শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব- ৭

যারা যুদ্ধ করেছিল

আশ্রিত গাঁয়ের নাম নিশ্চিন্তপুর। বগুড়া-সিরাজগঞ্জের বর্ডারে। গ্রামের নামের সঙ্গে যথেষ্ট মিল আছে এই গ্রামে। এখানে যারা বাস করছে তারা সত্যি নিশ্চিন্তে আছে। চর এলাকা। এখানে পাকিস্তানি মিলিটারি আসে না। তারা মিলিটারিও দেখেনি মুক্তিযোদ্ধাও দেখেনি। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের দেখার জন্য পুরো গ্রাম ভেঙে পড়ল। তাদের ভয় দেখিয়েও সরানো গেল না।
মজনু বলল, ‘ওস্তাদ, গাঁয়ের নামটি আমার খুব পছন্দ হইছে। নিশ্চিন্তপুর। আমরাও এখন যথেষ্ট নিশ্চিন্ত। মনে হচ্ছে পুরো যুদ্ধের সময়টা এখানেই থাইকা যাই।’
‘মনে হচ্ছে তুমি যুদ্ধ করতে আস নাই। বেড়াইবার আইছ।’
‘রাগ হইয়েন না ওস্তাদ। এমনি এমনি কইছি।’
মমিন রাগ মুখে বলল, ‘বারেক কখনো এমন কথা কইবা না। আজ আমাদের মন ভালো নাই। যুদ্ধে আমরা হাইরা গেছি। আমাদের কয়েকজন দুর্ধর্ষ যোদ্ধা যুদ্ধে শহীদ হয়েছে। এইসময় তোমার রসিকতা পোড়া শরীরে মরিচ বাঁটা লাগানোর মতো জ্বলছে। দ্বিতীয়বার এই কথা বললে তোমার কপালে খারাপই আছে।’
‘আর বলব না ওস্তাদ। আমার ভুল হয়া গেছে।’
দুপুরে খাওয়ার আয়োজন হলো। মমিনের খেতে হচ্ছে করছে না। সতীর্থদের পীড়াপীড়িতে খেতে বসল। হাত ধুতে দরজার কাছে গেল পানি ভর্তি গ্লাস নিয়ে। হাত ধুতে ধুতে খেয়াল করল একটি কিশোরী মেয়ে খাওয়া এগিয়ে নিয়ে এসে দিচ্ছে। ঘরে থাকা পরিবেশনকারি লোকটি সেই খাওয়া নিয়ে পাতে পাতে পরিবেশন করছে। মেয়েটিকে দেখে চমকে উঠল মমিন। মেয়েটি অবিকল মমিনের ছোট বোন সাথীর মতো দেখতে। তেমনই নাক তেমনই চোখ। মাথায় একরাশ কোকড়া চুল। হাসিতেও অদ্ভুত মিল। মমিনের মনটা আরও খারাপ হয়ে গেল। বার বার শুধু সাথীর মুখ মনে পড়তে লাগল। কিছুই খেতে পারল না। এক সময় খাওয়া রেখে সে উঠে পড়ল। সবাই বলাবলি করতে লাগল যুদ্ধে হেরে আজ ওস্তাদের মনে খারাপ। তারা কেউ মমিনের মনের কথা বুঝতে পারল না।

শেষ পর্যন্ত করিম মিয়া সবাইকে নিয়া শশুর বাড়ি যেতে রাজি হয়। কথা হয় সন্ধ্যার পর তারা রওনা হবে। সারাদিন তারা গোজগাছ করে। গোজগাছ করারও তেমন কিছু নেই। পুরোনো কিছু কাপড়চোপড় আর কিছু গহনাপত্র। সাথী তার বইগুলো বাঁধাসাধা করে। রাতের খাওয়ার পরই তারা রওনা হবে। সেই মতো তারা প্রস্তুতি নিতে থাকে।
দিনের বেলায় যাওয়ার সাহস নেই। যদি সাকিবের চোখে ধরা পড়ে। তখন কোনো জবাব দেওয়ার মুখ থাকবে না। গোপনে পালিয়ে গেলে তারপর যা হওয়ার তাই হবে। মাইল পাঁচেক পর তাদের একটি আত্মীয় বাড়ি আছে। সেখানে রাত্রিযাপন করে সকালে নানার বাড়ির উদ্দেশ্যে তারা রওনা হবে। রমিছা বিবি কাজ করছে আর মনে মনে দোয়া-দরুদ পড়ছে। যাতে সহি সালামতে গ্রাম থেকে বেরিয়ে যেতে পারে।
রাতে খেতে বসেছে করিম মিয়া। সাথী খাওয়া এগিয়ে দিচ্ছে। সাথীকেও খেতে বলছিল করিম মিয়া। সাথী বলেছে তার খিদে নেই। খাবে না। সাথী এখান থেকে চলে যেতে পারলে যেন বাঁচে। এখানে থাকলে সাকিব তাকে নিয়ে রঙ্গ তামাশা করবে। খারাপ প্রস্তাব দেবে। এর আগে একবার সে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল। সাথী ভয় দেখিয়ে বলেছিল, ভাইয়াকে সে বলে দেবে। সাকিব আর কথা বাড়ায়নি। শুধু বলেছিল, ‘সেটা বল না। আমি আর তোমাকে এমন কথা বলব না।’ সাথী নিশ্চিত তাকে বাড়িতে নিয়ে সে এই ঘটনার প্রতিশোধ নেবে। করিম মিয়ার খাওয়া শেষ। হাত ধুতে গ্লাস হাতে ঘরের বাইরে এসে দেখে টর্চ চালিয়ে বাড়িতে ঢুকছে কে যেন। একজন নয় জনাচারেক। কাঁধে রাইফেল। এসেই করিম মিয়াকে ডাকে। ‘করিম মিয়া বাড়ি আছ?’ সেই ডাক শুনে করিম মিয়ার আত্তা শুকিয়ে যায়। সাথী গিয়ে চৌকির নিচে পালায়। তার বুকের কাঁপুনি ঝড়ের বেগে বাড়তে থাকে।
আলিম রাজাকার গম্ভীর গলায় প্রশ্ন করে, ‘করিম চাচা, তোমার ছেলে মমিন কোথায় গেছে?’
‘কোথায় গেছে আমি জানি না বাবা।’
‘মিছা কথা কওয়ার জায়গা পাও না। মনে করছ আমরা কিছু জানি না। তোমার ছেলে ইন্ডিয়া গেছে পাকিস্তান ভাঙার ষড়যন্ত্র করতে। সে দুস্কৃতির খাতায় নাম লেখাইছে। চলো, তোমাকে আমাদের সঙ্গে যাইতে হবে।’
‘কোথায়?’ ভয়ার্ত কণ্ঠে বলে করিম মিয়া।
‘ক্যাম্পে।’
ঘর থেকে দৌড়ে বাইরে আসে রমিছা বিবি। এসে আলিমের পা জড়িয়ে ধরে। বলে, ‘বাবা আলিম, আমরা সত্যি জানি না মমিন কই গেছে। ও কিছুতেই যুদ্ধে যাবে না। ও ভীষণ ভীতু। তোমরা মমিনের বাপকে নিও না। মিলিটারি তারে মাইরা ফেলবে। আমি তার জান ভিক্ষা চাই।’
আলিম গর্জে উঠে অন্য রাজাকারদের বলে, ‘তোদের কী বলতাছি শুনতে পাস নাই? তোরা এই বুইড়া হালারে বান। এই হালার বুদ্ধিতেই ওর পোলা আমাগো বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য ইন্ডিয়া গেছে। ব্যাটা আমাগোরে শত্রু পাকিস্তানের শত্রু মালাউনগো দেশে গেছে দুস্কৃতির খাতায় নাম লেখাইতে। সাহস দেইখা বাঁচি না। এহনো খাড়াইয়া আছোস ক্যা? বান হালাকে।’
দুজন রাজাকার ছুটে এসে করিম মিয়াকে পিঠমোড়া করে বাঁধে। রমিছা বেগম আলিমের দুপা জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। কয়েকজন প্রতিবেশি আড়াল থেকে দেখে তারা আড়ালেই মিলিয়ে যায়। কেউ সামনে আসে না। তখন কারো সামনে আসার মতো অবস্থা ছিল না। সবাই ‘চাচা আপন জান বাঁচা’ অবস্থা। সাথী চৌকির তলা থেকে বের হয়ে কী করবে ভাবতে থাকে। একবার ভাবে বাইরে গিয়ে আলিম ভাইকে অনুরোধ করবে বাবাকে ছেড়ে দিতে। আবার ভাবে, ওরা যদি আমাকে ধরে নিয়ে যায়, তখন?
এইসময় সাকিবের কণ্ঠ শোনা যায়। টর্চ লাইটের আলো ফেলে সাকিব উঠোনে এসে দাঁড়ায়। বলে, ‘কী হইছে? এত হলাচিল্লা কিসের?’

করিম মিয়া বলে, দেখতো বাবা, ওরা আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তুমিতো সবই জান, মমিনের খবর আমরা কীভাবে জানব?’
সাকিব গর্জে ওঠে, ‘আলিম, তোকে না বলেছিলাম করিম চাচার ব্যাপারে তোদের কিছু করতে হবে না। যা করার আব্বার সঙ্গে কথা বলে আমরাই করব। ছেড়ে দে তাকে। রমিছা গিয়ে সাকিবের পা জড়িয়ে ধরে। বলে, ‘আমগো বিপদের সময় আল্লাহ তোমাকে পাঠাইছে বাবা। তুমি না আইলে আজ কপালে কী যে দুর্ভোগ অইত তা আল্লাই জানে।’
সাকিব বলে, ‘আমি তো আসতাম না। জরুরি কাজে ব্যস্ত ছিলাম। বাড়ির কামলা ইউনুস গিয়ে বলল, করিম চাচাকে রাজাকাররা ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তাই শুনে আর দেরি করতে পারলাম না। হাজার হোক আপনারা আমার আপনজন। বন্ধুর পিতা-মাতা। মমিন আমার জানের জান দোস্ত। আমি থাকতে তার বাবা-মায়ের কিছু হবে সেটা আমি কীভাবে মেনে নেব? তার চেয়ে আমার মরে যাওয়া ভালো।’
ঘর থেকে সাথী লম্বা করে শ্বাস ফেলে। সাকিবের কথাগুলো তার ভালো লাগে। এর মধ্যে অন্য কোনো তত্ত্ব আছে কি না সাথী সেটাও ভাবে।
সাকিব এবার রাজাকারদের ধমকে বলে, ‘তোরা দাঁড়িয়ে আছিস কেন? যা বলছি।’ রাজাকাররা তবু দাঁড়িয়ে থাকে। সাকিব নিজে থেকে বলে, বুঝতে পারছি। তোরা কিছু দক্ষিণা চাস। চাচি, ঘরে সোনাদানা কিছু আছে?
‘সোনাদানা কই পামু বাবা। আমার একটা বিয়ার নাকফুল আছে।’
সাকিব বলে, ‘তাই দেন। ওরা এত কষ্ট করে এতদূর এসেছে। ওদের যাতায়াত ভাড়াটাতো দেওয়া দরকার। জানের চেয়ে তো সোনার মূল্য বেশি না।’
রমিছা ঘরে গিয়ে পুটলিতে বাঁধা নাকফুলটা এনে সাকিবের হাতে দেয়। সাকিব লাইট জ্বালিয়ে নাকফুলটা দেখে। হেসে বলে, নে। জিনিসটা খারাপ না। ভালো দাম পাবি। এখন এটা নিয়ে কেটে পড়। আর কোনোদিন এ বাড়িতে আসবি না।’ সাকিব এগিয়ে গিয়ে নিচু গলায় কী যেন বলে। ওরা তারপর নাকফুলটা নিয়ে চলে যায়।
রমিছা বলে, ‘বাবা ঘরে আইসা বস। তোমার জন্য এতবড় বিপদ থাইকা আল্লাহ আমগো রক্ষা করল। একটু বস।’ রমিছা টুল আগাইয়া দেয়।
‘সাথীকে দেখছি না। কোথায় সে?’
রমিছা বলে, ‘ঘরেই আছে। রাজাকার দেইখা ভয় পাইছে।’
‘ভয় পাওয়ারই কথা। ওরাতো মানুষ না। এক একটা জানোয়ার। সুযোগ পাইলে লুটপাট করে। গোয়াল থেকে গরু পর্যন্ত খুলে নিয়ে যায়। কেউ কিছু বলার সাহস পায় না। ওদের ব্যাপক ক্ষমতা দিছে সরকার।’
রমিছা সাথীকে নিয়ে আসে সাকিবের সামনে। সাকিব একঝলক দেখে হেসে ফেলে। তার হাসির কারণ বুঝতে পারে না সাথী। সাকিব বলে, ‘তুমি মমিনের বোন। মানে আমারও বোন। আমাদের বাড়িতে থাকতে তোমার এত আপত্তি কেন?’
কথাটা এমনভাবে বলে যেন সাকিব নিশ্চিত সাথী ইচ্ছে করে সাকিবদের বাড়িতে যাচ্ছে না। সাথী জবাব খুঁজে পায় না। সে মাথা নামিয়ে থাকে।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৬

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৫

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৪

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-৩

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-২

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১

এসএন 

 

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী

ছবিঃ সংগৃহীত

যানজটে আটকে থাকা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের গাড়ি বহরকে সাইড করে দিতে গিয়ে বাস চাপায় নিহত হয়েছেন জসিম উদ্দিন (৫৩) নামে জামায়াতের একজন কর্মী।

নিহত জসিম উদ্দিন উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের সৈয়দপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত আলী আশ্রাফ মোল্লার ছেলে। তার স্ত্রী ও শিশুসহ তিন ছেলে সন্তান রয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লালমাই উপজেলার সৈয়দপুর এলাকার ওয়ালটন শো-রুমের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা মারুপ সিরাজী বলেন, লক্ষীপুর যাওয়ার পথে জামায়াত আমিরের বহরের ৪টি গাড়ি বাগমারা উত্তরবাজারে যানজটে আটকা পড়লে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ তিশা পরিবহনের ঢাকামুখী একটি দ্রুতগতির বাস ধাক্কা দিলে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দীনের মাথা থেতলে যায়। রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বাগমারা বাজারের ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম মুন্না বলেন, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হলেও বাগমারা বাজার অংশে অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে দুই লেন করা হয়েছে।সে কারণে ২৪ ঘণ্টাই সড়কের এই অংশে যানজট লেগে থাকে। যানজট নিরসনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করলে আজ হয়তো এমন মৃত্যু হতো না।

লালমাই উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ইমাম হোসেন বলেন, আমিরে জামায়াত লক্ষীপুর যাওয়ার পথে বাগমারা উত্তর বাজার বালুর মাঠে পথসভা করেন। পথসভাস্থলে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে তাঁর গাড়ি বহর যানজটে আটকা পড়ে।

তখন আমিসহ সংগঠনের ১৫/২০ জন কর্মী ট্রাফিকের দায়িত্ব শুরু করি। আমরা আমিরে জামায়াতকে নিয়ে পথসভায় চলে যাওয়ার পর জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দিন বাস চাপায় মারা যান।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, বাগমারা উত্তরবাজারে বাস চাপায় জসিম উদ্দিন নামের একজন মারা গেছেন। মরদেহ নিহতের বাড়িতে রয়েছে। খবর পেয়েই নিহতের বাড়িতে গিয়েছি।

 

Header Ad
Header Ad

সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  

ছবিঃ সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর বাজারে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। পুলিশের আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং দলীয় অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল রায়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম মজনু এবং যুবদল নেতা শহিদ মিয়ার লোকজনের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপি ও যুবদলের অস্থায়ী অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে মধ্যনগর বাজার এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনার আশঙ্কা এবং সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়ার আগে পর্যন্ত বাজার এবং আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধ করা হয়।

মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সজীব রহমান বলেন, ‘মধ্যনগর যুবদল নেতা শহিদ মিয়া ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাঈযুম মজনুর লোকজনের মধ্যে পুলিশের আসামি ধরা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে উভয় পক্ষের লোকজন বিএনপি ও যুবদলের অফিস ভাঙচুর করে। এতে বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী ও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাজার ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। বিশৃঙ্খল অবস্থা এড়াতে বাজারে পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাজার ও আশপাশের এলাকায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম
ইসরায়েলের তেল আবিবে তিনটি বাসে বিস্ফোরণ
বিয়ের ছবি ভাইরাল, বললেন শুভকামনা জানানোর জন্য ধন্যবাদ