সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৯

স্নানের শব্দ

অফিস আগেরটাই শুধু শবনমের বসার কক্ষটি পাল্টে গেছে। এই কক্ষে আগেও এসেছে সে, অধস্তন কর্মী হিসেবে মিটিং করতে। এখন এই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিশালায়তনের সুসজ্জিত কক্ষের অধিকর্তা সে-ই। একপাশে একটা স্মার্ট সুন্দর সেক্রেটারিয়েট টেবিল আর বসার জন্য আরামদায়ক রিভলভিং চেয়ার, সামনে দর্শনার্থীদের বসার উপযোগী হাল্কা নীল রঙের নরম সোফা সেট, দেয়াল জোড়া নান্দনিক বুকশেলফ, ফাইল ক্যাবিনেট, কক্ষের শেষ প্রান্তে কনফারেন্স টেবিল চেয়ার।

এখানে সেখানে চোখের শান্তি দিতে লাল রঙের মাটির টবে ভর করে দাঁড়িয়ে আছে সবুজ সজীব ইনডোর প্ল্যান্ট।

জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়ায় শবনম, পর্দা সরিয়ে নিচে তাকায়। এই জানালাটি রাস্তার দিকে মুখ করা, পিলপিল করে চলা সারি সারি গাড়ি ছাড়া এখান থেকে আর অন্য কিছু চোখে পড়ে না। সেই যে দুই দালানের মাঝখানে বেড়ে ওঠা কষ্টসহিষ্ণু নিমগাছটি, সে এখন হারিয়ে গেছে দৃশ্যপট থেকে। অবশ্য অভিনন্দন বার্তা আর কাজের চাপে তার প্রিয় রুগ্ন নিমগাছের জন্য শোক করার অবসর পায় না শবনম।

সারাদিন মিটিংয়ে পর মিটিং চলতেই থাকে। এই ইউনিট শেষ হয় তো আরেক ইউনিটের মিটিং শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী লম্বা লম্বা ক্লান্তিকর মিটিং চলে। শবনমের প্রায়ই মনে হয়, এ সব মিটিং আধাঘণ্টা এমনকি ১৫ মিনিটেও শেষ করে ফেলা সম্ভব যদি কিনা সবাই টু দ্য পয়েন্টে কথা বলে। সংক্ষেপে মতামত দেয়। কিন্তু শবনম দেখেছে, বেশির ভাগ মানুষই অপ্রাসঙ্গিক আর অপ্রয়োজনীয় কথা বলে টেনে টেনে মিটিং লম্বা করে ফেলে। বয়স্করা শুরু করেন নাইনটিন সিক্সটি সেভেন থেকে, বর্তমান কালে আসতে তাদের ঘণ্টা পার হওয়ার উপক্রম হয়। শবনম অবশ্য কঠোরভাবে বলে দিয়েছে, মিটিংয়ের এজেন্ডার বাইরে বাড়তি কথা বলা যাবে না। তবুও মাঝে মাঝে তাদের ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়ে।

সারাদিনে শবনমের কিছু সময় যায় জনসংযোগ করতে, বড় বড় ক্লায়েন্টদের সঙ্গে সম্পর্ক আপডেট রাখতে হয় সবসময়। অফিসের ভেতরকার সমস্যাগুলোও মিটাতে হয়। খেয়াল রাখতে হয় বেচাকেনার। চোখে দেখা যায় না কিন্তু তার কাজের চাপ মোটেও কম না। দিনটা যে কীভাবে ফুড়ুৎ করে কেটে যায়, টের পায় না শবনম। অবশ্য ব্যস্ততা তার ভালই লাগে। হয়ত এরই মধ্যে নেতৃত্বের আনন্দ ও আধিপত্য উপভোগ করতে শুরু করেছে সে। তা ছাড়া কাজের মধ্যে ডুবে থেকে নিজেকে চারপাশের ক্ষুদ্রতা, হীনতা, দীনতা থেকে মুক্ত রাখাও একটা অর্জন। তবে একেক সময় এটাও মনে হয় যে, বেশি ব্যস্ত থাকতে গিয়ে নিজেকে আবার একা করে ফেলছে কিনা?

সেই অর্থে শবনম তো আসলে একাই। প্রতিটি মানুষই একা। দাদী বলতো, একা এসেছ ভবে, একা পুনঃ যেতে হবে। তা ছাড়া, প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ চূড়ায় শুধু একজনই দাঁড়াতে পারে, দুজন নয়। এই একাকীত্ব সে প্রশান্ত চিত্তে মেনে নিয়েছে। একাকীত্বকে সে বরং উপভোগই করে। একা থাকার মুহূর্তগুলোতে কাজে লাগায় আত্মবিশ্লেষণ করে, নিজের সারাদিনের কাজকর্ম, কাজের ভাল দিক মন্দ দিকগুলিকে উল্টেপাল্টে দেখে। বড় ধরনের সিদ্ধান্তগুলি ভুল না শুদ্ধ হলো সেসব নিয়ে ভাবে।
তারেক আর শ্রাবণও তাদের নিজস্ব স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে একাকীত্বকে গ্রহণ করে নিয়েছে। তারেক ধর্ম কর্মে মন দিয়েছে। মসজিদে অনেকটা সময় কাটে তার। পাশাপাশি প্রবল উৎসাহে টিভিতে ক্রিকেট ম্যাচ বা ফুটবল খেলা দেখে সে। খেলা না থাকলে বিদেশি মুভি বিশেষ করে বিচিত্র বিষয়ের উপর নির্মিত ডকুমেন্টারিগুলো দেখে তার সময় কেটে যায়।

শ্রাবণ আছে তার পড়া লেখা আর বন্ধুবান্ধব নিয়ে। ইদানিং মাথায় ঢুকেছে বিদেশের কোনো ভাল ইউনিভার্সিটিতে পড়তে যেতে হবে। তাই মেতে আছে স্যাট, টোফেল, আইএলটিএস নিয়ে। পরীক্ষা দেয়, কোচিং করে, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা মারে। সব মিলিয়ে মন্দ কাটে না তার সময়। শবনমের মনে হয়, তারা তিনজন যেন পাশাপাশি তিনটা আলাদা দ্বীপ, যে যার মতো নিজস্ব জগত নির্মাণ করে সেই জগতের ভেতর ডুবে আছে। অবশ্য মাঝে মাঝে তারা একে অন্যের সান্নিধ্য যে কামনা করে না তা নয়, তবে সেটাও খুবই সীমিত পর্যায়ে। তখন হয়ত তিনজন মিলে দামী কোনো রেস্টুরেন্টে খেতে যায়। নয়তো এক দুদিনের জন্য কোনো বিলাসবহুল রিসোর্টে গিয়ে ওঠে। শ্রাবণের সঙ্গে তারেকের হরদম কথা চলতেই থাকে, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাপ বেটি তুমুল তর্ক করে, কোনো বিষয়ের পক্ষে বিপক্ষে জোরালো মতামত দেয়, শবনম দেখে, শোনে, মুদু হাসে, কখনো মাথা নাড়ে কিন্তু ওই আলোচনায় অংশ নেয় না। তার চুপ করে থাকতেই ভাল লাগে। যেন মনের মধ্যে ডুব দিয়ে লুকানো মণি মুক্তা খুঁজতেই তার আনন্দ।

শ্রাবণ কখনো কখনো বলে— ‘মা তুমি যে একজন মহা প্রতাপশালী সিইও, অফিসের বাইরে সেটা একদম বোঝাই যায় না। কেমন সাধারণ হয়ে থাকো।’

‘নিজের লোকের সামনে তো আমি সাধারণই থাকতে চাই। কেনো তোর খারাপ লাগে?’
‘নাহ্, ভালই লাগে তো..’
শ্রাবণ মাকে জড়িয়ে ধরে বলে। তারপর চোখ বড় করে প্রশ্ন করে,
‘আচ্ছা,মা, অফিসে কী তুমি অনেক কড়া বস? তোমার অফিসের লোকেরা তোমাকে ভয় পায়? মানুষজনকে ধমকের উপর রাখো?’

শবনম হাসে, ‘যারা ঠিকঠাকমতো কাজ করে না, তাদের একটু আধটু ধমক তো দিতেই হয়! সবাই যেন ঠিকমত কাজ করে সেটা খেয়াল করাও তো আমার দায়িত্ব।’
‘আমার বন্ধুরা বলে তোর মা তো অনেক জোস, কত বড় পোস্টে চাকরি করে .. শুনে কিন্তু আমার ভালই লাগে।’
শ্রাবণ লাজুক গলায় বলে। ওর চুল এখন দ্রুত লম্বা হচ্ছে, ফলে উপরের দিকে কালো চুল গজিয়েছে আর রঙীন চুলগুলো নেমে এসেছে নিচের দিকে। ঘাড় কাৎ করে শবনমকে সেই চুল দেখায় শ্রাবণ। ‘দেখছো মা, আস্তে আস্তে চুলের কালার আবার আগের মত হয়ে যাচ্ছে। আর রং করব না। তুমি খুশি?’
‘তুই খুশি থাকলেই আমি খুশি।’
মুখ দিয়ে এই বাক্যটা বের হবার পর শবনম ভাবলো, কবে থেকে এমন হলো যে তার খুশি, মেয়ের খুশি আর আনন্দের সঙ্গে জড়িয়ে গেল!
বিড়াল লীলাবতীকে কোলে নিয়ে আদর করতে করতে শবনমের মতো ভঙ্গী করে শ্রাবণ বললো, ‘লীলা খুশি থাকলে আমিও খুশি।’

দুদিন আগে বনানীর একটা দোকানে নিয়ে মেশিন দিয়ে লীলাবতীর লম্বা ঘন লোম কাটিয়ে আনা হয়েছে। লোম হারিয়ে তার ছোট গোল মুখে বিষণ্নতার ছাপ। বিড়ালও যে বিষণ্ন হয়, আগে জানা ছিল না শবনমের। শ্রাবণ অবশ্য তাকে জাপ্টে ধরে আদর করে তার প্রিয় ক্যাট ফুড খাইয়ে চিয়ার আপ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারেক নিয়ে এসেছে বিড়ালের প্রিয় খেলনা, লাল বল। কিন্তু লীলাবতী ওদের খুব একটা পাত্তা দিচ্ছে না। সে শ্রাবণের বাহুমুক্ত হয়ে ধীরপায়ে হেঁটে একটা ছোট্ট লাফ দিয়ে সোফায় উঠে আয়েশ করে রাজকীয় ভঙ্গীতে এক কোণায় গ্যাট হয়ে শুয়ে রইল।

চলবে…
আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>
স্নানের শব্দ: পর্ব-১৮

Header Ad
Header Ad

বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!

ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের অ্যাকশনধর্মী সিনেমায় ভারতীয় সেনারা সবসময়ই বিজয়ী। কখনো পাকিস্তানি ঘাঁটি ধ্বংস, কখনো আফগানিস্তানে অভিযান—সবখানেই তারা অবিশ্বাস্য দক্ষতায় জয়ী। তবে বাস্তবতা যে এতটা সহজ নয়, তা কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলায় আবারও স্পষ্ট হলো।

এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৬ জন। অথচ হামলা ঠেকাতে বা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি ভারতীয় সেনারা। হামলার জন্য কোনো পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার চেষ্টা করছে তারা। ঘটনাটির রেশে সীমান্তে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, ভারী অস্ত্রসহ মোতায়েন করা হয়েছে সেনা, মাঝেমধ্যেই হচ্ছে গোলাগুলি।

নেটিজেনরা বলিউড সিনেমার বাহাদুর সেনাদের সঙ্গে বাস্তবের ব্যর্থ ভারতীয় সেনাদের তুলনা করে রীতিমতো ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছে। সিনেমার মতো বাস্তবে অজয় দেবগান বা অক্ষয় কুমারের মতো নায়কোচিত সেনা যে নেই, তা এখন স্পষ্ট।

কেবল স্থলবাহিনী নয়, বিমানবাহিনীর ব্যর্থতাও হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে। কাশ্মীর হামলার পর পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী ভুল করে নিজের দেশের একটি বাড়ির ওপর হামলা চালায়। এই ঘটনার ভিডিও ও প্রতিবেদন সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারতীয় বাহিনী।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হামলার পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় সেনারা যথাসময়ে পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার ২০ মিনিট পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখন হামলাকারীরা নিরাপদে পালিয়ে যায়।

২০১৯ সালের ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় মিগ-২১ নিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়া ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানের ঘটনাও আবার আলোচনায় এসেছে। সেবার তার বিমান ভূপাতিত হয় এবং তাকে আটক করে পাকিস্তান পরে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

নেটিজেনরা বলছেন, বলিউডের সিনেমার কল্প-কাহিনীর সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। যুদ্ধ লাগলে তা হবে সমান শক্তির লড়াই, সিনেমার মতো একপাক্ষিক নয়। অধিকাংশই আবার যুদ্ধের বিপক্ষে মত দিয়েছেন, মানবিক বিপর্যয়ের ভয় দেখিয়ে শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

বলিউডের রঙিন পর্দায় ভারতীয় সেনারা 'অপরাজেয়' হলেও বাস্তবে কাশ্মীর হামলার ব্যর্থতা প্রমাণ করেছে, বাস্তব যুদ্ধ সিনেমার গল্পের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন এবং অপ্রত্যাশিত।

Header Ad
Header Ad

কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লায় বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে বরুড়া ও মুরাদনগরে পৃথক দুইটি ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়।

জানাযায়, কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগাছা গ্রামে সোমবার দুপুরে বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। মৃত দুইজন বড়হরিপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল। মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন পয়ালগছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান বিপ্লব।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে হালকা মেঘের মধ্যে শিশুরা মাঠে ঘুড়ি উড়াতে ব্যস্ত ছিল। হঠাৎ বজ্রপাত হলে দুই ছাত্র মারাত্মকভাবে আহত হয়। স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত্যু ঘোষণা করেন। নিহত কিশোর দুজন হলেন পয়ালগাছা গ্রামের মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন(১৩) এবং আব্দুল বারেক মিয়ার নাতি সায়মন হোসেন (১৩)।

বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান বলেন, বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগাছা গ্রামে দু স্কুল ছাত্র নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে একজন। হাসপাতাল থেকে নিহত দুজনের লাশ স্বজনরা বাড়িয়ে নিয়ে যান।

অপরদিকে কুমিল্লার মুরাদনগরে জমির ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার সকালে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর গ্রামের মৃত বীরচরন দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ (৬৪) ও আন্দিকুট ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের জসীম উদ্দীন ভুইয়ার ছেলে জুয়েল ভুঁইয়া (৩০)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত নিখিল দেবনাথ ও জুয়েল ভূঁইয়া কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে পাশাপাশি জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতের শিকার হয়। পরে তাদেরকে আশেপাশের লোকজন এসে উদ্ধার করে দেখে তারা ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। বর্তমানে দুজনের মরদেহ নিজ নিজ বাড়িতে আছে।

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে মুঠোফোনে তারা ঘটনাটি জানতে পারেন। এ ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

Header Ad
Header Ad

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে গণহত্যার মামলায় আগামী মাসের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে-আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এ কথা বলেন তিনি।
আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে ফের জানিয়েছেন তিনি

এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু মানবিক সহায়তা নয়, নিরাপদ প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে?

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন,
এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে–তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এ আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান,
তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তার জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা