বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: শেষ পর্ব

স্নানের শব্দ 

সকালে প্রতিদিনের মধ্যেই অফিসে এসেছে শবনম, মন ভালো করার জন্য সাদা পাড়ের হাল্কা গোলাপী একটা মণিপুরী শাড়ি পরেছে সে। সেই মতো হাল্কা প্রসাধনও করেছে। তবে বুঝতে পারছে হৃদয়তন্ত্রীতে সুক্ষভাবে সানাইয়ের মতো একটা বিষণ্ন করুণ সুর আপন মনে বেজেই চলেছে। দেহ মন বাইরে থেকে বেশ স্বাভাবিক মনে হলেও অদ্ভুত এক অদৃশ্য অবসাদে ডুবে থাকার অনুভূতি হচ্ছে তার। মাসিক কর্মী মিটিং ছিল আজ। হল ঘরে বসে থাকা তরুণ উন্মুখ উজ্জ্বল চঞ্চল বিমর্ষ মুখগুলোর দিকে তাকিয়ে নিজের চাকরি জীবনের শুরুর দিকের কথা মনে পড়ায় খুব জ্বালাময়ী একটা বক্তৃতা দিয়ে ফেলল শবনম। কথাগুলো জোরালোভাবে বলতে পেরে খানিকটা ভাল লাগা শুরু হলো তার। 

বলল-‘এই যে আমাকে এখানে দেখছেন, তা কিন্তু হঠাৎ করে নয়, অনেক পথ পেরিয়ে, অনেক অভিজ্ঞতার জোরে আমি এ পর্যায়ে এসেছি। আমার ২৩ বছরের কর্মজীবনে আমি একটা জিনিসই বুঝেছি, সেটা হচ্ছে একজন পেশাজীবী বা কর্মী যতটা তার কর্মস্থলে দেয়, সেটা আসলে দান নয় বরং তার নিজেরই প্রাপ্তি। কীভাবে? কর্মী যা করেন তাতে অফিস হয়তো উপকৃত হয়, কিন্তু কাজের সবটুকুই তার নিজের অভিজ্ঞতার ঝুলিতে জমা হয়। কাজ তার দক্ষতাকে শাণিত করে, যোগ্যতাকে বাড়িয়ে দেয়। ‘জীবনের ধন কিছুই যায় না ফেলা’-বলে একটা কথা আছে না! কাজ হলো আপনার জীবনের অর্জিত সেই ধন। যা ভাঙিয়ে আপনি সারাজীবন চলতে পারবেন। আর যারা ফাঁকিবাজি করেন, দলবাজি করেন, ষঢ়যন্ত্র করেন, তারা আসলে নিজেকেই ফাঁকি দেন। দিন শেষে তার ঝোলা শুন্যই থাকে। খালি ঝোলা নিয়ে আপনি কতদূর যাবেন? আমার কাছে তো কাজ না করে বসে থাকাটাই সবচে পরিশ্রমের কাজ বলে মনে হয়। আপনাদের মনে হয় না?’ শবনমের কার্যতালিকায় পরের কর্মসূচি ছিল অফিসের আইন বিভাগের সঙ্গে বৈঠক। একজন অ্যাডভোকেট এসেছিলেন ওসমান গণির কাগজ পত্র নিয়ে। শবনম বলল, ‘আমরা একদম নো কম্প্রোমাইজ নীতিতে এই মামলাটা করব। কোথাও যেন ফাঁক-ফোকড় না থাকে।’

অ্যাডভোকেট সাহেব মাঝবয়সি, ঝানু উকিল। অনেকদিন ধরে কোম্পানিতে আছেন। তিনি কাগজপত্র মেলে ধরে চোখ সরু করে বললেন,‘ আমাদের তো ব্রিটিশ আইন ম্যাডাম। এই আইনে চুরির শাস্তির চাইতে অপরাধীর অর্থাৎ চোরের অপরাধ প্রতিষ্ঠা করার উপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে।’ ‘সে যাই হোক, আমি চাই আপনারা এমনভাবে মামলা করবেন যাতে অন্যরা এটা দেখে শিক্ষা পায়। এধরনের কাজ করার সাহস না করে। যেন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যায়। ’

সন্ধ্যায় চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ, তার অফিসে। চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে কী কী বলবে তা মনে মনে গুছিয়ে রেখেছিল শবনম। তবে রাশভারী বয়স্ক ভদ্রলোকের সামনে বসে হঠাৎ কথাগুলো এলামেলো হয়ে গেল তার। চেয়ারম্যান সাহেবের মাথায় খুলি কামড়ে ধরা পাটের আঁশের মতো সাদা চুল, চওড়া কপালের নিচে তার তীক্ষ্ণ চোখ ধারালো নাক যেন গভীরভাবে নিরীক্ষণ করছিল শবনমকে। ডান হাত দিয়ে মুখের পাইপটা সরিয়ে তিনি বললেন, ‘নারী সিইওর ব্যাপারে আমার প্রথমে একটু আপত্তি ছিল, কারণ কি জানেন?’শবনম হাসি হাসি মুখে মাথা নাড়ল। 
‘প্রথম কারণ বেটা মানুষরা সহজে মেয়ে লোকের কর্তৃত্ব মানতে পারে না। অনেক দিনের অভ্যাস তো, হা হা হা, তাদের পৌরুষে লাগে। দ্বিতীয় কারণ, এই যে আপনে আসছেন পুরুষ লোক হইলে আমি দরজা বন্ধ কইরা দিতে পারতাম, কেউ কিছু মনে করত না। কিন্তু আপনেকে নিয়া যত কনফিডেনশিয়াল বিষয় হোক একা ঘরে দরজা বন্ধ কইরা আলাপ করা হা হা হা, কিছু না হইলেও লোকে কথা বলবে, আপনেও স্বস্তি পাবেন না, ঠিক কি না? ’শবনম কিছু বলার জন্য মুখ খুলেছিল, কিন্তু তার আগেই চেয়ারম্যান সাহেব বললেন, ‘আবার ধরেন লেট নাইট পার্টি অ্যাটেন্ড করা, প্রয়োজনে মদের পার্টি দেওয়া, মদ খাওয়া এসবেও অনেকের অবজেকশন থাকে।’ ‘স্যার! আমি মনে করি, এগুলো খুব বড় সমস্যা না, আমাদের ওয়ার্কিং কালচার আর মাইন্ড সেট সামান্য পরিবর্তন করলেই এসব সমাধান করে ফেলা সম্ভব।’

চেয়ারম্যান সাহেব মাথা দোলান। ভদ্রলোক খুব ছোট্ট অবস্থা থেকে বুদ্ধি, পরিশ্রম আর নেতৃত্বের গুণে এই কোম্পানিকে মহিরুহে পরিণত করেছেন। তার বিপুল অভিজ্ঞতা আর প্রজ্ঞাকে সম্মান করে শবনম। ‘সেটা হয়তো ঠিকই বলছেন। পরিবর্তন দরকার। আপনে পরিবর্তন আনেন। আমি দেখতে চাই।’ চেয়ারম্যান সাহেব আবার তার পাইপে টান দেন। শবনম বিনীত ভঙ্গিতে বলে, ‘আজকে আমি একটা আর্জি নিয়া আসছি। যদি অনুমতি দেন তো বলি...’চেয়ারম্যান সাহেব হাত তুলে থামিয়ে দেন তাকে, ‘বোর্ড অব ডিরেক্টরসদের সিদ্ধান্তের বাইরে আমি সাধারণত যাই না মিসেস শবনম। আমি জানি আপনি চারজনের চাকরি বহাল করার সুপারিশ করতে এসেছেন, তাই না? ’শবনম এবার একটু থতমত খেয়ে যায়। আসলে চার জন নয়, মনিরুজ্জামান বাদে বাকি তিন জনের চাকরি বহাল রাখার সুপারিশ করতে এসেছিল সে। বদমাশ মনিরুজ্জামান ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য নয়, তার জন্য কোনো সুপারিশও করবে না সে। কিন্তু বাকি তিনজনকে তাদের কৃতকর্মের শাস্তি হিসেবে ইনক্রিমেন্ট বন্ধ রেখে, পদোন্নতি স্থগিত করে চাকরিতে বহাল রাখা সম্ভব। চেয়ারম্যান সাহেব ডানে বামে মাথা নাড়লেন। ‘এটা কইরেন না মিসেস শবনম, ওদের চাকরি রাখলে আপনাকে সবাই দুর্বল এবং ভঙ্গুর ভাববে। সেটা আপনার অবস্থানকে নড়বড়ে করে দেবে। টাফ যান। কঠোর হন। চোখ বন্ধ করে চাকরি খেয়ে দেন। তাহলে আপনাকে ভয় পাবে সবাই। উল্টাপাল্টা করার সাহস পাবে না। পাওয়ার পাইছেন যখন, পাওয়ার দেখান। পাওয়ার শোকেসে সাজিয়ে রাখার দরকার নাই।’

‘কিন্তু স্যার, আমার হাত দিয়ে কারও চাকরি যাক সেটা আমি চাচ্ছিলাম না। হাজার হোক রিজিকের ব্যাপার...’‘উহু মিসেস শবনম, এইভাবে একদম ভাববেন না। রিজিকের মালিক আল্লাহ! আমরা উছিলা মাত্র!’ ‘কিন্তু তবু স্যার...মানে খারাপ লাগছে..! সবাই পরিবার পরিজন নিয়ে থাকে... এই বাজারে চাকরি গেলে...’ ‘হা হা হা, আপনের জায়গায় একজন পুরুষ হলে কিন্তু এত ভাবত না, ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য ঘ্যাশ ঘ্যাশ করে চাকরি খেয়ে দিত। শুরুতে বলছিলাম না, নারী সিইওর ব্যাপারে আপত্তি করছিলাম...শোনেন মিসেস শবনম অফিসে দয়া মায়া মমতা কোমলতা এসব দেখাবেন তো আপনি ধরা খাবেন। মনে রাখবেন অফিসের প্রয়োজনে অনেক অপ্রিয় সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনাকে। নিষ্ঠুর হলেও সেসব সিদ্ধান্ত নিবেন এবং ইমপ্লিমেন্ট করবেন। উইশ ইউ অল দ্যা বেস্ট!’ 
চেয়ারম্যান সাহেব চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে হ্যান্ডশেকের জন্য শবনমের দিকে তার হাত বাড়িয়ে দিলেন। তার শক্ত কঠোর ঈষদুষ্ণ হাতের সঙ্গে হাত মেলাল শবনম। ‘আমি একজন যোগ্য সিইওকে নিয়োগ দিয়েছি, কোনো নারীকে নয়। আপনার সাফল্য কামনা করি, মিসেস শবনম।’ 

খুবই ফর্মাল ভঙ্গিতে কিন্তু আস্থার সঙ্গে নরম গলায় বললেন চেয়ারম্যান সাহেব। শবনমের দুই চোখ কেন যেন হঠৎ পানিতে ভরে উঠল। সে কোনোরকমে চেয়ারম্যানের রুম থেকে বেরিয়ে এসে ডান হাত দিয়ে দুই চোখের কোণা মুছে নিল। চোখে এমন পানি আসা কি দুর্বলতার লক্ষণ, নাকি বয়স বাড়ার? ছেলেগুলোর চাকরি রক্ষা করবে বলে নিজের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখতে না পারায় কি দুঃখ হচ্ছে তার? নাকি চেয়ারম্যান সাহেব ভরসা রেখেছেন বলে আনন্দ হচ্ছে? চোখের এই অশ্রু কি যুগপৎ বেদনা এবং আনন্দের? সে যাই হোক, চেয়ারম্যান সাহেবের বক্তব্য তো পরিষ্কার। ওই চারজন আর থাকছে না কোম্পািনতে। আগে মনিরুজ্জামান একা গালাগালি করত এখন চারজনের সম্মিলিত গালি শোনার মানসিক প্রস্তুতি নেয় শবনম। সকালের বিষাদ বাতাস আবার যেন ফিরে আসে।  

এইচ আরে ফোন করে ওই চারজনের সাসপেন্ড লেটার রেডি করতে বলে সে। রাত হয়ে গিয়েছিল বলে অফিসে না যেয়ে ড্রাইভারকে বাড়ির দিকে গাড়ি ঘোরাতে বলল শবনম। আজ বাসা সম্পূর্ণ খালি। শ্রাবণ তার বন্ধুর বাড়িতে রাতে থাকবে। তারেক গ্রামের বাড়ি থেকে ফিরেনি। গৃহকর্ম সহকারী রাহেলার মাও ছুটি নিয়ে তার মেয়ের বাড়ি গেছে। 
একা ঘরেই ক্লান্ত পায়ে ঢুকল শবনম। গা জুড়ে অবসাদ নেমে এসেছে। হাতের ভ্যানিটি ব্যাগটা সোফায় ছুড়ে ফেলল সে। চোখ থেকে চশমা, কান থেকে গোলাপি পাথরের কানের দুল, এক হাত থেকে সরু সোনার বালা দুটি, অন্য হাত থেকে সোনালী বেল্টের স্টাইলিশ ঘড়িটি খুলে রাখল সে। রাবার ব্যান্ড দিয়ে বেধে রাখা কাধ পর্যন্ত চুল ছেড়ে দিল। দুই হাতের আঙুল দিয়ে খুলল শাড়ির আঁচলে আটকানো সেফটিপিন। তারপর একটানে খুলে ফেলল শাড়িটা। পরিশ্রান্ত অবসন্ন শরীরের ঊর্ধ্বাঙ্গে রইল শুধু ব্রা ও ব্লাউজ, নিম্নাঙ্গে পেটিকোট। এই অবস্থাতেই হাত পা ছড়িয়ে ছাদের দিকে তাকিয়ে চিৎ হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ল সে। কোথা থেকে একটা নিঃসঙ্গ শুন্যতার বোধ তাকে নরম হাতে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরল। আর মনের অতল গহ্বর থেকে কি এক অন্তর্গত বেদনায় নিমেষে উঠে এল হু হু কান্না। ফাঁকা বাড়িতে নিজের বিছানায় শুয়ে কোনো লুকোছাপা না করে শিশুদের মত গলা ছেড়ে কাঁদল শবনম। অনেকক্ষণ ধরে। যেন বুকের ভেতর জমে থাকা পাথর গলল তার। যেন সে এক অকূল নদী হয়ে গেল। কেঁপে কেঁপে ফুলে ফুলে প্রাণ খুলে কাঁদল সে। 

একসময় কান্না থেমে গেলে নিজেকে সামলে নিয়ে  ব্রা, ব্লাউজ, পেটিকোট সব খুলে নগ্ন হলো শবনম। সুইচ টিপে আলো জ্বালিয়ে তার প্রিয় স্নানঘরে ঢুকল। মানুষ সমান আয়নায় যাবতীয় মহিমা নিয়ে উদ্ভাসিত হয়ে উঠল একজন নারীর পূর্ণাঙ্গ শরীর। সেই শরীরে রূপালী আভা ছড়িয়ে ধীর লয়ে যৌবন অস্ত যাচ্ছে, স্তরে স্তরে সেই বিদায়ের বিবর্ণ বেদনার করুণ রেখাচিত্র ফুটে উঠেছে। আয়নার কাছে মুখ নিয়ে নিজের প্রতিবিম্বের চোখে চোখ রাখে শবনম। দেখে একটা মলিন ও শ্রীহীন চেহারা। যার চোখের কোণে ক্লান্তি, নিরাসক্তি ও শীতলতা। গলার কাছে বয়সের ভাঁজ। বুকের ওপর ধবল শঙ্খের মতো উদ্ধত স্তন বিনীত শ্লথ ভঙ্গিতে নুয়ে পড়েছে, পেটে দৃশ্যমান মেদের উপস্থিতি, নাভির নিচে জননেন্দ্রিয় ঘিরে আরও কিছু কেশ শুভ্রতা ছড়াচ্ছে. সুগঠিত পায়ের পেশিরা শিথিল হয়ে ঝুলে পড়েছে। শবনমের বুক চিরে একটা লম্বা প্রাচীন দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে।   

এই জীবনে যা আকাঙ্ক্ষা করেছিল তার সবই তো পেয়েছে সে, যতটা শীর্ষে উঠতে চেয়েছিল ততটা শীর্ষেই তো উঠেছে, যতটা ক্ষমতাবান হতে চেয়েছিল ততটা ক্ষমতাই তো পেয়েছে। তবু কোথায় কোনো অতল কুঠুরীতে এই গভীর শূন্যতার জন্ম হলো? শবনম কল ঘুরিয়ে মাথার উপর ঝর্ণা ছেড়ে দেয়। অনন্ত আশীর্বাদের মতো কলকল করে কুসুম গরম আরামের জল মাথা বেয়ে সারা শরীরে নেমে আসে। স্নানের বিচিত্র তরঙ্গময় শব্দ ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে। শবনমের মনে হয় এই বহুবর্ণের শব্দে মিশে আছে জল পড়ার কোমল আওয়াজ, সাবানের মিষ্টি সুগন্ধ, পরিচ্ছন্নতার তীব্র আকাঙ্ক্ষা আর পবিত্রতার চিরায়ত বাসনা।

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব ২৩

স্নানের শব্দ: পর্ব ২২

স্নানের শব্দ: পর্ব-২১

স্নানের শব্দ: পর্ব-২০

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৯

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৮

 

 

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

বক্তব্য রাখছেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নির্বাচন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের নৌ পরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডক্টর এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্প্রতি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব লর্ডসে মানবাধিকার সংগঠন ‘ভয়েস ফর বাংলাদেশ’ আয়োজিত সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

‘ডিসকাশন অন ডেমোক্রেটিক কলাপ্স অ্যান্ড রিবিল্ডিং অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সম্মেলনে হাউস অব লর্ডসের সিনিয়র সদস্য আলেক্সান্ডার চার্লস কার্লাইল কিউসি সভাপতিত্ব করেন। ভয়েস ফর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্রডকাস্টার আতাউল্লাহ ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্মেলেনে সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী পল স্কালি বলেন, বাংলাদেশে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তার সঠিক তদন্ত শেষে যথাযথ বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে করে এ ধরনের ঘটনার পুররাবৃত্তি না হয়।

লর্ড হোসাইন বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সব সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে সব ধরনের সহায়তা পাবে।

সম্মেলনে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান লেবার দলীয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুপা হক।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
ধামরাইয়ে শ্রমিকবাহী বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪