শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৩

যারা যুদ্ধ করেছিল

রমিছা বিবি হাত ধরে রকিবকে ঘরে নিয়ে এসে বসায়। গলা নামিয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘মুখ শুকনা দেখতাছি। কিছু মনে হয় খাও নাই?’
রকিব সহজে বলে, ‘না খালা। সকালে চারটা মুড়ি খাইছিলাম। তারপর মুখে আর কিছু দেওয়ার সুযোগ হয় নাই। ভীষণ খিধা লাগছে।’
রমিছা বিবি অসহায়ভাবে স্বামী করিম মিয়ার দিকে তাকায়। করিম মিয়া লুকোছাপা না করে সোজাসুজি বলে, ‘আমরাও না খায়া আছি বাবা। ঘরে এক চিমটি দানা নাই।’
রকিব হতভম্ব মুখে তাকিয়ে থাকে। তারপর পকেট থেকে টাকা বের করে করিম মিয়াকে দেয়। বলে, ‘এখন কি দোকান-টোকান খোলা পাবেন? পাইলে কিছু চাল ডাল কিনা আনেন।’
রমিছা বিবি বলে, ‘এক সের চাইল আনেন। ডাইল আনেন আর আলু আনেন ভর্তা খাওয়ার জন্য। ছোয়ালডারে শুধু ডাইল দিয়া ভাত দিবেন?’
করিম মিয়া থলি নিয়ে বেরিয়ে যায়।

রকিব শব্দ করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। রমিছা বিবি বলে, মমিন আসবে না?
‘রকিব সে কথার জবাব না দিয়ে আচমকা জিজ্ঞেস করে, ‘সাথীর খবর কি? ওকে দেখতাছি না যে?’
এই প্রশ্নে রমিছা বিবি বোবা হয়ে যায়। একই প্রশ্ন দ্বিতীয়বার করায় রমিছা বিবি আঁচলে মুখ ঢেকে কান্না শুরু করে। রকিব ভয়ংকর খারাপ খবরের আশঙ্কা করে। সে তাগাদা দিতে থাকে। বলে, ‘খালা কান্না বন্ধ করেন। কি হইছে তাই কন। মমিন ভাই সাথীর খবর নিতেই আমাকে পাঠাইছে।’
বেশ কিছুক্ষণ পর রমিছা বিবি ধাতস্থ হয়ে চোখ মোছে। তারপর কান্না কন্ঠে ঘটনা খুলে বলে রকিবকে। রকিব শুনে হতভম্ব হয়ে বসে থাকে।

করিম মিয়া চাল ডাল আর আলু পেঁয়াজ নিয়ে এলে রমিছা বিবি দেরি করে না। দ্রুত রান্না চড়িয়ে দেয়। ঘরে ফিস ফিস করে কথা বলছিল করিম মিয়া ও রকিব। করিম মিয়া বলে, ‘তোমাদের বাড়ির কী খবর? সবাই আছে কেমন?’
‘ভালো না খালুজান। আমাদের বাড়ি-ঘর মিলিটারি পোড়াইয়া দিছে। নানাকে ধইরা নিয়া গেছিল। মাইরা হাড়হাড্ডি ভাইঙ্গা গুঁড়া কইরা দিছে। তবে ভাগ্যিস জানে মারে নাই। এখন জ্যান্তমরা হয়ে বিছানায় পইড়া আছে।’
‘কও কী! এখন তাইলে সবাই আছে কোথায়?’
‘বন্যাকান্দি বোনের বাড়ি। ওখানে শুনছি তেমন ভয়-টয় নাই।’
‘কী যে দিন আইলো বাবা। কবে যে এর আবসান হবে আল্লাই জানে।’
সকালে সাথীর সঙ্গে রকিবের দেখা হয়ে যায়। সাথী বাড়ি এসেছে প্রতিদিন যেমন আসে। এসেই রকিবকে দেখে চমকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। রকিব দেখতে পেয়ে ডাক দেয় সাথীকে। সাথী ফিরে এসে মাথা নামিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। রকিব বলে, ‘আমি এতক্ষণ চলে যেতাম। শুধু তোমার অপেক্ষায় দেরি করছি।’
কান্না গলায় সাথী বলে, ‘আর কীসের অপেক্ষা? আমাকে তুমি ভুলে যাও।’
‘ভুলে যেতে চাইলে কি ভোলা যায়?’
‘জোর করে আমাকে ভুলতে হবে। আমি কী আর আমি আছি। আমি নষ্ট হয়ে গেছি।’
‘না। তুমি নষ্ট হও নাই। আমার কাছে তুমি পবিত্র। দেশের জন্য যেমন আমরা যুদ্ধ করছি। তুমি যেটা করছ সেটাও যুদ্ধ। তুমি চিন্তা কর না। এর জবাব সে পাবে। ভালো থাকার চেষ্টা কর।’
এ কথা বলে রকিব বলার মতো আর কোনো কথা খুঁজে পায় না। একটু পর সে উঠে দাঁড়ায়। বলে, ‘বিদায় দাও সাথী। আর কোনোদিন দেখা হবে কি না জানি না।’
সাথী কাঁদতে থাকে। রকিব বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাথী পেছন থেকে ডাক দেয়। ঘর থেকে সাথী একটি ভাঁজ করা কাগজ এনে রকিবের হাতে দেয়।’
‘কী এটা?’ রকিব প্রশ্ন করে।
সাথী বলে, ‘ভাইয়াকে দেবে। পথে তুমিও পড়ে নিতে পার। তাহলে আমার কলঙ্কময় জীবনের নির্মম ইতিহাস তুমিও পরিষ্কার জানতে পারবে।’
করিম মিয়া আর রমিছা বিবিকে সালাম করে রকিব বেরিয়ে যায়। চাদর দিয়ে মাথা মুখ ঢেকে সে পথ চলতে থাকে। সড়ক পথে না গিয়ে রকিব আইল পথে নেমে পড়ে।

দুপুর নাগাদ নয়নগাঁতি এসে উপস্থিত হয় রকিব। পাশের গ্রামেই তাদের বাড়ি। বাড়িতে এখন আর কেউ থাকে না। তাই সেখানে যাওয়ার কথা ভাবছে না। নয়নগাঁতির প্রথমেই সুবলদের বাড়ি। বাড়ির পোড়া জিনিস এখনো আগের মতো যত্রতত্র পড়ে আছে। সুবলের বাবাকে মেরে ফেলেছে মিলিটারিরা। সুবল ও ওদের ভাইবোন, মা, কাকি, পিসি সবাই ইন্ডিয়া চলে গেছে। বাড়িটার দিকে তাকিয়ে রকিবের বুকটা হাহাকার করে ওঠে। এই বাড়িতে কত আড্ডা দিয়েছে। সুবলের ছোটবোন স্মৃতির কণ্ঠে কতদিন গান শুনেছে। আহা কী সুন্দর দিন ছিল তখন। আর কি সেদিন ফিরে আসবে?
নয়নগাঁতির অর্ধেক পরিবার ছিল হিন্দু। বারো মাস পূজা-পার্বণ লেগেই থাকত। প্রতি রাতে কোনো না কোনো বাড়িতে বসতো গানের আসর। না হলে যাত্রাপালা। সেই উৎসবমুখর দিন কোথায় হারিয়ে গেল। রকিবের মন খারাপ হয়ে গেল এইসব ভাবতে ভাবতে।
ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। একটি গাছের তলায় খানিক বিশ্রাম নিয়ে রকিব আবার হাঁটতে শুরু করে। বার বার শুধু সাথীর কথা মনে হতে থাকে। সাথীকে সে মনে মনে ভীষণ পছন্দ করত। খালার বাড়ি আসত রকিব ঘন-ঘন। সেটা সাথীর টানে। সে যখন গান গাইত জানালা দিয়ে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকত সাথী। তার মায়াভরা চোখ রকিবকে উদাস করে দিত।
একদিন কথায় কথায় সাথী বলেই ফেলে আপনার গান আমার খুব ভালো লাগে।
‘সত্যি?’
‘তবে কি মিথ্যে বলছি?’
বিদায় বেলায় জিজ্ঞেস করেছিল, ‘আবার কবে আসবেন?’
রকিব তাৎক্ষণিক কোনো জবাব দিতে পারেনি। বুকটা তির তির করে কাঁপছিল। এই প্রথম হৃদয়ে তুমুল ঝড় ওঠে রকিবের। অনেকখানি পথ হেঁটে আসার পরও ফিরে দেখে সাথী পথ চেয়ে আছে। সেই থেকে সাথীর প্রতি রকিবের দুর্বলতা।
রকিব চলে যাবার পর থেকে সাথীর বেদনা ভারি হয়ে ওঠে। ঘরে একাকি শুয়ে থাকে। রকিবের কণ্ঠে একটি গান তার ভীষণ প্রিয়। ‘এতোদিন পরে এলে একটু বসো। তোমায় অনেক কথা বলার ছিল যদি শোন।’ এই গানটি সাথী বার বার শুনেছে। এই মুহূর্তে বার বার মনে হতে থাকে। কিন্তু সে গাইতে পারে না। মনে মনে গুণ গুণ করে। কী ভেবে তার চোখ ভিজে আসে। রকিবকে নিয়ে মনে মনে কত স্বপ্ন দেখেছিল। যুদ্ধ এসে সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিল। কখনো কখনো মমিন ভাইকে দায়ী করে। সে যদি মুক্তিযুদ্ধে যোগ না দিত তাহলে তাকে আজ ঘানি টানা গরুর মতো এমন করে ফেঁসে যেতে হতো না। জীবনটা এমনভাবে ত্যানা ছেঁড়া কাঁথার মতো জুবু থুবু হয়ে যাবে সাথী কোনোভাবেই ব্যাপারটা মেনে নিতে পারছে না। ভাবতে ভাবতে সাথী নিঃশব্দে চোখের জল ফেলতে থাকে।
এই এলোমেলো ভাবনার মধ্যে চিৎকার চেঁচামেচি হৈচৈ হট্টগোল চারদিকে ভয়ার্ত আর্তনাদ সাথীকে সজাগ করে তুলল। ঘরের বাইরে এসে দেখতে পায় দক্ষিণ পাড়ায় আগুনের কুণ্ডলি পাঁক খেয়ে আকাশের দিকে উঠে যাচ্ছে। ত্রস্ত্র ছুটছে মানুষজন। যে যেদিকে পারে পালাচ্ছে।

খবর নিয়ে জানতে পারে দক্ষিণ পাড়ার সোলেমান মিয়ার বাড়িতে আগুন দিয়েছে মিলিটারি। সোলেমানের বাড়িতে নাকি রাতে রাতে মুক্তিফৌজ এসে থাকে। সোলেমান মিয়া তাদের থাকতে দেয়। খেতে দেয়। এই খবর শান্তি কমিটির সদস্যরা মিলিটারিদের জানালে তারা এসে সোলেমান মিয়াকে খোঁজে। তাকে না পেয়ে তার বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। গোলাগুলির শব্দ হলে মানুষ দিকবিদিক ছুটতে থাকে। মুহূর্তে প্রচার হয়ে যায় সোলেমান মিয়ার বৃদ্ধ মাকে পাকিস্তানি মিলিটারি গুলি করে মেরে ফেলেছে। গোয়াল থেকে গরু খুলে নিয়ে গেছে। গুলির শব্দে রমিছা বিবি দৌড়ে পালাতে গিয়ে সাথীকে দেখতে পেয়ে সে জোর করে সাথীকে ফজলুর রহমানের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন-

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১২

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১১

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১০ 

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৯

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৮

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৭

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৬

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৫

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৪

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৩

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-২

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১

এসএন 

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা

ছবি: সংগৃহীত

অ্যন্টিগার পেস সহায়ক উইকেটে নতুন বলের বাড়তি সুবিধা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছিল বাংলাদেশ। দিনের প্রথম সেশনে দ্রুত দুই উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চাপে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সময় গড়াতেই বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় দুই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার মিকাইল লুইস ও আলিক অ্যাথানেজকে। জুটি গড়ে দুজনের ছুটতে থাকেন শতকের পথে। কিন্তু দুজনের কারও প্রত্যাশা পূরণ হতে দেয়নি বাংলাদেশ। দিনের শেষভাগে নার্ভাস নাইন্টিতে দুজনকে মাঠ ছাড়া করে প্রথম দিনের ইতি টানে বাংলাদেশ।

টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৫০ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দিকে বৃষ্টি হানা দেয় ম্যাচে। বৃষ্টি থামার পর আলোক স্বল্পতায় ৮৪ ওভার হওয়ার পরই দিনের খেলা শেষ করেন আম্পায়াররা।

টস জিতে বোলিংয়ে নেমে মেডেন ওভারে শুরুটা ভালো করেন হাসান মাহমুদ। অন্যপ্রান্তে আরেক পেসার শরিফুল ইসলামও মেডেন ওভার নেন। উইকেটের দেখা না পেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার কার্লোস ব্রাথওয়েট ও লুইসকে বেশ কয়েকবার পরাস্ত করেন বাংলাদেশের দুই পেসার।

ইনিংসের অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আনা হয় তাসকিন আহমেদকে। এই পেসারই প্রথম ব্রেকথ্রু দেন দলকে। ১৪তম ওভারে তাসকিনের অফ স্টাম্পে পড়ে একটু ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে ডিফেন্স করেছিলেন ব্রাথওয়েট। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত হানে পায়ে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেন। যদিও তৎক্ষণাৎ রিভিউ নেন ব্রাথওয়েট। তবে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়নি।

তিনে নেমে টিকতে পারেননি কেসি কার্টি। ডানহাতি ব্যাটারকেও ফিরিয়েছেন তাসকিন। উইকেটে আসার পর থেকেই তাড়াহুড়ো করছিলেন তিনি। তাসকিনের মিডল এবং লেগ স্টাম্পের লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করার চেষ্টায় লিডিং এজ হয়ে মিড অনে থাকা তাইজুল ইসলামকে ক্যাচ দিয়েছেন কার্টি।

২৫ রানে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে পথ দেখান লুইস ও কেভম হজ। তবে হজ ২৫ রান করে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৫৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।

এরপর বাংলাদেশকে বেশ ভুগিয়েছে লুইস ও আথানজে জুটি। দুজনেই সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। তবে সম্ভাবনা জাগিয়েও কেউই মাইলফলক ছুঁতে পারেননি।

ইনিংসের ৭৫তম ওভারে মিরাজের বলে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে ভুল করেন লুইস। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় স্লিপে। ক্যাচ নিতে ভুল করেননি শাহাদাত হোসেন দিপু। নব্বইয়ের ঘরে ২৬ বল আটকে থেকে আউট হন লুইস। ফলে ভেঙে যায় ২২১ বলে ১৪০ রানের জুটি। ২১৮ বলে এক ছক্কা ও নয় চারে ৯৭ রান করেন এই ওপেনার।

এর কিছুক্ষণ পরই ফিরেছেন আথানজেও। তাইজুলের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি স্কুপের মতো খেলেছিলেন আথানজে। যদিও তেমন গতি না থাকায় তার ব্যাটে লেগে বল উপরে উঠে যায়। সহজ ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক লিটন। দশটি চার ও একটি ছক্কায় ১৩০ বলে ৯০ রান আসে বাঁহাতি এই ব্যাটারের ব্যাটে। তিন রানের মধ্যে দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে লড়াইয়ে ফেরার সম্ভাবনা জাগায় বাংলাদেশ।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি