রবিবার, ৫ জানুয়ারি ২০২৫ | ২১ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২৩

স্নানের শব্দ

‘তোরা তো সারাক্ষণ অনলাইনে পড়ে থাকিস, কখনো যদি সেখানে আমার নামে কোনো খারাপ কথা লেখা দেখিস, তখন কেমন লাগবে তোর?’ শবনম সতর্ক ভঙ্গিতে জিজ্ঞেস করে মেয়েকে। কিছুক্ষণ আগে ওয়েটার টেবিলে খাবার রেখে গেছে। সেখান থেকে একটা মচমচে ফ্রাইড চিকেনে কামড় বসিয়ে চিবুতে চিবুতে শ্রাবণ পাল্টা প্রশ্ন করে,

‘কেন মা? তুমি কি সেলিব্রেটি হয়ে গেছ?’

ওর বলার ভঙ্গিতে শবনম হেসে ফেলে। তারপর বলে, ‘সে তো একটু আধটু হয়েছিই, পত্রিকায় ছবি ছাপিয়েছে, ইন্টারভিউ বেরিয়েছে।’

একটা চিকেন উইংস-এ সস মাখাতে মাখাতে শ্রাবণ বলে, ‘তাহলে তো ঠিকই আছে, সেলিব্রেটিদের নিয়ে স্ক্যান্ডাল হবে এটা তো খুব স্বাভাবিক! যদু মধু কদুকে নিয়ে মানে আমজনতাকে নিয়ে তো আর কেউ কিছু লিখবে না ..’

শবনম হাসে। আজকে গাড়িতে বসে মেয়ের সঙ্গে অফিসের সংকট নিয়ে দুয়েকটা কথা শেয়ার করেছিল। সেসব কথার সূত্র টেনে শ্রাবণ জ্ঞানী মানুষের মতো ভাব করে বলল,
‘শোনো মা তোমার পজিশনে যাওয়ার জন্য কত মানুষের লোভ বলো তো, তোমার নামে বদনাম রটিয়ে কোনোভাবে ফেলে দিতে পারলে হয়ত তারা গিয়ে তোমার চেয়ারে বসবে, এরকম ভাবে..’
শবনমের মনে হয় তার সামনে বসে শ্রাবণ না, যেন তার কোনো বুঝদার অভিভাবক কথা বলছে।
‘আরেকটা জিনিস ভাবো তো মা, বায়োলজিক্যালি তুমি নারী আবার তুমি কোম্পানির হাইয়েস্ট র্যাংকিং পারসন, ৭ চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার, তুমি যদি পুরুষ হতে, তাহলে কি অপজিট পক্ষ তোমাকে ডিস্টার্ব করত না?’
শবনম একটু ভাবে।

‘হুম, করত হয়ত কিন্তু সেটার ধরনটা অন্যরকম হতো, মেয়েদের হ্যারাস করার কিছু বাঁধা ধরা ছক আছে, যেমন চরিত্র নিয়ে বাজে কথা রটানো, শারীরিকভাবে হেনস্থা করা, যেগুলো পুরুষ যেমন পাত্তা দেয় না, সমাজও তেমন কিছু মনে করে না, কিন্তু নারীদের ক্ষেত্রে এসব ঘটলেই হলো—মান সম্মান নিয়ে টানাটানি শুরু হয় ।’
ওরা মা মেয়ে একটা খুব সুন্দর সাজানো গুছানো রুফটপ রেস্টুরেন্টে খেতে বসেছে। শ্রাবণ মেন্যু দেখে নিজে পছন্দ করে খাবারের অর্ডার দিয়েছে এখন খুব আগ্রহ নিয়ে মজা করে খাবারগুলো খাচ্ছে। খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে আবার বড় মানুষের মতো ভঙ্গি করে মাকে নানারকম পরামর্শ দিচ্ছে।
‘বুঝছো মা, পুরুষের জগতে কাজ করতে ঢুকলে তুমি যে নারী সেইটা একদম ভুলে যেতে হবে। নারী পুরুষ ব্যাপার না, আসল ব্যাপার হলো কাজ। কাজে তুমি কতটা পারদর্শী, কতটা দক্ষ, কতটা যোগ্য সেটাই সবাই দেখবে ..’
‘ইশ পাকা বুড়ি একটা! এমনভাবে কথা বলছিস যেন পঞ্চাশ বছরের কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন ভদ্রমহিলা কথা বলছেন! ’

মায়ের কথায় শ্রাবণ একটু লজ্জ্বা পায়। ঠোঁট বাঁকা করে লাজুক হাসে। কপাল থেকে বাঁ হাত দিয়ে আলগা চুল সরিয়ে মুখটা নিচু করে বলে,
‘তোমার কাছেই তো শিখেছি! তুমিই না সেদিন কাকে যেন বলছিলে, কাজের জায়গায় মেয়েদের ব্যক্তিত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। কেউ যেন নারী বলে দুর্বল না ভাবতে পারে! কেউ যেন অন্যায় সুযোগ নিতে না পারে! ’

শবনম ঠিক মনে করতে পারে না, কবে কাকে কখন এসব কথা বলেছিল সে। কিন্তু তা নিয়ে মেয়েকে আর কিছু বলে বিব্রত করতে চায় না সে। শুধু বলে, ‘সামনে তো তুইও চাকরি বাকরি করবি, তখন এই কথাগুলো মনে রাখিস, তাহলেই চলবে।’
‘চাকরি করব না মা, ভাবছি বাইরে থেকে ডিগ্রিটা নিয়ে এসে বাবার ব্যবসা দেখা শোনা করব। বিজনেস উইমেন হব আমি!’

শ্রাবণ ঘাড় ঝাঁকিয়ে ঘোষণা দেয়। শবনম একটু অবাকই হয়। তার চকচকে চাকরির ক্যারিয়ার দেখেও সেই লাইনে না গিয়ে মেয়ে কিনা আকৃষ্ট হলো বাবার লক্কর ঝক্কর মার্কা ব্যবসার দিকে! যাক করুক ওর যা ইচ্ছা! সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সে স্বাধীন।

শবনম বলল, ‘তা বেশ। চাকরি বা ব্যবসা যাই করিস কথাগুলো মনে রাখিস। মেয়ে বলে হীনমন্যতায় ভোগার কিছু নেই, যা করবি নিজের সাহসে, নিজের যোগ্যতায় করবি।’

ওদের খাওয়া প্রায় শেষ হয়ে এসেছিল। মা মেয়ে খাওয়া শেষে ফুড কোর্ট থেকে বেরিয়ে পাশের সিনেপ্লেক্সে ঢ়ুকে যায়। একটা আধা হরর, আধা সায়েন্স ফিকশন, আধা মনস্তাত্ত্বিক টাইপের জগাখিচুড়ি মার্কা ইংরেজি ছবি চলছিল। পপকর্ণের ঠোঙ্গা হাতে খুব আগ্রহ নিয়ে সিনেমাটা দেখছিল শ্রাবণ। শবনমের রুচির সঙ্গে আবার এই ধরনের সিনেমা তেমন যায় না। সে কিছুক্ষণ জোর করে চোখ টেনে মেয়ের সাথে মুভি দেখল তারপর কখন যে হলের নরম সিটে গা এলিয়ে চোখ বুজে ঘুমিয়ে পড়েল নিজেই টের পেল না।

ঘুমের মধ্যে সে স্বপ্ন দেখলো একটা খুব চমৎকার দুধসাদা রঙের মার্বেল পাথরে তৈরি সাজানো গুছানো ঘরে বসে একমনে কাজ করছে সে। এক সময় কাজ শেষ হলে কম্পিউটর বন্ধ করে বাইরে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়াল শবনম। আর তখনই সে আবিষ্কার করল ঘরটায় কোনো দরজা নেই। দুই হাত দিয়ে হাতড়ে হাতড়ে সবগুলো দেয়াল বাইরে বের হওয়ার জন্য দরজা জানালা খোঁজার চেষ্টা করল শবনম। কিন্তু মসৃণ দেয়ালে হাত পিছলেই গেল শুধু দরজা জানালা কেনো, কোনো ফাঁকফোকড়ের চিহ্নই খুঁজে পাওয়া গেল না। যেন নিরেট সাদা একটা বাক্সে আটকা পড়েছে সে। শবনম চিৎকার করে বলল, ‘কেউ আছেন? আমি বের হতে চাই! শুনতে পাচ্ছেন ..’

তার কথা প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরে এল। কেউ এল না। না কোনো মানুষ, না তার মুক্তি। সেই শীতল অন্ধকূপের ভেতরে শবনম শুধু চারিদিক হাতড়ে বেড়াতে থাকল। চারপাশে সাদা বরফের দেয়াল, উপরে নিচে আশে পাশে বের হওয়ার কোনো পথ নেই। ভয়ে আতঙ্ক রক্ত হিম হয়ে গেল শবনমের। দমবন্ধ লাগল। মনে হল, সে নিশ্বাস নিতে পারছে না। এদিকে সাদা দেয়ালগুলো যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে। তারা ধীরে ধীরে শবনমের দিকে চেপে আসছে, তাকে পিষে দিতে চাইছে। একটা ভয়ানক যন্ত্রণার অনুভূতি তার সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে। মুখ দিয়ে গোঙানীর মত একটা আওয়াজ বেরিয়ে এল তার। আর এর মধ্যেই অনেক দূর থেকে যেন শুনতে পেল শ্রাবণের চাপা কণ্ঠ,
‘মা, ও মা, কি হয়েছে? ঘুমিয়ে গেছ নাকি?’
চোখ খুলে শবনম প্রথমে বুঝতেই পারল না সে কোথায় আছে! তার চোখে এখনো সেই সাদা বরফের দেয়ালের আলো আর ভয় লেগে আছে। সিনেমা হলের আলো আধাঁরিতে সে কেমন বিভ্রান্ত বোধ করে।
‘তুমি সিনেমা দেখো নাই, ঘুমায়ে গেছিলা?’

শবনম এবার সম্বিত ফিরে পায়। সোজা হয়ে বসে ঘাড় ঘুরিয়ে চারিদিকে তাকায়। সিনেমা শেষ হয়ে গেছে। মানুষজন হল ছাড়ছে। শ্রাবণ কোমল গলায় বলে, ‘তুমি অনেক ক্লান্ত মা, তোমার আসলে রেস্ট দরকার।’

বাসায় ফিরেও সিনেমা হলে দেখা দুঃস্বপ্নটা ভুলতে পারে না শবনম। ওই সাদা পাথরের ঘর থেকে হিম সাদা বরফ কুচি যেন তার রক্তের ভেতর ঢুকে গেছে, শিরা উপশিরা ধমনী দিয়ে সেই শ্বেত শুভ্র তুষার কণাগুলো তাদের সমস্ত শৈত্য নিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেশ শীত লাগছে তার।
শ্রাবণ কপালে হাত দিয়ে বলল, ‘গা টা একটু গরম মনে হচ্ছে, একটা প্যারাসিটামল খেতে পার।’
‘নাহ্ তেমন কিছু না, ঠিক হয়ে যাবে।’ শবনম মেয়েকে আশ্বস্ত করে। ‘কাল রাতে ঠিক মত ঘুম হয়নি তো! এখন একটা ভাল ঘুম দিলেই .. ব্যাস.. চিন্তা করিস না।’

শ্রাবণ তার অ্যাসাইনমেন্ট করতে নিজের ঘরে চলে গেলে বাইরের কাপড় ছেড়ে একটা ঢিলেঢালা ম্যাক্সি পরে নেয় শবনম। তারপর ঘরের লাইট নিভিয়ে শুয়ে পড়ে। শরীর জুড়ে অবসাদ কিন্তু তার দুই চোখে ঘুম আাসে না। কেমন একটা বমি বমি ভাব হয়, গা গুলাতে থাকে। শ্রাবণের পাল্লায় পড়ে তেলে ভাজা ফাস্ট ফুড খাওয়া বোধহয় ঠিক হয়নি, বয়স বাড়লে পেটে অনেক কিছু হজম হতে চায় না। গ্যাস হয়। বাথরুমে গিয়ে কিছুক্ষণ বমি করার চেষ্টা করল সে। কিন্তু বমি হল না, গা গুলানো ভাবটা রয়েই গেল। চোখ দুটো জ্বালা করছে কিন্তু একটুও ঘুম আসছে না শবনমের। পথের কুকুরদের ঘেউ ঘেউ শুনল সে। রাতের ট্রাকের দূরাগত হর্ন শুনতে পেল। শ্রাবণের ঘর থেকে হাল্কাভাবে কোনো একটা ইংরেজি গানের সুর ভেসে আসছে। সারা রাত জেগে গান শুনবে আর পড়ালেখা করবে মেয়েটা। শবনম এক ধরনের শারিরীক মানসিক অস্বস্তি নিয়ে বিছানায় এপাশ ওপাশ করে। ভোরের দিকে চোখটা একটু লেগে এলে সে দেখতে পায় শহরের মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল বিলবোর্ডগুলোতে মনিরুজ্জামানের সঙ্গে তার নানা ধরনের অন্তরঙ্গ ছবি শোভা পাচ্ছে। পথচারিরা দারুণ কৌতুহলে ভিড় করে সেইসব ছবি দেখছে।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব ২২

স্নানের শব্দ: পর্ব-২১

স্নানের শব্দ: পর্ব-২০

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৯

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৮

আরএ/

Header Ad
Header Ad

গুচ্ছ পদ্ধতি ও পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে কুবি প্রশাসনকে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম 

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবিঃ সংগৃহীত

গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে এবং পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।

শনিবার (০৪ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়কদের থেকে প্রেরিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বিজ্ঞপ্তিটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৩তম সিন্ডিকেট মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা জানি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বের হয়ে এসেছে। নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি সংক্রান্ত বিভিন্ন তারিখও ঘোষণা করা হয়েছিল। তাছাড়া পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হলেও তা নিয়ে কোনো ব্যবস্থা প্রশাসন গ্রহণ করেনি। আমরা আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে গুচ্ছ থেকে কুবি বের হয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিবে এবং পোষ্য কোটা বাতিল করা হয়েছে এসংক্রান্ত লিখিত ঘোষণা দিবে। অন্যথায় প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়া হবে।'

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মো. পাবেল রানা বলেন, 'আমরা জানি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বের হয়ে এসেছে এবং নিজস্ব পদ্ধতিতে সার্কুলারও প্রকাশ করা হয়েছে। এখন এই নাটকের মানে কি? কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে অবশ্যই নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে হবে এবং পোষ্য কোটা বাতিল করে প্রশাসন কর্তৃক লিখিত ঘোষণা দিতে হবে। নতুবা আমরা কঠোর কর্মসূচির দিকে যাব।'

আরেক সমন্বয়ক মো: এমরান বলেন, 'অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কুবি প্রশাসন এবছরই গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে একক পদ্ধতি ভর্তি পরীক্ষা নিবে এবং ভর্তি পরীক্ষার সার্কুলারও প্রকাশ করেছিল। কিন্তু নিউজের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি এবছর ও কুবি গুচ্ছে থাকবে।প্রশাসনের নেওয়া এ ধরনের সিদ্ধান্তকে আমরা তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আগামী বছর নয় এবছর থেকেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় একক ভর্তি পরীক্ষা নিতে হবে। গুচ্ছ সিস্টেমের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্রতা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে।'

তিনি আরও বলেন, 'এছাড়া পোষ্য কোটা বাতিলে জন্য আমরা প্রশাসনকে অবহিত করেছি কিন্তু প্রশাসন এখন পর্যন্ত এটারও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেননি। কোটার ফলে শিক্ষার্থীদের মেধার অবমূল্যায় করা হয়।এবছরই গুচ্ছ থেকে সরে একক ভর্তি পরীক্ষা ও পোষ্য কোটা বাতিল না করলে আমরা কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবো পাশাপাশি আমরা প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিব।'

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৩তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের এক জরুরি সভায় গুচ্ছ থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে গতকাল (৩ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী জানান, কুবি গুচ্ছ পদ্ধতিতেই ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা নিবে। এ ঘোষণা গণমাধ্যমে প্রকাশের পর থেকেই বিভিন্ন সমালোচনার সৃষ্টি হতে থাকে।

Header Ad
Header Ad

বাংলাদেশি হামজাকে দলে চায় শেফিল্ড ইউনাইটেড

ছবিঃ সংগৃহীত

হামজা চৌধুরীর মা বাংলাদেশি হওয়ায় তাকে নিয়ে আগে থেকেই বেশ আগ্রহ ছিল বাংলাদেশের ফুটবল প্রেমীদের। গেল ১৯ ডিসেম্বর এক ভিডিও বার্তায় হামজা জানান, বাংলাদেশের হয়ে খেলতে তার আর কোন বাধা নেই। এরপর থেকে এই দেশের ফুটবল প্রেমীরা আরও বেশি নজর রাখছেন হামজার দিকে।

লেস্টার সিটির হয়ে শুরুর একাদশে সুযোগ মিলছে না হামজার। অবশ্য হামজা সুযোগ পাচ্ছেন বদলি হিসেবে। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার বা রাইটব্যাক হিসেবে নিজেকে অনেকটাই মেলে ধরেছেন বাংলাদেশের এই তারাক।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে শুরু হয়েছে শীতকালিন দল-বদল। গুঞ্জন আছে এই শীতের দলবদলে বাংলাদেশি তারকা হামজাকে দলে পেতে আগ্রহী শেফিল্ড ইউনাইটেড।

বর্তমানে চ্যাম্পিয়নশিপে থাকা দলটি স্বপ্ন দেখছে এক মৌসুমের বিরতিতে প্রিমিয়ার লিগে ফিরে আসার। চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের শীর্ষ দুই দল ২০২৫-২৬ মৌসুমে সরাসরি প্রিমিয়ার লিগে খেলার সুযোগ পাবে। শেফিল্ড সেই দৌড়ে ভালোভাবেই টিকে আছে।

হামজাকে শেফিল্ড দলে নিতে চায় ৬ মাসের লোনে। বাইআউট ক্লজ থাকবে কি না, তা অবশ্য এখনই জানাতে পারেনি ইংল্যান্ডের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো।

এর আগে ওয়াটফোর্ডেও ধারে খেলতে গিয়ে তাদেরকে প্রথম বিভাগে টিকে থাকতে ভালোভাবেই সাহায্য করেছিলেন হামজা চৌধুরী।

এই মৌসুমে লেস্টার সিটিও সুবিধাজনক অবস্থায় নেই। ১৯ ম্যাচে মাত্র ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে অবনমন অঞ্চলে। আজ লিগে লেস্টার সিটির খেলা আছে অ্যাস্টন ভিলার মাঠে।

Header Ad
Header Ad

  যশোরে আজহারীর মাহফিল শেষে থানায় ৩ শতাধিক জিডি

ছবিঃ সংগৃহীত

 

যশোরের পুলেরহাটে একদিকে মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিল, অপরদিকে এই এলাকার আশেপাশের গ্রামে রেকর্ড পরিমাণ চুরি। চুরির মধ্যে রয়েছে নগদ টাকা পয়সা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাতে শহরতলী পুলেটহাটস্থ আদ-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বর ও আশপাশ এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে।

ঘটনার পর থেকে যশোর কোতয়ালী মডেল থানায় ভুক্তভোগীরা জিডি করতে রীতিমতো লাইন ধরেছেন। থানা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শনিবার বেলা তিনটা পর্যন্ত মাহফিলে মোবাইল ও স্বর্ণালংকার খোয়া যাওয়ার ঘটনায় ৩ শত জিডি হয়েছে। প্রতিনিয়ত যেভাবে জিডি করতে ভুক্তভোগীরা থানায় আসছেন তাতে এই সংখ্যা কয়েকগুণ বাড়বে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

যশোর শহরতলী পুলেরহাটস্থ আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশন আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের শেষদিন ছিল শুক্রবার। এ দিন রাতে বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী। তার আসার খবরে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল নামে সমগ্র মাহফিল এলাকায়। শুক্রবার সকালে থেকেই শীত উপেক্ষা করে মানুষ জমায়েত হয়। বিকেল থেকে মাহফিল স্থান ছাপিয়ে সড়ক, মহাসড়কেও শিশু, নারী, পুরুষের ঢল নামে। দুপুরের পর সড়কে যানজট দেখা দেয়। এজন্য অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছায়। সব সড়কের ঢেউ গিয়ে মিশে পুলেরহাটে। মাহফিল প্রাঙ্গণে পাঁচ থেকে সাত লাখ মানুষের সমাগম ঘটে।

রাত সাড়ে ১০ টার পর মাহফিল শেষ হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে পদদলিত হয়ে একাধিক ব্যক্তি মারা যাওয়ার খবর। আহতের সংখ্যাও অর্ধশতাধিক। এছাড়া মোবাইল, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া যাওয়ার খবর।

হাসপাতাল ও থানা সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেনারেল হাসপাতালে পদদলিত হয়ে ২১ জন ভর্তি হওয়ার খবর জানা গেছে। এর মধ্যে রাতেই ১০ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আর ১১ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়াতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

শুক্রবার গভীর রাত থেকে শনিবার বেলা তিনটা পর্যন্ত স্বর্ণালংকার ও মোবাইল খোয়া যাওয়ার ঘটনায় তিনশ’ জিডি হয়েছে বলে জানিয়েছেন যশোর কোতয়ালী মডেল থানার ডিউটি অফিসার শারমিন আক্তার।

তিনি বলেন, শুক্রবার রাত থেকে অসংখ্য মানুষ মোবাইল হারিয়ে যাওয়া বা চুরির ঘটনায় জিডি করতে আসে। তাৎক্ষণিক যারা মোবাইলের ডকুমেন্ট দেখাতে পেরেছে তারা জিডি করতে পেরেছে। আর শনিবার সকাল থেকে রীতিমতো ভিড় লেগেছে। কয়েক হাজার জিডি হতে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন।

মায়ের দেড় ভরি ওজনের একটি গলার হার খোয়া যাওয়ার পর শনিবার দুপুরে জিডি করতে এসেছেন সদরের রুপদিয়া থেকে ইব্রাহিম হোসেন। তিনি বলেন, আমরা মা মহিলা প্যান্ডেলে বসে আজহারী হুজুরের ওয়াজ শুনছিলেন। এক পর্যায়ে গলায় হাত দিয়ে দেখেন তার গলায় হার নেই। তাই থানায় জিডি করতে এসেছি।

বউয়ের গলার চেইন হারিয়ে যাওয়ার পর থানায় জিডি করতে আসেন শহরতলী নওয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা হয়রত হোসেন। তিনি বলেন, এভাবে ওয়াজ মাহফিলে চুরি হওয়ার ঘটনা দুঃখজনক এবং অপরাধমূলক কাজ। লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়েছে গতকাল। চোররাও এ ধরনের অনুষ্ঠানে সুযোগটা কাজে লাগায়। কর্তৃপক্ষের আরও সর্তক ও ব্যবস্থাপনা ভালো করা উচিত ছিল। আর আমাদেরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল, ব্যাপক সমাগম স্থানে দামি দামি জিনিসপত্র পরিধান ও নিয়ে যাওয়া উচিত হয়নি।

শহরের বেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা এনামুল হক বলেন, যশোরের ইতিহাসে এমন বড় মাহফিল হয়নি। ওয়াজ মাহফিলে গেছিলাম ইমান আমল ঠিক করতে। আর চোরেরা তাদের ব্যবসা খুঁজে নিলো। হাজার হাজার মানুষের মোবাইল হারিয়ে যাওয়ার খবর শুনেছি মাহফিলের মাঠেই। অনেকেই দূরদূরান্ত থেকে এসেছে, তাই জিডি করতে কাগজপত্র দেখাতে না পারায় জিডি করতে পারছে না। যারা চুরির মতো এ ধরনের কাজ করছে মাহফিলে; তারা মাহফিলের সৌন্দর্য নষ্ট করেছে। তাদের বিচার হওয়া উচিত।

যশোর কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তিনদিন ব্যাপী বৃহৎ মাহফিল হয়েছে যশোরে। পাঁচ থেকে সাত লক্ষ মানুষ সমাগম হয়েছে। এর ভিতরে অসংখ্য মানুষের মোবাইল, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র হারিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। অনেকেই জিডি করছেন। কয়েকটি চুরির অভিযোগও পেয়েছি। পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে।

তিনি বলেন, মাহফিলে আহত বা মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। মাহফিলে পদদলিত হয়ে মারা যাওয়ার কোন ঘটনা ঘটেনি। ফলে মৃত্যু নিয়ে গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, গত পহেলা জানুয়ারি বুধবার থেকে তিনদিন ব্যাপী এই মাহফিল শুরু হয়। মাহফিলের প্রথম দিন বুধবার আলোচনা করেন আল্লামা মামুনুল হক ও আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিন আলোচনা করেন মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী ও মুফতি আমির হাজমা। শেষদিন শুক্রবার আলোচনা করেন শায়খ আহমাদুল্লাহ ও ড. মিজানুর রহমান আজহারী।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গুচ্ছ পদ্ধতি ও পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে কুবি প্রশাসনকে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম 
বাংলাদেশি হামজাকে দলে চায় শেফিল্ড ইউনাইটেড
  যশোরে আজহারীর মাহফিল শেষে থানায় ৩ শতাধিক জিডি
ভারত সেভেন সিস্টার্সের জন্যই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে: সারজিস
নির্বাচনের তারিখ নির্ভর করছে মানুষ কতটা সংস্কার চায় তার ওপর: প্রধান উপদেষ্টা  
রমজানে রাজধানীর ১০০ পয়েন্টে ন্যায্যমূল্যে ডিম-মুরগি বেচবে বিপিএ
হাসিনাকে ফেরত চেয়ে পাঠানো চিঠির এখনো জবাব দেয়নি দিল্লি  
নির্বাচনের দুটি সম্ভাব্য সময়সূচি রয়েছে : রূপা হককে প্রধান উপদেষ্টা  
কানাডায় নেওয়া যাবে না বাবা-মা ও দাদা-দাদিকে, স্পনসরশিপ বন্ধ ঘোষণা  
ইউরোপের ৮ দেশের ভিসা দিচ্ছে ঢাকার সুইডিশ দূতাবাস  
সাত কলেজের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা শিক্ষার্থীদের  
পূর্ব শত্রুতা জেরে ৩০০ মাল্টা গাছ কেটে বিনষ্ট, হাউ মাউ করে কাঁদছেন চাষী
  অবশেষে বিয়ের গুঞ্জনে সীলমোহর দিলেন তাহসান
ডাকাত এস আলমকে লেলিয়ে দিয়ে ইসলামী ব্যাংককে শেষ করে দিয়েছে: শফিকুর রহমান
টাঙ্গাইলে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতির উপর আ’লীগ সমর্থকদের হামলার অভিযোগ
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা
বিজয় একাত্তর হলের ছাত্রলীগ সভাপতি গ্রেফতার
নওগাঁয় সাড়ে ৯ কেজি গাঁজা ও ৫০ পিস ফেন্সিডিলসহ ২ জন গ্রেপ্তার
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘জুতা নিক্ষেপ’ কর্মসূচি ঢাবি শিক্ষার্থীদের
ধূমপানে শুধু ফুসফুস নয় কমে যায় বুদ্ধিও: গবেষণা