপে দলা পাকিয়ে লুকিয়ে আছে। প্রাচীন বটগাছটার পাতার আড়ালে আড়ালে এখনো ঘুমিয়ে আছে রাত। মগডাল বেয়ে একটু একটু করে নেমে আসছে, ভোরের আগমনী বার্তা। মাটিতে মিশে থাকা বটগাছের ছায়া একটু একটু করে শরীর হয়ে উঠবে একটু পরেই। সাদ্দাম চৌকো অফিস বাড়িটার দিকে এগোতে থাকল। তার হাঁটাচলা দেখে আতিফ ভাবল, সাদ্দামের এ চত্বরে অনেকবার আসা আছে। অলিগলি, খানাখন্দ সবই তার নখদর্পণে। সাদ্দাম হনহন করে অফিসবাড়িটার ভেতরে ঢুকে গেল। সিঁড়ির ডানদিকের ঘরটায় সটাম ঢুকে পড়ল সাদ্দাম। আতিফ দরজার কাছে দাঁড়িয়ে ইতস্তত করতে লাগল, হুট করে কোনো অফিসে এভাবে ঢোকা কি ঠিক হবে? আর তখনই সাদ্দাম ভেতরে আসার জন্যে তাকে ইশারা করল। সাদ্দামের ইশারা পেয়ে আতিফ আঁকুপাঁকু করে ভেতরে ঢুকে পড়ল। একটা লম্বা টেবিলের ওপারে গদি সাটানো কাঠের চেয়ারে একজন সেনা অফিসার বসে আছেন। পরনে খাকি। লম্বা নাক। কুতকুতে চোখ। মুখের উপর পাকানো গোঁফ। সাদ্দামদের দেখেই ভদ্রলোক বললেন, “ওহ, তোরা এসে গেছিস। ওকে, আমি সব রেডি করে দিচ্ছি।“

সেনা অফিসারটার কথা শুনে আতিফ বুঝতে পারল, ভদ্রলোকের কাছে উপর মহল থেকে আগেই বার্তা এসে গেছে। অর্থাৎ সাদ্দামের মেজর মহম্মদ আসলাম আগেই এঁকে ফোন করে দিয়েছেন। সাদ্দাম অফিসারটার কাছে গিয়ে ফিসফিস করে কী একটা বলল। কথাটা শোনার পর ভদ্রলোক ঠোঁটে চিলতে হাসি মিশিয়ে বললেন, “না না, তুই হলি আমাদের খাস লোক। কোনো প্রবলেম নেই। ওসব তোর কাছেই থাক। আরে বাবা, শত্রুর শত্রু মিত্রই তো নাকি?”
“শুকরিয়া স্যার।“ ধন্যবাদ জানাল সাদ্দাম। তারপর আতিফের কাছে সরে এসে ফুরফুরে মেজাজে বলল, “পিস্তলগুলো কোথাও রাখতে হবে না। ওগুলো আমাদের কাছেই থাকবে। স্যার বললেন, কোনো অসুবিধা নেই।“
“আচ্ছা।“ ঘাড় হেলালো আতিফ।
অফিসার চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন। বললেন, “আয়। আমার সঙ্গে আয়।“ তারপর হাঁক দিয়ে ভেতর থেকে একজনকে ডাকলেন। একজন সেনা হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে ‘সেলাম’ দিল, “জি স্যার।“
“আমার সঙ্গে চল। দরকার আছে।“
“জি স্যার।“ সেনা লোকটা সাদ্দামদের পিছু পিছু আসতে লাগল। লঞ্চঘাটে এসে থামল সবাই। ঘাটে বাঁধা সারি সারি স্পিডবোট। নদীর তিরতির করে বয়ে যাওয়া রূপও ক্রমশ ঝাপসা থেকে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। নদীর বুক থেকে একটু একটু করে উঠে যাচ্ছে রাত। ছড়িয়ে পড়ছে ভোরের ফিনফিনে আলো। নাফ নদী দেখেই আতিফের চোখ ছ্যাড়ড়া হয়ে ছড়িয়ে গেল চরাচর। হন্যে হয়ে খুঁজতে লাগল তাদের ‘ঘাটবাড়ি কৌশা’ নৌকোটা। আতিফ দেখল, লঞ্চঘাটটার চৌহদ্দিতে কোন রোহিঙ্গা নৌকো নোঙর গেঁড়ে দাঁড়িয়ে নেই। এপারে যা দুএকটা স্পিডবোট আর লঞ্চ ঘোরাফেরা করছে সেগুলো সবই বাংলাদেশ সীমান্ত বাহিনীর নজরদার জলযান। আতিফের চোখ নদীতে পুঁতে গেল। সে নদীর ঝাপসা বুক চিরে দূরে বঙ্গোপসাগরের দিকে দৃষ্টির খ্যাজাল ফেলল। দূরে ঝাপসা নদীর বুকে সারি সারি নৌকো দাঁড় করানো দেখে, তার ভেতরটা ‘থক’ করে উঠল। যেন শুকনো খাঁ খাঁ বুকে এক ছটাক খুশি ধেই করে নেচে উঠছে, নিশ্চয় ওখানে আছে আমাদের নৌকোটা। আনন্দ আর বাগ মানে না আতিফের। হুড়মুড় করে নদীতে নেমে পড়তে ইচ্ছে করে তার। ‘ধা’ করে স্পিডবোটটা চালিয়ে ছুটে চলে যেতে মন চাইছে। যদিও তার মনের স্পিডবোট ‘সাঁ’ “সাঁ’ করে ছুটে যাচ্ছে।
লোহার শিকল দিয়ে বাঁধা সবুজ রঙের একটা স্পিডবোট দেখিয়ে দিয়ে সেনাঅফিসার বললেন, “এটা নিয়ে যা। কে চালাবে ? তুই তো নাকি?” সাদ্দামের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন। সাদ্দাম ঘাড় হেলিয়ে বলল, “জি, স্যার।“ সেনাঅফিসারের বলাও সারা অমনি হুড়মুড় করে স্পিডবোটে চেপে বসল সাদ্দাম। আতিফকে ইশারায় তাড়াতাড়ি চেপে বসতে বলল। আতিফ চেপে বসতেই, ‘বুউউ’ করে স্টার্ট দিল সাদ্দাম। জল কেটে ছুট লাগাল বোট। আতিফ সাদ্দামের হাবভাব দেখে, ভ্রূ কুঁচকে জিজ্ঞেস করল, “তুই আচমকা অত হুটপাট করে ছুটছিস কেন?”
“বলছি, পরে বলছি। আগে এই চত্বরটা পার হই, তারপরে বলছি।“ সাদ্দামের কণ্ঠে হুটোপুটি।
“তুই কি ভেতরে কিছু ঘটিয়ে এসেছিস নাকি রে!” সাদ্দামের কথায় সন্দেহের ইঙ্গিত।
“নাহ নাহ, কী আর ঘটাব।“ আমতা আমতা করে সাদ্দাম।
“কিছু তো একটা ঘটেছে। তা না হলে, তুই অত তাড়াহুড়ো করছিস কেন?”
একটা ভাসমান লঞ্চের পাশ কেটে ‘ধা’ করে বোটটা বেরিয়ে গেল। বোটের স্পিডের মতো থড়বড় করে সাদ্দাম বলল, “দেখছিস, বোটটা কেমন করে পানির বাধা কেটে সাঁ সাঁ করে এগিয়ে যাচ্ছে! যে বাধা টপকাতে পারে, সেইই সামনে এগোতে পারে।“
“সে তো ঠিকই। এ আর নতুন কথা কী।“
“তবে মানুষের বাধা সব থেকে বড় বাধা। সে বাধা টপকানো চাট্টেখানি ব্যাপার নয়। যার তার কম্মও নয়। বুকের পাটা থাকতে হবে। মদ্দানির জোর থাকতে হবে। কখনো কখনো মৃত্যুকে গিলে খেতেও হবে।“
“ওই দ্যাখ, আমাদের রাখাইনে সকাল হচ্ছে।“ নদীর পূর্বপার দেখিয়ে বলল আতিফ।
“মানুষ যেমন সব থেকে সুন্দর ফুল ঠিক তেমনই মানুষই সব থেকে বড় কাঁটা। সে কাঁটাকে মাঝেমধ্যে উপড়ে ফেলতে হয়। নাহলে সামনে এগোনো যায় না।“ সাদ্দাম নিজের খেয়ালে বকে যেতে থাকে। আতিফের কথা কান করে না। আতিফ লোহার স্ট্যান্ডটা ধরে পুবদিকে মুখ করে খাড়া হয়ে দাঁড়ায়। সাদ্দামের এত গুরুগম্ভীর কথা তার ভালো লাগছে না। তার মনের মেঝেয় এখন আসন পেতে বসেছে তার সাধের জন্মভিটে। যা এই স্পিডবোট থেকে ঝাপসা হয়ে দেখা যাচ্ছে। সে একটা উচ্চ শ্বাস ফেলে বলল, “আহাঃ কতদিন বাড়ি যাইনি!”

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>


নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

Header Ad
Header Ad

ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরান, চীন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) একাধিক ব্যক্তি ও সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানের অস্ত্র সংগ্রহ নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়।

এই পদক্ষেপকে ইরানের ওপর আরও চাপ সৃষ্টির একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে সতর্ক করে বলেছিলেন, নতুন পারমাণবিক চুক্তিতে রাজি না হলে দেশটির ওপর বোমা হামলা চালানো বা নতুন শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ ও বিচার বিভাগ যৌথভাবে জানিয়েছে, ইরানের ড্রোন কর্মসূচির অন্যতম প্রধান নির্মাতার জন্য মানববিহীন এয়ার ভেহিকল (ইউএভি)–এর উপকরণ সংগ্রহের সঙ্গে যুক্ত ছয়টি সংস্থা ও দুই ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, "ইরান তাদের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়াসহ তাদের প্রক্সিদের সরবরাহ করছে। রুশ বাহিনী এগুলো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে, যা বেসামরিক নাগরিক, মার্কিন বাহিনী ও মিত্রদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা ইরানের সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্স এবং তাদের ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রচলিত অস্ত্রের বিস্তার ব্যাহত করতে কাজ চালিয়ে যাব।"

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে একটি ইরান-ভিত্তিক সংস্থা, দুইজন ইরানি নাগরিক, একটি চীন-ভিত্তিক সংস্থা এবং চারটি সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক সংস্থা।

এ বিষয়ে জাতিসংঘে ইরানের মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

Header Ad
Header Ad

বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের দোসররা বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, "পরাজিত শক্তি নিউইয়র্ক টাইমসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিপোর্ট করিয়েছে। ফ্যাসিবাদের দোসররা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। তারা এই অবৈধ টাকা ব্যবহার করে বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করতে চায়।"

বুধবার (২ এপ্রিল) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেন, "শেখ হাসিনা জঙ্গি দমনের নামে একটি নাটক সাজিয়ে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করেছেন। এটি মূলত ক্ষমতায় টিকে থাকার একটি রাজনৈতিক কৌশল ছিল। এমনকি একজন সাবেক আইজিপির বইয়েও এটি উঠে এসেছে।"

তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশে উগ্রবাদের কোনো উত্থান ঘটেনি। বরং বর্তমানে দেশে ফ্যাসিবাদের কোনো ছোবল নেই, মানুষ নির্বিঘ্নে ধর্মপালন করতে পারছে, কথা বলতে পারছে। এবার মানুষ নির্ভয়ে ঈদ উদযাপন করেছে, যা অতীতে সম্ভব হয়নি।"

আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, "আওয়ামী লীগ বসে নেই, তারা কালো টাকা ব্যবহার করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তারা অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। বিদেশে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।"

তিনি আরও বলেন, "শেখ হাসিনার নির্দেশে মুগ্ধ ফাইয়াজদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু এ নিয়ে তার কোনো অনুশোচনা নেই। প্রশাসনের চারপাশে আওয়ামী লীগের দোসররা বসে আছে, যার ফলে দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।"

রিজভী আহমেদ দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, "নির্বাচনী সরকারই হচ্ছে বৈধ সরকার। নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হবে।"

তিনি নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দ্রুত নির্বাচনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

Header Ad
Header Ad

দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের ঘটনা ঘটেনি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, সরকারের দৃঢ় অবস্থান ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকর তৎপরতার ফলে দেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ পায়নি।

বুধবার (২ এপ্রিল) দুপুরে এক ঈদ পুনর্মিলনী ও শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে অংশ নিতে থানার পরিদর্শনে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সেখানেই সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন গুজব ও অপপ্রচারের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, "কে কী পোস্ট করল, তা নিয়ে মন্তব্য করা আমার দায়িত্ব নয়। তবে কেউ যদি রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার মতো কিছু করে, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

এ সময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় দায়ের করা হত্যা মামলায় নিরপরাধ ব্যক্তিদের জড়ানোর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "এটা সত্য যে, কিছু ক্ষেত্রে নিরীহ মানুষ মামলার আসামি হয়েছেন। এমনকি যাদের নাম এজাহারে নেই, তারাও মামলা মোকাবিলা করছেন। আবার কিছু ব্যক্তির নাম এজাহারে থাকলেও তদন্তে দেখা গেছে তারা ঘটনার সময় দেশে ছিলেন না।"

তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, "এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে তদন্ত কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। শুধু থানার পর্যায়ে নয়, নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য আলাদা কমিটিও গঠন করা হয়েছে। যাতে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি সাজা না পান, আবার প্রকৃত অপরাধীরাও যেন আইনের আওতার বাইরে না থাকে।"

পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রম আরও সুসংগঠিত ও আধুনিক করতে থানাগুলোকে নিজস্ব ভবনে স্থানান্তরের ওপর গুরুত্ব দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, "জনগণ যেন আরও দ্রুত ও কার্যকর সেবা পায়, সেজন্য থানাগুলোর নিজস্ব অবকাঠামো থাকা প্রয়োজন। এ বিষয়ে সরকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।"

এ সময় পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সবাইকে সতর্কভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী
দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের ঘটনা ঘটেনি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আখাউড়ায় ট্রেনের ছাদে টিকটক বানাতে গিয়ে দুর্ঘটনা, নিহত ২
বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ভারতের ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের
বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি: মির্জা ফখরুল
বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই
ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২
থানায় জিডি করলেন ভোক্তা অধিকারের জব্বার মন্ডল