মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব -১

যারা যুদ্ধ করেছিল

বড় গামলা ঘিরে গোল হয়ে বসে সবাই সরষের তেল-পেঁয়াজ-মরিচ দিয়ে মাখানো মুড়ি খাচ্ছে। মজনু বার কয়েক সাধাসাধি করেছে। মমিন রাজি হয়নি। মমিনের খাওয়া নিয়ে কোনো বাছাবাছি নেই। প্লেটে যা আসে তাই সে খেয়ে ওঠে। শুধু এই মুড়িটা তার সমস্যা। মুড়ি খেলে পেট ফাপে। আশ্চর্য কথা। অন্যদের মুড়ি খেলে পেটের গ্যাস দূর হয় আর মমিনের হয় উল্টো। মানব শরীর বড় রহস্যময়। একেক জনের শরীর একেক ভাবে গড়া। কারো দুধ খেলে বদহজম হয়। কারো ডাবের পানি খেলে সর্দি লাগে। অথচ দু’টোই মানব দেহের জন্য ভীষণ উপকারি।

মুড়ি খাওয়া নিয়ে হৈ হল্লা করছে সবাই। কয়েকটি হাত একসঙ্গে গামলায় ঢুকছে। তাতে কাড়াকাড়ির লাগার অবস্থা। এটাও মুড়ি খাওয়ার এক ধরনের মজা। মমিনের জন্য এক গ্লাস লেবুর শরবত দিয়ে গেল বাড়ির একজন বয়স্ক লোক। যিনি এই বাড়ির কর্তা। নাম জানা হয়নি। গভীর রাতে এই বাড়িতে ওরা এসে উঠেছে। বাড়ির লোকজনকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে বলেছে, ‘আজকের রাতটা আপনারা কষ্ট করে অন্যত্র কাটান। আমরা আজ এইঘরে ঘুমাব।’

সবার কাঁধে অস্ত্র দেখে বাড়ির লোকজন আর কেউ কিছু বলেনি। বলার সাহস পায়নি। কারো কারো কপালের ভাঁজ দেখেছিল ওরা। সেসব ওরা পাত্তা দেয়নি। পাত্তা দেওয়ার সময় কি তখন ওদের আছে? ৫০ জনের দলটি কয়েকটি বাড়িতে ভাগ হয়ে আশ্রয় নিয়েছে। রাতে আর খাওয়া হয়নি। বাড়ির লোকজন সাধাসাধি করছিল। মমিন বারণ করেছে। বলেছে, তারা খেয়ে এসেছে।
সকালে মুড়ি খেতে দিয়ে চুলোয় ভাত চড়িয়েছে। মুরগি ধরার আওয়াজ পাওয়া গেল। এই কথাটা ফিস ফিস করে বলে গেল মজনু। ভোজন রসিক মজনু বেশ গদগদ ভাবে বলল, ’মুরগি ধরতাছে ওস্তাদ। খাওয়া মনে হয় ফাটাফাটি হবে।’
মমিনকে ওস্তাদ ডাকে মজনু। মমিন যেহেতু দলের কমান্ডার। সবাই ডাকে কমান্ডার। মজনু ডাকে ওস্তাদ। ট্রেনিংয়ের সময় প্রশিক্ষককে সবাই ওস্তাদ বলে সম্বোধন করত। সেই অভ্যাস মজনু ছাড়তে পারেনি।

মজনুর বাড়ি রংপুর। থানার নাম বলতে পারে না। শুধু বলে বাড়ি অংপুর। গায়ের নাম সোনামুখি। গায়ের নামটি মমিনের বেশ পছন্দ। ১৭/১৮ বছরের ছেলেটি লেখাপড়া জানে না। রাজনীতির সঙ্গেও তেমন যোগসূত্র নেই। গায়ের কয়েকজনের সঙ্গে পালিয়ে ভারতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে। ট্রেনিংয়ে যোগ দিতে গ্রামের অন্য বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ হয়ে গেছে। মজনুর সঙ্গে মমিনের তুরার পাহাড়ে প্রশিক্ষণের সময় দেখা ও পরিচয়। ওর অন্য সঙ্গীদের মজনু হারিয়ে ফেলেছে। এই জন্যে মাঝেমধ্যে বন্ধুদের জন্য উদাস হয়ে ভাবে। বেটে খাটো ছেলেটি অতিমাত্রায় সরল। ওকে কেউ কেউ ঠাট্টা করে ‘অংপুরের ডাব’ বললেও মজনু মন খারাপ করে না। হে-হে করে হেসে উড়িয়ে দেয়। মমিনের সঙ্গে ছায়ার মতো লেগে থাকা সরল এই যোদ্ধা কখনো মন খারাপ করে না। সবাই বলে মজনু মিয়া কমান্ডারের বডিগার্ড। তাই শুনে মজনু মিয়া ভীষণ খুশি ও গর্বিত ভঙ্গিতে মাথা নাড়ে।
গামলার মুড়ি প্রায় শেষের দিকে। কাড়াকাড়িটা এই জন্যে বেশি বাড়ছে। হঠাৎ তাদের থমকে দিয়ে হৈচৈ চিৎকার চেঁচামেচি ভেসে আসছিল। একজন গ্রামের কৃষক দৌড়ে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, ‘মিলিটারি আসতেছে।’
মুহূর্তে পরিবেশ বদলে গেল। কিসের মুড়ি খাওয়া। ছুটে গিয়ে সবাই যার যার অস্ত্র হাতে নিয়ে কোমরে বেঁধে নিল গুলির ঝোলা। মমিন নিজের স্টেনগানটা কাঁধে ঝুলিয়ে চেঁচিয়ে উঠলেন, ‘কোম্পানি রেডি? ফলো মি।’
সবার আগে মমিনকে ফলো করল মজনু। বাকি যারা অন্য বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল তাদেরও খবর দেওয়া হলো দ্রুত।

গ্রামের পূর্বপাশ দিয়ে উচুঁ রাস্তা চলে গেছে শহরের দিকে। সেই রাস্তার আড়ালে গিয়ে সবাই পজিশন নিল। পাকআর্মি ওই পথ দিয়ে গ্রামে ঢুকবে। তার আগে তাদের গতিরোধ করতে হবে। খুবই শক্ত অ্যামবুশ করল তারা। সংখ্যায় তারা বেশি না হলেও পজিশনের কারণে তারা সুবিধেজনক অবস্থায় আছে।
চরা জুড়ে মানুষের ঢল। অনেকক্ষণ পজিশন নিয়ে আছে মুক্তিবাহিনীর দল। কয়েকজন ব্যক্তি ছুটতে ছুটতে আসছে। মমিন তাদের ডেকে থামিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘শুনলাম মিলিটারি আসছে। কোথায় তারা?’
তারা ছুটতে ছুটতে বলতে লাগল, ’মিলিটারির ট্রাক গেছেগা। কয়েকজন রাজাকার এইদিকে আসতাছে।’ বলতে বলতে লোকগুলো ছুটে চলে গেল। মমিন সবার কাছে খবর পাঠালো কেউ যেন ফায়ার না করে। রাজাকারদের আমরা ঘিরে ফেলব। ওদের আমরা অস্ত্রসহ ধরব।’ সবার কানে কানে খবর দিয়ে এল মজনু। সবাই রেডি হয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর দেখা গেল কয়েকজন রাজাকার কাঁধে রাইফেল উঁচিয়ে খোশ মেজাজে এইদিকে আসছে। কাছাকাছি আসতে আকস্মিকভাবে অস্ত্র উঁচিয়ে সবাই ছুটে এসে ‘হ্যান্ডসআপ’ বলে রাজাকারদের ঘিরে ফেলে। আকস্মিক মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে রাজাকাররা দিশেহারা হয়ে হাত উঁচিয়ে কাঁপতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে রাজাকারদের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে তাদের হাত পিঠমোড়া করে বেঁধে ফেলে। সঙ্গে চোখও। তারপর তাদের নিয়ে আসে আগের আস্তানায়।
বন্দি রাজাকারদের দেখতে গ্রামের মানুষ হামলে পড়ে। তারা যেন অদ্ভুত জন্তু দেখছে। কেউ কেউ লাঠি দিয়ে আঘাতও করছে। মমিন আদেশ দিলেন সবাইকে চলে যাওয়ার জন্য। কিন্তু লোকজন তাতে সরছে না। অবস্থা বেগতিক দেখে মমিন অস্ত্র উঁচিয়ে গ্রামবাসীকে ভয় দেখায়। তাতেও কাজ হয় না।
একজন দাড়িওলা রাজাকারের উপর সবারই ভীষণ ক্ষোভ। সে নাকি গ্রামের তিনজন হিন্দু মেয়েকে মিলিটারির হাতে তুলে দিয়েছে এবং দলবল নিয়ে সেই বাড়িগুলো লুট করেছে। লোকজন সেই দাড়িওলা রাজাকারকে মারতে মরিয়া।
বাড়ির মালিক মমিনের কাছে এসে বলল, ‘আপনারা রাজাকারদের কী করতে চান?’
মমিন বলল, ‘দলের সবার সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বাড়ির কর্তা এবার বললেন, ‘ওই দাড়িওলা রাজাকারকে আপনারা কঠিন শাস্তি দিবেন।’
‘কেন?’ মমিন বিস্ময়ে জিজ্ঞেস করে।
‘ওই বেটা অনেক অত্যাচার করছে আমাদের গাঁয়ে। তিনটি হিন্দু পরিবারকে নিঃস্ব করে দিছে। তাদের যুবতী মেয়েদের ধইরা মিলিটারি ক্যাম্পে নিয়া গেছে।’
এই কথায় মমিনের চোয়াল শক্ত হয়ে উঠল। অনেকক্ষণ সে কোনো কথা বলতে পারল না। বাড়ির কর্তা আবার জিজ্ঞেস করলে মমিন বলল, ‘আপনি বলুন কী শাস্তি দেওয়া যায়?’
বাড়ির কর্তা বললেন, ‘আমারে যদি কইতে কন তাইলে আমি কমু, ওরে জানে মাইরেন না। ওর চোখ দুইটা তুইলা দেন। সারাজীবন ভুইগা ভুইগা মরুক।’

খাওয়ার আয়োজন হয়ে গেছে। মিলিটারির আগমনের কথা শুনে পালিয়ে যাওয়া লোকজন আবার ফিরে এসেছে। খুব দ্রুততার সঙ্গে খাওয়া শেষ করল তারা। কারণ তাদের এখানে বেশিক্ষণ থাকা নিরাপদ না। বন্দি রাজাকারদের দেখতে মানুষের ঢল নামছে। ভয় দেখিয়েও তাদের সরানো যাচ্ছে না।

রাতে এক গ্রামে আশ্রয় নেওয়ার আগে রাজাকারদের ফয়সালা করা দরকার ভেবে সেকশন কমান্ডারদের নিয়ে শলাপরামর্শে বসল মমিন। বাড়ির কর্তার সেই ভয়ংকর কথাটা সে জুনিয়র কমান্ডারদের সামনে তুলে ধরল। সবাই ভয়ংকর উত্তেজিত হয়ে পড়ল দাড়িওলা রাজাকারের কর্মকাণ্ডে। তারা এক বাক্যে বাড়ির কর্তার সিদ্ধান্ত কার্যকর করার কথা ঘোষণা করল।
একজন বাধা দিয়ে বলল, ‘ও যেহেতু আমাদের মা-বোনদের মিলিটারির হাতে তুলে দিয়েছে তাই শাস্তি আরও কঠিন হওয়া উচিৎ।’
‘কেমন সে শাস্তি? ঝটপট বল।’
‘ওকে খোঁজা করা হোক। সঙ্গে দুহাত কেটে নুলা করা হোক।’
তাই করা হলো। বাকিদের লাশ নদীতে ভাসিয়ে দিয়ে তারা নদীর পানিতে হাতমুখ ধুয়ে সাফসুতের হয়ে বাড়তি অস্ত্রগুলো নিয়ে দূরের এক গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নিল।

চলবে...

এসএন

 

Header Ad
Header Ad

বিদ্যুৎ খাতে ১৫ বছরে ৭২ হাজার কোটি টাকার লুটপাট

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিদ্যুৎ খাতকে কেন্দ্র করে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দ্রুত সরবরাহ আইন (কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট আইন) প্রণয়ন করে দায়মুক্তি দেওয়ার মাধ্যমে এই খাতে লুটপাটের মডেল তৈরি হয়। গত ১৫ বছরে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনায় ঘুষ, কমিশন, এবং অপ্রয়োজনীয় সক্ষমতার কারণে জনগণের ওপর ৭২ হাজার কোটি টাকার বোঝা চাপানো হয়েছে।

২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৫,৭০০ মেগাওয়াট থেকে বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৩২,০০০ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে। এ সময়ে শতাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে বেশিরভাগ প্রকল্প দ্রুত সরবরাহ আইনের আওতায় অনুমোদন পাওয়ায় উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার সুযোগ বন্ধ ছিল।

বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে ৩০ থেকে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার দুর্নীতির মাধ্যমে লুট হয়েছে।

মহাপরিকল্পনায় ২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুতের চাহিদা ৩০,০০০ মেগাওয়াট ধরা হলেও, পরে এই লক্ষ্যমাত্রা ৪০,০০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়। চাহিদার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করায় অপ্রয়োজনীয় সক্ষমতা তৈরি হয়। এই অতিরিক্ত সক্ষমতার জন্য ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বাবদ প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার অপচয় হয়েছে।

বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেছেন, “উচ্চমাত্রার লক্ষ্য নির্ধারণ করে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এর ফলে জনগণের কাঁধে ভাড়া ও অন্যান্য ব্যয়ের বোঝা চেপেছে।”

শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্যে সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন নির্মাণ এবং মিটার কেনাকাটায় বিপুল অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। তবে এসব খাতে দুর্নীতির বিস্তারিত চিত্র এখনও স্পষ্ট নয়।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিদ্যুৎ খাতে এ ধরনের দুর্নীতি অর্থনীতিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সরকারের উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের ফলে জনগণকে অযৌক্তিকভাবে অতিরিক্ত ব্যয় বহন করতে হয়েছে।

প্রস্তাবিত সমাধান:

- বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি কমাতে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে প্রকল্প অনুমোদন।
- দায়মুক্তি আইন বাতিল করে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
- শ্বেতপত্রে বিস্তারিত তদন্তের মাধ্যমে দুর্নীতির চিত্র প্রকাশ।
- অপ্রয়োজনীয় সক্ষমতা বন্ধ এবং বিদ্যুতের চাহিদা অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ।

বিদ্যুৎ খাতের এই সংকট উত্তরণে জনসাধারণ, বিশেষজ্ঞ এবং গণমাধ্যমের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

Header Ad
Header Ad

সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় নাগরিক আটক

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে মো. নাজির উদ্দিন কার্তিক (২৫) আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে নওগাঁ ব্যাটালিয়নের (১৬ বিজিবি) বিজিবি সদস্যরা গোমস্তাপুর উপজেলার কেতাব বাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন।

আজ মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ১৬ বিজিবির গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো এক হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

নওগাঁ ব্যাটালিয়নের (১৬ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বাংগাবাড়ি বিজিবির নিয়মিত টহল দল মঙ্গলবার সকালে সীমান্ত পিলার ২০৪/এমপি হতে আনুমানিক ১ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যান্তরে কেতাব বাজার এলাকায় টহল পরিচালনা করছিলেন। টহল দেওয়ার সময় একজন ব্যক্তির গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে বিজিবির সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি অসংলগ্ন বক্তব্য দিতে থাকেন। পরে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি স্বীকার করেন তিনি ভারতীয় নাগরিক। ওই ব্যক্তির ভাষ্যমতে তাঁর নাম, নাজির উদ্দিন কার্তিক। তিনি ভারতের বিহার রাজ্যের কাঠিয়ার জেলার আবাদপুর থানার গাবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। তল্লাশী করে ওই ব্যক্তির কাছ ভারতীয় ১০ রুপি এবং বাংলাদেশী ২৫০ টাকা পাওয়া গেছে। তাঁর কাছ থেকে কোনো পাসপোর্ট বা বৈধ ডকুমেন্ট পাওয়া যায়নি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে আটক পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রম চলমান আছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Header Ad
Header Ad

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশি জানলেই হয়রানি

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় ভ্রমণ ও চিকিৎসার কাজে যাওয়া বাংলাদেশিরা সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক হয়রানির শিকার হচ্ছেন। চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এবং বিজেপি সমর্থকদের লংমার্চ কর্মসূচি ঘিরে এই হয়রানির মাত্রা বেড়ে গেছে।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) থেকে আগরতলায় হোটেল ভাড়া না পেয়ে বাংলাদেশি পর্যটকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার বাসিন্দা ফরিদ মিয়া জানান, হোটেল ভাড়া নেওয়ার পর মুসলিম এবং বাংলাদেশি হওয়ায় তাকে এক ঘণ্টার মধ্যেই হোটেল থেকে বের করে দেওয়া হয়। টাকা ফেরত না পেয়ে তিনি বাধ্য হয়ে শহরের বাইরে আত্মীয়ের বাড়িতে রাত কাটান এবং পরদিন দেশে ফিরে আসেন।

আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টে বাঁশের বেড়া দিয়ে চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সীমান্ত পারাপারের সময় বাংলাদেশিদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করা হচ্ছে। আখাউড়া স্থলবন্দরে ফিরে আসা যাত্রীরা জানিয়েছেন, সীমান্তে বাংলাদেশিদের হুমকি ও হয়রানির মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান শিলচরে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ারে জামদানি শাড়ির একটি স্টল দিয়েছিলেন। সেখানে একদল যুবক "জয় শ্রী রাম" স্লোগান দিয়ে তার দোকানে হামলা চালায়। হামলাকারীরা দোকান ভাঙচুর করে এবং সমস্ত টাকা-পয়সা লুটপাট করে নিয়ে যায়।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি অতিরিক্ত সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। বিজিবি ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল জাবের বিন জব্বার জানিয়েছেন, সীমান্তে কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশিরা এমন হয়রানি ও বৈষম্যমূলক আচরণের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে এর সমাধানের জন্য দুই দেশের সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা নিরসনে কূটনৈতিক পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিদ্যুৎ খাতে ১৫ বছরে ৭২ হাজার কোটি টাকার লুটপাট
সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় নাগরিক আটক
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশি জানলেই হয়রানি
প্রতিবেশী রাষ্ট্রের গোলামি করতে স্বাধীনতা অর্জন করিনি: সোহেল তাজ
মাইক্রোসফটের সমীক্ষায় ভুয়া খবর ছড়ানোর শীর্ষে ভারত
আগরতলার বাংলাদেশ হাইকমিশনে কনস্যুলার সেবা বন্ধ
একটি ইস্যু দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক মূল্যায়ন করা যাবে না : ভারতীয় হাইকমিশনার
জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ
শান্তিরক্ষী বাহিনীর ভূমিকা মমতা বোঝেন কিনা, নিশ্চিত নই: শশী থারুর
যমুনার চর কেটে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ
২০২৩ সালে সর্বোচ্চ দুর্নীতি পাসপোর্ট, বিআরটিএ ও আইনশৃঙ্খলায়
শেখ হাসিনার পতন কোনোভাবেই মানতে পারছেন না ভারত : রিজভী
ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে জরুরি তলব
সেনাবাহিনীর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, এসএসসি পাসেই আবেদনের সুযোগ
এস আলম পরিবারের ৩৫০ ব্যাংক হিসাবের সন্ধান
২৮ বিয়ে প্রসঙ্গে যা বললেন নায়িকা রোমানা
বাংলাদেশিদের সেবা দেবে না ত্রিপুরার কোনো হোটেল–রেস্তোরাঁ
ভারত সফরে আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন
‘বাংলাদেশি কনস্যুলেটে হামলা প্রতিবেশীদের মধ্যে বিবাদের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে’
বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলায় ৩ পুলিশ বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ৭