রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

নয়নের জল নয়নে শুকায়

সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেবার আর কয়েক মাস বাকী। নির্ঝঞ্ঝাটের মধ্যে অবশিষ্ট দিনগুলি কাটিয়ে দিতে চাইছেন অ্যাডভোকেট আফসার খান। এমন সময়ে ইংল্যান্ডের একটি আন্তর্জাতিক ‘ল’ সোসাইটি’ তাকে সাদর আমন্ত্রণ জানিয়েছে তাদের বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নেওয়ার জন্য। ইংল্যান্ড দেশটি মিস্টার খানের কাছে নুতন কোনো দেশ না। জীবনের সোনালী দিনগুলি সেখানেই তিনি কাটিয়ে দিয়েছেন। সরকারি কাজেও তাকে সেখানে কয়েকবার যাওয়া-আসা করতে হয়েছে। তাই আমন্ত্রণ পত্রখানা পাওয়ার পর হৃদয় কম্পিত হওয়ার মতো কিছুই হয়ে উঠেনি। তা ছাড়া, এই বুড়ো বয়সে আগের মতো কোথাও যাওয়া আসার ব্যাপারে সে রকম রোমাঞ্চ অনুভব করেন না।

ছেলেগুলি মানুষ হয়েছে, সবাই নিজেদের জীবনের বাছাই করা পেশায় প্রতিষ্ঠিত। আশ্চর্যের বিষয়, ছেলেদের মাঝে কাউকেই আইনজীবির পেশায় রাজী করাতে পারেননি। তাদের সবার সেই একই কথা, ‘আইনজীবিরা ধোকাবাজ ,আইনের কলাকৌশলে দোষী আসামীকে নির্দোষ প্রমান করাই তাদের কাজ। সুতরাং আমরা এই পেশার ধারে কাছে যেতে চাই না’। কিন্তু মিস্টার খান ছেলেদেরকে কিছুতেই বোঝাতে পারলেন না যে, নির্দোষ আসামীকে কাঠগড়া থেকে বাঁচিয়ে আনাটা একজন আইনজীবির কাছে কতবড় তৃপ্তিদায়ক তা একমাত্র ওই মামলায় সংযুক্ত আইনজীবি ছাড়া অন্য কেউ উপভোগ করতে পারবে না। মিস্টার খান কখনো কখনো ভাবেন ,যদি তার পাঁচ ছেলের মধ্যে একটি মেয়ে থাকতো তাহলে হয়তোবা উনার কথামতো সে আইনজীবি পেশায় লিপ্ত হতে পারত।

আজ ও মনে পরে এইতো সেদিন, তিন তিনটে ছেলে হবার পর মিস্টার খান ভাবলেন, ‘আর নয় ,এখানেই শেষ। মেয়ে মেয়ে করে বাংলাদেশে আর জনসংখ্যা বাড়াতে চাই না।’ বন্ধুরা বলাবলি করত,’ তোরা তো আধুনিক শিক্ষিত দম্পতি, তোদের তো দুটির বেশী সন্তান হবার কথা নয়। তোরাই যদি জন্ম নিয়ন্ত্রণ না করিস, তাহলে সাধারণ মানুষদের দোষ দিয়ে লাভ কী ?’, তাইতো, মিস্টার খান ভাবেন ,অনেক পরিবারে একটি ছেলের জন্য রাতের ঘুম নষ্ট হয়ে যায়, এদিকে একটি মেয়ের জন্য তাদের নিয়মিত ঘুমের ব্যাঘাত হতে চলল। অবশেষে শেষ চেষ্টা করা হলো। তখনকার দিনে Pregnency scan করার মতো তেমন সুযোগ ছিল না অর্থাৎ ছেলে কি মেয়ে হবে সেটা জানাটা এখনকার মতো এত সহজ ছিল না। তাইতো মাদ্রাজের এক নামকরা মেটার্নিটি ক্লিনিকে বসে তিনি ভাবছিলেন, এবার যেন তাদের একটা মেয়ে হয়। কিন্তু বিধির বিধান, কে খণ্ডাবে? কিছুক্ষন পর ওয়েটিং রুমে এসে যখন তামিল নার্স তাকে জানালেন, ‘Congratulation Mr Khan I have got a good news for you , you have a twin and both Mother and babies are doing well, পরক্ষনেই খান সাহেব ,ব্যগ্রচিত্তে নার্সকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘যমজ বাচ্চারা ছেলে না মেয়ে?’ নার্স সুন্দর একটা হাসি দিয়ে জানালো, ‘I am glad to say, both are boys’। খান সাহেব কথাটি শুনে তো অবাক, নার্স বলে কি , দুটোই ছেলে! কথাটা শুনে হতাশায় মিস্টার খানের মনটা ভেঙে গেল। হায় খোদা, ‘মানুষ যা চায় তা পায় না, সে জন্যই বুঝি নিয়তির কাছে মানুষ যুগ যুগ ধরে পরাজয় স্বীকার করে আসছে’।

জুনিয়র উকিলের ডাকে মিস্টার খানের ধ্যান ভাঙল। ‘স্যার, কী ভাবছিলেন ? কিছুক্ষণ নীরব থাকার পর তিনি উত্তর দিলেন, ‘ভাবছিলাম কি, তোমাদের মাঝখান থেকে আমার হয়ে কেউ ওই সম্মেলন থেকে ঘুরে এসো । এই বুড়ো বয়সে আর কোথাও যেতে ইচ্ছে করছে না। তোমাদের মতো প্রতিভাবান ছেলেদের অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের জন্য এ ধরনের সম্মেলনে যোগদান করা দরকার’। সমবেত কণ্ঠে রুম থেকে সে এক কথা, ‘স্যার, আপনাকেই যেতে হবে ,যদিও আপনি খুব শিগগিরই অবসর নিচ্ছেন, তবু ও আপনার মতো বিচক্ষণ কৌসলীর আমাদের বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করা একান্ত দরকার’। কলিগ আজম সাহেব কিছুটা জোর দিয়ে বলল’ স্যার,পৃথিবীর বিখ্যাত আইনবিদগণ ওখানে আসবেন, পান্ডিত্য দেখাবেন, সেক্ষেত্রে আমরা আপনাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে ভাবতেই পারি না’। মিস্টার খান একান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বে সম্মলনে যোগদান করতে রাজী হলেন।

ইংল্যান্ডের ছোট্ট শহর চেমসফোর্ড। এই শহরই একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সম্মেলনটির আয়োজন করা হয়েছে। শহরটি লন্ডন নগরী থেকে ২৫/৩০ মাইল দূরে। প্রাকৃতিক শোভায় সম্মৃদ্ধ। সুন্দর পরিছন্ন শহর। বিরাট আয়োজন। সম্মেলন তিন দিন ধরে চলবে। পৃথিবীর দূর-দূরান্ত থেকে ঝানু আইনবিদদের উপস্তিতি। ফটকে করা প্রহরী। সকালের কফি শেষে সম্মেলন শুরু হবার কথা। ক্যাফেটেরিয়ার একটি টেবিলে বসে মিস্টার খান গরম কফি পেয়ালায় চুমুক দিয়ে যাচ্ছিলেন। ঠিক সেই সময় ৯/১০ হাত দূরে অবস্থিত অন্য একটা টেবিলে বসে ২৯ /৩০ বছরের এক যুবতী মেয়ে উনার নেমপ্লেটের দিকে বার বার লক্ষ্য করছিলো। নেমপ্লেটে ইংরাজীতে লেখা ,"মিস্টার আফসার খান , পাবলিক প্রসিকিউটর , বাংলাদেশ "। এত লোক থাকতে এই ভিন দেশের
সুন্দরী যুবতী মিস্টার খানের মত একটা বুড়ো লোককে এভাবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে ,ব্যপারটা উনার কাছে অস্বাভাবিক মনে হচ্ছিলো। কৌতূহলবশত মিস্টার খান যুবতীর নেম প্লেটের দিকে লক্ষ্য করলো ,তাতে লেখা ,Ulrika Khan , Bar -at -Law ,Sweden।

সুইডেনের মেয়ে ব্যারিস্টার, আর পদবী’ খান, তাজ্জব ব্যাপার তো ! শেষের নাম খানা আবার ভালো করে দেখলেন, Kahn (ইহুদি নাম) নয়, KHAN ই (ইসলামিক নাম) লেখা রয়েছে। বানানের কোনো ভুল নেই। রহস্য আরও ঘনীভূত হয়ে উঠল। পরিচিত হতে আগ্রহী হয়ে উঠলেন। কিন্তু বেশী বেগ পেতে হলো না। যুবতীটি নিজেই চলে আসলো মিস্টার খানের টেবিলের কাছে শূন্য চেয়ারটাতে। সে মিস্টার খানের পাশের চেয়ারটাতে বসতে বসতে নির্ভুল ইংরেজিতে বলল, ‘Mr Khan , I can see you are from Bangladesh and what a coincidence , your surname and my surname is same.’ মিস্টার খান ইংরেজিতে উত্তর দিলেন, ‘হ্যাঁ, তাইতো দেখছি’। মিস উলরিক খান বলল, ‘আমি বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে অনেক আগ্রহী’।

মিস্টার খান একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমাদের মত উন্নত ধনবান দেশের শিক্ষিতা মহিলা আমাদের মতো দরিদ্র দেশ সম্পর্কে জানার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছ জেনে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করলাম। কিন্তু তবুও আমার কেমন যেন বিশ্বাস হচ্ছে না, সত্যিই তুমি বাংলাদেশ সমন্ধে জানতে আগ্রহ কি না। উলরিকা বোধদয় মিস্টার খানের কথায় কিছুটা হোঁচট খেল। তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে বলল, ‘মিস্টার খান বাংলাদেশ সম্পর্কে গভীরভাবে জানার আমার একটা বিশেষ কারণ আছে’। মিস্টার খান পরক্ষনেই জিজ্ঞাসা করলেন ‘সে কারণটা কি হতে পারে তা কি আমি জানতে পারি ?’ কথাটি বলার সঙ্গে সঙ্গে মিস্টার খান দেখতে পেলেন উলরিকার সুন্দর দু চোখে জল ছল ছল করছে। ম্লান হেসে উলরিকা বললো, ‘ওই সামনের বারে (bar) আজ সন্ধ্যায় আমি আপনার সঙ্গে দেখা করতে চাই’। মিস্টার খান মৃদু হেসে জানালেন, ‘আমি তো অ্যালকোহোল জাতীয় পানীয় পান করি না’। উলরিকা সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠল। সে আমি জানি ,কারণ বাংলাদেশের বেশির ভাগ লোকই মাদক দ্রব্য পান করে না, তা ছাড়া আমি নিজেও মাদক দ্রব্য পান করি না’।

উলরিকা মিস্টার খানকে ভরসা দিয়ে বলল, ‘আমরা দুজনেই অরেঞ্জ জুস খাব আর বাংলাদেশ সমন্ধে গল্প করব’। পরস্পরে বিদায় নেবার আগে উলরিকা হঠাৎকরে বলে উঠল, ‘বাংলাদেশের
সঙ্গে আমার নাড়ীর সম্পর্ক রয়েছে, তাই আপনার সঙ্গে আমার আলাপ করা একান্ত দরকার। আশাকরি আজ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ওই বারে (bar) আপনার সাক্ষাৎ পাব’। তারপর তখনকার মতো দুজনে দুজনার কাছ থেকে বিদায় নিল।

বিদেশিদের সত্যিই সময় জ্ঞানের প্রশংসা করতে হয়। ঠিক সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় উলরিকা নির্ধারিত জায়গায় এসে উপস্থিত। মিস্টার খানেরই বরং ১০/১২ মিনিট দেরী হয়ে গেল। শরৎকাল আসি আসি করছিল। পড়ন্ত বিকেলে পরিষ্কার আকাশটা নীল আভায় ভরপুর ছিল। এক কথায় আবহাওয়া এবং পরিবেশ মিলে সময়টা অত্যন্ত মনোরম ছিল। বয়োজ্যেষ্ঠ হিসেবে মিস্টার খান প্রথমে দু গ্লাস অরেঞ্জ জুসের অর্ডার দিয়ে একটা খালি টেবিলে দুজনে মুখোমুখি বসে পড়ে। তারপর কোনো ভূমিকা ছাড়াই উলরিকা শুরু করলো ওর জীবনের না বলা কাহিনী।’ বাংলাদেশ থেকে আমি কি চাই আর কি পাইনি তা আজ আমি বলতে চাইছি না। শুধু এক পিতাহারা এক মেয়ের করুন কাহিনী আজ আপনাকে বলতে এসেছি। আমার মা জুডিথ জেনসেন (খান ) সুইডেনের হেলসিংবেরির মেয়ে। পেশায় ইংরেজির শিক্ষীকা। উনার বরাবরই ইংলান্ডের প্রতি আকর্ষণ ছিল। তাই প্রথম যৌবনেই ইংরেজি ভাষাকে আরও চৌকশ এবং ইংরেজদের ঐতিহাসিক দর্শনীয়গুলো নিজের চোখে দেখার জন্য লন্ডনে চলে আসেন। সে সময় বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের মিলনক্ষেত্র ছিল লন্ডনের পোর্টল্যান্ডে অবস্থিত ব্রিটিশ কাউন্সিলে। ভবিষৎ স্বামীর সঙ্গে ওখানেই পরিচয় হয় আমার মার । উনার নাম ও আফসার খান। বাঙালি ছেলে, তবে পাকিস্তান থেকে এসেছিলেন, কারণ তখন ও বাংলাদেশের জন্ম হয়নি। আপনার নাম এবং বাংলাদেশ থেকে এসেছেন দেখে মরিয়া হয়ে আপনার সঙ্গে আলাপ করার আগ্রহ চেপে বসে আমাকে, তারই সুযোগ খুঁজছিলাম। ভাগ্য ভালোই বলতে হবে, আপনার সঙ্গে পরিচয় হয়ে গেল। বলতে পারেন মনোস কামনা পূর্ণ হলো। উলরিকা তার কথায় কিছুক্ষন বিরতি নিল। কয়েক ঢোক অরেঞ্জ জুস পান করে তার কথা আবার শুরু করল, ‘মিস্টার খান,আমি জানি খান পদবী বাংলাদেশে-ইংল্যান্ডের স্মিথ পদবীর মতো পথে-ঘাটে ছড়িয়ে আছে।

তবুও ভাবলাম, বাংলাদেশ থেকে যখন এসেছেন তখন আপনার কাছে আমার আরজিখানা পেশ করতে পারব। আমার একান্ত অনুরোধ, ঘটনাক্রমে যদি বাংলাদেশে কখনো কোনো ‘বার’ অ্যাসোসিয়েশনে আমার বাবার সঙ্গে দেখা হয়ে যায়, তাহলে তাকে জানাবেন, তার মেয়ে উলরিক খান সেই সুদূর সুইডেনে বসে প্রতি রাতে ঘুমোবার আগে তার জন্য অশ্রু ঝরায়। তার যে একান্ত ইচ্ছে ছিল ব্যারিস্টার হবার, যা সে হতে পারেনি। তার মেয়ে ব্যারিস্টার হয়েছে। শুধু এই কষ্টটুকু আমার জন্য করবেন। তার প্রতি আমার কোনো ক্ষোভ নেই’।

তারপর উলরিকা তার হাত ব্যাগ থেকে কয়েক দশকের এক পুরোনো ছবি বের করে মিস্টার খানের সামনে ধরল এবং সঙ্গে সঙ্গে জানাল, ‘এটা আমার বাবার ছবি এবং ছবিখানা আমি সব সময়ই আমার কাছে রাখি, আর আমি ভাবি আমার বাবা আমার সঙ্গেই আছেন। ছবিখানা দেখেই মিস্টার খানের মাথা চরকগাছ !! উনার মাথাটা যেন দুলতে শুরু করল, মনে হলো এখনই বুঝি মাটিতে পড়ে যাবেন। কিন্তু তা হলো না, শুধু দুচোখ বেয়ে অশ্র্রু গড়িয়ে পড়ল। মিস্টার খান নিশ্চিত হলেন, তা হলে উলরিকা তারই মেয়ে। জীবনে তিনি যা হতে পারেননি, উলরিকা তার সেই ব্যারিস্টার হওয়ার সাধ পূরণ করেছে। তিনি কি এখন বলতে পারেন, ‘আমি তোমার সে হারিয়ে যাওয়া বাবা ,আর তুমিই আমার মেয়ে’। নিজেকে অপরাধী ভেবে সে কথাটি বলার আর সাহস হলো না। আজ বয়সের ভার আর দাড়ির আড়ালে উলরিকা উনাকে চিনতে পারছে না। উলরিকা যে ছবিখানা মিস্টার খানকে দেখালো সেটা তোলা হয়েছিল লন্ডন ইউনিভার্সিটি থেকে ‘ল’ পাশ করার পর কনভোকেশনের দিনে। সঙ্গে ছিল উলরিকার মা। তারপর কত স্বপ্ন দেখেছেন জুডিথ জেনসেনকে অথাৎ উলরিকার মাকে নিয়ে। যথা সময়ে মিস জেনসেনকে বিয়ে করে ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য ভর্তিও হয়েছিলেন। এমন সময় দেশ থেকে আর্জেন্ট চিঠি এলো, মা গুরুতর অসুস্থ। কোনো উপায় না দেখে জুডিথকে লন্ডনে রেখেই দেশের উদ্দেশে পাড়ি দিলেন। দেশে পৌঁছে যা দেখলেন ,তা অন্যরূপ। মায়ের শরীর খারাপ, ওটা একটা উছিলা ছিল। আসলে উনাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য এভাবে ডাকা হয়েছে। তা না হলে উনি হয়তো দেশে এভাবে ফিরতেন না। পরিবেশের চাপে পড়ে মিস্টার খানের বিয়ে হয়ে গেল, আর এভাবেই উনার জীবন থেকে জুডিথ ও হারিয়ে গেল। বিলেতে আর ফেরা হলো না।

উলরিকার ডাকে মিস্টার খানের অন্যমনস্কতা ভেঙে গেল, সে একটু উদ্বিগ্ন চিত্তে বলল, ‘মিস্টার খান, আপনার চোখে জল যে’। কথা চাপা দেবার জন্য তিনি বললেন, ‘বুড়ো বয়সে চোখের দৃষ্টি কমে যাচ্ছে ,তাই মাঝে মাঝে চোখে জল এসে যায়, উলরিকা আবার বলল, ‘আপনি আমার বাবার বয়সী, আপনার চোখের জল আমি কি মুছে দেব?’ ‘ধন্যবাদ’ , মিস্টার খান বিনয়ের সঙ্গে জানালেন , ‘মুছে দিয়ে আর কী লাভ ! আবার তো চলে আসবে, নয়নের জল নয়নেই শুকাতে দাও’।
‘আচ্ছা, তাই হোক’ উলরিকা সম্মতি জানালো।

ইতিমধ্যেই উভয়ই পরস্পরের কাছে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। উলারিকা আবার শুরু করল তার জমানো কথা, ‘জানেন মিস্টার খান ,যদিও আমার বাবা একজন বিদেশিনীকে বিয়ে করেছিলেন তবুও উনি ছিলেন মনে প্রাণে একজন খাঁটি বাঙালি। আমার মা বলতেন, হঠাৎকরে আমার বাবা রাত দুপুরে জেগে উঠে রবীন্দ্র সংগীত/নজরুল গীতি শুনতে বসে যেত। দেশের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে সর্বশেষ সংবাদের জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকত’। উলরিকার হৃদয়স্পর্শী কথার মাঝখানে বাধা দিয়ে মিস্টার খান জিজ্ঞাসা করল, ‘যে লোকটা তোমাদের কোনো খোঁজ নেয়নি, তোমার মাকে ঠকিয়েছে, তার জন্য তোমার কেন এত আগ্রহ?’

উলারিকা দৃতার সঙ্গে উত্তর দিল, ‘আমার মার কোনো বিশ্বাস নেই আমার বাবার প্রতি, কিন্তু আপনিই বলুন, আমি কি করে বিশ্বাস হারাতে পারি? উনি তো আমার জন্ম দাতা ’কথাটি বলে সে মিস্টার খানের দিকে জিজ্ঞাসু নেত্রে তাকিয়ে রইল।

কি বা বলবে, কারণ মিস্টার খানের কাছে এ মুহূর্তে বলার কিছু ছিল না। মিস্টার খানের কাছ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে উলারিকা নিজেই বললো, ‘নিশ্চয়ই কোনো সাংঘাতিক কারণ ছিল যার জন্য আমাদের আর কোনো খোঁজ খবর নিতে পারেননি, হয়তোবা এ ভুলের জন্য এখনো তিনি পদে পদে কষ্ট পাচ্ছেন’। ‘হয়তোবা’ মিস্টার খান অস্ফুট স্বরে উত্তর দিলেন। সে সময় মিস্টার খানের কাছে মনে হচ্ছিল ,জীবনের শেষ প্রান্তে এসে আজ আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আছে, যেন বুকটা ভেঙে চুরমার হতে চলছে। ভাবছে এ কী হলো!

রাত গভীর হতে চলছে। দুজনে দুজনকে শুভরাত্রি জানিয়ে ‘আগামীকাল আবার দেখা হবে’ অঙ্গীকার করে হোটেল রুমে ফিরে গেল। তারপর মিস্টার খান সারা রাত ঘুমাতে পারেননি। তিনি ভাবছেন, তাহলে উলরিকা আমারই মেয়ে, ওর মা এখন কোথায়? নিজের পরিচয় টুকু কি জানিয়ে দেবেন? অজস্র চিন্তা-ভাবনায় উনার মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে উঠলো। ভোরবেলা কনফারেন্স রুমে ঢুকতেই উলরিকার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। উলরিকা মিস্টার খানকে জিজ্ঞাসা করল, ‘মিস্টার খান আপনাকে খুবই ক্লান্ত দেখাচ্ছে, রাতে কি ঘুমের কোনো অসুবিধা হয়েছিল’। ‘তুমি ঠিক ধরেছ , বয়সের জন্য ঘুমের একটু ব্যাঘাত হয়েছে ’, মিস্টার খান জবাব দিলেন।

বিকাল বেলায় কনফারেন্স শেষ হলো। আগামীকাল সবাই হোটেল ছেড়ে যে যার দেশে চলে যাবে। মিস্টার খানের মন কিছুতেই স্বস্তি পাচ্ছে না। কি করা যায় ভাবছেন। উলরিকাকে ওর রুমে ফোন করলেন,’ কাল তো আমরা সবাই চলে যাচ্ছি, এ মুহূর্তে আমরা দুজনে, কী করতে পারি?’ অপর প্রান্ত থেকে উত্তর এলো, ‘চলুন, সাগর পাড়ে আজকের সন্ধ্যাটি কাটিয়ে দেই। আমার মা বলতেন, আমার বাবা জল, নদী, সাগর খুবই ভালোবাসতেন’। মিস্টার খান জানালেন, ‘বাংলাদেশের সব ছেলে মেয়ে জল নদী, সাগর, ভালোবাসে। কারণ, এতেই তাদের জন্ম, আর বেড়ে উঠা, তাদের জীবনের গতিধারা এই নদী, সাগরের মতো উত্তাল, উচ্ছল।

তারপর ঘণ্টা খানকের মধ্যে উলরিকা মিস্টার খানের রুমের ‘door bell’ বাজাল। মিস্টার খান তাকে দেখে একেবারে হতভম্ব, তিনি এ কি দেখছেন! উলরিকা শাড়ী পরে উনার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। মিস্টার খান জিজ্ঞাসা করল, এ শাড়ি তুমি পেলে কোথায়’? উলরিকা মিস্টার খানকে আরও হতবাক করে বললো, ‘এটা আমার মার শাড়ি। আমার বাবা প্রথম এই শাড়িখানা আমার মাকে উপহার দিয়েছিলেন। এই শাড়িটি প্রায় তিরিশ বছরের পুরোনো।’ কথাগুলি শুনে মিস্টার খানের হৃদয় যেন চৌচির হয়ে যেতে লাগল। জীবন যে এত কষ্টকর, তা তিনি কখনো ভাবেননি। সাগর পারের পরিষ্কার বালির উপর দিয়ে মেয়ে আর বাবা হেঁটে চলছে, আর সেই সঙ্গে মিস্টার খান মনে মনে কামনা করছে, এ চলার পথ যেন শেষ না হয়। আগামীকাল যেন না আসে। অতীত হারিয়ে গেছে, বর্তমান যেন চিরন্তন হয়ে থাকে।

Header Ad
Header Ad

ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহিদ রাজিতে ভয়াবহ রাসায়নিক বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৪ জন। আহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ৭৫০ ছাড়িয়ে গেছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে হরমুজগান প্রদেশের রাজধানী বন্দর আব্বাসের কাছে অবস্থিত এই বন্দরে ঘটে বিপর্যয়টি।

ইরানের জরুরি সেবাবিভাগের মুখপাত্র বাবাক ইয়াকতেপেরেস্ট বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে এখনও উদ্ধার তৎপরতা চলছে, তবে বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মুখপাত্র হোসেন জাফারি জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে নাশকতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি বার্তাসংস্থা আইএলএনএ-কে জানান, একটি কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থ থেকেই এই বিস্ফোরণের সূত্রপাত হয়। তিনি বলেন, “বিভিন্ন মাধ্যমে অনেক গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তবে সেগুলোতে কান না দিয়ে সরকারি তথ্যের জন্য অপেক্ষা করা উচিত।”

সরকারি বার্তাসংস্থা ফার্স নিউজ জানিয়েছে, ছোট পরিসরে আগুন লাগার পর তা দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং একাধিক বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় আবহাওয়া ছিল অত্যন্ত গরম এবং পরিবেশে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুনের তীব্রতা দ্রুত বেড়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শক্তি এতটাই প্রবল ছিল যে ৫০ কিলোমিটার দূর থেকেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, দুর্ঘটনাকবলিত কনটেইনারগুলোর মধ্যে সালফারজাতীয় রাসায়নিক থাকার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। যদিও কনটেইনারগুলোর সুনির্দিষ্ট উপাদান এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

সরকারি বার্তাসংস্থা ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়, শহিদ রাজি বন্দরটি ইরানের সবচেয়ে আধুনিক সামুদ্রিক বন্দরগুলোর একটি। এটি হরমুজ প্রণালির উত্তরে, বন্দর আব্বাস থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। এই প্রণালি দিয়েই বিশ্বের মোট উৎপাদিত তেলের পাঁচ ভাগের এক ভাগ পরিবহন করা হয়, ফলে এ বন্দরের নিরাপত্তা আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Header Ad
Header Ad

ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

প্রতীকী ছবি

জুলাই আন্দোলনে ঢাকায় পুলিশের গুলিতে শহীদ পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার জসিম উদ্দিনের মেয়ে লামিয়ার (১৭) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে রাজধানীর শেখেরটেকের ৬নং রোডের ভাড়া বাসা থেকে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এই কলেজছাত্রীর গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর দুমকিতে। তিনি গত ১৮ মার্চ দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন।

‎প্রতিবেশী ও স্থানীয়রা জানান, রোববার বিকেলে মায়ের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল তার। শনিবার মার্কেট থেকে কিছু কাপড়ও কিনেছেন। রাত আটটায় নিহতের মা ছোট মেয়েকে বাসার পাশেই মাদরাসায় দিয়ে আসতে যান। সেই সুযোগে রাত নয়টার দিকে রুমের ভেতর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন লামিয়া।

এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান।

‎নিহতের মামা সাইফুল ইসলাম জানান, আমি দোকানে বসা ছিলাম। হঠাৎ ফোনে জানতে পারি, আমার ভাগনি মারা গেছে। আমি দৌঁড়ে হাসপাতালে এসে দেখি আমার ভাগনির মরদেহ হাসপাতালে পড়ে আছে। জুলাই আন্দোলনে আমার বোন স্বামীহারা হলো। এখন মেয়েকে হারিয়েছে। এখন আমার ভাগনি চলে গেছে। আমরা কার কাছে বিচার চাইব। কে বিচার করবে আমাদের।

নিহত কলেজছাত্রীর চাচা বলেন, শনিবার রাত ১১টার দিকে তার ভাতিজির আত্মহত্যার খবর পান তিনি। এরপর তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান।

আদাবর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কমল চন্দ্র ধর বলেন, শেখেরটেকের একটি বাসা থেকে ওই কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তার মৃত্যুর ঘটনাটি আত্মহত্যাজনিত। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হবে। পুলিশ পুরো ঘটনাটি নিবিড়ভাবে তদন্ত করছে।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা জানিয়েছিলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে তার স্বামী গুলিবিদ্ধ হন। ১০ দিন পর ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার শহীদ স্বামীকে দুমকি উপজেলার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।

ভুক্তভোগীর মা বলেন, ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত করে নানাবাড়িতে ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন তার কলেজ শিক্ষার্থী মেয়ে। ধর্ষণের সময় এজাহারভুক্ত আসামিরা তার নগ্ন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বলেন। এরপর ভুক্তভোগী তার মা ও পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে ২০ মার্চ থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। সন্ধ্যায় অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু হয়।

মামলার এজাহারে উপজেলার একটি ইউনিয়নের দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলা হওয়ার দিন রাতে এজাহারভুক্ত ১৭ বছর বয়সী কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ২১ মার্চ অন্য আসামিকে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতের মাধ্যমে তাদের যশোর শিশু সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।

জানা যায়, গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাঙ্গাসিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে শহিদ জসীম উদ্দিনের মেয়ে তার বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ি পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে যাচ্ছিলেন। পথে নলদোয়ানী থেকে অভিযুক্তরা পিছু নেয়। হঠাৎ পেছন থেকে মুখ চেপে ধরে পার্শ্ববর্তী জলিল মুন্সির বাগানে নিয়ে যায় সাকিব ও সিফাত। একপর্যায়ে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এমনকি তার নগ্ন ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা।

Header Ad
Header Ad

সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর

ছবি: সংগৃহীত

পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সিন্ধুর উপনদী ঝিলামে অতিরিক্ত পানি ছেড়েছে ভারত। এর ফলেই হঠাৎ করেই মাঝারি মাত্রার বন্যার কবলে পড়েছে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একাংশ। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদীতীরবর্তী হাজারো মানুষ।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরবাদের বিভাগীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ঝিলাম নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পানি ছাড়ছে ভারত। ফলে নদীর পানি হু হু করে বেড়ে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে আকস্মিক বন্যা।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘দুনিয়া নিউজ’ জানায়, ভারত কোনো ধরনের আগাম বার্তা না দিয়েই শনিবার সকাল থেকে বাড়িয়ে দেয় পানির প্রবাহ। এতে করে অনন্তনাগ অঞ্চল থেকে প্রবাহিত পানি চাকোঠি সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করতে থাকে। মসজিদের মাইকে সতর্কতা প্রচার করা হয়, স্থানীয়দের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়।

প্রসঙ্গত, সিন্ধু নদ এবং তার উপনদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’। তবে সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পর সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। ভারত এ হামলার জন্য পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং প্রতিক্রিয়ায় একতরফাভাবে চুক্তি স্থগিত করে নয়াদিল্লি।

এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, ভারত যদি সিন্ধু নদী থেকে পানির প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে, তবে তারা একে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে বিবেচনা করবে। এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির নেতারাও। পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন, “সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে।”

এদিকে ভারতের জলসম্পদ মন্ত্রী জানালেন, পানির প্রবাহ ঠেকাতে ইতোমধ্যেই একটি রোডম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ড্রেজিং করে পানির গতি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার কাজও চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক
ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা