শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৯

যারা যুদ্ধ করেছিল

এর মধ্যে প্রচার হয়ে যায় ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেবেন। মমিন খবরটি শুনেছে। কিন্তু তার তেমন প্রতিক্রিয়া নেই। আর দশটা দিনের মতো সে দুপুরে হলের ডাইনিংয়ে খেয়ে রুমে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়। সাকিব রুমে নেই। কোথায় গেছে বলে যায়নি। মমিন কিছুক্ষণ পর টিউশুনি করতে বেরোয়। ফুলার রোডে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলেকে সে ইংরেজি পড়ায়। হল থেকে ছাত্রের বাসা হেঁটে গেলে ৫ মিনিটের পথ। গিয়ে সে জানতে পারে ছাত্র বাবার সঙ্গে রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনতে গেছে। এই কথাটা শোনার পর তার মধ্যে ভীষণ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। কী এমন ভাষণ দেবেন বঙ্গবন্ধু যার জন্য পিতাপুত্র একসঙ্গে সেই মিটিংয়ে গেছে। ভাবতে ভাবতে মমিন পথ হাঁটছে। ছাত্র গেছে বঙ্গবন্ধুর জনসভায় এই ব্যাপারটা তার ভাবনা থেকে সরছে না। ক্যাম্পাসে ফেরার পথে মমিন দেখল পিপঁড়ের লাইনের মতো মানুষ যাচ্ছে রেসকোর্স ময়দানে। তারও ভারী কৌতূহল হলো। সে রাস্তায় দাঁড়িয়ে লোকজনের মিছিল দেখছিল। লোকজনের চাপে মমিনকে পাবলিক ঠেলে নিয়ে গেল রেসকোর্স ময়দানের দিকে। ক্যাম্পাস লাগোয়া রেসকোর্স ময়দান। ময়দানে গিয়ে দেখে গিজগিজে ঠাসা মানুষ। দেখে মমিনের চোক্ষু চড়ক গাছ। এতো মানুষ কোত্থেকে এল। সবার হাতে লাঠি। সবার মুখে একটাই স্লোগান, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর।’
মমিন কোনোরকমে দাঁড়াবার জায়গা পেয়েছে ময়দানের পশ্চিম পাশ ঘেঁষে। তার মাথা বরাবর মাইকের হর্ন বাঁধা। টাস টাস শব্দ এসে কানে বিঁধছে।

হঠাৎ স্লোগান পাল্টে গেল। মাইকে ভিন্ন স্লোগান শুরু হলো, ‘তোমার নেতা আমার নেতা, শেখ শেখ শেখ মুজিব।’ মমিন খেয়াল করল সাদা ধবধবে পায়জামা পাঞ্জাবি, তার উপর হাতাকাটা কালো কোট পরে একজন লম্বা মানুষ মঞ্চে এসে উপস্থিত হলেন। তার উপস্থিতিতে মঞ্চের আবহ বদলে গেল। তিনি সোজা মাইকের সামনে এসে দাঁড়ালেন। তারপর অগ্নিঝরা কণ্ঠে শুরু করলেন, ‘ভাইয়েরা আমার...
মমিন বুঝতে পারল ইনি বঙ্গবন্ধু। কণ্ঠে যেন বাঘের গর্জন। বক্তৃতায় যেন আগুন ঝরছে। তাঁর এক একটি কথায় মমিনের গায়ের লোম শিউরে উঠছে। রক্ত চঞ্চল হয়ে উঠছে। তিনি এসব কী বলছেন। বাঘের গর্জন শুনছে মমিন। যত শুনছে তত শরীরের রক্ত চঞ্চল হয়ে উঠছে। তাঁর প্রতিটি কথায় জনতা জয় বাংলা বলে চেঁচিয়ে উঠছে। তার বক্তৃতা শেষ হয়েছে। মনুষ উত্তপ্ত স্লোগান দিয়ে চলে যাচ্ছে। মমিন ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। কোনো বোধশক্তি কাজ করছে না শরীরে। অবশ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সে।
রুমে এসে সটান শুয়ে পড়ে। মাথা আওলিয়ে গেছে। সমস্ত চেতনা ওলটপালট হয়ে গেছে। মাথা ঘুরছে যেন। রাতে একফোটা ঘুমোতে পারল না। বার বার শুধু বঙ্গবন্ধুর অগ্নিঝরা ভাষণের কথা মনে পড়ছিল। তাঁর কথাগুলো এখনো সমানতালে কানে বাজছে। কী শুনেছে সে। এমন করে আর কেউ তো কখনো বলেনি। সেই থেকে মমিনের জীবনের ধারা পাল্টে যায়। সে এখন প্রতিদিন মিছিলে যায়। বক্তৃতা শোনে। একদিন মিছিলের সঙ্গে যেতে যেতে বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাড়িতে চলে গেছে। মিছিলের আওয়াজ পেয়ে বঙ্গবন্ধু বারান্দায় এসে দাঁড়ালে মমিন মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে তাঁকে দেখে। ইনি জাতির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু। সেদিন রেসকোর্সে দূর থেকে ভালো করে দেখতে পারেনি। আজ সে কাছে গিয়ে পলকহীন দেখে।

সকালে নাস্তা করে মমিন পাবলিক লাইব্রেরিতে গিয়ে রাজনীতির বই পড়ে। বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ ভাষণে বলেছে, ‘৫৪ সালে নির্বাচনে জিতেও আমরা গদিতে বসতে পারি নাই।’ সেই থেকে ৫৪ সালের ইতিহাস জানার আগ্রহ তৈরি হয় তার। সব সে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ে। পড়ে ৬ দফা। আরও পড়ে ছাত্রদের ১১ দফা। মমিনের নেশা পেয়ে গেছে। এর মধ্যে দেশে ইয়াহিয়া খান এসেছে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনা করতে। খবরের কাগজে বড় হেডিং। সব পড়ে মমিন। নেতাদের আলোচনা ভেস্তে যায়। ইয়াহিয়া খান পাকিস্তান চলে যায়। সেদিন রাতেই অপারেশন সার্চলাইট নামে গণহত্যা শুরু করে পাকিস্তানি মিলিটারি। মধ্য রাত থেকে প্রচণ্ড গোলাগুলি। অনেকের সঙ্গে মমিন হলের ছাদে উঠে দেখে চারদিকে আগুন জ্বলছে। জগন্নাথ হলে গোলাগুলি হচ্ছে। ছাত্ররা ওয়ালের উপর কাঁটাতারের বেড়া টপকিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। মমিনও অতি কষ্টে কাঁটাতারের বেড়া টপকাতে গিয়ে শরীরের কয়েক জায়গা ছুলে যায়। আর তখনই সে সিদ্ধান্ত নেয়, যেমন করেই হোক এই জানোয়ারদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।
‘ওস্তাদ কইলেন না আপনি কেন যুদ্ধে আইছেন?’
মমিন এতোক্ষণ মাথা নামিয়ে অতীত ভাবছিল। মজনুর প্রশ্নে মুখ তুলে তাকায়। হাসে। হেসে বলে, ‘দেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধে এসেছি। ১৯৪৭ সালে আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি সেটা আসল স্বাধীনতা না। সত্যিকারের স্বাধীনতার জন্য আমরা হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছি। এইবার হবে আমাদের সত্যিকারের স্বাধীনতা।’
‘সত্যি দেশ স্বাধীন হবে?’
‘অবশ্যই দেশ স্বাধীন হবে। এতে কি তোমার কোনো সন্দেহ আছে?’
মজনু কথা বলে না। মাথা নামিয়ে থাকে। বলে, একটা কথা কমু ওস্তাদ?’
‘তার আগে বল, স্বাধীনতা নিয়ে তোমার কোনো সন্দেহ আছে?’
‘আগে ছিল। এখন নাই।’
‘এইাবার বল কী বলতে চাও?’
মজনু গুছিয়ে বলে, ‘পশ্চিমাদের সাথে আমাদের গোলমালটা আসলে কী নিয়া? আমি ক্লিয়ার জানি না। নানা জনে নানা কথা বলে। আপনি আমারে একটু বুঝায়া কন।’
মমিন হেসে বলে, ‘বলব।’ এখন না। অন্য সময়, ঠিক আছে?’

সাকিবের মা আয়েশা বেগম রাত থেকে কিছুই খাচ্ছেন না। এতে বাড়ির সবাই দারুণ চিন্তিত। সাকিব মায়ের পাশে বসে স্যুপ খেতে সাহায্য করছে। বাবা ফজলুর রহমান রাত-দিন দেশ নিয়ে ব্যস্ত। আজ তার থানায় মেজর সাহেবের সঙ্গে দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে জরুরি মিটিং। এলাকায় নাকি মুক্তিবাহিনীর আনাগোনা বেড়ে গেছে। হঠাৎ হঠাৎ তারা ক্যাম্প আক্রমণ করে বসে। সাথী স্যুপ খাওয়াতে গেলে সে ঝাঁকুনি দিয়ে স্যুপের বাটি ফেলে দেয়। তারপর সাকিব এসেছে খাওয়াতে। তার হাতের স্যুপও খাচ্ছে না আয়েশা বেগম। বাড়ির সবাই দারুণ উদ্বেগের মধ্যে আছে। রাত থেকে সে কিছুই মুখে তুলছে না। এভাবে অসুস্থ শরীরে না খেয়ে থাকলে তাকে বাঁচানো কঠিন হবে। দেশে যুদ্ধ লাগার পর থেকে ভালো ডাক্তার পাওয়া যাচ্ছে না। থানা সদরে যারা ভালো ডাক্তার ছিল তারা মিলিটারির ভয়ে অন্য কোথাও পালিয়ে গেছে। ফজলুর রহমানের চেনা একজন নামকরা ডাক্তার সেই মাঝেমধ্যে এসে আয়েশা বেগমকে দেখে যান। তিনিও রোগ ধরতে পারছেন না। অথচ দিন দিন আয়েশা বেগম শুকিয়ে পাটখড়ি হয়ে যাচ্ছেন। ডাক্তার তাকে নিয়ম বেঁধে খেতে বলেছেন। কিন্তু কাল রাত থেকে তিনি কিছুই মুখে তুলছেন না।
দুপুর পর ফজলুর রহমান থানা সদর থেকে বাড়ি ফিরলেন। ফিরেই স্ত্রী আয়েশা বেগমের পাশে এসে দাঁড়ালেন। বললেন, ‘এখন কেমন লাগছে সাকিবের মা?’
‘আমার ভালো-মন্দের খবর নেওয়ার দরকার নাই।’ তার কণ্ঠ ভীষণ কর্কশ শোনাল। মনে হলো তিনি স্বামীর উপর ভীষণ রেগে আছেন।
ফজলুর রহমান আয়েশা বেগমের পাশে বসে একটা হাত টেনে নিলেন নিজের হাতের মধ্যে।
আয়েশা বেগম মুখ ঘুরিয়ে নিলেন।
‘কী হয়েছে? তুমি এমন করছ কেন?’ আয়েশা বেগম ইশারায় সবাইকে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে ইশারা করলেন। সবাই বেরিয়ে গেলে স্বামীকে বললেন, ‘ছেলেকে বিয়ে দিয়ে দেন। ঘরে পাপ কাজ হচ্ছে।’
‘কী পাপ হচ্ছে?’ ফজলুর রহমান জিজ্ঞেস করলেন।
আয়েশা বেগম চিবিয়ে বললেন, ‘কী পাপ হচ্ছে আপনি জানেন না? ঘরে ছেলে অন্য মেয়ের সঙ্গে জ্বেনা করছে। আর আপনি দেখেও না দেখার ভান করছেন। আবার বলছেন কী পাপ হচ্ছে?’
ফজলুর রহমান আমতা আমতা করে বললেন, ‘শোন, ঘটনাটা আমিও প্রথম প্রথম খারাপ ভাবছিলাম। কিন্তু যখন সাকিবের মুখে আসল কথা শুনলাম তখন আর রাগ করতে পারি নাই।’
‘কী বলেছে সাকিব?’
‘আমি সাকিবের বন্ধু নজরুলের কাছে গিয়া এই ব্যাপারটা সাকিবকে বোঝানোর কথা বলেছিলাম। সাকিব যা বলেছে তাতে আর সাকিবকে দোষ দেওয়া ঠিক হবে না।’
‘সাকিব কী কইছে সেই কথা কন।’
‘সাকিব বলেছে, রাজাকাররা সাথীকে মিলিটারি ক্যাম্পে নিয়া যাইতে চাইছিল। মিলিটারি ক্যাম্পে নিয়া গেলে সাথীর কী অবস্থা হবে একবার ভেবে দেখেছ? তা ছাড়া সাকিব যা করছে তা মোটেও দোষের না। যুদ্ধের সময় এমন করার নিয়ম আছে।’
আয়েশা বেগম রেগে বললেন, ‘রাখেন আপনার নিয়ম। আপনি কি ওই নিয়ম ধুইয়া পানি খাইবেন? ছেলে কবুল ছাড়া একটি পর নারীকে নিয়ে একই ঘরে রাত কাটাচ্ছে সেটা দোষ না? আপনি ওই মেয়ের সাথে সাকিবের বিয়া দিয়া দেন। তারপর ওরা যা ইচ্ছা তাই করুক। না হলে এই বাড়ির কোনো কিছু আমি স্পর্শ করব না।’
‘এতে সমস্যা কোথায় আমি বুঝতে পারছি না। ওই মেয়েটা মালে গণিমত। শত্রু পক্ষের সম্পত্তি। ওকে আমরা যুদ্ধে গণিমতের মাল হিসাবে অধিকার করেছি। ওরা মুশরিকদের সঙ্গে হাত মিলাইছে। ওরা আমাদের যুদ্ধ বন্দিনি দাসী। ওদের দাসী হিসেবে সহবত করা জায়েজ। তোমার ছেলে মোটেও পাপ করছে না।’
‘এ কথা আপনি কই পাইলেন?’
‘এটা হাদীসের কথা। নবী মোহাম্মদ [স.] যুদ্ধ বন্দিনিদের তার সাহাবাদের মধ্যে বণ্টন করে দিতেন।’

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৮

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৭

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৬

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৫

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৪

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৩

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-২

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১

এসএন

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে ভারতের বার্তা  

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী

ছবিঃ সংগৃহীত

যানজটে আটকে থাকা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের গাড়ি বহরকে সাইড করে দিতে গিয়ে বাস চাপায় নিহত হয়েছেন জসিম উদ্দিন (৫৩) নামে জামায়াতের একজন কর্মী।

নিহত জসিম উদ্দিন উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের সৈয়দপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত আলী আশ্রাফ মোল্লার ছেলে। তার স্ত্রী ও শিশুসহ তিন ছেলে সন্তান রয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লালমাই উপজেলার সৈয়দপুর এলাকার ওয়ালটন শো-রুমের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা মারুপ সিরাজী বলেন, লক্ষীপুর যাওয়ার পথে জামায়াত আমিরের বহরের ৪টি গাড়ি বাগমারা উত্তরবাজারে যানজটে আটকা পড়লে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ তিশা পরিবহনের ঢাকামুখী একটি দ্রুতগতির বাস ধাক্কা দিলে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দীনের মাথা থেতলে যায়। রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বাগমারা বাজারের ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম মুন্না বলেন, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হলেও বাগমারা বাজার অংশে অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে দুই লেন করা হয়েছে।সে কারণে ২৪ ঘণ্টাই সড়কের এই অংশে যানজট লেগে থাকে। যানজট নিরসনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করলে আজ হয়তো এমন মৃত্যু হতো না।

লালমাই উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ইমাম হোসেন বলেন, আমিরে জামায়াত লক্ষীপুর যাওয়ার পথে বাগমারা উত্তর বাজার বালুর মাঠে পথসভা করেন। পথসভাস্থলে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে তাঁর গাড়ি বহর যানজটে আটকা পড়ে।

তখন আমিসহ সংগঠনের ১৫/২০ জন কর্মী ট্রাফিকের দায়িত্ব শুরু করি। আমরা আমিরে জামায়াতকে নিয়ে পথসভায় চলে যাওয়ার পর জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দিন বাস চাপায় মারা যান।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, বাগমারা উত্তরবাজারে বাস চাপায় জসিম উদ্দিন নামের একজন মারা গেছেন। মরদেহ নিহতের বাড়িতে রয়েছে। খবর পেয়েই নিহতের বাড়িতে গিয়েছি।

 

Header Ad
Header Ad

সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  

ছবিঃ সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর বাজারে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। পুলিশের আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং দলীয় অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল রায়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম মজনু এবং যুবদল নেতা শহিদ মিয়ার লোকজনের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপি ও যুবদলের অস্থায়ী অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে মধ্যনগর বাজার এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনার আশঙ্কা এবং সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়ার আগে পর্যন্ত বাজার এবং আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধ করা হয়।

মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সজীব রহমান বলেন, ‘মধ্যনগর যুবদল নেতা শহিদ মিয়া ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাঈযুম মজনুর লোকজনের মধ্যে পুলিশের আসামি ধরা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে উভয় পক্ষের লোকজন বিএনপি ও যুবদলের অফিস ভাঙচুর করে। এতে বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী ও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাজার ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। বিশৃঙ্খল অবস্থা এড়াতে বাজারে পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাজার ও আশপাশের এলাকায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে ভারতের বার্তা  
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম
ইসরায়েলের তেল আবিবে তিনটি বাসে বিস্ফোরণ
বিয়ের ছবি ভাইরাল, বললেন শুভকামনা জানানোর জন্য ধন্যবাদ