শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব- ৮

যারা যুদ্ধ করেছিল

 

সাকিব বলে, ‘আমি তোমার নিরাপত্তার কথাটা বেশি ভেবেছি। যে সমস্ত মেয়েদের পাকিস্তানিরা তুলে নিয়ে যায় তাদের উপর সবাই মিলে পাশবিক অত্যাচার করে। এর চেয়ে নরকখানা অনেক ভালো। সে দৃশ্য দেখলে সহ্য হয় না। শুনেছি ক্যাম্পে মেয়েদের উলঙ্গ করে রাখে। কেন রাখে জান?’ সাথী জবাব দিতে পারে না। রমিছা ও করিম মিয়া হা মুখে তাকিয়ে থাকে। সাকিব বলে, ‘মেয়েরা নিরুপায় হয়ে নিজের পরনের শাড়ি গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। তাই পাকিস্তানি সৈন্যরা মেয়েদের উলঙ্গ করে রাখে। যাতে মেয়েরা আত্মহত্যা করতে না পারে। ব্যাপারটা ভাব, কী জঘন্য কারবার।’
সাথী বুঝতে পারে তাকে ভয় দেখাতেই কথাগুলো বলছে সাকিব। তবে সে মিথ্যে বলেনি। এ কথা সে আরও অনেকের মুখে শুনেছে।
সাকিব বলে, ‘আমার মায়ের শরীরটা ভালো না। তুমি আমার মায়ের পাশে থাকলে সে একজন কথা বলার লোক পাবে। পাশাপাশি তোমার নিরাপত্তাও বজায় থাকবে। তুমি আমাদের বাড়িতে থাকলে কোনো রাজাকার এমন কী মিলিটারিও তোমাকে স্পর্শ করার সাহস পাবে না। এখন তুমি ভেবে দেখ। যদি মন চায় কাল কাপড় চোপড় নিয়ে তুমি আমাদের বাড়ি যেও। আর যদি মন না চায় তাহলে বড় বিপদের জন্য তৈরি থেক।’
রমিছা বলে, ‘কাল কেন, আজই যাক না।’
সাকিব বলে, ‘না। রাত করে যাওয়ার দরকার নেই। মানুষ নানা কথা বলবে। দিনের বেলা সবার সামনে সাথী আমাদের বাড়ি যাবে। আমার অসুস্থ মা সাথীকে বরণ করে নেবে।’
রমিছা বলে, ‘না। সাথী আজকেই যাক।’
সাকিব কায়দা করে হাসি মুখে বলে, ‘আপনি বললে তো হবে না চাচি। ব্যাপারটা সাথীর একান্ত নিজস্ব। সাথীকে বলতে হবে।’
সাথী পড়ে উভয় সংকটে। কোন পথে যাবে। মনে মনে ঠিক করে পাকিস্তান আর্মির কাছে ধরা পড়ার চেয়ে সাকিবের কাছে ধরা পড়া অনেক ভালো। সে মিন-মিন করে বলে, ‘আমি দিনের বেলা যেতে চাই না। রাতেই যেতে চাই।’
‘সে তো আরও ভালো কথা।’ সাকিব উঠে দাঁড়ায়। বলে, ‘আমি মাকে সব বলে রেখেছি। তোমার কোনো অমর্যাদা হবে না।’
সাথী জানে সবই কথার কথা। কিন্তু সে নিরুপায়। না গেলে আবার রাজাকাররা আসবে। এবার শুধু বাবাকে ধরতে আসবে না। তাকেও তুলে নিয়ে যাবে। তার চেয়ে সাকিবের কাছে স্বেচ্ছায় যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
সাকিবের সঙ্গে সাকিবদের বাড়িতে এল সাথী। সাকিবের মায়ের সঙ্গে তার দেখা হলো না। সাকিবের রুমে তার থাকার ব্যবস্থা হলো। শুরু হলো সাথীর নতুন জীবন। যাকে যুদ্ধ জীবনও বলা যায়।

৬.
হেমন্তের হিম হিম বাতাস চারদিকে। রাতে কুয়াশায় সাদা চাদর বিছিয়ে দেয় প্রকৃতি। রাস্তাঘাটে চলাচল কঠিন হয়। দিনের বেলা পরিবেশ থাকে ভারি সুন্দর। মমিন রুমে বসে ফুলতুরু দিয়ে অস্ত্র পরিষ্কার করছিল। এখানে অস্ত্র পরিষ্কার করার জন্য গানওয়েল পাওয়া যায় না। নারকেলের তেল ও কেরোসিন মিশিয়ে নিজেরা গানওয়েল বানিয়ে অস্ত্র পরিষ্কার করে।
কাছেই বসে মজনু তার রাইফেল পরিষ্কার করছিল। মজনুর স্বভাব হলো সে কথা না বলে থাকতে পারে না। অস্ত্র পরিষ্কার করতে করতে মজনু হঠাৎ প্রশ্ন করে, ‘ওস্তাদ, একটা কথা কমু?’
‘ক কী কবি।’ মমিন বলে। মমিন এই সরল প্রকৃতির ছেলেটিকে ভীষণ স্নেহ করে।
মজনু বলে, ‘যুদ্ধতো নাগাড় কইরা যাইতাছি। কবে দেশ স্বাধীন হবে, আপনি জানেন কিছু?’
‘যুদ্ধ কোনোদিন শেষ হবে না। সারা জীবন যুদ্ধ করে যেতে হবে।’
মজনু চমকে ওঠে। বিস্মিত কণ্ঠে বলে, ‘কন কী ওস্তাদ, সারা জীবন যুদ্ধ করতে হবে? সারা জীবন কি যুদ্ধ করা সম্ভব?’
মমিন আরও মজার ঢংয়ে বলে, ‘কেন সম্ভব না? জঙ্গলে যে প্রাণীরা বাস করে তারা তো সারা জীবন যুদ্ধ করে।’
‘কঠিন কথা বলছেন ওস্তাদ। জঙ্গলের প্রাণীরা কাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে?’
মমিন হাসি দমিয়ে সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলে, ‘কেন, হরিণ বাঘের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। ছোট সাপ বড় সাপের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। মহিষ সিংহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।’
‘আমি সে যুদ্ধের কথা বলছি না। আমি আমাদের যুদ্ধের কথা বলছি। আমরা আর কতদিন যুদ্ধ করব?’
মমিন বলে, ‘আজীবন।’
‘ওস্তাদ ঠাট্টা করতাছেন?’
‘তোমার সঙ্গে ঠাট্টা করব কেন? যা সত্য তাই বলছি।’
‘সারা জীবন যুদ্ধ কীভাবে সম্ভব?’
‘তাহলে কি তুমি যুদ্ধ থেকে বাড়ি ফিরে যেতে চাও?’
‘সেটাও সম্ভব না ওস্তাদ।’
‘কেন?’
‘রাজাকাররা জানে আমি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিছি। আমি বাড়ি গেলে ব্যাটারা আমাকে ধরে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারবে।’
‘আচ্ছা মজনু, তুমি তো লেখাপড়া জান না। রাজনীতি কর না। তুমি যুদ্ধে এলে কেন?’
মজনু কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে, ‘ক্যান যে যুদ্ধে আইলাম সেইটা তো ভালো মতো কইতে পারমু না ওস্তাদ। খবর পাইলাম, মিলিটারিরা যুবক পোলাপানদের ধইরা ধইরা গুলি কইরা মারে। আমি ভাবলাম এমনি-এমনি মরার চেয়ে যুদ্ধ কইরা মরি। কামডা ঠিক করছি না ওস্তাদ?’
‘অবশ্যই ঠিক করেছ। দেশের প্রতিটি যুবকের দায়িত্ব স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা। প্রয়োজনে জীবন উৎসর্গ করা।’ এসএলআরের ব্যারেল পরিষ্কার করতে করতে মমিন কথাগুলো বলে। মজনু সুযোগ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বলে ওঠে, ‘ওস্তাদ আপনি যুদ্ধে আইলেন ক্যা?’
মমিন বলে, ‘সে মেলা কথা। আরেকদিন শুইনো।’
‘আজকাই কন না।’
মমিন কিছু না বলে লম্বা করে শ্বাস ফেলে। মমিন কোনো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না। কোনোদিন মিছিল মিটিংয়েও যায়নি। দুই বেলা টিউশুনি আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস নিয়ে সে ব্যস্ত ছিল। লেখাপড়া শেষ করে একটা ভালো চাকরি পেলে বাবা-মায়ের কষ্ট দূর হবে। এই সামান্য চাওয়া মমিনের। কিন্তু সময়টা তখন ভীষণ উত্তাল।

১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানে একচেটিয়া ও পাকিস্তানে নিরঙ্কুশ জয় পায়। এই নির্বাচন ছিল শেখ মুজিবের নেতৃত্বে এবং ছয় দফা কর্মসূচির প্রতি জনগণের ম্যান্ডেট। পাকিস্তান সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তরে কালক্ষেপণ ও গড়িমসি করায় পূর্ব পাকিস্তান ফুঁসে ওঠে। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ দুপুর থেকে পূর্ব পাকিস্তান শব্দটি আর এ দেশে উচ্চারিত হয়নি। তখন থেকেই এটি বাংলাদেশ। ভাষার দাবিতে যে আন্দোলন ২৩ বছর আগে শুরু হয়েছিল, তা স্বাধীনতার দাবিতে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছে। তখন সব ছাপিয়ে একটি স্লোগানই সবার মুখে মুখে উচ্চারিত হতে থাকে। ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর।’

এদিকে জাতীয় অধিবেশন বসার তারিখ ৩ মার্চ। ১ মার্চ আওয়ামী লীগের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের মিটিং বসে হোটেল পূর্বাণীতে। পূর্বাণী হোটেলে বৈঠক চলাকালে খবর আসে, সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান এক বেতার ভাষণে ৩ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য সংসদ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে। মূলত এটা ছিল পাকিস্তানে গণতন্ত্রের মাথায় কঠিন বজ্রাঘাত। মুহূর্তে ঢাকা শহর মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়। সবার মুখে একই স্লোগান, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর।’ এর আগে দেশের নাম বাংলাদেশ হবে সে কথা ঘোষণা করেছিলেন শেখ মুজিব। ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন, ’আমাদের স্বাধীন দেশটির নাম হবে বাংলাদেশ।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ। রুমে শুয়ে ছিল মমিন। বাইরে থেকে সাকিব ঢুকে খেদোক্তি করে বলল, ‘অবস্থা খুব খারাপ। দেশে গোলমাল লাগবে।’
মমিন প্রশ্ন করে, ‘গোলমাল লাগবে কেন?’
‘বাঙালির মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা পূর্বপাকিস্তানের স্বাধীনতা চাচ্ছে।’
‘পাকিস্তানিরা আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা দিচ্ছে না কেন?’ মমিন বেশ জোরালো ভাবেই প্রশ্নটা ছুঁড়ল।
সাকিব কথা ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বলল, ‘পাকিস্তানি নেতারা ঘাস খায় না। তারাও কম ঘাগু না। তারা ইন্ডিয়ার চালাকি ধইরা ফালাইছে। তাই আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা দিচ্ছে না।’
‘এটা তো অন্যায়। ক্ষমতা দিলে সমস্যা কী?’ মমিন এবারও জোর দিয়ে বলে উঠল।
সাকিব বলল, ‘তুই রাজনীতি বুঝিস না। তোর মাথায় এসব ঢুকবে না।’
‘কেন ঢুকবে না?’
‘আরে ব্যাটা, আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা দিলে তারা ইন্ডিয়ার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে ইন্ডিয়ার সঙ্গে যোগ দেবে।’
‘এসব ফালতু কথা। আমি রাজনীতি বুঝি না এটা ঠিক। তাই বলে তোর এই কথা আমি মেনে নিতে পারছি না। আওয়ামী লীগ ইন্ডিয়ার সঙ্গে যোগ দিলে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীকে পিষে মেরে ফেলবে। কী আবোল তাবোল বলছিস তুই?’
‘আবোল তাবোল নারে মমিন। রাজনীতির ঘোর প্যাঁচ বোঝা বড় কঠিন। তুই ইয়াহিয়া খানের বক্তৃতা শুনেছিস?’
‘না।’
ইয়াহিয়া খানও বক্তৃতায় এাই কথাগুলোই বলেছে। তারাতো ঘাস খায় না। তাদের মগজ আমাদের চেয়ে আরও উন্নত।’
মমিন বলে, ‘আমি বুঝেছি। পাকিস্তানিরাই দেশে গোলমালের সূত্রপাত করল।’
‘কীভাবে?’
‘তারা আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা দিলেই ল্যাঠা চুকে যেত। তাহলে আর এই ঝামেলা হতো না।’
‘তোর এই ভাইতা বুদ্ধি নিয়া ওরা দেশ চালায় না। লাটাইয়ের সুতা ছাইড়া দিয়া পরে কি মাথা থাপড়াবে?’
মমিন আর কথা বাড়ায় না। সে বিষয়টি ভাবতে থাকে।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৭

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৬

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৫

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৪

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৩

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-২

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১

এসএন

Header Ad
Header Ad

খিলগাঁওয়ের আগুনে পুড়ে ছাই ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল

ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলা মার্কেটের পাশের একটি স’মিলে শুক্রবার রাত ৭টা ৩০ মিনিটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ৯টা ৩৫ মিনিটে এই আগুন নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। আগুনে প্রায় ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল পুড়ে গেছে।

আগুন নিয়ন্ত্রণের পর ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশনস) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, কেমিক্যাল ড্রাম বিস্ফোরণে স’মিলে লাগা আগুন চারদিক ছড়িয়ে পড়ে।

তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘খিলগাঁওয়ের আগুনে আনুমানিক ২০টি দোকান এবং দুটি স মিল পুড়েছে। আগুনে হয়তো কেমিক্যাল ড্রাম বিস্ফোরিত হয়েছে; যার ফলে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের নয়টি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে আরো চারটি ইউনিট ছিল, তবে সেগুলোকে কাজ করতে হয়নি।

লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আগুনে কেউ নিখোঁজ রয়েছে এমন কোনো সংবাদ আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত আসেনি। এ ছাড়া আমরা এখন পর্যন্ত আহত ও নিহতের কোনো সংবাদ পাইনি।’

আগুনের উৎসটি কি ছিল প্রাথমিকভাবে জানা গেছে কিনা প্রশ্ন করা হলে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই মুহূর্তে এ বিষয়ে বলা যাবে না তদন্ত ছাড়া। সিগারেটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে নাকি স্যাবোটেজ হয়েছে— এই প্রত্যেকটা বিষয়ে আমাদের তদন্ত করে দেখতে হবে।

অনেকগুলো সোর্স থেকে আগুনের সৃষ্টি হতে পারে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেও আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তাই তদন্ত ছাড়া এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।’
এদিকে, দুই ঘণ্টা ধরে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ জানান, ‘শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সেখানে আগুন লাগার খবর পাই।

প্রথমে আমাদের দুটি ইউনিট কাজ শুরু করে। পরে আরো সাতটি ইউনিট যোগ দেয়। এরপর রাত ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন লাগার পরে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করতে ছুটে আসেন সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‍্যাবের সদস্যরা।’

তবে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স মিল থেকে আগুন গাড়ির গ্যারেজে ছড়িয়ে পড়ে। পরে গ্যারেজে থাকা বিভিন্ন গাড়িতে আগুন লেগে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এ সময় আশপাশের মানুষ ছোটাছুটি করতে থাকে। উৎসুক জনতার ভিড়ে ফায়ার সার্ভিসকে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেশ বেগ পেতে হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, ওই এলাকায় একটি গাড়ির গ্যারেজ ও রাবারের কাঁচামালের গোডাউন রয়েছে। কিছু গাড়ি বের করা সম্ভব হলেও অনেক গাড়ি পুড়ে গেছে।

খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দাউদ হোসেন বলেন, ‘ওই স মিল খিলগাঁও থানার কাছেই। পাশের একটি গাড়ির গ্যারেজেও আগুন ছড়িয়েছে। ক্রাউডের কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছিল।

 

Header Ad
Header Ad

পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  

ব্যবসায়ী আবুল বাসার ওরফে মিন্টু। ছবিঃ সংগৃহীত

রাজশাহী নগরীর পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো একটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে নগরীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চ সংলগ্ন এলাকার কাশবন থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, হত্যা করে কাশবনে ফেলে দেওয়া হয়েছে লাশটি।

নিহত ব্যক্তির নাম আবুল বাসার ওরফে মিন্টু (৩৫)। পেশায় ব্যবসায়ী মিন্টু নগরীর মির্জাপুর পূর্বপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। বিনোদপুর বাজারে তার ইলেকট্রিক ব্যবসার দোকান আছে।

নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম জানান, কাশবনে ঘুরতে আসা কয়েকজন লাশটি দেখে পুলিশে খবর দেয়। ঘুরতে আসা অনেকে লাশের ছবিটি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে শেয়ার করে। জানাজানির পর নিহতের পরিবার ঘটনাস্থলে এসে লাশটি শনাক্ত করে।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে মিন্টুর খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। কাশবনে তার মুখ পলিথিন দিয়ে ঢাকা ছিল। পলিথিনের ওপর স্কচটেপ প্যাঁচানো ছিল।

ওসি আরও বলেন, ‘আলামত দেখে মনে হয়েছে এটি হত্যাকাণ্ড। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে হত্যা মামলা হবে।’

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খিলগাঁওয়ের আগুনে পুড়ে ছাই ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল
পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  
সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম