রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪০

নেই দেশের নাগরিক

 

“চল, এবার বেরোনো যাক।“ খাড়া হয়ে দাঁড়াল আতিফ।
“থাম, কটা গয়নাগাটি পরে নিই।“ সাদ্দামের ঠোঁটে চিলতে হাসি।
“গয়নাগাটি!” ঘাড় ঘোরায় আতিফ। চোখ থেকে বেরিয়ে আসছে বিস্ময়ের চাহনি।
“হ্যাঁ, গয়না। গয়না ছাড়া তো আমরা এক কদমও চলতে পারি না। ওগুলোই যে আমাদের রক্ষাকবজ।“
“ওহ, এবার ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছি।“ কিছু একটা আন্দাজ করে বিস্ময়ের ঠোঁট ঢাকা পড়ল রসিকতার হাসিতে।
“তুই বুঝতে পারবি না তাই কখনো হয়? তুই হচ্ছিস বুদ্ধিপাকা মাল। এই বয়সেই তো সব কিছুর তল ঘেঁটে রেখেছিস। তোর মতো জিনিয়াসের কাছে আধখানা ইঙ্গিতই যথেষ্ট।“ দেড় বিগ লম্বা দামাস্ক ভুজালিটা কোমরের গোপন খোলে পুরতে পুরতে বলল সাদ্দাম।
ডানদিকের কোমরে ঢিলে প্যান্টটার ভেতরে সেটে নিল এস আই জি প্রো সেমি অটোমেটিক পিস্তল। কোমরে বেঁধে নিল কার্তুজের বেল্ট। তাতে কয়েক ম্যাগাজিন গুলি বিছের মতো সার বেঁধে আটকানো আছে। বেল্টটাকে বেঁধে নিয়ে সাদ্দাম আতিফকে বলল, “তোর গয়নাপাতি আছে তো?”
“হু।“ থুতনি নিচে করল আতিফ। তার ব্যাগে যে অত্যাধুনিক হেকলার অ্যান্ড স্কচ ভিপি ৭০ পিস্তল আছে, সেটা আর হাট করে সাদ্দামকে দেখাল না।
“সে তো থাকতেই হবে। আমরা তো আর এখন রক্ত-মাংসের মাটির মানুষ নই, আমরা এখন অস্ত্রমানুষ।“ মশকরা করল সাদ্দাম।
“সেভাবে আর অস্ত্রমানুষ কই হতে পারলাম! এখনো তো একটা পাখি মরলে মনটা ধক করে ওঠে। বাড়ির লোকের জন্যে ভেতর হুহু করে কাঁদে। আমরা মনে হয় মানুষ কখনোই পুরোপুরি পাষাণ হতে পারে না। সে হৃদয় যতই আগুনে পোড়ানো হোক, লোহা ঠুকে চিপটানো হোক, দোয়া-মন্ত্র পড়ানো হোক, ভেঙে দুমড়ে মুচড়ে নতুন করে গড়া হোক, কারও বাপ, কারও ব্যাটা, কারও ভাই, কারও স্বামী একটু হলেও ভেতরে থেকে যায়।“
“সে হৃদয়কে তো কবেই কবর দিয়ে দিয়েছি। এখন যেটা আছে সেটা হল একটা খোল। অস্ত্রের যেমন খোল হয়, ঠিক তেমনই আমাদের এই শরীরটা এখন একটা ‘ধারণা’ পুরে রাখা খোল। সে ‘ধারণা’ হলো জেহাদ। সেখানে কোনো বাপ, কোনো ব্যাটা, কোনো স্বামী নেই। যেটা আছে সেটা হলো, একজন মুজাহিদ। খোলের ভেতর পুরে নিয়ে বেড়ানো একজন শহীদ। মাযহাবের জন্যে উৎসর্গ করা একটা জীবন। এ জীবনের বাহ্যিক রঙ সাদা। ফ্যাকাসে। বে-রঙিন। আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো ঢালও নেই ঢোলও নেই। না আছে কোনো সুর না আছে কোনো বাজনা।“
“মানুষের মনের সবুজ রঙ মরে পুরোপুরি কখনো হলুদ হয় কি? একটু ফ্যাকাসে হতে পারে কিন্তু কখনই পুরোপুরি হলুদ হয় না। প্রতিটি জীবনেরই একটা সুর আছে। কারো ক্ষেত্রে সে সুর বেসুরো হয়, কারো ক্ষেত্রে সে সুর সুরেলা হয়। সুর কিন্তু সবারই বাজে। সে বাজনা কারো ইহলোকের জন্যে বাজে, কারো পরলোকের জন্যে বাজে।“

“চল, আর অত সুর ভেজে লাভ নেই। বেরিয়ে পড়ি।“ লম্বা টর্চটা হাতে নিয়ে বেরোনোর জন্যে উদ্যত হয় সাদ্দাম। ব্যাগ কাঁধে তোলে আতিফ। দুজন বন্ধু ছাউনি ঘরের বাইরে বেরিয়ে এসে আলের উপরে দাঁড়ায়। রাত, ভোর ছোঁব ছোঁব করছে। ঝড়ের তাণ্ডবে মাটিতে শুইয়ে পড়া ধানের শীষ থেকে উঠে আসছে থোক থোক অন্ধকার। ছেঁড়া পাতার ফাঁক দিয়ে উঁকি মারছে কোনো রকমে হাঁটু গুঁজে টিকে থাকা জীবন। সে জীবনের ভয়ার্ত চোখ কুঁকড়ে আছে ধানের উপড়ানো শিকড়ে। তবুও থোড়ের ডগায় ডগায় জীবন জয়ের উচ্ছ্বাস। নুইয়ে পড়া শীষে নতুনকে আহ্বানের ডাক। মাথার উপরের আকাশ ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। কে বলবে, কিছুক্ষণ আগে এই আকাশেই অসুরের মতো ধেয়ে এসেছিল হাঁড়িকালো মেঘ! শিকড় উপড়ানো ঝড়! বাতাস তখন নিরাকার থেকে সকার হয়ে উঠেছিল! ভেজা আলে পা রাখল দুজন। চুলের সিঁথির মতো সরু আলপথ। দুদিকে ধানি জমি। পা রাখতেই ভুষভুষ করে পা ঢুকে গেল আতিফের, “এইযযা!” জিভ বের করল আতিফ।
“সাবধানে! মাটি কাদা হয়ে গেছে!” পেছনে ঘাড় ঘুরিয়ে বলল সাদ্দাম। টর্চটা ছোট করে মারল। আতিফের ডান পায়ের কালো শু কাদায় ঢুকে গেছে। ভ্যাড়ভেড়ে কাদা। কাদা-জল-ঘাস আর ধান গাছের ঝরা পাতা ঘেঁটে খিচুড়ি পেকে গেছে। টর্চের সাদা আলোয় চিকচিক করছে।
‘এ তো যাচ্ছে তাই কাদা রে! হেঁটে যাওয়াই তো মুশকিল!” মাজা কুঁকড়ে শু কাদা থেকে টেনে তুলতে তুলতে বলল আতিফ।
“যাকে বলে ভ্যাড়ভেড়ে কাদা। ওই জন্যেই তো এদিকে এত ধান চাষ হয়। দেখছিস ন্যা, নদীর কূল জুড়ে শুধুই ধান আর ধান। যত কাদা তত ফসল ভালো।“
“ওই জন্যেই তো বলে, মনকে কাদা কর, হৃদয় অনেক বড় হবে।“
“আমাদের ওসব কথা শুনে আর কী হবে! আমাদের তো কাদা হলে চলবে না। আমাদের পাষাণ হতে হয়েছে। রুঢ় হতে হয়েছে। এই হৃদয়ে কোনো গাছ জন্মাবে না। এই হৃদয়ে জন্ম নেবে আগুন। সবকিছু পুড়িয়ে ছারখার করে দেওয়া আগুন।“ কাদায় পুঁতে যাওয়া পা-টা তুলে টিপে টিপে হাঁটতে লাগল আতিফ। সামনে চেপে চেপে হাঁটছে সাদ্দাম। ধান গাছের ভেজা শীষ আর পাতা ডালপালা গায়ে ঠেকছে। ভিজে যাচ্ছে পরনের স্যুট। আতিফ বলল, “থাম, প্যান্টটা একটুখানি গুটিয়ে নিই।“
“হ্যাঁ, ঠিকই বলেছিস। আমিও গুটিয়ে নিই। তাহলে ভিজবে না।“ সাদ্দামও কুঁজো হয়ে ঝুঁকে প্যান্টের পায়ের ফোল্ড গুটোতে লাগল। আতিফের কান সবুজ ধান হাওয়াতে ঝুঁকে এসে ছুঁল। যেন কানে কানে বলল, এই দেখো, ঝড়ের পরেও আমি দাঁড়িয়ে আছি। এভাবেই ঝড়ঝঞ্ঝা সহ্য করে টিকে থাকতে হয়। আমার শিকড়ের আটআনা উপড়ে গেছে। ভেঙেছে শাখাপ্রশাখা। কান অবধি ঝরে গেছে রেণু। খড়কুটোর মতো উড়ে গেছে পাতা। তবু আমি থোড় মুখে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে। আমার পরবর্তী প্রজন্মরা যে এই মাটিতেই ফসল হয়ে উঠবে।
“ধানের পানিতে গায়ের জামা ভিজে গেল যে!” জামার কলার ঝাড়া দিল আতিফ।
“ধানগাছগুলো যে ভিজে জুবুথুবু। দেখছিস না, পাতার ডগা দিয়ে এখনো টসটস করে পানি ঝরছে?”

প্যান্টের ফোল্ট গুটিয়ে পাদুটো একবার করে ঝাড়া দিল সাদ্দাম। তুলোর মতো নরম তুলতুলে আলপথ। ভুষ ভুষ করে পা বসে যাচ্ছে। ডালপালা ছড়ানো দুর্বা ঘাসগুলো বৃষ্টিতে ভিজে ফুরফুর করছে। কিছু কিছু ঘাস কাদায় লেপ্টে জুবুথুবু। একটা লম্বাফালি ধানি জমির তিন আলের মাথায় ‘ক’ ‘ক’ শব্দ ভেসে এল। ঘ্যাঁচ করে দাঁড়িয়ে গেল সাদ্দাম। পেছন থেকে ঠ্যালা মারা কণ্ঠে আতিফ বলল, “কী হলো? অমন করে থামলি কেন?”
“সাপ!”
“সাপ! ওরে বাপ রে!” তিড়িং করে আলের নিচে ধানের জমিতে লাফ মারল আতিফ।
“অত ভয় পাওয়ার কিছু নাই। মনে হয় সাপে ব্যাঙ ধরেছে।“
“ওসব কথা পরে শুনছি। তুই আগে টর্চটা ঝেরে মার।“ আতিফের চোখে আতঙ্কের ছাপ। সাপে তার দারুণ ভয়। সাপাতঙ্ক তার ছোট বেলা থেকেই। ‘সাপ’ বললেই সে এক লাফে পগারপার। এত কিছুর ঘষামাজা করলেও, এত্ত জেহাদি কালচার করলেও, কিছু জিনিসের প্রতি ভয় তার কাটেনি। তার মধ্যে একটি এই ‘সাপ’। সাদ্দাম তার হাতের আরব থেকে আনা আধহাত লম্বা কালো রঙের টর্চটা ঝেরে জ্বালিয়ে হেস মারল, “আত্মঘাতী মুজাহিদ হয়েও তোর সাপে এত ভয়!”
“যখন গায়ে সেটে থাকা বোতামে আঙুল টিপে নিজেকে উড়িয়ে দেব, তখন তো আর আমি একা একা মরব না? আমার সাথে সাথে আরও শ-খানেক দুশমন মরবে। শত্রুপক্ষের লোক মরবে। আমার মৃত্যুটা তখন স্বার্থক হবে। আমি মরেও শান্তি পাব। আল্লাহকে বলতে পারব, আমি শ-খানেক বিধর্মীকে মেরে মরেছি। আমার শাহাদাত বরণ বিফলে যাবে না। আল্লাহর খাতায় আমি হব একজন ইমানদার শহীদ। আর সাপের কামড়ে মারা গেলে তো, এসবের কিছুই হবে না! বনবাদাড়ে ইঁদুর ব্যাঙের মতো মরে পড়ে থাকব। ও মরার কোনো মূল্য নেই। অ ঘাসপাতার মতো মরা। আরে আমাদের রুহুটা তো আর হাটের পুকড়ে বেগুন নয়, যে ‘ঘ্যাঁচ’ করে কাটলাম ‘ফ্যাচ’ করে ফেলে দিলাম? আমাদের রুহুর উপর একটা রাষ্ট্রের জন্ম নির্ভর করছে, একটা জাতির দুনিয়ায় টিকে থাকাটা নির্ভর করছে। এমন একটা রুহুকে তো আর হেলাফেলাই সাপের মুখে তুলে দিতে পারি না?”

“আরে থাম থাম, আর অত ‘রুহু রচনা’ ফলাতে হবে না। আমার ভুল হয়ে গেছে, তোকে অমন কথা বলা। বাপ রে বাপ! তুই শালা পারিসও বটে।“ নাক কান ধরে মাথা ঝুঁকায় সাদ্দাম। টর্চটা ফেড়ে মারে। টর্চের আলোতে আলের ভেজা ঘাস ফোকলা হেসে ওঠে। সাপে ধরা ব্যাঙটার ‘ক’ ‘ক’ গোঙানি শব্দটা ধীরে ধীরে মরে আসে। আতিফ সাদ্দামের কায়দা দেখে, ফিক করে হাসে। অন্ধকার নরম আলে পা টিপে টিপে রাস্তার দিকে এগোতে থাকে। বেশ কিছুক্ষণ দুজনে আর কথা বলে না। ধানের শীষ ডিঙিয়ে ‘থপ’ ‘থপ’ করে হাঁটতে থাকে। সামনে সাদ্দাম। পেছনে পেছনে অন্ধকার হুটরানো আতিফ। বিঘে দশেক ধানি জমির পর তারা রাস্তায় উঠল। লালমাটির সরু রাস্তা। এবড়োথেবড়ো। খানাখন্দে ভর্তি। মোড়াম রাস্তাটায় উঠেই আতিফ হাফ ছেড়ে বলল, “বাঁচলাম!”
“হ্যাঁ, আলগুলো যাচ্ছেতাই ভুষভুষে হয়ে গেছে! বৃষ্টির ছাট সহ্য করতে পারেনি। এক হড়কা মেঘেই ভেতরের জমাট ছেড়ে গেছে!” পরনের শার্টটা হাত দিয়ে ঝাড়তে ঝাড়তে বলল সাদ্দাম। গায়ের জামাটায় ধানের শীষের সাদা রেণু তুলোর মতো লেগে গেছে।
“এই রেণুই একদিন ধান হত। সে ধান সেদ্ধ করে হত চাল। আর সে চাল ফুটিয়ে কত মানুষে খেত ভাত। আহাঃ, সেদ্ধ ভাতের টাটকা গন্ধ! হাঁড়ির ঢাকনা উপচে যখন সে গন্ধ নাকে এসে লাগত, আমি ফুলের মতো চড়বড় করে ফুটে উঠতাম। ছুটে যেতাম আখারপাড়ে। মা বলত, কী রে, আখারপাড়ে কেন? আমি বলতাম, সেদ্ধভাতের গন্ধ শুঁকতে। মা, মিচকি হেসে বলত, ব্যাটার আমার মজা দেখ, বলে কি না, সেদ্ধভাতের গন্ধ শুঁকবে! একটুখানি দাঁড়া, এক্ষুনি ভাত পাসিয়ে ফ্যানে ভাতে মাখিয়ে দিচ্ছি। গন্ধ শুধু নাকে নিবি ক্যানে, পেটেও নিবি।“
“তুই কবি হলি না কেন? তোর মধ্যে কিন্তু কবিত্বভাব আছে।“
“অত ঠাট্টা করিস ন্যা, সাদ্দাম। কথাটা মনে পড়ে গেল, তাই বললাম।“
“ঠাট্টা করব কেন? একদম মনের কথায় বলছি। তোকে দেখার পর থেকেই এরকম মনে হয়েছে।“
“ধুর, ছাড়! কবি! কবিতা! ওসব করে কি আর রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান হবে?”
“সে হোক না হোক, তোর কবিতা ‘স্বাধীন রোহিঙ্গা দেশ’এর জাতীয় সংগীত তো হতে পারত।“
“তোকে না, আচ্ছা ক্যালা ক্যালাব।“ বলেই আতিফ সাদ্দামকে মশকরার ঠেলা মারতে উদ্যত হলে, সাদ্দাম ‘ফুচ’ করে গা কাত করে ছুটে দূরে পালাল। আতিফও দুধাপ দৌড়ে তাড়া দিল। সাদ্দাম ‘হিহি’ করে হাসতে হাসতে দৌড়ে গিয়ে একটু দূরে থামল। খিকখিক করে মুখে হাসির ফোয়ারা মাখিয়ে বলতে লাগল, “তোকে রাগাতে না আমার হেব্বি লাগে।“
“এখন ঠাট্টা-মশকরা করার সময় নয়, সাদ্দাম। সামনে আমার বড় বিপদ!” মুখ গম্ভীর হয়ে যায় আতিফের। সাদ্দামের হাসি হাসি মুখটাও মুহূর্তে দুশ্চিন্তার কালো ছায়ায় ঢেকে যায়। হাস্যোজ্জ্বল চোখে আচমকা নেমে আসে কালো মেঘের অন্ধকার। আর কিচ্ছু বলে না। মনমরা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। মনের জানালায় ফিরিক করে বসা প্রজাপতিটা ফুড়ুৎ করে উড়ে যায়। খোলা জানালাটা মিনমিন করে বলে, আনন্দ-আহ্লাদ কত ঠুনকো! একটা দমকা বাতাসের মতোও স্থায়ী হয় না! শুধু দরজা ঠেলেই পালিয়ে যায়! এক বেলাও আসন পেতে বসে না! কঞ্চির গিঁটের মতোও তো একবার গেঁড়ে বসতে পারত? কঞ্চি না হোক, বাঁশের একটা মাচানও তো হতে পারত? দুদণ্ড পিঠ পেড়ে শুয়ে থাকতাম। দুদণ্ড পা ঝুলিয়ে বসে, একটা বিড়ির সুখটান দিতে পারতাম। একবার গড়াগড়ি দিয়ে মাচানে ঠিকরে পড়া চাঁদের আলো মেখে নিতে পারতাম। জীবনকে বলতাম, আর কী চাস? এইই তো ঢের সুখ। মাটির দেহে আর কতটুকুই বা সুখ লাগে! মানুষের যে অত সুখ সহ্য হয় না। মানুষ তো পরের সুখেই সুখী।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

 

Header Ad
Header Ad

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার মারা গেছেন

কবি দাউদ হায়দার। ছবি: সংগৃহীত

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রতিবাদী ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। জার্মানির বার্লিনে স্থানীয় সময় শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে একটি রিহ্যাবিলিটেশন হোমে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

কবির মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত করেছেন লন্ডনপ্রবাসী নাট্যশিল্পী ও সংগঠক স্বাধীন খসরু এবং বার্লিনে অবস্থানরত কবির ঘনিষ্ঠজন সংস্কৃতিকর্মী মাইন চৌধুরী পিটু।

জানা যায়, গেল বছরের ডিসেম্বর থেকে কবি দাউদ হায়দার বার্ধক্যজনিত নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। কয়েক মাস ধরে বার্লিনের বিভিন্ন হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছিল। ১২ ডিসেম্বর নিজ বাসার সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হলে তিনি জ্ঞান হারান এবং তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেসময় তাকে ‘কৃত্রিম কোমা’-তে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকায় শেষ পর্যন্ত শনিবার রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মরদেহ বার্লিনেই দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন পিটু। তবে কবির শেষ বিদায়ের সময় ও স্থান নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তার পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে আলোচনার পর।

দাউদ হায়দার বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম নির্বাসিত কবি হিসেবে পরিচিত। ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত তার একটি কবিতা—‘কালো সূর্য্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়’—এর কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯৭৪ সালের ২০ মে তাকে মুক্তি দিয়ে পরদিন কলকাতাগামী একটি বিশেষ ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয়। ওই ফ্লাইটে অন্য কোনো যাত্রী ছিল না।

ভারত সরকারও পরবর্তীতে তাকে বহিষ্কার করে। পরে নোবেলজয়ী জার্মান সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাসের প্রচেষ্টায় ১৯৮৭ সালে তিনি জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করেন এবং সেখানেই বাকিজীবন কাটান।

দাউদ হায়দার বাংলা সাহিত্যে সত্তরের দশকের অন্যতম প্রধান কবি হিসেবে বিবেচিত। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’। সাহসী ও প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে তিনি বাংলা কবিতায় আলাদা একটি ধারা সৃষ্টি করেন।

১৯৭৩ সালে লন্ডন সোসাইটি ফর পোয়েট্রি তার একটি কবিতাকে ‘দ্য বেস্ট পোয়েম অব এশিয়া’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। সে সময় তিনি ‘দৈনিক সংবাদ’-এর সাহিত্য পাতার সম্পাদক হিসেবেও কাজ করেছেন। সর্বশেষ তিনি বাংলা ট্রিবিউনে নিয়মিত কলাম লিখতেন।

দাউদ হায়দার ছিলেন চিরকুমার। জীবনের শেষভাগে একাকিত্ব ও বয়সজনিত জটিলতায় ভুগেছেন। তিনি ছিলেন একজন ব্রডকাস্ট সাংবাদিকও।

কবি দাউদ হায়দারের জন্ম ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি, পাবনা জেলায়। নিজের লেখনী ও বিশ্বাসের কারণে স্বদেশ থেকে বহু দূরে দীর্ঘদিন কাটালেও বাংলা ভাষা ও সাহিত্যই ছিলেন তার চেতনাজগতের কেন্দ্রবিন্দু।

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানে সেনাবাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলি, দুই সেনাসদস্যসহ নিহত ১৭

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার তিনটি ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর তুমুল গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই সেনাসদস্যসহ মোট ১৭ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে খাইবার পাখতুনখোয়ার কারাক জেলায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে আটজন সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়। একই দিনে উত্তর ওয়াজিরিস্তান ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের দুটি স্থানে আরও দুটি অভিযান চালানো হয়।

উত্তর ওয়াজিরিস্তানে চারজন এবং দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের গোমাল জ্যাম এলাকায় তিনজন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে সেনাবাহিনী। এই সংঘর্ষগুলোর একটিতে পাক বাহিনীর দুই সেনা সদস্য প্রাণ হারান।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, অভিযানের সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে।

এদিকে, পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, এসব অভিযান ছিল পরিকল্পিত ও গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে, বিশেষ করে নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে।

‘পাকিস্তান ইন্সটিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ’ (PICS) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা ডিসেম্বরের তুলনায় প্রায় ৪২ শতাংশ বেড়েছে। এতে করে পুরো অঞ্চলে নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে।

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২

ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মধুপুরে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই জন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুর পৌর এলাকার কাইতকাই রূপালী ফিলিং স্টেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ধনবাড়ী উপজেলা পৌর এলাকার চরভাতকুড়া গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে সিএনজি চালা হেলাল উদ্দিন (৫৫)। অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে তিনি সিএনজি যাত্রী ছিলেন।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক এ বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাতে দুর্ঘটনা কবলিত সিএনজি ধনবাড়ীর দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগতির ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজির চালক ঘটনা স্থলে মারা যান। এ সময় গুরুতর আহত হয় এক যাত্রী।

এরপর তাকে উদ্ধার করে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে রাতেই হাসপাতালে তিনি মারা যায়।

এ ব্যাপারে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক জানান, নিহত সিএনজি চালকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপরদিকে, অজ্ঞাত ওই যাত্রীর পরিচয় পাওয়া যায়নি, শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার মারা গেছেন
পাকিস্তানে সেনাবাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলি, দুই সেনাসদস্যসহ নিহত ১৭
টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২
হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা
ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক
ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ