শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩

যারা যুদ্ধ করেছিল

 

জিন্না তখন পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল, গণপরিষদের সভাপতি ও মুসলিম লীগেরও সভাপতি। নয় দিনের পূর্ববঙ্গ সফরে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের কয়েকটি শহরে সে ভাষণ দেয়। সবখানেই সে বলে, ’উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা।’ কার্জন হলে উর্দুকে রাষ্ট্র ভাষা বলার পর কয়েকজন ছাত্র ‘না’ ‘না’ বলে চিৎকার করে প্রতিবাদ করতে থাকে। যা জিন্নাকে ভীষণ অপ্রস্তুত করেছিল। কিছুক্ষণ সে বক্তৃতা বন্ধ রেখে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল।

জিন্না ঢাকায় এসব কথা বলেছিল এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে। তার ঢাকা সফরের আগেই বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করে অনেকগুলো ঘটনা ঘটে যায়। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেখা যায় নতুন দেশের ডাক টিকিট, মুদ্রা, মানি অর্ডার বা টাকা পাঠানোর ফর্ম, ট্রেনের টিকিট, পোস্টকার্ড সব উর্দু ও ইংরেজিতে লেখা। এর প্রতিবাদে ঢাকায় ছাত্র ও বুদ্ধিজীবীরা বিক্ষোভ সমাবেশও করে। পূর্বপাকিস্তানে কর্মরত উর্দুভাষী সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বাঙালি কর্মকর্তাদের প্রতি বিরূপ আচরণের অভেযোগ ওঠে। একইরকম মনোভাবের শিকার হন পশ্চিম পাকিস্তানে কর্মরত বাঙালি কর্মকর্তারাও।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ও সরকারি চাকরিতেও ছিল অবাঙালিদের প্রাধান্য। পরে দেখা যায় পূর্বপাকিস্তান থেকে নৌবাহিনীতে লোক নিয়োগের ভর্তি পরীক্ষায়ও হচ্ছে উর্দু ও ইংরেজিতে। জিন্না যেদিন কার্জন হলে ভাষণ দেয় সেদিনই বিকেলে তার সঙ্গে দেখা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের একটি দল। এসময় ভাষা নিয়ে তাদের মধ্যে তীব্র বিতর্ক প্রায় ঝগড়াঝাটি পর্যায়ে পৌঁছে যায়। তারা জিন্নাকে একটি স্মারকলিপিও দেয়। তাতে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানানো হয়। কানাডা, বেলজিয়াম ও সুইজারল্যান্ডের মতো দেশে একাধিক রাষ্ট্রভাষা আছে এমন কিছু দেশের উদাহারণ দেওয়া হয়। এই ছাত্রনেতারা অনেকেই ছিল জিন্নার দল মুসলিম লীগের সমর্থক। কিন্তু ভাষার প্রশ্নে পূর্ববঙ্গের প্রাদেশিক মুসলিম লীগের একাংশ কেন্দ্রীয় নেতাদের চাইতে ভিন্ন ভূমিকা নিয়েছিল।

সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র ও অধ্যাপক মিলে ‘তমদ্দুন মজলিস’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলে। যারা শুরু থেকেই রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে নানারকম সভা-সমিতি আলোচনার আয়োজন করে। গঠিত হয়েছিল একটি ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদও’।
উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার কথা-বার্তা শুরু হওয়ার সাথে সাথেই পূর্ববঙ্গের ছাত্র, শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সমাজ, বুদ্ধিজীবী আর রাজনীতিবিদরা বুঝতে পেরেছিলেন যে, এটা বাঙালিদের জন্য চরম বিপর্যয় নেমে আসবে। যার ফলে পাকিস্তানে উর্দু ভাষীদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবে। বাঙালিরা সরকার ও সামরিক বাহিনীতে চাকরি বাকরির সুযোগের ক্ষেত্রে সবদিক থেকে পিছিয়ে পড়বে। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ফলে বাঙালি মুসলমানদের উন্নয়ন ও সামাজিক বিকাশের যে স্বপ্ন তারা দেখেছিল তা চরমভাবে ব্যাহত হবে। অথচ পাকিস্তানের বাস্তবতা ছিল এই যে, সে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষাই ছিল বাংলা। পশ্চিম পাকিস্তানের ৪০ শতাংশ মানুষের ভাষার ছিল পাঞ্জাবি আর ৪ শতাংশ মানুষের ভাষা ছিল উর্দু। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা হয়েও বাংলাভাষা পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে না। এটা পূর্ববঙ্গের ছাত্র ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে। শুরু হয় দেশব্যাপী আন্দোলন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রাদেশিক পরিষদ ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়া হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে পূর্ব পাকিস্তান সরকার ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। অনেক বিতর্কের পর ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেয়। খণ্ডে খণ্ড দলে বিভক্ত হয়ে মিছিল নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা রাস্তায় নেমে আসে। সেই মিছিলে পুলিশ গুলি বর্ষণ করে। পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই কয়েকজন ছাত্র মারা যায়। আহত হয় শত-শত। সেদিন ভাষার জন্য শহীদ হন রফিক-শফিক-বরকত-সালাম-জব্বারসহ আরও অনেকে।

ভাষা আন্দোলন থেকে বৃহত্তর আন্দোলনের দানা বাঁধতে থাকে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে। আজ যারা রাজাকার হয়েছে তারা এ ইতিহাস জানে না। এমনকি সাকিবও জানে না। মমিন রাজনীতি না করলেও সে এসব জেনেছে ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে ইতিহাস পড়ে।

রাইফেল কাঁধে তিনজন রাজাকার ফজলুর রহমানের বাড়িতে আসে। বাইরে থেকে ডাকতে থাকে। ‘মেম্বর সাহেব বাড়ি আছেন? মেম্বর সাহেব?’
বেরিয়ে আসে সাকিব। সাকিবকে দেখে সালাম দেয় রাজাকার আলিম। আলিম কিছুদিন মাদ্রাসায় পড়েছে। সামান্য কিছু লেখাপড়া করার পর ওই পাঠ চুকিয়ে বাড়ি এসে বাউন্ডেলেপনা করে ঘুরে বেড়ায়। রাজাকার গঠনের কথা শুনে আলিম স্বেচ্ছায় এসে রাজাকারের খাতায় নাম লেখায়। ট্রেনিং নেয় অস্ত্র চালানোর। খুবই গরিব ঘরের সন্তান আলিম। রাজাকারে নাম লেখালে মাস-মাস বেতন পাবে। আর পাবে গনিমতের মাল। আলিমের ঘাড়ে অস্ত্র দেখে সবাই ভয় পায়। সমীহ করে। এই আনন্দে আলিম নিজেকে বিরাট কিছু ভাবে। তার দুজন সাগরেদ আছে। তারাও রাজাকারের ট্রেনিং নিয়েছে। তারাও বুক ফুলিয়ে রাজা বাদশার মতো চলাফেরা করে। তারা শান্তি কমিটির মেম্বর ফজলুর রহমানের কাছে এসেছে একটি অনুমতির জন্য।
‘কী ব্যাপার? কী হয়েছে?’ সাকিব বেরিয়ে এসে জিজ্ঞেস করে।
আলিম বলে, ‘মেম্বর সাহেব বাড়ি নাই?’
‘না নেই।’ সাকিব বলে।
আলিম বলে, ‘তাকে ভীষণ দরকার। একটা অপারেশন করতে হবে। তার অনুমতি ছাড়া সেটা করা যাচ্ছে না।’
‘আমাকে বলা যাবে?’ সাকিব জিজ্ঞেস করে।
‘আপনিতো এসবের মধ্যে নাই। আপনাকে কীভাবে বলি।’
‘বলে দেখতে পার। আমি আব্বার সঙ্গে কথা বলে তোমাদের জানাব।’
আলিম সাহস নিয়ে এগিয়ে এসে বলে, ‘আমরা মধ্যপাড়ার মমিন মুক্তি বাহিনীতে গেছে। আমরা পাকিস্তান রক্ষায় জীবন দেওয়ার জন্য আল্লার কসম খাইছি। আর কিনা আমাদের চোখের সামনে সে মুক্তিবাহিনী হয়া পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে? ইন্ডিয়ার দালালি করবে। আর আমরা তাই মাইনা নিমু?’
সাকিব সহজভাবে বলল, ‘তাতো মানা যায় না। কিন্তু তোমাদের ইচ্ছা কী? কী করতে চাও তোমরা?’
‘এই জন্যেতো আমরা মেম্বর সাহেবের কাছে পরামর্শ করতে আছি। উনি যা বলবেন আমরা তাই করব।’ বলল আলিম।
বেটে খাটো রাজাকার, নাম জহর, তোতলিয়ে কথা বলে। সে বলল, ‘আমাদের ইচ্ছা মমিনের বাপকে ধাইরা মিলিটারি ক্যাম্পে দিয়া যামু।’ লম্বা ফর্সা বোকা টাইপের গেদু রাজাকার বলল, ‘আমার ইচ্ছা ওর বোনটাকে আমরা বিয়া করমু।’
সাকিব বললো, ‘তিনজন মিলা একজনকে বিয়া করবি? এটা কেমন কথা?’
রাজাকারের কমান্ডার আলিম বাধা দিয়ে বলল, ‘আমরা তো সবাই বিয়াত্ত। আমাদের মধ্যে একজন আছে সে অবিয়াত্ত। চেহারা সুরুত মাশাল্লাহ ভালো।’
‘কে সে?’
আলিম বলে, ‘আপনি চিনবেন না। বাড়ি ভেন্নাগাছি। আমাদের সাথে রাজাকারে ভর্তি হইছে। দুর্দান্ত সাহস। মুক্তিফৌজ পাইলে বেয়োনেট দিয়া খোঁচাইয়া শেষ কইরা ফেলে। একটু ভয় ডর নাই।’
সাকিব তাচ্ছিল্য ভঙ্গিতে বলে, ‘রাজাকারদের সাহস আমার চেনা আছে। মুক্তিবাহিনীর নাম শুনলে তোরা কাপড় নষ্ট কইরা ফেলিস। আবার মুখে বড় বড় কথা। শোন, আব্বার সাথে আমার কথা হইছে। মমিনের বাবা-মা ও সাথীর ব্যাপারে তোদের কিছু করতে হবে না। যা করার আব্বা করবে।’
‘কী করবে মেম্বর সাহেব?’
সাকিব গম্ভীর ভাবে বলে, ‘কী করবে তা কি তোদের কাছে জবাবদিহি করতে হবে?’
আলিম আমতা আমতা করে বলে, ‘না ভাইজান। আমরা একটা প্লান করছিলামতো, তাই জিগাইতেছিলাম।’
‘কী প্লান?’
‘না। থাক ভাইজান। আমগো প্লান হুইনা কাম নাই। মেম্বর সাহেবের প্লান মতোই কাম হবে। আমরা যাইগা। চল তোরা।’
ফর্সা লম্বু গেদু রাজাকার তবু বলে, ‘ব্যাপারটা ভাইবা দেখেনে ভাইজান, আমগো চোখের সামনে মুক্তিফৌজে গেছে মিলিটারি জিগাইলে কী জবাব দিমু আমরা?’
‘আবার জিগায়। কইলাম না এইটা নিয়া তোদের ভাবতে হবে না।’
আলিম আবার তাগাদা দেয়, ‘চল চল।’
রাজাকাররা চলে যায়। সাকিবের মাথায় ভিন্ন চিন্তা এসে ভর করে। সাথীকে নিয়ে নতুন করে ভাবনা তৈরি হয় মনে। সাথীকে সে একান্তে পেতে চায়। এই ভাবনাটা হঠাৎই মাথায় ঝাঁকিয়ে শক্ত করে চেপে বসে। রাজাকাররা তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার করেছে। কথাটা শুনে নিজের মধ্যে সেই ভাবনাটা আবার মাথা চারা দেয়। ব্যাপারটা নিয়ে জটিল ভাবনা শুরু হয় সাকিবের মনে।

চলবে...

আগের পর্বটি পড়ুন>>>

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-২

যারা যুদ্ধ করেছিল: পর্ব-১

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী

ছবিঃ সংগৃহীত

যানজটে আটকে থাকা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের গাড়ি বহরকে সাইড করে দিতে গিয়ে বাস চাপায় নিহত হয়েছেন জসিম উদ্দিন (৫৩) নামে জামায়াতের একজন কর্মী।

নিহত জসিম উদ্দিন উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের সৈয়দপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত আলী আশ্রাফ মোল্লার ছেলে। তার স্ত্রী ও শিশুসহ তিন ছেলে সন্তান রয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লালমাই উপজেলার সৈয়দপুর এলাকার ওয়ালটন শো-রুমের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা মারুপ সিরাজী বলেন, লক্ষীপুর যাওয়ার পথে জামায়াত আমিরের বহরের ৪টি গাড়ি বাগমারা উত্তরবাজারে যানজটে আটকা পড়লে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ তিশা পরিবহনের ঢাকামুখী একটি দ্রুতগতির বাস ধাক্কা দিলে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দীনের মাথা থেতলে যায়। রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বাগমারা বাজারের ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম মুন্না বলেন, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হলেও বাগমারা বাজার অংশে অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে দুই লেন করা হয়েছে।সে কারণে ২৪ ঘণ্টাই সড়কের এই অংশে যানজট লেগে থাকে। যানজট নিরসনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করলে আজ হয়তো এমন মৃত্যু হতো না।

লালমাই উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ইমাম হোসেন বলেন, আমিরে জামায়াত লক্ষীপুর যাওয়ার পথে বাগমারা উত্তর বাজার বালুর মাঠে পথসভা করেন। পথসভাস্থলে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে তাঁর গাড়ি বহর যানজটে আটকা পড়ে।

তখন আমিসহ সংগঠনের ১৫/২০ জন কর্মী ট্রাফিকের দায়িত্ব শুরু করি। আমরা আমিরে জামায়াতকে নিয়ে পথসভায় চলে যাওয়ার পর জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দিন বাস চাপায় মারা যান।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, বাগমারা উত্তরবাজারে বাস চাপায় জসিম উদ্দিন নামের একজন মারা গেছেন। মরদেহ নিহতের বাড়িতে রয়েছে। খবর পেয়েই নিহতের বাড়িতে গিয়েছি।

 

Header Ad
Header Ad

সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  

ছবিঃ সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর বাজারে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। পুলিশের আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং দলীয় অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল রায়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম মজনু এবং যুবদল নেতা শহিদ মিয়ার লোকজনের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপি ও যুবদলের অস্থায়ী অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে মধ্যনগর বাজার এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনার আশঙ্কা এবং সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়ার আগে পর্যন্ত বাজার এবং আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধ করা হয়।

মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সজীব রহমান বলেন, ‘মধ্যনগর যুবদল নেতা শহিদ মিয়া ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাঈযুম মজনুর লোকজনের মধ্যে পুলিশের আসামি ধরা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে উভয় পক্ষের লোকজন বিএনপি ও যুবদলের অফিস ভাঙচুর করে। এতে বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী ও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাজার ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। বিশৃঙ্খল অবস্থা এড়াতে বাজারে পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাজার ও আশপাশের এলাকায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম
ইসরায়েলের তেল আবিবে তিনটি বাসে বিস্ফোরণ
বিয়ের ছবি ভাইরাল, বললেন শুভকামনা জানানোর জন্য ধন্যবাদ