বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪০

নেই দেশের নাগরিক

 

“চল, এবার বেরোনো যাক।“ খাড়া হয়ে দাঁড়াল আতিফ।
“থাম, কটা গয়নাগাটি পরে নিই।“ সাদ্দামের ঠোঁটে চিলতে হাসি।
“গয়নাগাটি!” ঘাড় ঘোরায় আতিফ। চোখ থেকে বেরিয়ে আসছে বিস্ময়ের চাহনি।
“হ্যাঁ, গয়না। গয়না ছাড়া তো আমরা এক কদমও চলতে পারি না। ওগুলোই যে আমাদের রক্ষাকবজ।“
“ওহ, এবার ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছি।“ কিছু একটা আন্দাজ করে বিস্ময়ের ঠোঁট ঢাকা পড়ল রসিকতার হাসিতে।
“তুই বুঝতে পারবি না তাই কখনো হয়? তুই হচ্ছিস বুদ্ধিপাকা মাল। এই বয়সেই তো সব কিছুর তল ঘেঁটে রেখেছিস। তোর মতো জিনিয়াসের কাছে আধখানা ইঙ্গিতই যথেষ্ট।“ দেড় বিগ লম্বা দামাস্ক ভুজালিটা কোমরের গোপন খোলে পুরতে পুরতে বলল সাদ্দাম।
ডানদিকের কোমরে ঢিলে প্যান্টটার ভেতরে সেটে নিল এস আই জি প্রো সেমি অটোমেটিক পিস্তল। কোমরে বেঁধে নিল কার্তুজের বেল্ট। তাতে কয়েক ম্যাগাজিন গুলি বিছের মতো সার বেঁধে আটকানো আছে। বেল্টটাকে বেঁধে নিয়ে সাদ্দাম আতিফকে বলল, “তোর গয়নাপাতি আছে তো?”
“হু।“ থুতনি নিচে করল আতিফ। তার ব্যাগে যে অত্যাধুনিক হেকলার অ্যান্ড স্কচ ভিপি ৭০ পিস্তল আছে, সেটা আর হাট করে সাদ্দামকে দেখাল না।
“সে তো থাকতেই হবে। আমরা তো আর এখন রক্ত-মাংসের মাটির মানুষ নই, আমরা এখন অস্ত্রমানুষ।“ মশকরা করল সাদ্দাম।
“সেভাবে আর অস্ত্রমানুষ কই হতে পারলাম! এখনো তো একটা পাখি মরলে মনটা ধক করে ওঠে। বাড়ির লোকের জন্যে ভেতর হুহু করে কাঁদে। আমরা মনে হয় মানুষ কখনোই পুরোপুরি পাষাণ হতে পারে না। সে হৃদয় যতই আগুনে পোড়ানো হোক, লোহা ঠুকে চিপটানো হোক, দোয়া-মন্ত্র পড়ানো হোক, ভেঙে দুমড়ে মুচড়ে নতুন করে গড়া হোক, কারও বাপ, কারও ব্যাটা, কারও ভাই, কারও স্বামী একটু হলেও ভেতরে থেকে যায়।“
“সে হৃদয়কে তো কবেই কবর দিয়ে দিয়েছি। এখন যেটা আছে সেটা হল একটা খোল। অস্ত্রের যেমন খোল হয়, ঠিক তেমনই আমাদের এই শরীরটা এখন একটা ‘ধারণা’ পুরে রাখা খোল। সে ‘ধারণা’ হলো জেহাদ। সেখানে কোনো বাপ, কোনো ব্যাটা, কোনো স্বামী নেই। যেটা আছে সেটা হলো, একজন মুজাহিদ। খোলের ভেতর পুরে নিয়ে বেড়ানো একজন শহীদ। মাযহাবের জন্যে উৎসর্গ করা একটা জীবন। এ জীবনের বাহ্যিক রঙ সাদা। ফ্যাকাসে। বে-রঙিন। আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো ঢালও নেই ঢোলও নেই। না আছে কোনো সুর না আছে কোনো বাজনা।“
“মানুষের মনের সবুজ রঙ মরে পুরোপুরি কখনো হলুদ হয় কি? একটু ফ্যাকাসে হতে পারে কিন্তু কখনই পুরোপুরি হলুদ হয় না। প্রতিটি জীবনেরই একটা সুর আছে। কারো ক্ষেত্রে সে সুর বেসুরো হয়, কারো ক্ষেত্রে সে সুর সুরেলা হয়। সুর কিন্তু সবারই বাজে। সে বাজনা কারো ইহলোকের জন্যে বাজে, কারো পরলোকের জন্যে বাজে।“

“চল, আর অত সুর ভেজে লাভ নেই। বেরিয়ে পড়ি।“ লম্বা টর্চটা হাতে নিয়ে বেরোনোর জন্যে উদ্যত হয় সাদ্দাম। ব্যাগ কাঁধে তোলে আতিফ। দুজন বন্ধু ছাউনি ঘরের বাইরে বেরিয়ে এসে আলের উপরে দাঁড়ায়। রাত, ভোর ছোঁব ছোঁব করছে। ঝড়ের তাণ্ডবে মাটিতে শুইয়ে পড়া ধানের শীষ থেকে উঠে আসছে থোক থোক অন্ধকার। ছেঁড়া পাতার ফাঁক দিয়ে উঁকি মারছে কোনো রকমে হাঁটু গুঁজে টিকে থাকা জীবন। সে জীবনের ভয়ার্ত চোখ কুঁকড়ে আছে ধানের উপড়ানো শিকড়ে। তবুও থোড়ের ডগায় ডগায় জীবন জয়ের উচ্ছ্বাস। নুইয়ে পড়া শীষে নতুনকে আহ্বানের ডাক। মাথার উপরের আকাশ ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। কে বলবে, কিছুক্ষণ আগে এই আকাশেই অসুরের মতো ধেয়ে এসেছিল হাঁড়িকালো মেঘ! শিকড় উপড়ানো ঝড়! বাতাস তখন নিরাকার থেকে সকার হয়ে উঠেছিল! ভেজা আলে পা রাখল দুজন। চুলের সিঁথির মতো সরু আলপথ। দুদিকে ধানি জমি। পা রাখতেই ভুষভুষ করে পা ঢুকে গেল আতিফের, “এইযযা!” জিভ বের করল আতিফ।
“সাবধানে! মাটি কাদা হয়ে গেছে!” পেছনে ঘাড় ঘুরিয়ে বলল সাদ্দাম। টর্চটা ছোট করে মারল। আতিফের ডান পায়ের কালো শু কাদায় ঢুকে গেছে। ভ্যাড়ভেড়ে কাদা। কাদা-জল-ঘাস আর ধান গাছের ঝরা পাতা ঘেঁটে খিচুড়ি পেকে গেছে। টর্চের সাদা আলোয় চিকচিক করছে।
‘এ তো যাচ্ছে তাই কাদা রে! হেঁটে যাওয়াই তো মুশকিল!” মাজা কুঁকড়ে শু কাদা থেকে টেনে তুলতে তুলতে বলল আতিফ।
“যাকে বলে ভ্যাড়ভেড়ে কাদা। ওই জন্যেই তো এদিকে এত ধান চাষ হয়। দেখছিস ন্যা, নদীর কূল জুড়ে শুধুই ধান আর ধান। যত কাদা তত ফসল ভালো।“
“ওই জন্যেই তো বলে, মনকে কাদা কর, হৃদয় অনেক বড় হবে।“
“আমাদের ওসব কথা শুনে আর কী হবে! আমাদের তো কাদা হলে চলবে না। আমাদের পাষাণ হতে হয়েছে। রুঢ় হতে হয়েছে। এই হৃদয়ে কোনো গাছ জন্মাবে না। এই হৃদয়ে জন্ম নেবে আগুন। সবকিছু পুড়িয়ে ছারখার করে দেওয়া আগুন।“ কাদায় পুঁতে যাওয়া পা-টা তুলে টিপে টিপে হাঁটতে লাগল আতিফ। সামনে চেপে চেপে হাঁটছে সাদ্দাম। ধান গাছের ভেজা শীষ আর পাতা ডালপালা গায়ে ঠেকছে। ভিজে যাচ্ছে পরনের স্যুট। আতিফ বলল, “থাম, প্যান্টটা একটুখানি গুটিয়ে নিই।“
“হ্যাঁ, ঠিকই বলেছিস। আমিও গুটিয়ে নিই। তাহলে ভিজবে না।“ সাদ্দামও কুঁজো হয়ে ঝুঁকে প্যান্টের পায়ের ফোল্ড গুটোতে লাগল। আতিফের কান সবুজ ধান হাওয়াতে ঝুঁকে এসে ছুঁল। যেন কানে কানে বলল, এই দেখো, ঝড়ের পরেও আমি দাঁড়িয়ে আছি। এভাবেই ঝড়ঝঞ্ঝা সহ্য করে টিকে থাকতে হয়। আমার শিকড়ের আটআনা উপড়ে গেছে। ভেঙেছে শাখাপ্রশাখা। কান অবধি ঝরে গেছে রেণু। খড়কুটোর মতো উড়ে গেছে পাতা। তবু আমি থোড় মুখে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে। আমার পরবর্তী প্রজন্মরা যে এই মাটিতেই ফসল হয়ে উঠবে।
“ধানের পানিতে গায়ের জামা ভিজে গেল যে!” জামার কলার ঝাড়া দিল আতিফ।
“ধানগাছগুলো যে ভিজে জুবুথুবু। দেখছিস না, পাতার ডগা দিয়ে এখনো টসটস করে পানি ঝরছে?”

প্যান্টের ফোল্ট গুটিয়ে পাদুটো একবার করে ঝাড়া দিল সাদ্দাম। তুলোর মতো নরম তুলতুলে আলপথ। ভুষ ভুষ করে পা বসে যাচ্ছে। ডালপালা ছড়ানো দুর্বা ঘাসগুলো বৃষ্টিতে ভিজে ফুরফুর করছে। কিছু কিছু ঘাস কাদায় লেপ্টে জুবুথুবু। একটা লম্বাফালি ধানি জমির তিন আলের মাথায় ‘ক’ ‘ক’ শব্দ ভেসে এল। ঘ্যাঁচ করে দাঁড়িয়ে গেল সাদ্দাম। পেছন থেকে ঠ্যালা মারা কণ্ঠে আতিফ বলল, “কী হলো? অমন করে থামলি কেন?”
“সাপ!”
“সাপ! ওরে বাপ রে!” তিড়িং করে আলের নিচে ধানের জমিতে লাফ মারল আতিফ।
“অত ভয় পাওয়ার কিছু নাই। মনে হয় সাপে ব্যাঙ ধরেছে।“
“ওসব কথা পরে শুনছি। তুই আগে টর্চটা ঝেরে মার।“ আতিফের চোখে আতঙ্কের ছাপ। সাপে তার দারুণ ভয়। সাপাতঙ্ক তার ছোট বেলা থেকেই। ‘সাপ’ বললেই সে এক লাফে পগারপার। এত কিছুর ঘষামাজা করলেও, এত্ত জেহাদি কালচার করলেও, কিছু জিনিসের প্রতি ভয় তার কাটেনি। তার মধ্যে একটি এই ‘সাপ’। সাদ্দাম তার হাতের আরব থেকে আনা আধহাত লম্বা কালো রঙের টর্চটা ঝেরে জ্বালিয়ে হেস মারল, “আত্মঘাতী মুজাহিদ হয়েও তোর সাপে এত ভয়!”
“যখন গায়ে সেটে থাকা বোতামে আঙুল টিপে নিজেকে উড়িয়ে দেব, তখন তো আর আমি একা একা মরব না? আমার সাথে সাথে আরও শ-খানেক দুশমন মরবে। শত্রুপক্ষের লোক মরবে। আমার মৃত্যুটা তখন স্বার্থক হবে। আমি মরেও শান্তি পাব। আল্লাহকে বলতে পারব, আমি শ-খানেক বিধর্মীকে মেরে মরেছি। আমার শাহাদাত বরণ বিফলে যাবে না। আল্লাহর খাতায় আমি হব একজন ইমানদার শহীদ। আর সাপের কামড়ে মারা গেলে তো, এসবের কিছুই হবে না! বনবাদাড়ে ইঁদুর ব্যাঙের মতো মরে পড়ে থাকব। ও মরার কোনো মূল্য নেই। অ ঘাসপাতার মতো মরা। আরে আমাদের রুহুটা তো আর হাটের পুকড়ে বেগুন নয়, যে ‘ঘ্যাঁচ’ করে কাটলাম ‘ফ্যাচ’ করে ফেলে দিলাম? আমাদের রুহুর উপর একটা রাষ্ট্রের জন্ম নির্ভর করছে, একটা জাতির দুনিয়ায় টিকে থাকাটা নির্ভর করছে। এমন একটা রুহুকে তো আর হেলাফেলাই সাপের মুখে তুলে দিতে পারি না?”

“আরে থাম থাম, আর অত ‘রুহু রচনা’ ফলাতে হবে না। আমার ভুল হয়ে গেছে, তোকে অমন কথা বলা। বাপ রে বাপ! তুই শালা পারিসও বটে।“ নাক কান ধরে মাথা ঝুঁকায় সাদ্দাম। টর্চটা ফেড়ে মারে। টর্চের আলোতে আলের ভেজা ঘাস ফোকলা হেসে ওঠে। সাপে ধরা ব্যাঙটার ‘ক’ ‘ক’ গোঙানি শব্দটা ধীরে ধীরে মরে আসে। আতিফ সাদ্দামের কায়দা দেখে, ফিক করে হাসে। অন্ধকার নরম আলে পা টিপে টিপে রাস্তার দিকে এগোতে থাকে। বেশ কিছুক্ষণ দুজনে আর কথা বলে না। ধানের শীষ ডিঙিয়ে ‘থপ’ ‘থপ’ করে হাঁটতে থাকে। সামনে সাদ্দাম। পেছনে পেছনে অন্ধকার হুটরানো আতিফ। বিঘে দশেক ধানি জমির পর তারা রাস্তায় উঠল। লালমাটির সরু রাস্তা। এবড়োথেবড়ো। খানাখন্দে ভর্তি। মোড়াম রাস্তাটায় উঠেই আতিফ হাফ ছেড়ে বলল, “বাঁচলাম!”
“হ্যাঁ, আলগুলো যাচ্ছেতাই ভুষভুষে হয়ে গেছে! বৃষ্টির ছাট সহ্য করতে পারেনি। এক হড়কা মেঘেই ভেতরের জমাট ছেড়ে গেছে!” পরনের শার্টটা হাত দিয়ে ঝাড়তে ঝাড়তে বলল সাদ্দাম। গায়ের জামাটায় ধানের শীষের সাদা রেণু তুলোর মতো লেগে গেছে।
“এই রেণুই একদিন ধান হত। সে ধান সেদ্ধ করে হত চাল। আর সে চাল ফুটিয়ে কত মানুষে খেত ভাত। আহাঃ, সেদ্ধ ভাতের টাটকা গন্ধ! হাঁড়ির ঢাকনা উপচে যখন সে গন্ধ নাকে এসে লাগত, আমি ফুলের মতো চড়বড় করে ফুটে উঠতাম। ছুটে যেতাম আখারপাড়ে। মা বলত, কী রে, আখারপাড়ে কেন? আমি বলতাম, সেদ্ধভাতের গন্ধ শুঁকতে। মা, মিচকি হেসে বলত, ব্যাটার আমার মজা দেখ, বলে কি না, সেদ্ধভাতের গন্ধ শুঁকবে! একটুখানি দাঁড়া, এক্ষুনি ভাত পাসিয়ে ফ্যানে ভাতে মাখিয়ে দিচ্ছি। গন্ধ শুধু নাকে নিবি ক্যানে, পেটেও নিবি।“
“তুই কবি হলি না কেন? তোর মধ্যে কিন্তু কবিত্বভাব আছে।“
“অত ঠাট্টা করিস ন্যা, সাদ্দাম। কথাটা মনে পড়ে গেল, তাই বললাম।“
“ঠাট্টা করব কেন? একদম মনের কথায় বলছি। তোকে দেখার পর থেকেই এরকম মনে হয়েছে।“
“ধুর, ছাড়! কবি! কবিতা! ওসব করে কি আর রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান হবে?”
“সে হোক না হোক, তোর কবিতা ‘স্বাধীন রোহিঙ্গা দেশ’এর জাতীয় সংগীত তো হতে পারত।“
“তোকে না, আচ্ছা ক্যালা ক্যালাব।“ বলেই আতিফ সাদ্দামকে মশকরার ঠেলা মারতে উদ্যত হলে, সাদ্দাম ‘ফুচ’ করে গা কাত করে ছুটে দূরে পালাল। আতিফও দুধাপ দৌড়ে তাড়া দিল। সাদ্দাম ‘হিহি’ করে হাসতে হাসতে দৌড়ে গিয়ে একটু দূরে থামল। খিকখিক করে মুখে হাসির ফোয়ারা মাখিয়ে বলতে লাগল, “তোকে রাগাতে না আমার হেব্বি লাগে।“
“এখন ঠাট্টা-মশকরা করার সময় নয়, সাদ্দাম। সামনে আমার বড় বিপদ!” মুখ গম্ভীর হয়ে যায় আতিফের। সাদ্দামের হাসি হাসি মুখটাও মুহূর্তে দুশ্চিন্তার কালো ছায়ায় ঢেকে যায়। হাস্যোজ্জ্বল চোখে আচমকা নেমে আসে কালো মেঘের অন্ধকার। আর কিচ্ছু বলে না। মনমরা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। মনের জানালায় ফিরিক করে বসা প্রজাপতিটা ফুড়ুৎ করে উড়ে যায়। খোলা জানালাটা মিনমিন করে বলে, আনন্দ-আহ্লাদ কত ঠুনকো! একটা দমকা বাতাসের মতোও স্থায়ী হয় না! শুধু দরজা ঠেলেই পালিয়ে যায়! এক বেলাও আসন পেতে বসে না! কঞ্চির গিঁটের মতোও তো একবার গেঁড়ে বসতে পারত? কঞ্চি না হোক, বাঁশের একটা মাচানও তো হতে পারত? দুদণ্ড পিঠ পেড়ে শুয়ে থাকতাম। দুদণ্ড পা ঝুলিয়ে বসে, একটা বিড়ির সুখটান দিতে পারতাম। একবার গড়াগড়ি দিয়ে মাচানে ঠিকরে পড়া চাঁদের আলো মেখে নিতে পারতাম। জীবনকে বলতাম, আর কী চাস? এইই তো ঢের সুখ। মাটির দেহে আর কতটুকুই বা সুখ লাগে! মানুষের যে অত সুখ সহ্য হয় না। মানুষ তো পরের সুখেই সুখী।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

 

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া